আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৫ ০৫:৫৮ এএম
ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ওবামা-বুশ একাট্টা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের ইউএসএআইডি (USAID) বন্ধের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জর্জ ডব্লিউ বুশ এবং ইউটু ব্যান্ডের গায়ক ও মানবাধিকারকর্মী বোনো। তারা একে ‘বিপর্যয়কর’ ও ‘বিশাল ভুল’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
ফক্স নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক যৌথ প্রতিক্রিয়ায় তারা ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেন, “বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু মানবিক উদ্যোগ ইউএসএআইডির মাধ্যমেই পরিচালিত হতো। এই সংস্থার বন্ধ হওয়া একটি বড় বিপর্যয়। আশা করি, দুই দলের নেতারাই শিগগির এর গুরুত্ব উপলব্ধি করবেন।”
জর্জ ডব্লিউ বুশ বলেন, “এই সংস্থার মাধ্যমে বাস্তবায়িত এইচআইভি-এইডস কর্মসূচির ফলে প্রায় ২৫ মিলিয়ন মানুষের জীবন রক্ষা পেয়েছে। এটি ছিল আমাদের জাতীয় স্বার্থে একটি বিশাল অর্জন।”
মানবাধিকারকর্মী বোনো বলেন, “এই সংস্থার কিছু কর্মীর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ থাকলেও, মূলত তারা ছিলেন আমাদের সেরাদের সেরা। ইউএসএআইডি বন্ধ হওয়া মানে বিশ্বজুড়ে লাখো মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়া।”
ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, ইউএসএআইডিতে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও অর্থের অপচয় ছিল নিয়মিত ঘটনা। এসব কারণে সংস্থাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইউএসএআইডি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬১ সালে, জন এফ কেনেডি প্রশাসনের সময়। এটি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সহায়তা, মানবিক কার্যক্রম এবং উন্নয়নমূলক প্রকল্পে অর্থায়নের দায়িত্বে ছিল।
এই সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত চালায় ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে গঠিত ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (ডিওজিই)। সংস্থাটির তৎকালীন প্রধান ছিলেন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক। তিনি ইউএসএআইডিকে “আমেরিকাবিরোধী মার্কসবাদীদের আড্ডা” বলে মন্তব্য করেন।
মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে ইউএসএআইডিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের অধীনে একীভূত করা হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, ইউএসএআইডির অধীনে থাকা বিদেশি সহায়তা কার্যক্রম এখন থেকে সরাসরি পররাষ্ট্র দপ্তর পরিচালনা করবে। তিনি বলেন, “সংস্থাটি আমেরিকার স্বার্থের পরিবর্তে এনজিও শিল্পের পক্ষে কাজ করছিল। উন্নয়নমূলক লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়ে বরং অস্থিরতা বাড়িয়েছে।”
ট্রাম্প তার মার্চের কংগ্রেস ভাষণে বলেন, “ডিওজিই ২২ বিলিয়ন ডলারের সরকারি অপচয় শনাক্ত করেছে, যার মধ্যে ইউএসএআইডির ব্যয়ও রয়েছে।” তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন, “বার্মায় বৈচিত্র্য ও ইক্যুইটি বৃত্তির জন্য ৪৫ মিলিয়ন ডলার ও ট্রান্সজেন্ডার ইঁদুর গবেষণায় ৮ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়েছে।”
ভোরের আকাশ//হ.র