ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত বর্তমানে চরম সংকটের মুখোমুখি বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকিন আহমেদ। তিনি জানান, খেলাপি ঋণের লাগামহীন বৃদ্ধির ফলে আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়েছে এবং বিনিয়োগ প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর ডিসিসিআই অডিটরিয়ামে আয়োজিত ‘বর্তমান ব্যাংকিং খাতের চ্যালেঞ্জ : ঋণগ্রহীতাদের দৃষ্টিকোণ’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তাসকিন আহমেদ জানান, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত দেশে মোট খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ২৪ শতাংশেরও বেশি। এই বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণের ফলে নতুন করে ঋণ পাওয়ার পথ রুদ্ধ হয়ে পড়েছে।
বিশেষ করে এসএমই খাতসহ উৎপাদনমুখী উদ্যোক্তারা মারাত্মক বিপাকে পড়ছেন। একইসঙ্গে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশে নেমে এসেছে, যা উদ্বেগজনক।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে অবস্থান করায় নীতিগত সুদহার বাড়াতে হচ্ছে, ফলে তারল্য সংকুচিত হচ্ছে এবং মূলধনের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ওপর।
তাসকিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকিং খাতের সংস্কার শুধু ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, বরং ঋণগ্রহীতাদের অবস্থান বিবেচনায় নিয়েই করতে হবে। না হলে বিনিয়োগ, উদ্ভাবন ও প্রতিযোগিতা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।
ডিসিসিআই সভাপতি এ সংকট উত্তরণে একাধিক প্রস্তাবনা দেন। এর মধ্যে রয়েছে : ঋণগ্রহীতাদের পুনর্বাসনমূলক উদ্যোগ গ্রহণ; উৎপাদনমুখী খাত যেমন- এসএমই, কৃষি ও সবুজ শিল্পে সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা দেওয়া; সেক্টরভিত্তিক প্রণোদনা ও গ্যারান্টি স্কিম চালু; ঋণের শর্ত শিথিল করে দীর্ঘ মেয়াদে পরিশোধের সুযোগ সৃষ্টি; ঋণ শ্রেণিকরণ সময়সীমা ছয় মাস বাড়ানো এবং ইচ্ছাকৃত ও অনিচ্ছাকৃত খেলাপি আলাদা করে চিহ্নিত করা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (মুদ্রানীতি বিভাগ) ড. মো. এজাজুল ইসলাম। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিভারস্টোন ক্যাপিটাল লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী এবং ডিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মো. আশরাফ আহমেদ।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
চলতি সেপ্টেম্বরের প্রথম ২৪ দিনেই দেশে এসেছে ২ দশমিক ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা টাকায় প্রায় ২৭ হাজার ২৫৫ কোটি। বাংলাদেশ ব্যাংকের ধারণা, এ ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে রেমিট্যান্স তিন বিলিয়ন ডলার ছাড়াতে পারে।বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, ১ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২২৩ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার। প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে হিসাব করলে এর অঙ্ক দাঁড়ায় প্রায় ২৭ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা।গত বছরের একই সময়ে এসেছিল ১৯০ কোটি ৯০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স। সে হিসাবে এক বছরে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৩২ কোটি ৫০ লাখ ডলার।২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম আড়াই মাসে (জুলাই থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৭১৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই অঙ্ক ছিল ৬০৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১৭ শতাংশ।এর আগে জুলাইয়ে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছিলেন ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ডলার (প্রায় ৩০ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা)। আগস্টে আসে ২৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার বা ২৯ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা।গত অর্থবছর ২০২৪-২৫ এ মার্চে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স আসে, যা ছিল বছরের রেকর্ড। পুরো অর্থবছরে প্রবাসী আয় দাঁড়িয়েছিল ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।প্রসঙ্গত, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মাসভিত্তিক রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল: জুলাই ১৯১.৩৭ কোটি ডলার, আগস্ট ২২২.১৩ কোটি, সেপ্টেম্বর ২৪০.৪১ কোটি, অক্টোবর ২৩৯.৫০ কোটি, নভেম্বর ২২০ কোটি, ডিসেম্বর ২৬৪ কোটি, জানুয়ারি ২১৯ কোটি, ফেব্রুয়ারি ২৫৩ কোটি, মার্চ ৩২৯ কোটি, এপ্রিল ২৭৫ কোটি, মে ২৯৭ কোটি এবং জুনে ২৮২ কোটি ডলার। ভোরের আকাশ/হ.র
দেশের বেকার যুবাদের কর্মসৃজনে কর্মসংস্থান ব্যাংক এর কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা পর্যালোচনা শীর্ষক সভা বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় অর্থ মন্ত্রণালয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাজমা মোবারেক দেশের প্রান্তিক নারীদের ক্ষমতায়নে ও কর্মসৃজনে অধিক ঋণ প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে অধিক পরিমাণে ঋণ বৃদ্ধির পরামর্শ প্রদান করেন। এ সময় তিনি অধিক সংখ্যক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বেকার যুবদের অর্থায়নের মাধ্যমে কর্মসৃজনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।ড. এ এফ এম মতিউর রহমান সভাপতির বক্তব্যে বেকার যুবদের কর্মসৃজনে কর্মসংস্থান ব্যাংকের ভূমিকা দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত বলে মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি দেশের কর্মহীন যুবদের উদ্যোক্তায় পরিণত করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাঁর বক্তব্যে দেশে আত্মনির্ভর, দক্ষ ও কর্মক্ষম তরুণ প্রজন্ম গড়ে তোলার জন্য কর্মসংস্থান ব্যাংক চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান।এ সময় কর্মসংস্থান ব্যাংক কেবল ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান নয়, বরং উদ্যোক্তা তৈরির এক সৃজনশীল কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।সভায় বেকার যুবদের কর্মসৃজনে কর্মসংস্থান ব্যাংকের কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা বিশদ তথ্য তু্লে ধরেন ঋণ ও অগ্রিম বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক মো. মশিউর রহমান।এদিকে কর্মসংস্থান ব্যাংকের ২৮তম বছরে পদার্পণ উপলক্ষ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান সচিব ব্যাংকের সকল গ্রাহক, অংশীজন, শুভান্যুধ্যায়ী ও সকল কর্মকর্তা/কর্মচারীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান এবং প্রতিষ্ঠানের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন।কর্মসংস্থান ব্যাংক পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সাবেক সচিব ড. এ এফ এম মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অরুন কুমার চৌধুরী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাঈদ কুতুব, যুগ্মসচিব মাকছুমা আকতার বানু, উপসচিব (সচিব মহোদয়ের একান্ত সচিব) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, কর্মসংস্থান ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মাহমুদা ইয়াসমীন, মো: শফিকুলইসলাম মিঞা ও মো. আমিরুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) আবারও দেশের বাজারে ২২ ক্যারেট সোনার দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২২ ক্যারেট স্বর্ণের মূল্য আজ ১,৯৪,৮৫৯ টাকা।বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) থেকে ২২ ক্যারেট সোনার দাম প্রযোজ্য হবে নতুন দরে। তবে রুপার দাম অপরিবর্তিত থাকবে। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস।বাজুস জানিয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সোনার দামে এই সমন্বয় করা হয়েছে।স্বর্ণের আজকের বাজারদর• ২২ ক্যারেট : ভরিপ্রতি ১,৯৪,৮৫৯ টাকা• ২১ ক্যারেট : ভরিপ্রতি ১,৮৬,০০৬ টাকা• ১৮ ক্যারেট : ভরিপ্রতি ১,৫৯,৪২৪ টাকা• সনাতন পদ্ধতি : ভরিপ্রতি ১,৩২,৩৫১ টাকাবিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, সোনার বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে ৫ শতাংশ সরকার নির্ধারিত ভ্যাট এবং বাজুস নির্ধারিত ৬ শতাংশ ন্যূনতম মজুরি যোগ করতে হবে।তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরি ভিন্ন হতে পারে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ এক্সিকিউটিভ বিজনেস গোলটেবিল আলোচনায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।‘অ্যাডভান্সিং রিফর্ম, রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড গ্রোথ’ শীর্ষক এ আলোচনার আয়োজন করে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল (ইউএসবিবিসি)।পরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা মেটলাইফ, শেভরন, এক্সেলেরেটসহ শীর্ষ মার্কিন কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে নতুন বিনিয়োগের সুযোগ কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাওয়া বাংলাদেশের ছয়জন রাজনীতিক সভায় উপস্থিত ছিলেন এবং তাদেরকে মার্কিন শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে সোমবার নিউ ইয়র্কে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা। আগামী ২ অক্টোবর তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।ভোরের আকাশ/মো.আ.