পাবনা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ০৪:১৬ পিএম
ঈশ্বরদীতে ৪৪ চালকলের নিবন্ধন বাতিল
পাবনার ঈশ্বরদীতে সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ না করায় ৪৪টি চালকলের লাইসেন্স বাতিল করেছে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়।
শনিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঈশ্বরদী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহিনুর আলম।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তিনি বলেন, যারা চাল সরবরাহে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। সরকারি যেকোনো কাজে চুক্তিবদ্ধ হয়ে তা বাস্তবায়ন না করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঈশ্বরদীতে মোট ১৪৩টি চালকলের মধ্যে চুক্তির আওতায় আনা হয়েছিল ৯৯টি। এর মধ্যে ৮৩টি চালকল পুরো চুক্তির চাল সরবরাহ করেছে, ১৬টি আংশিক চাল দিয়েছে এবং ৪৪টি চালকল কোনো চাল সরবরাহ করেনি। ফলে এ মৌসুমে ঈশ্বরদীতে মোট সংগ্রহ হয়েছে ৪ হাজার ৬৪৩ মেট্রিক টন চাল, যা চুক্তির মাত্র ৬৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। চুক্তির আংশিক চাল সরবরাহকারী চালকলগুলোর জামানতও অনুপাতে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে ঈশ্বরদী সরকারি গুদামে চাল সরবরাহের লক্ষ্যে ৯৯টি চালকলের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭ হাজার ২৫৮ মেট্রিক টন সেদ্ধ চাল সংগ্রহের। প্রতি কেজি সেদ্ধ চাল ৪৭ টাকা এবং আতপ চাল ৪৬ টাকা দরে কেনা হয়।
সরবরাহে ব্যর্থ এক চালকল মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এক কেজি চাল উৎপাদনে খরচ পড়ে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা। অথচ সরকার নির্ধারিত মূল্যে চাল সরবরাহ করতে গেলে বড় ধরনের লোকসান হয়। এজন্য ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকে চাল সরবরাহ করতে পারেননি।
আরেকজন চালকল মালিক বলেন, আমরা কয়েকবার দাম পুনর্নির্ধারণের দাবি করেছিলাম, কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। লোকসান দিয়ে ব্যবসা করা সম্ভব নয়।
ঈশ্বরদী উপজেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল হক দুলাল মণ্ডল বলেন, সরকার নির্ধারিত দামে চাল সরবরাহ করে আমি বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। ১২ টন চাল সরবরাহ করে প্রায় ৩৪ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। যদি সঠিক মূল্য নির্ধারণ করা হয়, তাহলে ব্যবসায়ীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে চাল সরবরাহ করবে।
পাবনা জেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক হাসান আল নাঈম বলেন, যে সব চালকল চুক্তি করার পরও চাল সরবরাহ করেনি, তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ