স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর
প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:০২ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা ও শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্পর্কে মন্তব্য করেন দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, মানসম্মত শিক্ষক সৃষ্টির জন্য প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। প্রশিক্ষণ আত্মজিজ্ঞাসার দুয়ার খুলে দেয়, সৃষ্টি করে আত্মপ্রত্যয়।
তিনি বদলে যাওয়া পৃথিবীর পরিবর্তিত রূপের সাথে উপযোগী করে গড়ে তুলতে শিক্ষকদের মানসম্মত শিক্ষা প্রদানে দায়িত্বশীল হতে আহ্বান জানান।
শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণে ফুলবাড়ী উপজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. রফিকুল ইসলাম শিক্ষার মানোন্নয়ন ও মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণে দীর্ঘ সময় শিক্ষকদের হাতে-কলমে পাঠদানের কলাকৌশল শিখিয়ে দেন।
শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দূর্বল শিক্ষার্থীদের প্রতি দায়িত্বশীল হতে হবে। ক্লাসে সামনে বসিয়ে তাদের মান উন্নয়ন করতে হবে। এ দায়িত্ব পালনের জন্যই আপনারা বেতন পান। শুধু অভিভাবকদের দোষারোপ করলে চলবে না। তিনি বলেন, শুধু মেধা দিয়ে ভালো মানুষ যাচাই করা যায় না, ভালো মানুষ হতে হলে সমাজ ও রাষ্ট্রকে কিছু দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের মানবিক ও নৈতিকতা বিকাশের প্রতিও গুরুত্ব দিতে হবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধান অতিথিকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রশাসক মো. ইসাহাক আলীসহ ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও শিক্ষকবৃন্দ।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫ট থেকে রাত ৯ পর্যন্ত ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রশাসক মো. ইসাহাক আলী।
অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এসএম হাবিবুল হাসান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. নূর আলম, উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) শহিদুল বারী খান ও শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার সুজন পারভেজ, উপজেলা প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম, উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তা ডা. সরোয়ার মোরশেদ, থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম খন্দকার মুহিব্বুল, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মিজানুর রহমান, সমবায় কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আলহাজ্ব মো. রেজাউল করিম প্রমুখ।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, দেশ ও সমাজকে এগিয়ে নিতে শিক্ষার বিকল্প নেই। শিক্ষকদের অজুহাত থেকে বের হয়ে আসতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সময় না দেয়া, যথাযথভাবে ক্লাস না নেয়া এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি দায়িত্বশীল না হওয়া নৈতিকতা বিরোধী। তারা বলেন, এমনও অভিযোগ আছে যে সংশ্লিষ্ট স্যারের কাছে পড়ে তাকে সেই বিষয়ে বেশি নাম্বার দেয়া হয়! এটা জঘন্যতম অপরাধ! শিক্ষকরা বেতন পান সব শিক্ষার্থীদের সমানভাবে পড়ানোর জন্য। শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর। তারা দুর্নীতিগ্রস্ত হোক এটা কেউ প্রত্যাশা করে না।
সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইসাহাক আলী বলেন, আমাদের শিক্ষা সহায়ক সরঞ্জামের সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে কিন্তু আন্তরিক হলে কোন প্রতিবন্ধকতায় সাফল্যকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে না।
তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন- আসুন আমাদের সন্তানদের একটা উন্নত ভবিষ্যৎ উপহার দেয়ার সম্মিলিত চেষ্টা করি।
প্রসঙ্গত, শিক্ষা অনুরাগী জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম শিক্ষার মানোন্নয়নে ও মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণে প্রতিনিয়তই ছুটে যাচ্ছেন এক প্রতিষ্ঠান থেকে আরেক প্রতিষ্ঠানে, এক উপজেলা থেকে আরেক উপজেলায় শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে এবং দায়িত্বশীল হতে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত নিজেই দীর্ঘ সময় প্রশিক্ষণ ক্লাসে পাঠদানের কলা-কৌশল হাতে-কলমে শিখিয়ে দিচ্ছেন।
তিনি নিরলসভাবে শিক্ষার সামগ্রিক মানোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন।
ভোরের আকাশ/জাআ