ছবি: সংগৃহীত
নেত্রকোনা পৌর এলাকার নাগড়া আনন্দবাজার এলাকার বাসিন্দা রাজন মিয়া। থাকেন সরকারি জায়গায় টিনের একটি ঝুপড়ি ঘরে। তাতে বেশিরভাগ জায়গায় পলিথিন দিয়ে ঘেরা। বৃষ্টি এলে সারা ঘরে পানির থাকে। ছোট একটা চৌকিতে স্বামী-স্ত্রীসহ ৬ জন মানুষের গাদাগাদি করে বসবাস। অভাবের তাড়নায় দুটি সন্তান বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ওই দম্পতি।
রাজন কখনও রাজমিস্ত্রীর কাজ, কখনও রিকশা চালানো আবার কখনও দিনমজুরির কাজ করেন। যখন যে কাজ পান তখন তাই করেন তিনি। কাজ না থাকলে রোজগারও নেই। অথচ ঘরে ৪ সন্তান ও স্ত্রী। বড় দুই ছেলে ৬ ও ৪ বছর বয়সী। কিন্তু অপুষ্টি ও ক্ষুধায় ভুগতে ভুগতে ওদের দেখলে মনে হয় ৩ ও ২ বছর বয়স। পরের দুটো সন্তান যমজ (একটা ছেলে, একটা মেয়ে)। মাত্র দু’মাস বয়স।
কিন্তু এরাও মায়ের বুকের দুধ পায় না। কোনো কোনো দিন খেতেই পান না। কৌটার দুধ কিনে খাওয়ানোরও সাধ্য নাই। তাই বাধ্য হয়ে বাবা-মা সিদ্ধান্ত নেন তারা যমজ বাচ্চা দুটি বিক্রি করে দিবেন৷
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের মিটিং চলাকালে স্থানীয় একজন সমাজকর্মী উপস্থিত হয়ে জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামানকে বিষয়টি অবহিত করেন। রাতেই নাগড়া এলাকায় জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাফিকুজ্জামান, সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শাহ আলম, এনডি হৃত্তিক চৌধুরীকে নিয়ে রাজনের পরিবারটি দেখতে যান।
জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, এই পরিবারটির কথা আমাকে স্থানীয় একজন সমাজকর্মী জানান। সারাদিনের কর্মব্যস্ততার পর বুধবার রাতে সহকর্মীদের নিয়ে ছুটে যাই দারিদ্র্যের নির্মম কষাঘাতে জর্জরিত অসহায় পরিবারটির কাছে। সঙ্গে কিছু শুকনা খাবার (চাল, ডাল, লবণ,তেল কয়েকটি কৌটার দুধ, কিছু চিপস, বিস্কিট) ও কিছু নগদ টাকা দিই।
অনেক বুঝিয়ে ৬ বছর বয়সী ছেলেটিকে সরকারি শিশু পরিবারে দিয়ে দেওয়ার জন্য রাজি করাই। বাবা, মা দুজনেই কথা দিয়েছেন তারা আর বাচ্চা বিক্রির কথা ভাববেন না। ঘরটি মেরামতের জন্য টিন চেয়েছেন, দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছি। একটি রিকশা কিনে দেওয়ার জন্য দাবি করেছেন, তাও দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছি। পরিবারটিকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেওয়ার চেষ্টা করবো।
দরিদ্র রাজন মিয়া বলেন, আমি যখন যে কাজ পাই তাই করি। কিন্তু মাঝে মাঝেই কাজ পাই না। কাজ না পাইলে সবাই না খেয়ে থাকি। শিশুরা খাবারের জন্য কান্না করে। ওদের খাবার না দিতে পেরে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিই। এখন ডিসি স্যার এসে সহযোগিতা করেছেন। সন্তান বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন।
ভোরের আকাশ/মো.আ.
সংশ্লিষ্ট
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ফরিদপুর জুড়ে বইছে উৎসবের আমেজ। জেলার ৯টি উপজেলায় মোট ৭৫৮টি পূজামণ্ডপে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। প্রতিমার সাজসজ্জা ও রঙের কাজ এখন শেষ ধাপে।এ বছর মহালয়ার মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসবের সূচনা হয়েছে। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠীর মাধ্যমে মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে এবং ২ অক্টোবর মহাদশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে পূজার সমাপ্তি ঘটবে।মৃৎশিল্পীরা জানান, প্রতিমার দোঁ-মাটি কাজ শেষ হয়েছে, এখন চলছে রঙ ও সাজসজ্জা। পূজার শাস্ত্রীয় বর্ণনা অনুযায়ী এ বছর দেবী দুর্গা গজে (হাতি) করে আগমন করছেন, যা শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক। তবে গমন হবে দোলায় (পালকি), যা মহামারি বা অশুভ সংকেত হিসেবে ধরা হয়।পূজাকে কেন্দ্র করে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে প্রশাসন।ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল জানান, প্রতিটি পূজামণ্ডপকে নিরাপত্তার চাদরে আনা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপে সার্বক্ষণিক পুলিশ মোতায়েন থাকবে, অন্য মণ্ডপগুলোতে দায়িত্ব পালন করবেন আনসার সদস্যরা।নিরাপত্তায় থাকছে-৭১টি মোটরসাইকেলভিত্তিক টহল দল,১৫টি ভ্যান টিম,১১টি চেকপোস্ট,ডিবি পুলিশের ৩০ জন সদস্য,ডিএসবি-র ২৫ জন সদস্য,এছাড়া সাদা পোশাকের পুলিশও মাঠে কাজ করবে।শহর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি রাম দত্ত জানান, প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী পূজার সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মন্দির কমিটিগুলোকে প্রয়োজনীয় পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো,এবার পূজার নিরাপত্তায় স্থানীয় বিএনপি, যুবদলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তারা পালাক্রমে মন্দিরে নিরাপত্তা কার্যক্রমে অংশ নেবেন।জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পূজার সময় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকবে। পূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে প্রশাসন পূজা উদযাপন কমিটির সঙ্গে সমন্বয়ে সব প্রস্তুতি নিয়েছে।” ভোরের আকাশ/হ.র
গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীর আমবাগ এলাকায় একটি ঝুট গুদামে আগুন লেগে সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিটের প্রচেষ্টায় বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।প্রাথমিকভাবে সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে আগুন লেগে যায়। পরে কোনাবাড়ী মর্ডান, সারাবো, কাশিমপুরসহ আশপাশের ইউনিটগুলো দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। আগুনের তীব্রতা বেড়ে আশপাশের একটি স্কুলসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ছড়িয়ে পড়লেও ফায়ার সার্ভিসের যৌথ প্রচেষ্টায় তা নিয়ন্ত্রণে আসে।গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম জানান, সাড়ে তিন ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। তবে আগুন কীভাবে লেগেছে এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো নির্ধারণ হয়নি। ভোরের আকাশ/হ.র
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার বিশনন্দী ফেরিঘাট সংলগ্ন মেঘনা নদীর পারে দখলমুক্ত সরকারি জমিতে ইকোপার্ক নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবং উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, প্রায় ৭০ বছর ধরে সরকারি ২৩ একর জমি জবরদখলে ছিল। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় জমিটি দখলমুক্ত করা সম্ভব হয়েছে।তিনি আরও বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সংরক্ষণ এবং জনসাধারণের জন্য বিনোদনের সুযোগ তৈরির উদ্দেশ্যে ইকোপার্ক নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি পরিবেশবান্ধব পর্যটন উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং নির্মাণ শেষে স্থানীয় জনগণ ছাড়াও জেলার মানুষের জন্য আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হবে।পরে জেলা প্রশাসক আড়াইহাজার পৌরসভার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন এবং মণ্ডপগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে পূজা উপলক্ষে চেক ও চাল বিতরণ করেন।এ সময় উপস্থিত ছিলেন আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মো. মামুনুর রশীদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নঈমউদ্দিন, উপজেলা প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আনিসুর রহমানসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা।ভোরের আকাশ/এসএইচ
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ১০০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) একযোগে অনুষ্ঠিত হলো “ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট অলিম্পিয়াড ২০২৫”। সকাল থেকেই শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠান থেকে ১০০ জন করে মোট ১০ হাজার শিক্ষার্থী অভিন্ন প্রশ্নপত্রে অংশগ্রহণ করে।বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ সংরক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে আয়োজন করা হয় এ প্রতিযোগিতা। প্রাথমিক পরীক্ষার পর প্রতিটি প্রতিষ্ঠান থেকে ৫ জন করে মোট ৫০০ জন শিক্ষার্থীকে বাছাই করে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এরপর প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের প্রথম স্থান অধিকারী মোট ১০০ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে আগামী মাসের প্রথমার্ধে উপজেলা পর্যায়ে ফাইনাল রাউন্ড অনুষ্ঠিত হবে। ফাইনালে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার ও সনদ তুলে দেওয়া হবে।দিনব্যাপী আয়োজনে শিক্ষার্থীরা পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যৎ গড়ার নানা ভাবনা ও উদ্যোগ তুলে ধরে। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাছলিমা শিরিন ফতুল্লা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও কমর আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। তিনি ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট বিষয়ক একটি সচেতনতামূলক সেশন পরিচালনা করেন এবং শিক্ষার্থীদের পরিবেশ নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে ফতুল্লা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের সড়কের উন্নয়ন ও জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন।অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি), ফতুল্লা মোঃ আসাদুজ্জামান নূর, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সিদ্দিরগঞ্জ দেবজানি কর, সদর উপজেলা প্রকৌশলী ও আয়োজক উপ-কমিটির সভাপতি ইয়াসির আরাফাত এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা পবিত্র কুমার মণ্ডল।এছাড়া শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও অনুষ্ঠানে অংশ নেন।অলিম্পিয়াড শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফতুল্লা এলাকার পূজা বিসর্জন ঘাট ও দুটি মন্দিরের প্রস্তুতি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। তিনি আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।আয়োজক কর্তৃপক্ষ আশা প্রকাশ করেছে, এ আয়োজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবেশ রক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ