ছবি-ভোরের আকাশ
বরগুনার পাথরঘাটা পৌরসভায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৫ টনের বেশি বর্জ্য উৎপন্ন হলেও এখনও পর্যন্ত নির্ধারিত কোনো ডাম্পিং স্টেশন কিংবা বর্জ্য পরিশোধনাগার গড়ে ওঠেনি। ফলে শহরের ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে সরাসরি বিষখালী নদীর তীরে। এতে নদীর পানি মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে এবং পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। মশার উপদ্রব, দুর্গন্ধ এবং পানিবাহিত রোগ বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয়দের জীবনযাত্রা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে।
পাথরঘাটা পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯০ সালে, দ্বিতীয় শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে উন্নীত হয় ২০১২ সালে। প্রায় ৩০ হাজার মানুষের বসবাস এই পৌর এলাকায়। কিন্তু গত তিন যুগেও পৌর কর্তৃপক্ষ একটি আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পারেনি। ফলে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে ট্রাকে করে এনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেরিবাঁধ সংলগ্ন নদীর তীরে ফেলা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, খোলা পরিবেশে স্তূপ করে রাখা বর্জ্যে কাক, কুকুর, মুরগি ঘুরে বেড়াচ্ছে। দুর্গন্ধে পার্শ্ববর্তী এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। নদীর স্রোতে ভেসে যাওয়া এসব ময়লা বিস্তৃত এলাকায় দূষণ ছড়াচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিষখালী নদী এখন অঘোষিত ভাগারে পরিণত হয়েছে। পানি ব্যবহার করেও রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।
বেরিবাঁধ লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, আগে সন্ধ্যাবেলা নদীপাড়ে বসে থাকতাম, এখন দুর্গন্ধে দাঁড়ানো যায় না। টিউবওয়েলের পানিতেও দুর্গন্ধ পাচ্ছি। পরিবারে সবাই রোগে ভুগছে।
নিলুফা বেগম বলেন, আগে এখানে মানুষ ঘুরতে আসতো, এখন কেউ আসেই না। শিশুরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
সমাজ উন্নয়নকর্মী মির্জা শহিদুল ইসলাম খালেদ বলেন, পৌরসভার বয়স ৩৬ বছর হলেও আজও একটি বর্জ্য পরিশোধনাগার নির্মাণ করা হয়নি। বিকেলে শহরের মানুষ একটু স্বস্তির জায়গা খুঁজে নদীপাড়ে আসে, এখন সে জায়গাটাও দখল করেছে পৌরসভার ময়লা। অথচ পৌরসভার উন্নয়নের নামে শত কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে বারবার।
পরিবেশবিদদের মতে, বিষখালী নদী একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকূলীয় জলাধার। এখানে বর্জ্য ফেলা হলে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হয়, জলজ প্রাণীর প্রজনন ও অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে এবং নদীর আশপাশে বসবাসকারী মানুষের জীবনঝুঁকি বাড়ে।
পাথরঘাটা পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নির্ধারিত একটি জমি অধিগ্রহণের কাজ চলমান আছে। ডাম্পিং স্টেশন নির্মিত না হওয়া পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে সরকারি একটি জায়গায় বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। তবে পরিবেশের যাতে ক্ষতি না হয়, সেজন্য বর্জ্য ফেলার পর তা মাটি দিয়ে ঢেকে রাখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা ও সচেতন নাগরিকদের প্রশ্ন, দীর্ঘকাল ধরে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হলেও কেন এখনো একটি আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা গেল না? বিষখালী নদী একসময় ছিল মানুষের জন্য প্রশান্তির আশ্রয়, আজ তা পরিণত হয়েছে এক দুঃসহ বাস্তবতায়।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
দক্ষিণাঞ্চলের জেলা বরগুনায় ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গত এক সপ্তাহের বিভিন্ন পত্রিকার প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, জেলার হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর ঢল নেমেছে, এবং মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ জনে। এই পরিস্থিতি জনস্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক ও গবেষকদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।হাসপাতালে রোগীর চাপ, অপ্রতুল সুবিধা বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় (২৬ জুন সকাল ৮টা থেকে ২৭ জুন সকাল ৮টা) জেলায় নতুন করে ৭০ জন আক্রান্ত হয়েছেন, যার মধ্যে বেশিরভাগই বরগুনা সদর উপজেলার। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ২৪৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন, যার মধ্যে ১৯৭ জনই বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে। চলতি বছরে জেলায় মোট ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ২,৬৩০ জন। এই তথ্য ২৭ জুন ২০২৫ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের হিসাবের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে। তবে, এর বাইরেও অনেক রোগী হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে ব্যক্তিগত চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছেন, ফলে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা মেঝেতে দেওয়া হচ্ছে, কারণ শয্যার তুলনায় রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। পরীক্ষার সুবিধা অপ্রতুল হওয়ায় রোগীদের শহরের বেসরকারি ক্লিনিকে পাঠানো হচ্ছে, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি ও রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা বাড়াচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, হাসপাতালে আইসিইউ সুবিধা না থাকায় গুরুতর রোগীদের বরিশাল বা ঢাকায় রেফার করতে হচ্ছে, যা রোগী ও স্বজনদের জন্য কষ্টকর।মৃত্যু ও আক্রান্তের পরিসংখ্যান গত সপ্তাহে (২২-২৭ জুন) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বরগুনায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। ২২ জুন রাবেয়া (১০০) নামে এক বৃদ্ধা এবং ২৬ জুন সাধনা রানী (৩৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়। এ নিয়ে জেলায় মৃত্যুর সংখ্যা ২৩-এ পৌঁছেছে, যার মধ্যে ২২ জনই সদর উপজেলার। জুনের প্রথম ১৫ দিনে ৮৬১ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন, যা মে মাসের ৭৮৪ এবং এপ্রিলের ১৮০ জনের তুলনায় অনেক বেশি। তবে এটা শুধু সরকারি হাসপাতালের তথ্য কিন্তু প্রকৃত সংখ্যা এর ১০ থেকে ১৫ গুণ হতে পারে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। একটি বেসরকারি ক্লিনিকের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, "গত এক সপ্তাহে ১০০ জনের বেশি জ্বরের রোগী এসেছেন, যার ৩০-৩৫% ডেঙ্গু পজিটিভ।" তাঁর মতে, জেলার সবগুলো ক্লিনিকের তথ্য নির্দিষ্ট অ্যাপে অন্তর্ভুক্ত করা গেলে জেলায় ডেঙ্গু রোগীর প্রকৃত সংখ্যার ধারণা পাওয়া যাবে।একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ল্যাব টেকনিশিয়ান বলেন, "আমরা প্রতিদিন ২০-২৫টি ডেঙ্গু টেস্ট করি, যার ৪০% পজিটিভ আসে। কিন্তু এই তথ্য জাতীয় ডেটাবেজে আপলোড করার ব্যবস্থা নেই।" প্রতিরোধে ঘাটতি ও জনস্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ জনস্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেনসহ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, হাসপাতালে ভর্তির বাইরেও প্রচুর রোগী শনাক্ত হচ্ছে না, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করছে। সঠিক রেকর্ড রাখার অভাব এবং প্রতিরোধ কার্যক্রমে ঘাটতি ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।আইইডিসিআরের একটি দলের জরিপে দেখা গেছে, বরগুনা সদরে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব স্বাভাবিকের তুলনায় ৮ গুণ বেশি। বৃষ্টির পানি জমিয়ে রাখা, জলাবদ্ধতা এবং অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা মশার প্রজনন বাড়িয়েছে।প্রশাসনিক উদাসীনতা ও স্থানীয় অভিযোগ স্থানীয় নাগরিক সংগঠন স্বাস্থ্য অধিকার ফোরামের সভাপতি হাসানুর রহমান জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীলতার ঘাটতি এবং মশার অভয়াশ্রম হিসেবে পরিত্যক্ত জমি-জলাশয়ের অস্তিত্ব পরিস্থিতি আরও খারাপ করছে।জনস্বাস্থ্যবিদ বে-নজীর আহমেদ বলেন, “বরগুনার পরিস্থিতি আমাদের প্রতিরোধ কৌশলের সীমাবদ্ধতা তুলে ধরছে।”করণীয় বিশেষজ্ঞরা ডেঙ্গু প্রতিরোধে জমে থাকা পানি পরিষ্কার, শরীর ঢেকে রাখা পোশাক পরা এবং মশারি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই সংকট মোকাবিলার তাগিদ রয়েছে। ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জরুরি ভিত্তিতে মশক নিধন, জনসচেতনতা ও সরকারি-বেসরকারি ডেটা সমন্বয় প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।ভোরের আকাশ/এসএইচ
পিরোজপুরের ইন্দুরকানিতে প্রতিপক্ষের সাথে বিরোধ ও পারিবারিক পরকীয়ার জেরে মোঃ শহিদুল ইসলাম হাওলাদার (৫০) নামে এক ইউপি সদস্য ও তার ভাবী মৌকলি বেগম (৪৮) কে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।শুক্রবার (২৭ জুন) দিনগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নে চরবলেশ্বর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম এর স্ত্রী রেহানা বেগম (৪০) কে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। ইন্দুরকানি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মারুফ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।নিহত শহিদুল ইসলাম চর বলেশ্বর গ্রামের আসলাম হাওলাদারের পুত্র, এবং স্থানীয় চন্ডিপুর ইউনিয়নের চরবলেশ্বর গ্রামের ২ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য। এছাড়াও তিনি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহবায়ক বলে জানা গেছে। এবং নিহত মৌকলি বেগম ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলামের ভাই মর্তুজা হাওলাদারের স্ত্রী। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাত ১২টার দিকে শহিদুল ইসলামের বাড়িতে ডাক চিৎকারের শব্দ শুনে আশেপাশের লোকজন এসে দেখে শহিদুল ইসলাম ও তার ভাবিকে পুকুর পাড়ে কুপিয়ে ফেলে রাখে প্রতিপক্ষের লোকজন। তার স্ত্রী রেহেনা বেগমকেও কুপিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে রেখে গেছে তারা। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে। সেখান থেকে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। গুরুতর আহত রেহেনা বেগম বলেন, রাতে হঠাৎ করে পার্শ্ববর্তী ইউনুসসহ আরো ৪-৫ জন তাদের বাড়িতে এসে অতর্কিত হামলা করে তার স্বামীকে এবং ভাবিকে কুপিয়ে মেরে ফেলে। এরপর তাকেও মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে মারাত্মক ভাবে আহত করেছে। ইউনুস এর সাথে তাদের দীর্ঘদিনের পারিবারিক বিরোধ ছিলো বলেও জানান তিনি।এ বিষয়ে ইন্দুরকানি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মারুফ হোসেন দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, পার্শ্ববর্তী বাড়ির সাথে পরিবারিক পরকীয়ার জের ধরে এ ঘটনাটি ঘটেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ভোরের আকাশ/এসএইচ
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১৪ জন।শুক্রবার (২৭ জুন) গভীর রাত ৩টার দিকে হাসাড়া হাইওয়ে থানার কাছাকাছি ঢাকামুখী লেনে একটি বাস ও ট্রাকের সংঘর্ষে এই প্রাণহানি ঘটে।ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার দেওয়ান আজাদ হোসেন। নিহতরা হলেন- যশোর জেলার জালাল উদ্দিন (৬৫), জিল্লুর রহমান, ডা. আব্দুল আলিম ও হেলপার হাসিব।শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার দেওয়ান আজাদ বলেন, আমরা খবর পেয়ে দুর্ঘটনাস্থলে আসি। পরে আটকে পড়াদের উদ্ধার করি। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান দুজন। হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও ২ জন মারা যান। এ ঘটনায় আহত ১৪ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।হাসারা হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ আব্দুল কাদির জিলানী সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘাতক গাড়ি দুটি আটক আছে তবে চালক পালিয়ে গেছে। পরবর্তী আইনগত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
নাটোরের বড়াইগ্রামে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র মিনহাস হোসেন আবীর (৯)। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাত ৯টার দিকে বনপাড়া পৌর শহরের মহিষভাঙ্গা এলাকার একটি নির্মাণাধীন মসলা ফ্যাক্টরির পাশে ভুট্টাক্ষেত থেকে তার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।নিহত আবীর বনপাড়া আদিব ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষার্থী এবং মহিষভাঙ্গা মহল্লার মিলন হোসেন ও রুবিনা খাতুন দম্পতির একমাত্র সন্তান। তার বাবা সৌদি আরবে কর্মরত।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেল ৪টার দিকে সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় আবীর। তার কাছে একটি দামি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনও ছিল। সন্ধ্যা পেরিয়ে গেলেও বাড়িতে না ফেরায় স্বজনরা খোঁজাখুঁজি শুরু করে। রাত ৯টার দিকে মসলা ফ্যাক্টরির পাশে তার রক্তমাখা সাইকেল দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়। পরে ভুট্টাক্ষেতের পাশে রক্তের দাগ অনুসরণ করে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।শিশুটির মাথা ও মুখমণ্ডলে ইট দিয়ে উপর্যুপরি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনাস্থলেই বেশ কয়েকটি রক্তমাখা ইট পড়ে থাকতে দেখা যায়।বড়াইগ্রাম থানার ওসি গোলাম সারোয়ার হোসেন বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত নির্মম। যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। তদন্ত ও গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার যৌথ দল মাঠে কাজ শুরু করেছে।”ছেলের লাশ দেখে ভেঙে পড়েন বাবা মিলন হোসেন। তিনি বলেন, “আমার ছেলের যারা এভাবে জীবন কেড়ে নিয়েছে, আমি তাদের ফাঁসি দেখতে চাই। আমি বিচার চাই।”ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড় উঠে।বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের নাটোর জেলা আহ্বায়ক ও বড়াল প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক অমর ডি কস্তা নিজের ফেসবুকে আবীরের স্কুল পোশাকে ছবি ও ঘটনাস্থলের ছবি পোস্ট করে লেখেন, “কিরে অমানুষরা, একটা ছোট ছেলের কী দোষ ছিল? তোরা কি আল্লাহকে ভয় করিস না?” এমন আরও অনেক সংবাদমাধ্যম ও ফেসবুক পেইজে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে হাজারো মানুষ খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি জানান। ভোরের আকাশ/হ.র