ফাইল ছবি
ইসরায়েলি ভূখণ্ডে একাধিক দফার হামলার পর ইরানি প্রেস টিভি জানিয়েছে, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে।
ইরানের প্রেস টিভি সূত্রে এই খবর জানিয়েছে আল জাজিরা।এর আগে ইরান ও ইসরায়েল সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ইরান বা ইসরায়েল কোনো দেশই যুদ্ধবিরতির তথ্য নিশ্চিত করেনি।
সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক ঘোষণায় ট্রাম্প জানান, এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে ছয় ঘণ্টার মধ্যে, যখন ইসরায়েল ও ইরান তাদের চলমান অভিযান শেষ করবে। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথমে ইরান যুদ্ধবিরতি শুরু করবে।
তিনি আরও জানান, ১২ ঘণ্টা পার হলে ইসরায়েল তাদের যুদ্ধবিরতি শুরু করবে। ২৪ ঘণ্টা পূর্ণ হলে ‘১২ দিনের যুদ্ধে’র আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি সারা বিশ্বের পক্ষ থেকে স্বীকৃতি পাবে। যুদ্ধবিরতির প্রতিটি ধাপে দুই পক্ষ শান্তিপূর্ণ এবং শ্রদ্ধাশীল আচরণ করবে।
তবে তার এই ঘোষণার পরও ইরানের রাজধানী তেহরানের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। সেই সময় মেহর নিউজ জানিয়েছে, তেহরানের বাইরে আরও কিছু শহরেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, তবে সেসব শহরের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
বিপরীতে ইরানও ইসরায়েলে দফায় দফায় হামলা চালিয়ে গেছে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইসরায়েল ও ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, দক্ষিণ ইসরায়েলের শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর যেসব ব্যক্তির অবস্থা সংকটজনক ছিল, তাদের তিনজনকেই মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।
ভোররাত থেকে এমন এক প্রেক্ষাপটে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কথা জানালো। তাছাড়া ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ১২ ও ওয়াইনেটও জানিয়েছে যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে।
জেরুজালেম পোস্ট জানিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত যুদ্ধবিরতি স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও, ইরান ওই সময়ের পরও উত্তরের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে গেছে। ইরানি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এসএনএন জানায়, চার দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর তেহরান স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ২০ মিনিট নাগাদ যুদ্ধবিরতি মেনে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ভোরের আকাশ/আজাসা
সংশ্লিষ্ট
নিজ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে শত্রুর ঘাঁটি তছনছ করে দেওয়া নতুন এক ইরানি ড্রোনের নাম আরশ-২। এটি হলো আরশ-১ এর একটি নতুন এবং আরও উন্নত সংস্করণ, যা ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ইরানি সেনাবাহিনীর মহড়ায় প্রথম প্রদর্শিত হয়। এই স্টিলথ ড্রোনটি ইরানের প্রতিরক্ষা শিল্প বিশেষজ্ঞরা ডিজাইন করেছিলেন এবং ব্যাপকভাবে তৈরি করা হয়েছে।মধ্যপ্রাচের এই অঞ্চলে সাম্প্রতিক ঘটনাবলী এবং উত্তেজনা বৃদ্ধির পর ‘শাহেদ ১৩৬’ এর পাশাপাশি একটি নতুন ড্রোনের নামকরণ করে ইরান। আর এটিই হলো আরশ-২।ইরানের প্রতিরক্ষা শিল্পের অন্যতম অস্ত্র উন্নত এই আত্মঘাতী ড্রোনটি তার অনন্য ক্ষমতার কারণে দ্রুত মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।ইরানি সংবাদমধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ড্রোনটির দীর্ঘ পাল্লা, উল্লেখযোগ্য লক্ষ্যবস্তু নির্ভুলতা এবং রাডার সিস্টেমকে বাইপাস করার ক্ষমতার কারণে আক্রমণাত্মক ড্রোনের ক্ষেত্রে এটি ইরানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসাবে পরিচিত। সামরিক কমান্ডাররা ঘোষণা করেছেন, ড্রোনটি সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলা এবং মূল বিষয়গুলোকে লক্ষ্য করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।গোপন এই আত্মঘাতী ড্রোনটি ইরানের প্রতিরক্ষা শিল্প বিশেষজ্ঞদের দ্বারা ডিজাইন এবং ব্যাপকভাবে উৎপাদিত হয়েছিল। ইরানি সেনাবাহিনীর স্থল বাহিনীর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কিওমারস হায়দারি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ঘোষণা করেন যে, আরশ-২ ইসরাইলের সঙ্গে যেকোনো সামরিক সংঘর্ষের ক্ষেত্রে উপকূলীয় শহর তেল আবিব এবং হাইফাকে লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়েছে।আরশ ২-এর ডেল্টা-আকৃতির ডানা রয়েছে যা উচ্চ গতি অর্জনের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এই নকশা ড্রোনটিকে আরও বেশি সহনশীলতা এবং দীর্ঘ দূরত্বের জন্য জ্বালানি সংরক্ষণ করতেও সহায়তা করে। ড্রোনটি ৪.৫ মিটার লম্বা এবং এর ডানার বিস্তার ৪ মিটার। শাহেদ ১৩৬ এর তুলনায়, আরাশ ২ দৃশ্যত কিয়ান-২ ড্রোনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।আরশ-২ ইউএভি ক্ষমতা এবং কর্মক্ষমতাআরশ-২ একটি দূরপাল্লার যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে পরিচিত যা ২০০০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। ড্রোনটি একটি পিস্টন ইঞ্জিন (যেমন MD550 বা MDSO-4-520 টেম্পেস্ট যার ৫০ হর্সপাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে) দ্বারা চালিত যা এটিকে ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে পৌঁছাতে এবং ৩,৬০০ মিটার পর্যন্ত উচ্চতায় উড়তে দেয়।আরশ-২ এর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে একটি হলো এর বহুমুখী ক্ষমতা। ইরানি কমান্ডাররা ড্রোনটিকে নির্ভুল আঘাত এবং শত্রুর বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের জন্য একটি বিশেষায়িত অস্ত্র হিসাবে বর্ণনা করেছেন। আক্রমণাত্মক কামিকাজে মিশনের পাশাপাশি আরশ-২ ইলেকট্রনিক যুদ্ধে ভূমিকা পালন করার জন্যও তৈরি করা হয়েছে। চূড়ান্ত আক্রমণের আগে ড্রোনটি লক্ষ্যবস্তু সম্পর্কে বেশ কয়েকবার তথ্য সংগ্রহ করতে পারে, যা এর নির্ভুলতা এবং প্রাণঘাতীতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।আরশ-২ ট্রাক-মাউন্টেড বক্স লঞ্চ সিস্টেম বা JATO (জেট অ্যাসিস্টেড টেকঅফ) লঞ্চারের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করা হয় যা বিভিন্ন ভূখণ্ডে দ্রুত এবং নমনীয় স্থাপনার সুযোগ করে দেয়।ইরানি সামরিক বাহিনীর মতে, ইরান ও ইসরাইলি শাসক গোষ্ঠীর মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধের সময়, গত ১৪ জুন সকালে বেশ কয়েকটি আরশ-শ্রেণির আত্মঘাতী ড্রোন ইসরাইলের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে এবং ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এ ঘটনাটি পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে দূরপাল্লার আক্রমণে এই ড্রোনের কার্যকারিতা প্রমাণ করে এবং দেখায় যে আরশ-২ বাস্তবে ইসরাইলি ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে এবং তার লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।আরশ-২ সম্পর্কে কৌশলগত গুরুত্ব এবং বিতর্কআরশ-২ এর উত্থান এবং পরিচালনা ড্রোন প্রযুক্তিতে ইরানের উল্লেখযোগ্য এবং দ্রুত অগ্রগতি প্রদর্শন করে এবং দূরপাল্লার ড্রোন প্রযুক্তির বিশ্বব্যাপী পথিকৃৎদের মধ্যে দেশের অবস্থানকে দৃঢ় করে। আরশ-২ এর ২০০০ কিলোমিটার পরিসরের অর্থ হলো এটি পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটি (যেমন- কাতার, বাহরাইন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত) এবং পারস্য উপসাগরীয় নৌবহর সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক এবং বিদেশী সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানতে পারে।এই ক্ষমতা মার্কিন বাহিনী এবং তার মিত্রদের জন্য নতুন হুমকি তৈরির পাশাপাশি আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা হিসাব নিকাশ পরিবর্তন করে দিতে সক্ষম হবে। এছাড়াও আরশ-২ এর মতো দেশীয় ড্রোন প্রযুক্তির অব্যাহত উন্নয়ন অসম এবং ব্যয়-কার্যকর যুদ্ধের মাধ্যমে প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত প্রতিযোগীদের বিরুদ্ধে কৌশলগত স্বাধীনতা এবং ক্ষমতার ভারসাম্য অর্জনের ইরানের প্রচেষ্টাকে তুলে ধরে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
প্রায় দুই বছরের ইসরায়েলি আগ্রাসনে বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকা পুনর্গঠনের জন্য ৬৭ বিলিয়ন ডলারের একটি তিন ধাপের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে ফিলিস্তিনি সরকার। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সময় লাগবে পাঁচ বছর।বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রামাল্লাহতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মুস্তাফা জানান, আরব ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতায় এই পুনর্গঠন পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। শিগগিরই এ নিয়ে একটি বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।সংবাদ সম্মেলনে কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি ও উন্নয়ন সহযোগীরাও উপস্থিত ছিলেন।মুস্তাফা বলেন, পরিকল্পনার প্রথম ধাপে ছয় মাসের মধ্যে জরুরি মানবিক সহায়তা ও অবকাঠামো পুনর্গঠনের কাজ সম্পন্ন করা হবে। এ পর্যায়ে ব্যয় হবে প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন ডলার।দ্বিতীয় ধাপের মেয়াদ তিন বছর, এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ বিলিয়ন ডলার। শেষ ধাপে গাজা পুনর্গঠনের দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।তিনি জানান, পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। যুদ্ধ শেষ হওয়ার এক মাস পর মিসরে বড় আকারের পুনর্গঠন সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে।ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ‘ইসরায়েলকে অবশ্যই গাজা থেকে প্রত্যাহার করতে হবে, সীমান্ত খুলে দিতে হবে এবং মানবিক সহায়তা ও পুনর্গঠনের সামগ্রী প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে।’গাজায় শাসনব্যবস্থা নিয়ে অবস্থানগাজা শাসনব্যবস্থা নিয়ে বাইরের কোনো শর্ত গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করে মোহাম্মদ মুস্তাফা বলেন, ‘গাজার প্রশাসন নিয়ে আমরা কারও কাছ থেকে কোনো নিশ্চয়তা চাইনি।’তিনি জানান, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) বর্তমানে পশ্চিম তীর পরিচালনা করছে এবং পরিস্থিতি অনুকূল হলে গাজায়ও নিজেদের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে। ‘এই বিষয়ে ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরে কোনো বিরোধ থাকবে না,’ যোগ করেন তিনি।অন্যদিকে, ইসরায়েল গাজা যুদ্ধ শেষে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বা হামাস–কারওই শাসন ভূমিকা মেনে নিতে নারাজ।মুস্তাফা পুনরায় বলেন, ‘গাজা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমরা দিনরাত কাজ করছি সেখানে প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে।’এদিকে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে কয়েক দিনের মধ্যেই আলোচনা শুরু হওয়ার কথা। হামাস তাদের অস্ত্র রাখার অধিকার, পূর্ণ ইসরায়েলি প্রত্যাহার এবং যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তি দাবি করছে।গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থাপিত পরিকল্পনার ভিত্তিতে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পন্ন হয়। প্রথম ধাপে বন্দি বিনিময় অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরবর্তী ধাপগুলোতে গাজা পুনর্গঠন ও হামাসবিহীন একটি নতুন প্রশাসনিক কাঠামো গঠনের কথা বলা হয়েছে।জাতিসংঘের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৬৮ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। গাজা উপত্যকার অধিকাংশ এলাকা এখন বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
মার্কিন প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি দাবি করেন যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ভারত আর রাশিয়া থেকে তেল কিনবে না। তবে অবিলম্বে তেল কেনা বন্ধ হবে না। সেখানে পদ্ধতিগত বিষয় আছে। তবে সেই পদ্ধতিগত বিষয় শিগগিরই শেষ হয়ে যাবে।ট্রাম্পের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত।বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, টেলিফোনে আলাপের বিষয়ে আমি এইচুকু বলতে পারি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি। বৃহস্পতিবার সকালে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে জানায়, তেল ও গ্যাস আমদানির ক্ষেত্রে সবসময় ভারত ও ভারতীয়দের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখার নীতি নিয়েই চলা হয়। আমাদের আমদানি পুরোপুরি এই নীতির উপর ভিত্তি করে চলে। এক্ষেত্রে স্থিতিশীল দাম ও সরবরাহ হলো আমাদের কাছে প্রধান লক্ষ্য।বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমরা তেল ও অন্য জ্বালানি নিয়ে সহযোগিতা বাড়াতে চেয়েছি। গত দশকে তা কিছুটা এগিয়েছে। বর্তমান প্রশাসন ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়িয়ে নিয়ে যেতে চায়। আলোচনা চলছে।ভোরের আকাশ/জাআ
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ইস্যুতে তিনি ওই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।তিনি বলেছেন, ইউক্রেনকে দীর্ঘপাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা হলে মস্কো-ওয়াশিংটনের সম্পর্ক গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দুই নেতার মধ্যে প্রায় আড়াই ঘণ্টার ফোনালাপ এই হুঁশিয়ারি দেন পুতিন। ফোনালাপে ইউক্রেন যুদ্ধ ও ভবিষ্যৎ শান্তি আলোচনার বিষয়গুলো নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়।শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের ফোনালাপ নিয়ে বৃহস্পতিবার মস্কোয় সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে রুশ প্রেসিডেন্টের সহকারী ইউরি উশাকভ বলেন, ‘পুতিন পুনরায় তার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন যে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধক্ষেত্রের বাস্তবতা বদলাতে পারবে না। বরং এই ক্ষেপণাস্ত্র দুই দেশের সম্পর্ক এবং ইউক্রেনে শান্তিপূর্ণ সমাধানের সম্ভাবনাকে বড় ধরনের ক্ষতি করবে।’উশাকভ আরও জানান, দুই নেতার মধ্যে প্রায় আড়াই ঘণ্টার ফোনালাপ ছিল ‘খুবই ফলপ্রসূ, খোলামেলা ও গোপনীয়’। আলোচনায় ইউক্রেন যুদ্ধ ছিল মুখ্য বিষয়। এছাড়া ট্রাম্পের সামনে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতির একটি বিস্তারিত মূল্যায়নও তুলে ধরেন পুতিন।রুশ কর্মকর্তার ভাষায়, মস্কো ওয়াশিংটনকে জানায়- রুশ বাহিনী এখনো ‘পুরো ফ্রন্টলাইনে কৌশলগত নিয়ন্ত্রণ’ ধরে রেখেছে। অপরদিকে ট্রাম্প বারবার জোর দিয়ে বলেছেন, যুদ্ধ দ্রুত শেষ করা প্রয়োজন। উশাকভ আরও বলেন, ‘আমেরিকার প্রেসিডেন্টের অন্যতম মূল বক্তব্য ছিল- ইউক্রেন সংঘাতের অবসান ঘটলে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিশাল সুযোগ সৃষ্টি হবে। আলোচনায় দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে সরাসরি সাক্ষাতের সম্ভাবনাও উত্থাপিত হয়। উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা অবিলম্বে ট্রাম্প ও পুতিনের পরবর্তী বৈঠকের প্রস্তুতি শুরু করবেন বলেও তারা সম্মত হয়েছেন। সম্ভাব্য স্থান হিসেবে হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টের নাম উঠে এসেছে।পুতিন ও ট্রাম্পের সর্বশেষ মুখোমুখি সাক্ষাৎ হয়েছিল গত আগস্টে আলাস্কায়। তবে সেখানেই শান্তি আলোচনার অগ্রগতি থেমে যায়। এরপর থেকে ট্রাম্প ন্যাটো মিত্রদের সঙ্গে সমন্বয় করে রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছেন।এদিকে বৃহস্পতিবারের ফোনালাপের পর ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লেখেন, তিনি ও পুতিন বুদাপেস্টে সাক্ষাৎ করে ‘যুদ্ধের অবসান নিয়ে আলোচনা” করবেন। এর আগে দুই দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল আগামী সপ্তাহে বৈঠক করবে। অন্যদিকে শুক্রবার হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করবেন ট্রাম্প। এই বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় হবে ইউক্রেনকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও দীর্ঘপাল্লার অস্ত্র সরবরাহ করা। এর আগে চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তিনি ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার বিষয়ে “চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কাছাকাছি” আছেন।ভোরের আকাশ/জাআ