আব্দুস সালাম, দিনাজপুর
প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ০৪:৫৪ পিএম
দিনাজপুরে গাছে ঝুলছে কাঁচা লিচুর গুচ্ছ
দিনাজপুরে লিচুর মৌসুম শুরু হতে যাচ্ছে। গাছে ঝুলছে কাঁচা লিচুর গুচ্ছ, আর মাত্র দুই সপ্তাহ পর বাজার ভরে উঠবে লাল-গোলাপি টসটসে লিচুতে। আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূলে থাকলেও, ফলন নিয়ে চাষিদের মধ্যে জাতভেদে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।
চাষিরা জানিয়েছেন, মাদ্রাজী জাতের লিচুর ফলন ভালো হলেও বোম্বাই জাতের ফলন আশানুরূপ হয়নি। বিরল উপজেলার লিচু চাষি ফিরিজুল ইসলাম বলেন, বোম্বাই লিচুর ফলন প্রায় ৪০ শতাংশ কম হয়েছে। তবে মাদ্রাজী লিচুর দাম ভালো পাবো বলে আশা করছি। গত বছর প্রতি হাজার লিচু ২২০০ টাকায় বিক্রি করেছি, এবারও বাজার ভালো যাবে। জেলায় ৫,৫২০ হেক্টর জমিতে ৯৯৮টি বাগানে লিচু চাষ হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি বাগান রয়েছে বিরল উপজেলায়। এ বছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪,৬২৮ মেট্রিক টন।
দিনাজপুরে মাদ্রাজী, বেদানা, হাড়িয়া বেদানা, বোম্বাই, চায়না থ্রি, চায়না টু, কাঁঠালি এবং মোজাফফরি জাতের লিচু চাষ হয়। এর মধ্যে মাদ্রাজী ও বোম্বাই জাত বেশি জনপ্রিয়। তবে চাষিরা বলছেন, লিচুর জাত ও আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে প্রতি বছর ফলন একরকম হয় না। বিগত ১২ দিনে ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হওয়ায় চাষিদের সেচের প্রয়োজন কমে গেছে।
বিরল উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা হাসান ইমাম জানান, তাপমাত্রা কম থাকায় পোকার আক্রমণ ও গুটি ঝরে পড়ার হার কম। আবহাওয়ার এই ধারা অব্যাহত থাকলে লিচুর আকার বড় হবে এবং মিষ্টতার মাত্রা বাড়বে। বিগত দুই বছরে দিনাজপুর থেকে ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস এবং ইংল্যান্ডে প্রায় ৪০ হাজার পিস লিচু রপ্তানি হয়েছে। এতে করে চাষিদের যত্ন ও পরিচর্যায় মনোযোগ বেড়েছে।
লিচু ব্যবসায়ী শাহীন আলম বলেন, বর্তমানে কালিতলা এলাকায় বসা লিচুর বাজারটি শহরে বড় যানজট সৃষ্টি করছে। বাজারটি গোর-এ-শহীদ মাঠে সরিয়ে নিলে ট্রাক প্রবেশ সহজ হবে এবং চাষিরা নির্বিঘ্নে লিচু বিক্রি করতে পারবেন। আগামী ১০-১৫ মে মাদ্রাজী লিচু বাজারে আসার মাধ্যমে মৌসুমের সূচনা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে বোম্বাই, বেদানা, চায়না থ্রি এবং সবশেষে হাড়িয়া বেদানা, কাঁঠালি ও মোজাফফরি জাতের লিচু বাজারজাত হবে। চাষি ও ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, অনুকূল আবহাওয়া অব্যাহত থাকলে এবারের লিচুর মৌসুমে সবার মুখে হাসি ফুটবে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ