বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:৪৮ এএম
ছবি: সংগৃহীত
হলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা, পরিচালক ও পরিবেশকর্মী রবার্ট রেডফোর্ড আর নেই। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহ অঙ্গরাজ্যের প্রোভো শহরে নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘুমের মধ্যেই শান্তিপূর্ণভাবে তিনি মারা যান।
অভিনেতার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে পিপল, ইন্ডিপেনডেন্টসহ মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো।
১৯৩৬ সালের ১৮ আগস্ট ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা মনিকায় জন্ম রবার্ট চার্লস রেডফোর্ড জুনিয়রের। আমেরিকান একাডেমি অব ড্রামাটিক আর্টসে পড়াশোনা শেষে ১৯৫৯ সালে টেল স্টোরি নাটকের মাধ্যমে ব্রডওয়েতে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। ১৯৬৩ সালে বেয়ারফট ইন দ্য পার্ক নাটকে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন, যা ১৯৬৭ সালে চলচ্চিত্রে রূপ নেয়।
সত্তর দশকে তিনি হলিউডের শীর্ষ নায়কদের একজন হয়ে ওঠেন। ১৯৭৩ সালের দ্য স্টিং চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি অস্কারের সেরা অভিনেতা বিভাগে মনোনয়ন পান। এরপর ১৯৮০ সালে অর্ডিনারি পিপল পরিচালনার জন্য সেরা পরিচালক হিসেবে অস্কার জয় করেন। ১৯৯৪ সালে কুইজ শো পরিচালনার জন্যও মনোনয়ন পান তিনি।
১৯৮৫ সালে আউট অব আফ্রিকা চলচ্চিত্রে অভিনয় করে বক্স অফিসে সাফল্য অর্জন করেন। সিনেমাটি সেরা চলচ্চিত্রসহ সাতটি বিভাগে অস্কার জেতে। অভিনয়জীবনের শেষ কাজ ছিল দ্য ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য গান (২০১৮), এরপর তিনি অবসরের ঘোষণা দেন।
শুধু অভিনয়-পরিচালনা নয়, স্বাধীন চলচ্চিত্রের পৃষ্ঠপোষক হিসেবেও তিনি খ্যাত। ১৯৮৫ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন সানড্যান্স চলচ্চিত্র উৎসব, যা এখন যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম স্বাধীন চলচ্চিত্র উৎসব।
রেডফোর্ডের সাফল্যের তালিকায় রয়েছে অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা। ২০০২ সালে আজীবন সম্মানসূচক অস্কার, ২০১০ সালে লেজিওঁ দ্য নরের শেভালিয়ে খেতাব, তিনটি গোল্ডেন গ্লোব, একটি বাফটা এবং একটি স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার অর্জন করেন তিনি। ২০১৪ সালে টাইম সাময়িকী তাকে বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির একজন হিসেবে উল্লেখ করে এবং ‘ইন্ডি চলচ্চিত্রের গডফাদার’ বলে আখ্যা দেয়। ২০১৬ সালে তিনি পান যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম।
ব্যক্তিজীবনে রবার্ট রেডফোর্ড ১৯৫৮ সালে লোলা ভ্যান ওয়াগেনেনকে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে চার সন্তান জন্ম নেয়, তবে প্রথম সন্তান স্কট জন্মের দুই মাস পর মারা যায়। ১৯৮৫ সালে লোলার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ২০০৯ সালে জার্মান শিল্পী সিবিল জাগার্সকে বিয়ে করেন তিনি। ২০২০ সালে ক্যানসারে মারা যান তার ছেলে জেমস রেডফোর্ড।
অভিনয়, পরিচালনা, স্বাধীন চলচ্চিত্রের পৃষ্ঠপোষকতা ও পরিবেশ আন্দোলনে আজীবন সক্রিয় থাকা এই তারকার মৃত্যুতে শোক নেমে এসেছে বিশ্ব চলচ্চিত্র অঙ্গনে।
ভোরের আকাশ/তা.কা