কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৫ ০১:০২ পিএম
সত্যজিৎ রায়ের পৈত্রিক বাড়িতে বৈশাখী মেলা শুরু
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া গ্রামে বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের পৈত্রিক বাড়িতে বুধবার থেকে শুরু হয়েছে বৈশাখী মেলা। প্রতি বছর বৈশাখের শেষ বুধবার থেকে পাঁচদিন ব্যাপী চলে এ মেলা।
বৈশাখী মেলার প্রচলন সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষ জমিদার হরি কিশোর রায় চৌধুরীর সময়কাল থেকে শুরু হয়। শ্রী শ্রী কাল ভৈরবী পূজা উপলক্ষে তিনি এ মেলার প্রচলন শুরু করেছিলেন। এ বাড়িটি এলাকায় রায় বাড়ি নামেই পরিচিত।
করোনা মহামারির সময় ও গত বছর আওয়ামী লগের কোন্দলের কারণ ব্যতীত ভৈরবী পূজা না হলেও মেলা কখনও মেলা বন্ধ হয়নি। বাড়ির সামনের খোলা মাঠ ও পুকুর ঘাটের সামনে বসে এ মেলা।
এ বাড়িতে ১৮৬০ সালে জন্ম গ্রহণ করেন সত্যজিৎ রায়ের পিতামহ প্রখ্যাত শিশু সাহিত্যিক উপেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী। ১৮৮৭ সালে জন্ম গ্রহণ করেন সত্যজিৎ রায়ের পিতা ছড়াকার সুকুমার রায়। দেশ বিভাগের আগে উপেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী সপরিবারে কলকাতা চলে যান। উত্তরাধিকার কেউ না থাকায় বাড়িটি বর্তমানে সরকারের রাজস্ব বিভাগের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। সম্প্রতি বাড়ির ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি স্থাপনা ও পুকুর ঘাট সরকারের রাজস্ব বিভাগ থেকে সংস্কারের ফলে এর শোভা বর্ধিত হয়েছে। এ বার মেলা বেশ জাঁকজমকপূর্ণ হবে এমনটিই আশা করছেন এলাকাবাসী। বাড়িটি সংস্কারের ফলে মেলা ছাড়াও দর্শনার্থীগণ নিয়মিত রায় বাড়ি পরিদর্শনে আসেন।
আয়োজকরা জানান, মেলায় রয়েছে রকমারি পণ্যের কয়েকশ স্টল। এসব স্টলে রয়েছে কাঠের আসবাবপত্র,গৃহস্থলি নানা সামগ্রী, খেলনা,মিষ্টান্নদ্রব্য,প্রসাধনীসহ নানা ধরনের পণ্য। এছাড়া রয়েছে শিশুদের চিত্ত বিনোদনের জন্য নাগরদোলাসহ নানা আয়োজনও।
স্থানীয় বাসিন্দা সমাজকর্মী মানিক ভট্রাচায জানান- মেলা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কবি, সাহিত্যিক ও বহু দর্শনার্থীর আগমন ঘটে। প্রতিবছরের মতো এবারও মেলায় বসবে গান ও কবিতা পাঠের আসর।
কটিয়াদী মডেল থানার পুলিশ ইনচাজ মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম বলেন, গ্রাম-বাংলার লোকজ সংস্কৃতি হলো মেলা। মেলা উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অন্যান্য বছরের ন্যায়ই থাকবে।
কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.মাঈদুল ইসলাম বলেন, মেলার যাবতীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এ বছর মেলা থেকে ৭১ হাজার ৭ শত টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। মেলা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য দরদাতাকে একটি কমিটি মাধ্যমে পরিচালনার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করবে।
ভোরের আকাশ/আজাসা