সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ০৩:৩৫ পিএম
সীতাকুণ্ডে বিলীন হচ্ছে গ্রামীণ খেলাধুলা
স্মার্টফোন যেন আরেক পৃথিবী। তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশই নিজেদের ডুবিয়ে রেখেছে স্মার্ট ফোনের মধ্যে। স্মার্ট ফোনের যাদুর ছোঁয়া তরুন প্রজন্ম ছাড়িয়ে শিশুদের মধ্যেও বিস্তার লাভ করছে। কিছু অভিভাবক আছেন সকালে অফিসে যায় আর ফিওে আসেন সেই সন্ধ্যায়। কোন কোন দিন রাতও হয়। বাসায় শিশুটির ঠিকমতো সময় দেওয়ার সুযোগ হয়ে উঠে না। ফলে শিশুটির সময় কাটছে স্মার্টফোনে। পেশাগত ও সাংসারিক কর্মব্যস্ততার মাঝে তাদের হারিয়ে যাচ্ছে সকাল থেকে সন্ধ্যা। শহরের পর গ্রামের শিশুরাও এখন মোবাইল আসক্ত হয়ে পড়েছে। স্মার্টফোনের যাদুর ছোঁয়ায় তাদের সময় কাটছে রুমে বসে ফলে তারা অপরিচিত থাকছে গ্রামীণ খেলাধুলার সাথে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. এস এম সাইফুল আলম বলেন, এক সময় গ্রামাঞ্চলে মাঠে-ঘাটে, পথে-প্রান্তরে শিশু থেকে বৃদ্ধরাও গ্রামীণ যেসব খেলায় মগ্ন থাকতো এখন আর সে সব খেলা তেমন চোখে পড়েনা। এসব খেলায় থাকতো শরীরচর্চা ও বিনোদন। শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ সাধন হতো। গ্রামীণ এসব খেলায় থাকতো গ্রাম বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য।
পৌরসদরস্থ ফারুক মোবাইল সার্ভিসিং এর সত্ত্বাধিকারী নুনাছড়ার বাসিন্দা রায়হান উদ্দিন ফারুক বলেন, এক সময় গ্রাম-বাংলায় অসংখ্য খেলাধুলার প্রচলন ছিল, যেমন কানামাছি ভোঁ-ভোঁ, যাকে পাবি তাকে ছোঁ, গোল্লা ছুট, দাঁড়িয়া বান্দা, কুতুকত, নুনতা বউছি, ডাংগুলি, মৌরগ লড়াই, মার্বেল, লাটিম ঘুড়ানো, ঘূড়ি উড়ানো, চাকা নিয়ে রাস্তায় দৌড়ানো, মেয়েদের লাফ দিয়ে রশি খেলা, পুতুল খেলা, বালিশ খেলা, সুঁই সুতা, জোড়-বিজোড়, হাড়ি ভাঙ্গা, ষোল ঘুঁটি, লুডু খেলা, বাঘবন্দী, উচ্চ লাফ, দৌড় ও সাঁতার ইত্যাদি। গ্রামীণ এসব খেলার স্থান দখল করেছে স্মার্টফোন।
সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা ও রোজ গার্ডেন একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক খোরশেদ আলম জানান, গ্রামীণ এ খেলাগুলোতে বিনোদন ছাড়াও ছিল শিক্ষামূলক। খেলা থেকে শিশুরা বড়দের সঙ্গে কেমন আচরণ করতে হয় তা যেমন শিখতো ঠিক তেমনি ভাবে ছোটদের প্রতিও থাকতো স্নেহ ভালোবাসা শিক্ষা। গ্রামীণ এসব খেলায় শিশুরা বন্ধুত্ব, ধৈর্য, শৃঙ্খলা, একতা, নেতৃত্ব ও নৈতিকতার প্রশিক্ষণ নিতো দারুণ ভাবে। গ্রামীন এসব খেলা আর চোখে পড়েনা। গ্রাম-বাংলার অধিকাংশ শিশু এসব খেলার সাথে অপরিচিত। শিশুদের এসব খেলার সেই স্থানটি আজ দখল করেছে স্মার্টফোন।
ভোরের আকাশ/এসএইচ