ছবি : সংগৃহীত
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার এই ‘সংকটাপন্ন’ শারীরিক অবস্থা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
কাতারভিত্তিক আল জাজিরা খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের বরাতে শিরোনাম করেছে, খুবই সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি খালেদা জিয়া।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপির তথ্য উদ্ধৃত করে গালফ নিউজও একই শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

পাকিস্তানের ডন নিউজ, আরব নিউজ এবং ভারতের এনডিটিভি খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এনডিটিভির একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি।
টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য হিন্দু ও হিন্দুস্তান টাইমসও গুরুত্বের সঙ্গে সংবাদটি প্রকাশ করেছে।
আরব নিউজ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খুবই ক্রিটিকাল।
ডা. জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার অবস্থা গত তিন দিন ধরে একই রকম রয়েছে। তিনি বলেন, চিকিৎসার সিদ্ধান্ত মেডিকেল বোর্ড নেবে এবং অনুমতি মিললেই তাকে বিদেশে নেয়ার প্রস্তুতি রয়েছে। হাসপাতেলে চিকিৎসাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সুস্থতার জন্য তার পরিবার ও দলের নেতাকর্মীরা দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
ভোরের আকাশ/মো.আ.
সংশ্লিষ্ট
চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিঙ্গাপুরে মৃত্যুবরণ করা ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ বহনকারী ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছে।বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-৩৮৫ ফ্লাইটটি শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৩ মিনিটে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এক দায়িত্বশীল সূত্র গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।বিমানের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ফ্লাইটটি সন্ধ্যা ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে। শহীদ ওসমান হাদির মরদেহ মর্যাদাপূর্ণ ও নির্বিঘ্নভাবে দেশে আনার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র। তার মৃত্যুর সংবাদ ঢাকায় পৌঁছালে কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।এর আগে, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগে অংশ নেওয়ার সময় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে গুলিবিদ্ধ হন শরিফ ওসমান হাদি। মাথায় গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অস্ত্রোপচার শেষে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে তিনি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়।ভোরের আকাশ/মো.আ.
চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ চেষ্টা, দেশে–বিদেশের মানুষের দোয়া— সব প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে না ফেরার দেশে চলে গেছেন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদি।বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। একই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে ওসমান হাদির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও।ইনকিলাব মঞ্চের এক ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, “ভারতীয় আধিপত্যবাদের মোকাবিলায় মহান বিপ্লবী ওসমান হাদিকে আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল করেছেন।”হাদির মৃত্যুর পর সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার বিভিন্ন বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ নতুন করে ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে ‘ভাইয়া, আল্লাহ যদি আমাকে নিয়ে যায়, আমার বাচ্চাটার দিকে একটু খেয়াল রাইখেন’— শিরোনামের একটি ভিডিও ব্যাপকভাবে আবেগ ছড়িয়েছে।ভিডিওটি এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারের সময় ধারণ করা। সেখানে আবেগাপ্লুত কণ্ঠে নিজের সন্তান ও পরিবারের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন হাদি।ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি নিজেকে আল্লাহর কাছে সপে দিয়েছি। মন খারাপ হয়— আল্লাহ যদি কোনো দিন আমাকে নিয়ে যায়, তো এই যে ছেলেমেয়েগুলা… আল্লাহ আমাকে একটা সন্তান দিসে, তিন মাস বয়স ওর। আমার বাচ্চাটারে তিন মাসে ত্রিশ মিনিটও কোলে নিতে পারি নাই। আমার ওয়াইফ মাঝে মাঝে মজা করে বাচ্চাকে বলে, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র তোমার সঙ্গে দেখা করতে আসছে।”তিনি আরও বলেন, “এই প্রথম মনে হইলো আমি আমার ভাইয়াকে বলি— ভাইয়া, আল্লাহ যদি আমাকে নিয়ে যায়, আমার বাচ্চাটার দিকে একটু খেয়াল রাইখেন। কিন্তু এই কথাটা আমি আর বলতে পারি নাই।”নিজের লড়াই ও বিশ্বাস নিয়ে হাদি বলেন, “আমার সারা জীবনের সততা আর সাহসের পেছনে আমার আব্বা আছেন। আল্লাহ যদি আমাকে রহম করেন, তাহলে আমার সন্তান, পরিবার, ভাইবোন আর ইনকিলাব মঞ্চের ভাইবোনদের আল্লাহই দেখবেন। কারো কাছে আর কোনো প্রত্যাশা নাই।”উল্লেখ্য, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে মাথায় গুলিবিদ্ধ হন ওসমান হাদি। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, হামলায় জড়িত হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের এক নেতাকে শনাক্ত করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে আলোচনা রয়েছে।ঢাকা-৮ আসনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন ওসমান হাদি। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের উদ্যোগে গত সোমবার তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়।সেখানেই শেষ পর্যন্ত জীবনের লড়াইয়ে হার মানেন ইনকিলাব মঞ্চের এই নেতা।ভোরের আকাশ/মো.আ.
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ঘটনার পরপরই দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, হামলার প্রায় ১২ ঘণ্টার মধ্যেই সে সীমান্ত অতিক্রম করে।তদন্তে উঠে এসেছে, গুলির ঘটনার পর পরিকল্পনা অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ আলামত গায়েব করা হয়। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্ত ফিলিপের দুই সহযোগীর জবানবন্দিতে বলা হয়েছে, ভুটিয়াপাড়া সীমান্ত দিয়ে ফয়সাল ও তার এক সহযোগী ভারতে পালিয়ে যায়।তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে জানা গেছে, ফয়সালের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের আইপি অ্যাড্রেস বিশ্লেষণ করে বুধবার তার অবস্থান ভারতের মহারাষ্ট্রে শনাক্ত করা হয়েছে। সে দেশটির রিলায়েন্স কোম্পানির একটি সংযোগ ব্যবহার করে যোগাযোগ রক্ষা করছে বলেও তথ্য পাওয়া গেছে।যদিও হত্যাকাণ্ডের প্রধান দুই অভিযুক্ত এখনো পলাতক, তবে তদন্তে পুরো ঘটনার নকশা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তদন্তকারীদের ভাষ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাইয়ে দেশে ফিরে ফয়সাল করিম মাসুদ, কামাল, রুবেল ও মাইনুদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে। তারা সবাই কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত বলে তদন্তে উঠে এসেছে।কিলিং মিশন যেভাবে পরিচালিত হয়গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, গত ৪ ডিসেম্বর রাত ৮টা ১৮ মিনিটে বাংলামোটরের ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে যান ফয়সাল ও তার সহযোগী কবির। প্রায় ছয় মিনিটের ওই বৈঠকে শরিফ ওসমান হাদির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরির চেষ্টা করা হয় এবং একসঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।এরপর ৯ ডিসেম্বর রাতে ফয়সাল আবারও ওই কেন্দ্রে যান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন নতুন সহযোগী আলমগীর। ওই বৈঠকে নির্বাচনী প্রচারণার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় এবং এর মাধ্যমেই হাদির প্রচারণা টিমে যুক্ত হয় ফয়সাল। পরদিন ১২ ডিসেম্বর সেগুনবাগিচায় হাদির প্রচারণায় সরাসরি অংশ নেয় তারা।তদন্তে বলা হচ্ছে, প্রচারণায় যুক্ত হওয়ার পরই হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়। নরসিংদী, সাভার ও মানিকগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় রেকি করা হয়। ১১ ডিসেম্বর প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ফয়সাল পশ্চিম আগারগাঁওয়ে তার বোনের বাসায় ওঠে। হামলার দিন ভোরে উবারে করে হেমায়েতপুরের একটি রিসোর্টে যায় তারা।রিসোর্টের সিসিটিভি ফুটেজে শুক্রবার ভোর ৫টা ২২ মিনিটে ফয়সাল ও আলমগীরের গাড়ি প্রবেশের দৃশ্য দেখা গেছে। সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছিল ফয়সালের বান্ধবী মারিয়া ও তার বোন। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সেখানে হাদির একটি ভিডিও দেখিয়ে ফয়সাল হামলার পরিকল্পনার কথা জানায় এবং ঘটনার পর সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়।পরে বান্ধবীকে বাড্ডায় নামিয়ে দিয়ে বেলা ১১টা ৫ মিনিটে আগারগাঁওয়ের বাসা থেকে মোটরসাইকেলে বের হয় ফয়সাল ও আলমগীর। তারা সরাসরি সেগুনবাগিচায় হাদির প্রচারণায় যোগ দেয়। দুপুর ১২টা ২২ মিনিটে হাদি মতিঝিলের উদ্দেশে রওনা হলে অভিযুক্তরা পিছু নেয়।দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে হাদিকে বহন করা অটোরিকশা মতিঝিলের জামিয়া দারুল উলুম মসজিদের সামনে পৌঁছায়। সেখানে জুমার নামাজ আদায় করেন হাদি। নামাজ শেষে দুপুর ২টা ১৬ মিনিটে তিনি সেখান থেকে রওনা হলে ফয়সাল ও তার সহযোগীরা অনুসরণ করতে থাকে। মতিঝিল হয়ে পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে ঢোকার পর দুপুর ২টা ২৪ মিনিটে খুব কাছ থেকে হাদিকে লক্ষ্য করে দুটি গুলি ছোড়া হয় বলে তদন্তে উঠে এসেছে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
জুলাই যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) এক শোকবার্তায় তিনি এ কথা জানান।উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, শরিফ ওসমান হাদি ছিলেন একজন সাহসী রাজনৈতিক কর্মী ও নির্ভীক কণ্ঠস্বর। তিনি সবসময় অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন।শোকবার্তায় তিনি আরো বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর ‘ইনকিলাব মঞ্চ’-এর মুখপাত্র হিসেবে তিনি জুলাইয়ের যোদ্ধাদের অধিকার রক্ষা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখা এবং জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তার অকালপ্রয়াণে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়।উপদেষ্টা ফরিদা আখতার মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত স্ত্রী, পরিবার-পরিজন, সহযোদ্ধা ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শরিফ ওসমান হাদি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।ভোরের আকাশ/এসএইচ