সন্ধ্যার পর যানজটে অচল মানিকগঞ্জ শহর
ঈদুল আজহা সামনে রেখে জমে উঠেছে মানিকগঞ্জ শহরের বাজার। বিকেল গড়াতে না গড়াতেই শহরের দুধবাজার, খালপাড়, স্বর্ণকারপট্টি ও শহীদ রফিক সড়কে শুরু হয় যানবাহনের চাপ। সন্ধ্যার পরপরই তা রূপ নেয় তীব্র যানজটে। মঙ্গলবার (৩ জুন) রাত আটটার দিকে শহরের প্রধান বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সড়কে নেই কোনো ট্রাফিক সদস্য। রিকশা, হ্যালোবাইক, মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার চলছে এলোমেলোভাবে। নেই কোনো নিয়ন্ত্রণ।
শহীদ রফিক সড়কটি শহরের ব্যস্ততম সড়কগুলোর একটি। তবে রাস্তাটির দুই পাশে পার্ক করা হয়েছে শতাধিক মোটরসাইকেল। মাঝখানে দাঁড়িয়ে ভ্যান বসিয়েছেন হকাররা। ফুটপাত নেই, হাঁটার জায়গাও নেই। ফলে বিপরীত দিক থেকে আসা যানবাহনের সঙ্গে সৃষ্টি হচ্ছে সংঘর্ষের মতো পরিস্থিতি।
স্থানীয় ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন বললেন, "এই জট প্রতিদিন সন্ধ্যার পর হয়। ক্রেতারা এসে ফিরে যায়। আমাদেরও ক্ষতি হয়।"
পথচারী রবিউল ইসলাম বললেন, "এই শহরে রিকশা আর হ্যালোবাইক নিয়ন্ত্রণের কেউ নেই। ট্রাফিক পুলিশ চোখে পড়ে না।"
একই অভিযোগ করলেন আরও কয়েকজন পথচারী ও দোকান মালিক। কেউ কেউ বললেন, রাস্তায় চলতে ভয় লাগে। রিকশা ও মোটরসাইকেল চলে দেদারসে। নেই সিগনাল, নেই নির্দেশনা।
মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি গোলাম ছারোয়ার ছানু বললেন, "গত ঈদে ট্রাফিক পুলিশকে সন্ধ্যায় মাঠে দেখা গিয়েছিল। এবার তাদের দেখা যাচ্ছে না। অথচ এই সময়ই বেশি প্রয়োজন। ঈদের অন্তত ১০ দিন তাদের রাতে দায়িত্বে থাকা জরুরি।"
তবে ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) আব্দুল হামিদ বলেন, "আমাদের অধিকাংশ সদস্য এখন হাইওয়ে ডিউটিতে। তবে কোথাও সমস্যা হলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিই। খালপাড় এলাকায় লোক পাঠানো হচ্ছে।"
নাগরিকেরা বলছেন, সন্ধ্যার পর যখন শহরে বাড়ে ভিড়, ঠিক তখনই সরে যান ট্রাফিক পুলিশ। অথচ ঈদের সময় শহরে আসে আশপাশের উপজেলার হাজারো মানুষ। ফলে অল্প সময়েই চাপ পড়ে সড়কে।
বিজ্ঞজনেরা বলছেন, যানজট রোধে প্রয়োজন আগেভাগেই পরিকল্পনা। নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ট্রাফিক মোতায়েন, ফুটপাত উচ্ছেদ, পার্কিং নিয়ন্ত্রণ ও রিকশা চলাচলে শৃঙ্খলা আনাই এখন জরুরি।
নাগরিকদের দাবি, ঈদ সামনে রেখে অন্তত আগামী এক সপ্তাহ সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শহরে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে হবে। না হলে এই জট আরও বাড়বে, দুর্ভোগও তেমনি দীর্ঘ হবে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
গাজীপুরের কালীগঞ্জে মাদকবিরোধী লিফলেট বিতরণ, মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। হিলফুল ফুযুল যুব সংগঠনের উদ্যোগে রোববার (৮ জুন) বেলা ১১টায় উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের রাথুরা গ্রামে মাদকবিরোধী এ সচেতনতামূলক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।জানা গেছে, "মাদককে না বলুন, জীবনকে ভালোবাসুন" এবং "আপনার সন্তান কার সঙ্গে মিশছে, খোঁজ রাখছেনতো?"—এই শক্তিশালী বার্তাগুলো তুলে ধরে আয়োজিত এ কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য ছিল এলাকায় ক্রমবর্ধমান মাদকের প্রসার রোধ এবং যুব সমাজের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি।এ সময় মাদকবিরোধী একটি মিছিল গাজীপুর-ইটাখলা আঞ্চলিক মহাসড়কের তালতলা থেকে শুরু হয়ে রাথুরা বাজার হয়ে জাকির মার্কেটে গিয়ে শেষ হয়। এতে এলাকার তরুণ, অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও সমাজ সচেতন নাগরিকরা অংশগ্রহণ করেন। মিছিলে সবার হাতে ছিল সচেতনতা মূলক ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড।হিলফুল ফুযুল যুব সংগঠনের সভাপতি মাওলানা মাসুম বিল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন।সংগঠনের সহ সভাপতি হাফেজ মাওলানা নাজমুল হাসানের পরিচালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন স্থানীয় ইউপি সদস্য খলিলুর রহমান, কালীগঞ্জ উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক সরকার, হিলফুল ফুযুল যুব সংগঠনের সেক্রেটারি মাওলানা ফয়সাল আহমাদ, ক্যাশিয়ার হাফেজ মাওলানা মুফতী আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।সমাবেশে বক্তারা বলেন, “আজকের তরুণরাই আগামী দিনের নেতৃত্ব দিবে। তাই তাদের সুস্থ ও মাদকমুক্ত রাখা আমাদের সামাজিক দায়িত্ব।”তারা আরও বলেন, “পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের যৌথ প্রচেষ্টাতেই মাদকের এই ভয়াল ছায়া থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।”"এসো, নেশা ছেড়ে কলম ধরি, মাদকমুক্ত সমাজ গড়ি"—এই আহ্বান জানিয়ে আয়োজক হিলফুল ফুযুল যুব সংগঠন ভবিষ্যতেও এ ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ভারতের বিভিন্ন স্থানে করোনার প্রকোপ বাড়ছে। এরই মধ্যে দেশটির এসব স্থানে ওমিক্রনের একটি নতুন এক ধরন বা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে। এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।এই সংক্রমণ এড়াতে দেশের সকল নৌ, স্থল ও আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর সমুহে স্ক্রিনিংসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মানার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। চলতি মাসের ৪ জুন রোগ নিয়ন্ত্রণ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাখালীর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. ফরহাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক আদেশ জারি করা হয়েছে।এমতাবস্থায় ভারতসহ বিভিন্ন সংক্রমিত দেশ থেকে আগত সন্দেহজনক যাত্রীদের দেশের স্থল, নৌ বন্দর এবং বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশন ও আইএইচআর হেলথ ডেস্কের সহায়তার বিষয়ে স্বাস্থ্য বার্তা প্রদান এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিবিড়ভাবে পরিচালনা করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।রোববার (৮ জুন) সকাল ১০টার দিকে সরেজমিনে বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে দেখা গেছে, মেডিকেল ডেস্কে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কর্মকর্তাদের ভারত থেকে ফিরে আসা যাত্রীদের করোনার উপসর্গ আছে কি না তা যাচাই-বাছাই করতে দেখা গেছে।বেনাপোল ইমিগ্রেশনের উপ-সহকারী মেডিক্যাল অফিসার আব্দুল মজিদ বলেন, ভারতে জেনেটিক সিকুয়েন্স পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে, ভারতের কিছু কিছু স্থানে ওমিক্রন ধরনের নতুন উপধরন সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে করোনার এ ধরনটি যাতে ছড়াতে না পারে সেজন্য স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সতর্কতার জন্য ভারত ফেরত প্রত্যেক যাত্রীকে আমরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছি। তিনি বলেন, আমাদেরকে পরিচালক স্যার নির্দেশনা দিয়েছেন, যদি কারও শরীরে করোনা বা ওমিক্রনের উপধারার উপসর্গ পাওয়া যায় তাহলে যেন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসোলেশন করে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
কোরবানির ঈদের দিন মৌলভীবাজারের পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় দুই ভাইসহ চার জনের প্রাণ গেছে। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন।শনিবার রাত ১০টার দিকে মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় দুটি মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।উপজেলার শ্যামের কোনার কাছারি বাজার এলাকায় মৌলভীবাজার-শমশেরনগর সড়কে ওই দুর্ঘটনায় কমরুল মিয়া (৩০) ও জুবেদ মিয়া (২৮) নামে দুজন নিহত হন।মাহবুব মিয়া নামে আরো একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।নিহত জুবেদ মিয়া শ্যামেরকোনা গ্রামের আনকার মিয়ার ছেলে। আর কামরুল কমলগঞ্জ উপজেলার চণ্ডিপুর গ্রামের হারিছ মিয়ার ছেলে।মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আহমেদ ফয়সাল জামান বলেন, তিনজনকেই এ হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাদের মধ্যে দুজন আগেই মারা যায়। অন্যজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ওসমানী মেডিকেলে পাঠানো হয়।আরেক ঘটনায় একই দিনে শনিবার বিকেলে বড়লেখা উপজেলার কাঁঠালতলী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে। মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কারের মুখোমুখি সংঘর্ষে সাহেদ হোসেন সুমন (২৬) ও রুমন আহমদ (২২) নামে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়।বড়লেখা থানার ওসি আবুল কাশেম সরকার জনান, নিহত সুমন ও রুমন বড়লেখা পৌরসভার মহুবন্দ গ্রামের আলাউদ্দিন মিয়ার ছেলে।জানা গেছে, বিকেলে কোরবানির গরুর মাংস শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে দিতে ছোট ভাই রুমনকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে দক্ষিণভাগের দিকে যাচ্ছিলেন সাহেদ। বিপরীত দিক থেকে আসা একটি প্রাইভেট কারের সঙ্গে তাদের মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।এতে ঘটনাস্থলেই সাহেদ মারা যান। স্থানীয়রা রুমনকে উদ্ধার করে প্রথমে বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেটের ওসমানী মেডিকেলে নিয়ে যেতে বলেন। ওসমানীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে রুমনও মারা যান।দুর্ঘটনার পর প্রাইভেট কারটি জব্দ করেছে পুলিশ। তবে চালক পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ওসি।ভোরের আকাশ/জাআ
ঈদের দিন সুখ-আনন্দে ভাসছিলো তারা, মন্ত্রমুগ্ধ সেই মুহূর্তে এসে আছড়ে পড়ল এক মর্মান্তিক ঘটনা, যা পরিবারে বয়ে আনলো শোক। মৌলভীবাজারের বড়লেখায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান দুই সহোদর।শনিবার (৭ জুন) বিকেলে মৌলভীবাজারের বড়লেখার কাঠালতলী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান দুই ভাই সাহেদ হোসেন (২৬) ও রুমন আহমদ (১৯)।সংশ্লিষ্টরা জানান, তারা বড়লেখা পৌরসভার মহুবন্দ গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে।প্রশাসন ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিকেলে কোরবানি মাংস শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে সাহেদের মোটরসাইকেলে বসে ছিলেন রুমন। তারা দক্ষিণভাগের দিকে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনাস্থলে বিপরীত দিক থেকে আসা এক প্রাইভেট কারের সাথে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান বড় ভাই সাহেদ। ছোট ভাই রুমনকে গুরুতর আহত অবস্থায় বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি দেখা গেলে তাঁকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। পরে সিলেটে রুমনেরও মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত হয়।বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম সরকার বলেন, প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলের এই মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন।নিহতদের পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় তারা লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দ্রুত দাফনের আবেদন করেছেন বলে তিনি জানান।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহতরা আপন ভাই। দুর্ঘটনার পর প্রাইভেট কারটির চালক পালিয়ে গেছেন। তবে গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে।ভোরের আকাশ/জাআ