পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০২৫ ০৪:৩৮ পিএম
পাথরঘাটায় বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য হাহাকার
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী ৩৮৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট বিশাল জলরাশি ঘিরে রয়েছে বড় বড় নদী। চারপাশে অফুরন্ত পানির উৎস থাকলেও সুপেয় খাবার পানির তীব্র সংকট। মাটির নিচে পাথরের মতো শক্ত বস্তু থাকায় নলকুপ বসানো যায় না। এছাড়া চৈত্রর খরায় পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পানি পাওয়া যায় না। ফলে উপজেলার প্রায় ১ লাখ বাসিন্দার মধ্যে ৫০ ভাগ ও পৌর এলাকায় ২৭ হাজার বাসিন্দাদের মধ্যে ২০ ভাগ মানুষ এখনো সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত।
পাথরঘাটা পৌর এলাকার হাজামজা পুকুরের পানি ফিল্টারিং করে বাসিন্দাদের সরবরাহ করা হয়। টাকা দিয়ে ওই পানি কিনে খেতে হয় পৌরবাসীদের। সূর্য ওঠার আগে ও সূর্য ডোবার আগ মুহূর্তে প্রান্তিক জনপদের নারী-শিশুরা সারিবদ্ধভাবে পুকুর ও বিলের ডোবা থেকে পানি আনেন। কখনো কখনো এক কলসি পানির জন্যও দুশ্চিন্তায় পড়তে হয়। উপকূলীয় উপজেলা পাথরঘাটার বিভিন্ন এলাকার চিত্র এটি।
এখানকার বাসিন্দাদের মতে, বারো মাসই পানির সংকটে কাটাতে হয়। প্রাকৃতিক উৎসগুলো শুকিয়ে যাওয়া, সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গড়ে ওঠা জলাধারগুলো চাহিদা পূরণে সক্ষম না হওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে চলমান এ সমস্যা তাদের দৈনন্দিন ও প্রাত্যহিক জীবনের ওপর প্রভাব ফেলছে।
সদর ইউনিয়নের এমদাদুলসহ বেশ কয়েকজন জানান, তাদের এলাকার পানি লবণাক্ত। সরকারি অনেক জায়গা থাকলেও সরকারি কোনো পুকুর বা জলাধার না থাকায় প্রতিবছর দু-তিন মাস বিশুদ্ধ খাবার পানির কষ্টে জীবন কাটাতে হয় তাদের। এই তীব্র গরমে এলাকায় খাবার পানি ও দৈনন্দিন জীবনের ব্যবহারযোগ্য পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে।
নাচনাপাড়া ইউনিয়নের ফয়সাল বলেন, তীব্র তাপদাহে এলাকার সব পুকুরের পানি শুকিয়ে গেছে। অন্যদিকে, নলকূপের পানিও লোনা। সরকারি-বসরকারি যেসব খাবার পানির উৎস ছিল সেগুলো সংস্কার করার অভাবে সংকট বেড়েছে যা এই এলাকার মানুষের জনজীবন চরম হুমকিতে ফেলেছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, গরম শুরু হওয়ায় পাথরঘাটায় পানির সংকট আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণে একটি প্রকল্প চালু আছে। এ কাজটি শেষ হলে অনেকটাই সংকট সমাধান হবে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ