ফেনীতে নদীর পানি কমলেও ভোগান্তিতে প্লাবিত এলাকার মানুষ
টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে অন্তত ২০টি স্থানে বাঁধ ভেঙে গেছে। ফলে সীমান্তঘেঁষা ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বহু গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। কিছু কিছু এলাকায় নদীর পানি কমতে শুরু করলেও দুর্ভোগ কাটেনি দুর্গত মানুষের।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, পরশুরামে ১২টি ও ফুলগাজীতে ৮টি পয়েন্টে নদীর বাঁধ ভেঙেছে। এর মধ্যে মুহুরী নদীতে ১০টি, কহুয়ায় ৬টি ও সিলোনিয়ায় ৪টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর ফলে অন্তত ৩৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন এলাকা প্লাবনের আশঙ্কা রয়েছে।
ফুলগাজীর দৌলতপুরের বাসিন্দা রেজিয়া বেগম বলেন, “গত বছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর কিছুটা সামলে উঠেছিলাম, এবার আবার সব পানিতে তলিয়ে গেছে। প্রতিবারই জুলাই-আগস্টে বাঁধ ভাঙে, এখন মনে হয় এই এলাকায় জন্মেই ভুল করেছি।”
উত্তর শ্রীপুরের বাসিন্দা আলী আজ্জম বলেন, “বাঁধে ভাঙনের কারণে তীব্র স্রোতে পানি ঢুকছে। বিদ্যুৎ নেই, নেটওয়ার্কও নেই। সরকার বদলায়, কিন্তু আমাদের ভাগ্য বদলায় না।”
গাইনবাড়ির পুষ্পিতা রাণী বলেন, “ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে গেছে। বাচ্চা ও বয়স্কদের নিয়ে চরম কষ্টে আছি। শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট চরমে। বাঁধ মজবুত না হলে প্রতিবছরই এই দুর্ভোগ হবে।”
ফেনীর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, তিন দিন ধরে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বুধবার (৯ জুলাই) রাত ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড হয়েছে ৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টি। বৃহস্পতিবারও হালকা বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, “রাত ৯টার দিকে নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নামে। তবে ভাঙন দিয়ে পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। পানি কমার পরই বাঁধ মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, পরশুরাম, ফুলগাজী ও সদর উপজেলায় প্রায় ১৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে দেড় হাজারের বেশি মানুষ। ত্রাণ সহায়তা হিসেবে ছয় উপজেলায় সাড়ে ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
ভোরের আকাশ/হ.র
সংশ্লিষ্ট
সমাপনী কুচকাওয়াজের মাধ্যমে আজ শপথ নেবেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ১০৩তম রিক্রুট ব্যাচের ৬৯৪ সৈনিক (নারী-পুরুষ)। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকালে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বায়তুল ইজ্জতে বিজিবির ঐতিহ্যবাহী প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের (বিজিটিসিঅ্যান্ডসি) বীর উত্তম মজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে নবীন সৈনিকদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ শুরু হবে।অনুষ্ঠানে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নবীন সৈনিকদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন করবেন।এ সময় বিজিটিসিএন্ডসি’র কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গাজী নাহিদুজ্জামান উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। ১০৩তম রিক্রুট ব্যাচের মৌলিক প্রশিক্ষণ গত ২৬ জানুয়ারি বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজ (বিজিটিসিএন্ডসি)-এ শুরু হয়। দীর্ঘ ২৪ সপ্তাহের কঠোর ও কষ্টসাধ্য প্রশিক্ষণ সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন হয়।সর্বমোট ৬৯৪ জন রিক্রুটের মধ্যে ৬৫৮ জন পুরুষ ও ৩৬ জন নারী রিক্রুট মৌলিক প্রশিক্ষণ সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার হরিণছড়া চা বাগানে সেপটিক ট্যাংক থেকে ৪ তরুণের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেপটিক ট্যাংকের গ্যাসের বিষক্রিয়ায় এই মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছে চিকিৎসক।বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকালে শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। চার তরুণ হলেন শ্রীমঙ্গল হরিণছড়া চা বাগানের বাসিন্দা রানা নায়ক (১৭), শ্রাবণ নায়েক (১৯), কৃষ্ণ রবিদাস (২০) ও নিপেন ফুলমালি (২৭)।এর আগে বুধবার (৯ জুলাই) রাত দেড়টার দিকে উপজেলার হরিণছড়া চা বাগানের একটি সেপটিক ট্যাংকে নেমে এ দুর্ঘটনা ঘটে।জানা যায়, সেপটিক ট্যাংকে মোবাইল পড়ে যাওয়ার পর একজন তা তুলতে যায়। এরপর একে একে আরও ৪ জন যায় এবং সবাই অচেতন হয়ে পড়ে। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাদেরকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ৪ জনকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর একজনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম জানান, সেপটিক ট্যাংক থেকে মোবাইল তুলতে গিয়ে গ্যাসের বিষক্রিয়ায় ৪ তরুণের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মরদেহ ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গাজীপুর জেলার পাঁচটি আসনের জন্য পাঁচজন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।বৃহত্তর গাজীপুরের মধ্যে রয়েছে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, কালিয়াকৈর, শ্রীপুর, কাপাসিয়া ও কালীগঞ্জ উপজেলা। এখানে রয়েছে জাতীয় সংসদের ৫ টি নির্বাচনী আসন। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করছে।গাজীপুর মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক জামাল উদ্দিন ও গাজীপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন মাওলানা শেফাউল হক মনোনয়নের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।গাজীপুর জেলার ৫ সংসদীয় আসনে জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত প্রার্থীরা হলেনগাজীপুর-১( কালিয়াকৈর) আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত সংসদ সদস্য পদ প্রার্থী হলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব ও আশির দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী ছাত্র শিবিরের মেধাবী ছাত্র নেতা মুহাম্মদ শাহ আলম বকশী।গাজীপুর-২( সদর) আসনে ঘোষিত প্রার্থী হলেন, গাজীপুর মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য হোসেন আলী। হোসেন আলী অবিভক্ত গাজীপুর জেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি ছিলেন।গাজীপুর-৩ (শ্রীপুর) আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী হলেন, গাজীপুর জেলা জামায়াতের আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ড. জাহাঙ্গীর আলম। জাহাঙ্গীর আলম একসময় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিবিরের ডাকসাইটের নেতা ছিলেন।গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) সংসদীয় আসনে জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত এমপি প্রার্থী হলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বর্তমানে গাজীপুর সদর মেট্রো থানার আমীর অধ্যক্ষ সালাহউদ্দিন আইউবী। সালাউদ্দিন আইউবী ছাত্র শিবিরের গাজীপুর মহানগরের প্রথম সভাপতি ছিলেন।গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ) আসনে জামায়াতের প্রার্থী হলেন গাজীপুর মহানগর জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য খায়রুল হাসান। তিনি অবিভক্ত গাজীপুর জেলার ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি ছিলেন। ২০১৪ সালে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন। ওই নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে তৎকালীন সরকার দলীয় লোকজন প্রভাববিস্তার করে তাঁর নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেয়া হয়েছিলো বলে ব্যাপক অভিযোগ উঠেছিলো।গাজীপুর মহানগর জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন বলেন, আমরা গাজীপুরের পাঁচটি আসনের জন্য আমাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছি। ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষা, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় এবং বাংলাদেশকে একটি আধুনিক ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় তারা নিরলসভাবে কাজ করবেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ফেনীতে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২০টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে সীমান্তবর্তী ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে হাজারো মানুষ। দুই উপজেলার কিছু এলাকায় বৈদ্যুতিক খুঁটি, মিটার ও ট্রান্সফরমার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে প্রায় ৩১ হাজার ২০০ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রেখেছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে বিপাকে পড়েছে বানভাসি মানুষ।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফুলগাজী উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়ন, ফুলগাজী সদরের কিসমত ঘনিয়ামোড়া, উত্তর শ্রীপুর, পূর্ব ঘনিয়ামোড়া, উত্তর নিলক্ষ্মী, পশ্চিম ঘনিয়ামোড়া, দেড়পাড়া, নিলক্ষ্মী, গোসাইপুর, মন্তলা, গাবতলা, কহুমা, জগতপুর এবং পরশুরাম উপজেলার ধনীকুন্ডা, শালধর, বেড়াবাড়িয়াসহ বেশকিছু এলাকায় বন্ধ হয়ে গেছে মোবাইল নেটওয়ার্ক। এতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মানুষজন।ফুলগাজীর জগতপুর এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ পারভেজ বলেন, বিদ্যুৎ না থাকলে বিকল্প কিছু দিয়ে চলা যায়, কিন্তু ইন্টারনেট বা মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকলে কারো সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ নেই। এ পরিস্থিতিতে দেশে-বিদেশে অবস্থান করা আত্মীয়স্বজনরা আতঙ্কিত হয়ে যায়।দেলোয়ার হোসেন নামে আমজাদহাটের আরেক বাসিন্দা বলেন, গত বছরের বন্যায়ও একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি। কিন্তু সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি। তারা জেনারেটরের মাধ্যমে মোবাইল টাওয়ারগুলো সচল রাখলে মানুষ খুবই উপকৃত হতো। বিশেষ করে প্রবাসীরা বেশি দুশ্চিন্তায় রয়েছে।ফুলগাজী পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম মো. হাবিবুর রহমান বলেন, স্থানীয় মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে উপজেলার ৩০ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে। এ উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা ৩৮ হাজার।পরশুরাম পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম মো. সোহেল আকতার বলেন, এ উপজেলায় ৩৩ হাজার গ্রাহকের মধ্যে ৬০ শতাংশ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সংযোগ দেওয়া হবে। তবে বিদ্যুতের বিভিন্ন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সহসাই সংযোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নেই।ভোরের আকাশ/এসএইচ