গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ জুন ২০২৫ ১২:৩৪ এএম
সাদুল্লাপুর ইউএনওর বিরুদ্ধে সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত ব্যবহারের অভিযোগ
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী মোহাম্মদ অনিক ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কাজে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, নিয়মবহির্ভূতভাবে তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বরাদ্দকৃত সরকারি গাড়িটি নিজের পারিবারিক কাজে ব্যবহার করছেন। এ নিয়ে উপজেলায় ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শনিবার (২৮ জুন) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে দুপুর আড়াইটার দিকে ইউএনওর বাসভবনের সামনে উপজেলা পরিষদের সরকারি গাড়িটি অবস্থান করছিল। কিছু সময় পর ইউএনওর স্ত্রী ও তার মা গাড়িতে উঠে যান এবং চালক সামিউল ইসলাম ওই গাড়ি চালিয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জসিম উদ্দীনের বাসভবনের সামনে নিয়ে যান। সেখানে সহকারি কমিশনারের সরকারি গাড়িও ছিল।
উপজেলা পরিষদের গাড়িচালক সামিউল ইসলাম জানান, ইউএনওর রংপুর সফরের কারণে তিনি নিজেই গাড়িটি ব্যবহার করতে বলেছেন এবং তিনি ইউএনওর স্ত্রী ও তার মাকে সহকারী কমিশনারের বাসায় দাওয়াতে নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে ইউএনওর রংপুর সফর দাপ্তরিক নাকি ব্যক্তিগত তা জানা যায়নি।
বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ইউএনও ফোন রিসিভ করেননি। পরে গাড়িচালককে ফোন করলে তিনি সাময়িক ফোন রিসিভ করলেও কোনো কথা বলেননি।
একটি সূত্র জানিয়েছে, এর আগে ইউএনও দাপ্তরিক সময়ের বাইরেও সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে রংপুর ও নিজের বাড়িতে যাতায়াত করেছেন। এই ধরনের সরকারি সম্পদের অনৈতিক ব্যবহারে স্থানীয় সচেতন নাগরিক, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তারা দাবি করেছেন, একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তার কাছ থেকে জনসেবার মান ও দায়বদ্ধতার প্রত্যাশা করা হয়, কিন্তু ব্যক্তিগত স্বার্থে সরকারি সম্পদ ব্যবহার চরম অনিয়ম। দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত ও কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এমন কর্মকাণ্ড আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘন এবং তা নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা প্রয়োজন।”
উল্লেখ্য, ৩৬ তম বিসিএস ক্যাডারের কাজী মোহাম্মদ অনিক ইসলাম সাদুল্লাপুরে যোগদানের পর থেকে সরকারি দায়িত্বে অবহেলা, সেবা প্রত্যাশীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, যোগাযোগে অসঙ্গতি ও দায়িত্ব এড়ানোর মতো অভিযোগের শিকার হয়েছেন। এ নিয়ে ইতিমধ্যে স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়ে তীব্র সমালোচনা দেখা গেছে।
ভোরের আকাশ//হ.র