নানাবাড়ি বেড়াতে এসে পানিতে ডুবে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু
চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে নানাবাড়ি বেড়াতে এসে পানিতে ডুবে আমেনা খাতুন (১১) নামে এক মাদ্রাসাছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার জীবননগর উপজেলার মানিকপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
আমেনা খাতুন ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জ থানার মল্লিকপুর নাড়ীপোতা গ্রামের ইসমাইল হোসেনের মেয়ে। সে তিনদিন আগে জীবননগর উপজেলার মানিকপুর গ্রামে নানা ওয়াজেদ আলীর বাড়িতে বেড়াতে আসে। আমেনা খাতুন কালিগঞ্জের একটি মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে নানাবাড়ির পাশে মানিকপুর ডোবায় গোসল করতে নামে। এক পর্যায়ে সে পানিতে ডুবে যায়। বেলা ৩ টার দিকে একই গ্রামের পিয়াস ডোবায় গোসল করতে নামলে আমেনা খাতুনের মৃত দেহ তার পায়ে লাগে। পরে স্থানীয়রা ডোবা থেকে আমেনা খাতুনের মৃতদেহ উপরে তুলে আনেন।
জীবননগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মামুন হোসেন বিশ্বাস জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছিল। এ ঘটনায় কেউ কোন অভিযোগ দায়ের করননি।
ভোরের আকাশ/আজাসা
সংশ্লিষ্ট
চায়ের নগরী শ্রীমঙ্গল। এর পাশাপাশি এখানকার আনারসেরও খ্যাতি দেশজুড়ে। যা স্বাদে-গন্ধেও অতুলনীয়। সবচেয়ে বেশি আনারস আম কাঠালসহ বিভিন্ন রসালো ফল উৎপন্ন হয় শ্রীমঙ্গলে। এই ঋতুতে বাজারজুড়ে অন্য ফলের সাথে শ্রীমঙ্গলের আনারসও আধিপত্য বিস্তার করছে। চাষিরা জানান, শ্রীমঙ্গলে পাহাড়ি উঁচু-নিচু টিলায় ষাটের দশক থেকে আনারস চাষ শুরু করা হয়। এখানকার উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু আনারস চাষের জন্য বেশ উপযোগী। এখানে বারো মাস আনারসের চাষ করা হয়। নিজ এলাকার চাহিদা মিটিয়ে সারা বছরই দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয় শ্রীমঙ্গলের আনারস। আনারস একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসলও বটে। সিলেট, মৌলভীবাজার, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্যাপকভাবে আনারস চাষ হয়। তবে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে উৎপাদিত আনারস দেশখ্যাত। এখানে দিগন্তজোড়া সবুজ চা বাগান আর পাহাড় এরই মধ্যে রয়েছে আনারস বাগান। চায়ের রাজ্যে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে আনারসের সারি সারি বাগান। এই আনারসের গাছগুলো নিচ থেকে টিলার উপরে এমন ভাবে গিয়ে উঠেছে দূর থেকে মনে হবে যেন একদল পিপিলিকা ডানা মেলে সারি বেঁধে উপরে উঠছে।কৃষি বিভাগ বলছে, মে থেকে জুন পর্যন্ত আনারসের ভরা মৌসুম। এ বছর মৌলভীবাজার জেলার প্রায় ১ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ হয়েছে। এ অঞ্চলে হানিকুইন ও জাইনকিউ নামের আনারসের উৎপাদন হয়ে আসছে বলে জানান কৃষি বিভাগ। সড়জমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন ভোর হতে না হতেই শত শত ঠেলা, জিপ ও পিকআপে করে নিয়ে আসে শ্রীমঙ্গলের আড়ৎগুলোতে।এই উপজেলার বিষামণি, মাইজদিহি, হোসেনাবাদ, এমআর খান, নন্দরানী, বালিশিরা, নূরজাহান, ডলুছড়া, সাতগাঁও, মোহাজেরাবাদসহ প্রতিটি এলাকা থেকে প্রচুর আনারস আসে বাজারে। বাজারে আসা ঠেলাগাড়ি গুলোর সামনের দিক মাটিতে মুখ দিয়ে তার পিঠে রাখা আনারসকে ডিসপ্লের মতো করে সাজিয়ে রাখা হয়।যেন দূর-দূরান্ত থেকে ছোট-বড় আড়ৎদার ও পাইকারি-খুচরা ক্রেতারা এগুলো দেখে সহজে আকৃষ্ট হন। আর এখান থেকেই আনারস যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। গাড়ি অনুপাতে একেকটা ঠেলাগাড়িতে একশ পঞ্চাশ থেকে ৫০০ পিস আনারস সুন্দর করে ডিসপ্লে করে রাখা হয়। সে গুলো সাইজ অনুযায়ি বিক্রি হয়ে থাকে।এছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলা কমলগঞ্জ, চুনারুঘাট এমনকি বাহুবল থেকেও আনারস আসে শ্রীমঙ্গলের বাজারে। বাগান মালিক ও আড়ৎদারদের তথ্য মতে বাজারের ছোট বড় সব মিলিয়ে প্রায় ৪০ জন আড়ৎদার রয়েছেন। যাদের কাছে বাগান মালিকগন তাদের আনারস বিক্রির জন্য দিয়ে থাকেন।আশিক বানিজ্যালয়ের আড়তদার মো: আশিকুর রহমান বলেন, অন্য বছরের চেয়ে এবার আনারসের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। আমরা ৬ মাস যাবৎ মৌসুমি এই সিজনের আনারস বিক্রি করছি, এবারের আনারসের স্বাধ-গন্ধ অনেক মজার এবং ক্রেতাদের চাহিদা অনেক হওয়াতে আমরা দামও ভালো পাচ্ছি। মেসার্স মনজুর আলী আড়তদার অভিযোগ করে মো. মছর উদ্দিন বলেন, আনারসের ফলন ভালো হয়েছে কিন্তু আনারস সংরক্ষণের অভাবে পচে যাচ্ছে। পুক্ত আনারস বেশি দিন বাগানে রাখা যায় না, বৃষ্টি হলে সেই আনারস বাগানেই পচে যায়। সে জন্য আনারস সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা জরুরি।আনারস কিনতে আসা পারভেজ, জাহেদ ও সাইদুল ইসলাম জানান, শ্রীমঙ্গলের আনারস খুব সুস্বাধু। তাই পাশের উপজেলা কমলগঞ্জ থেকে কিনতে আসছেন। এখানে প্রতি আলী (৪পিচ) আনারস ৫০-১২০ টাকা ধরে কিনে নিয়েছেন তারা।শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি অফিসার (কৃষিবিদ) মো: আলাউদ্দিন, এবছর শ্রীমঙ্গল ৪২০ হেক্টর আনারস লেবু চাষ হয়েছে ১২৫০ হেক্টর চাষ হয়েছে। আমরা কৃষি অফিস থেকে ২০ জন কৃষককে প্রনোদনা হিসেবে ২হাজার ২ ৫০টি আনারসের চারা দিয়েছি। সকল চাষীকে কৃষি অফিস সবসময় ভালো পরামর্শ দিয়ে আসছে। তিনি বলেন, আনারসের পাশাপাশি লেবু ও নাগামরিচ ও বিভিন্ন ফলের চাষ হয় এ অঞ্চলে। মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি জানান, বর্তমানে জেলায় ১ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আনারস চাষ হচ্ছে। তিনি বলেন, এবছর আমাদের এলাকায় পছন্ড খরা দিয়েছে, যার কারণে হানিকুইন জাতের আনারসগুলো একবারে ছোট হয়ে গেছে। কিন্তু বিক্রি করার জন্য পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীরা জুলডুগি আনারস বলে বিক্রি করছে। আমাদের এলাকায় এই আনারস চাষ হয়না। কিন্ত বিক্রেতারা এই নাম বলে বিক্রি করছেন। আনারস ও লেবু সংরক্ষণাগার ও প্রসেসিং প্লান্ট স্থাপনের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।ভোরের আকাশ/আজাসা
চট্টগ্রামের কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর বহুল প্রত্যাশিত রেলসহ সড়ক সেতু নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।বুধবার (১৪ মে) বেলা ১১টায় চট্টগ্রামের সার্কিট হাউস থেকে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ফলক উন্মোচন করেন তিনি।এর আগে চট্টগ্রাম বন্দরে মতবিনিময় সভা শেষে তিনি সড়ক পথে সার্কিট হাউসে এসে পৌঁছান। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম সফর করছেন প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।উদ্বোধন ঘোষণা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কালুরঘাট ব্রিজে আমার অনেক স্মৃতি। এই সেতুর ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনেক। আজ এখানে বোয়ালখালীর বাসিন্দাও উপস্থিত আছেন। কালুরঘাট সেতু তাদের বহুল আকাঙ্ক্ষিত। এটি তৈরি হয়ে গেলে চট্টগ্রামবাসীর বহু কষ্টের অবসান হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বামীর ছুরিকাঘাতে রেহেনা আক্তার (২৯) নামে এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন। এ খুনের ঘটনায় জড়িত স্বামী নুরুল ইসলামকে আটক করেছে এপিবিএন পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে উখিয়া ক্যাম্প-১৯ এর নিজঘরে এ খুনের ঘটনা ঘটে।নিহত রেহেনা আক্তার উখিয়ার ক্যাম্প-১৯ এ-৭ ব্লকের আবু সাদেকের মেয়ে এবং রেহেনার স্বামী নুরুল ইসলাম একই ক্যাম্পের আব্দু শুক্কুরের ছেলে।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের দায়িত্বরত কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল হাদি।স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাত ৮ টার দিকে ক্যাম্প-১৯ এ নুরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী রেহেনা আক্তারের মধ্যে পারিবারিক কলহের জের ধরে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে নুরুল ইসলাম তার স্ত্রী রেহেনাকে ছুরিকাঘাত করলে ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান। খবর পেয়ে এপিবিএন পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘাতক নুরুল ইসলামকে আটক করে। তিনি আরও বলেন, আটক নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।ভোরের আকাশ/আজাসা
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া গ্রামে বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের পৈত্রিক বাড়িতে বুধবার থেকে শুরু হয়েছে বৈশাখী মেলা। প্রতি বছর বৈশাখের শেষ বুধবার থেকে পাঁচদিন ব্যাপী চলে এ মেলা।বৈশাখী মেলার প্রচলন সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষ জমিদার হরি কিশোর রায় চৌধুরীর সময়কাল থেকে শুরু হয়। শ্রী শ্রী কাল ভৈরবী পূজা উপলক্ষে তিনি এ মেলার প্রচলন শুরু করেছিলেন। এ বাড়িটি এলাকায় রায় বাড়ি নামেই পরিচিত।করোনা মহামারির সময় ও গত বছর আওয়ামী লগের কোন্দলের কারণ ব্যতীত ভৈরবী পূজা না হলেও মেলা কখনও মেলা বন্ধ হয়নি। বাড়ির সামনের খোলা মাঠ ও পুকুর ঘাটের সামনে বসে এ মেলা। এ বাড়িতে ১৮৬০ সালে জন্ম গ্রহণ করেন সত্যজিৎ রায়ের পিতামহ প্রখ্যাত শিশু সাহিত্যিক উপেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী। ১৮৮৭ সালে জন্ম গ্রহণ করেন সত্যজিৎ রায়ের পিতা ছড়াকার সুকুমার রায়। দেশ বিভাগের আগে উপেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী সপরিবারে কলকাতা চলে যান। উত্তরাধিকার কেউ না থাকায় বাড়িটি বর্তমানে সরকারের রাজস্ব বিভাগের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। সম্প্রতি বাড়ির ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি স্থাপনা ও পুকুর ঘাট সরকারের রাজস্ব বিভাগ থেকে সংস্কারের ফলে এর শোভা বর্ধিত হয়েছে। এ বার মেলা বেশ জাঁকজমকপূর্ণ হবে এমনটিই আশা করছেন এলাকাবাসী। বাড়িটি সংস্কারের ফলে মেলা ছাড়াও দর্শনার্থীগণ নিয়মিত রায় বাড়ি পরিদর্শনে আসেন।আয়োজকরা জানান, মেলায় রয়েছে রকমারি পণ্যের কয়েকশ স্টল। এসব স্টলে রয়েছে কাঠের আসবাবপত্র,গৃহস্থলি নানা সামগ্রী, খেলনা,মিষ্টান্নদ্রব্য,প্রসাধনীসহ নানা ধরনের পণ্য। এছাড়া রয়েছে শিশুদের চিত্ত বিনোদনের জন্য নাগরদোলাসহ নানা আয়োজনও।স্থানীয় বাসিন্দা সমাজকর্মী মানিক ভট্রাচায জানান- মেলা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কবি, সাহিত্যিক ও বহু দর্শনার্থীর আগমন ঘটে। প্রতিবছরের মতো এবারও মেলায় বসবে গান ও কবিতা পাঠের আসর।কটিয়াদী মডেল থানার পুলিশ ইনচাজ মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম বলেন, গ্রাম-বাংলার লোকজ সংস্কৃতি হলো মেলা। মেলা উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অন্যান্য বছরের ন্যায়ই থাকবে।কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.মাঈদুল ইসলাম বলেন, মেলার যাবতীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এ বছর মেলা থেকে ৭১ হাজার ৭ শত টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। মেলা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য দরদাতাকে একটি কমিটি মাধ্যমে পরিচালনার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করবে।ভোরের আকাশ/আজাসা