নেতানিয়াহুর বৈঠক আজ, গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা
গাজায় চলমান সহিংসতা অবসানের লক্ষ্যে হামাসের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে বৈঠকে বসছেন দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। রোববার (২৯ জুন) রাতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর দক্ষিণ কমান্ডের সদরদপ্তরে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল।
বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ, অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী, সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা এবং নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টারা। বৈঠকে হামাসের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির সম্ভাব্য রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।
এদিকে যুদ্ধবিরতির পক্ষে সরাসরি অবস্থান নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রোববার সকালে সামাজিকমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “গাজায় চুক্তি করুন। জিম্মিদের ফিরিয়ে আনুন।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বার্তার মাধ্যমে মূলত নেতানিয়াহু নেতৃত্বাধীন সরকারকে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির পথে এগোতে চাপ দিয়েছেন ট্রাম্প।
এর আগে এক জিম্মির মা অভিযোগ করেন, যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুই মূলত চুক্তির পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
এদিকে বার্তাসংস্থা এপি জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এই পটভূমিতে নেতানিয়াহুর যুক্তরাষ্ট্র সফরের পরিকল্পনাও নেওয়া হচ্ছে। তবে সফরের বিস্তারিত এজেন্ডা এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল, এপি
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
রাশিয়ার তীব্র হামলায় ইউক্রেনের একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন বিমানটির পাইলট লেফটেন্যান্ট কর্নেল ম্যাকসিম উস্তিমেনকো। রোববার (২৯ জুন) মধ্যরাতে ইউক্রেনজুড়ে চালানো বড় পরিসরের রুশ হামলার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে।ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাতভর রাশিয়া সাড়ে পাঁচশ’র বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে একযোগে হামলা চালায়। ওই হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে সাতটি আকাশ হামলা সফলভাবে রুখে দেওয়ার পর এফ-১৬ বিমানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও পরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যায়।১৯৯৩ সালে জন্ম নেওয়া ম্যাকসিম উস্তিমেনকো ইউক্রেনের আধুনিক এয়ারফোর্সের একজন প্রশিক্ষিত ও দক্ষ পাইলট ছিলেন। পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে পাওয়া উন্নত এফ-১৬ যুদ্ধবিমান চালাতে পারদর্শী ছিলেন তিনি। তার এই মৃত্যু ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর জন্য একটি “অপূরণীয় ক্ষতি” বলেই বিবেচিত হচ্ছে।যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশ থেকে বহু তদবির ও অনুরোধের পর ইউক্রেন কিছু সংখ্যক এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সংগ্রহ করেছিল। যদিও ইউক্রেন সরকার কখনো স্পষ্ট করে জানায়নি, তাদের হাতে ঠিক কতটি এফ-১৬ রয়েছে। এই নিয়ে যুদ্ধ শুরুর পর দেশটি মোট তিনটি এফ-১৬ হারাল।ইউক্রেনীয় সংবাদমাধ্যম কিয়েভ ইন্ডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, রোববার মধ্যরাতের ওই হামলায় দক্ষিণের মাইকোলাভ, দক্ষিণ-পূর্ব জাপোরিঝিয়া, এবং পশ্চিম লভিভ অঞ্চলে ব্যাপক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।এর আগেও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই বড় হামলার কথা জানিয়েছিলেন, তবে যুদ্ধবিমান ধ্বংস ও পাইলট নিহতের বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।যুদ্ধ শুরুর আগে ইউক্রেনের বিমানবাহিনী তুলনামূলকভাবে পুরোনো মডেলের যুদ্ধবিমান ব্যবহার করত। রাশিয়ার সঙ্গে সমানে সমানে প্রতিযোগিতা করতে কয়েকজন পাইলটকে পশ্চিমা মিত্ররা প্রশিক্ষণ দেয় আধুনিক প্রযুক্তির বিমান চালানোর জন্য। এই প্রশিক্ষিত পাইলটদের মধ্যে একজন ছিলেন উস্তিমেনকো। ফলে তার মৃত্যু ইউক্রেনের জন্য শুধু একটি জীবনহানিই নয়, একটি কৌশলগত ক্ষতিও।সূত্র: আলজাজিরাভোরের আকাশ//হ.র
চালক ছাড়াই নিজে নিজে নতুন মালিকের বাসায় পৌঁছে ইতিহাস গড়লো টেসলার একটি গাড়ি। বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা এই প্রতিষ্ঠান প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোনো গাড়ি ডেলিভারি দিলো—তাও আবার চালক বা রিমোট কন্ট্রোলার ছাড়াই।টেসলার মডেল ওয়াই গাড়িটি যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের অস্টিন শহরে অবস্থিত কারখানা থেকে ৩০ মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত নতুন মালিকের বাড়িতে গিয়ে পৌঁছায়। পুরো যাত্রায় গাড়িটির নিয়ন্ত্রণে কোনো চালক ছিল না, এমনকি রিমোট অপারেটরেরও কোনো ভূমিকা ছিল না।সম্প্রতি টেসলা তিন মিনিটের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যাতে দেখা যায়—গাড়িটি নিজের বুদ্ধিমত্তায় ট্রাফিক আইন মেনে মহাসড়ক ও জংশন পেরিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছে। গাড়ির গতি কখনো কখনো ১১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠেছে বলে জানিয়েছেন টেসলার অটোপাইলট ও এআই বিভাগের প্রধান অশোক এলুস্বামী।টেসলার সিইও ইলন মাস্ক এক্স (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট করে জানিয়েছেন, “গাড়িটিতে কোনো চালক ছিল না এবং কোনো রিমোট অপারেটরও ব্যবহৃত হয়নি। এটি সম্পূর্ণরূপে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালিত হয়েছে। আমাদের জ্ঞাত অনুযায়ী, এটি মহাসড়ক দিয়ে চালকহীন প্রথম গাড়ি ডেলিভারির নজির।”এই সাফল্যকে স্বয়ংক্রিয় গাড়ি প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা।ভোরের আকাশ//হ.র
ইসরায়েলি হামলার সময় সাহসিকতার সঙ্গে সম্প্রচারে যুক্ত থাকার জন্য ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের উপস্থাপিকা সাহার এমামিকে পুরস্কৃত করেছে ভেনেজুয়েলা সরকার। দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো তাঁকে ‘সিমন বলিভার সাংবাদিকতা পুরস্কারে’ ভূষিত করেন।গত ১৬ জুন ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম আইআরআইবি-তে লাইভ সম্প্রচারের সময় দখলদার ইসরায়েলের হামলায় সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায় টিভি চ্যানেলটির কার্যক্রম। ওই সময় স্টুডিওতে সরাসরি অনুষ্ঠান উপস্থাপন করছিলেন সাহার এমামি। পরে টিভি চ্যানেলটি ফিরে আসে তাঁর মাধ্যমেই, যেখানে তিনি আবারও সংবাদ পাঠ করে সম্প্রচারের নতুন যাত্রা শুরু করেন।ভেনেজুয়েলার জাতীয় সাংবাদিক দিবস উপলক্ষে ইরানি এই উপস্থাপিকার পাশাপাশি ইসরায়েলি হামলায় নিহত আইআরআইবি সাংবাদিকদের সম্মানেও ‘সিমন বলিভার’ পুরস্কার প্রদান করা হয়। সাহার এমামির পক্ষে পুরস্কারটি গ্রহণ করেন ভেনেজুয়েলায় নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত।পুরস্কার ঘোষণার সময় প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বলেন, “ইসরায়েল প্রতিদিন শতাধিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করছে, অথচ পশ্চিমা বিশ্ব নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।” একইসঙ্গে তিনি ইরানের জনগণ, সশস্ত্র বাহিনী এবং সরকার ও নেতৃত্বের সাহসিকতা ও স্থিরতার ভূয়সী প্রশংসা করেন।মাদুরো আরো বলেন, “ইরানের সাংবাদিকরা কেবল তথ্য পরিবেশনের জন্য জীবন দিচ্ছেন। আমরা তাদের সাহস ও পেশাদারিত্বকে সম্মান জানাতে চাই।”ভোরের আকাশ//হ.র
পাকিস্তানের উত্তর ওয়াজিরিস্তানের মির আলী এলাকায় ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলায় দেশটির সেনাবাহিনীর অন্তত ১৩ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। হামলার জন্য প্রতিবেশী দেশ ভারতকে দায়ী করেছে পাকিস্তান, যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে নয়াদিল্লি।রোববার (২৯ জুন) রয়টার্স এবং দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল-এর প্রতিবেদনে জানানো হয়, শনিবার সেনাবাহিনীর একটি কনভয়ের ওপর চালানো আত্মঘাতী হামলায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এই হামলার পেছনে ভারতের “রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা” রয়েছে এবং ভারত-সমর্থিত জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ফিতনা আল-খারিজ’ এ হামলায় সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। সেনাবাহিনীর ভাষ্য অনুযায়ী, বিস্ফোরকবোঝাই একটি গাড়ি নিয়ে কনভয়কে লক্ষ্য করে আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়।প্রথম সারির দল হামলাকারীকে থামানোর চেষ্টা করলেও সে একটি গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা দিয়ে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে ঘটনাস্থলেই ১৩ সেনা সদস্য প্রাণ হারান।এই হামলায় আরও তিনজন বেসামরিক নাগরিক গুরুতর আহত হন, যাদের মধ্যে দুই শিশু ও এক নারী রয়েছেন।ঘটনার পর পাকিস্তান সেনাবাহিনী ব্যাপক সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে এবং দাবি করেছে, অভিযানে ১৪ জন “খারিজি” জঙ্গি নিহত হয়েছে। সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে এবং গোটা এলাকা এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআরের বিবৃতিতে বলা হয়, “ভারতের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সন্ত্রাসবাদ পুরোপুরি নির্মূল করতে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও জনগণ অঙ্গীকারবদ্ধ। আমাদের শহীদদের আত্মত্যাগ এই সংকল্প আরও দৃঢ় করেছে।”হামলার পরপরই সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির পেশোয়ার কর্পস সদর দপ্তর পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, “ভারত-সমর্থিত জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী দৃঢ়তা ও সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করছে। জাতি এ লড়াইয়ে একসঙ্গে আছে।”তিনি আরও বলেন, “এ ধরনের হামলার পেছনে থাকা শক্তিগুলোকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। শুধু সেনাবাহিনী নয়, বেসামরিক বাহিনী ও পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধিও অত্যন্ত জরুরি, বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখাওয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও মজবুত করতে হবে।”পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এবং প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।প্রেসিডেন্ট বলেন, “শহীদরা জাতির প্রকৃত বীর। সন্ত্রাসবাদ পুরোপুরি নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।”প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, “ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসীরা কাপুরুষোচিত হামলা চালিয়েছে। জাতি শহীদদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।”এদিকে ভারত এই হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোববার এক বিবৃতিতে জানায়, “ওয়াজিরিস্তানে আত্মঘাতী হামলার জন্য পাকিস্তানের সেনাবাহিনী যে বিবৃতিতে ভারতকে দায়ী করেছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও প্রত্যাখ্যানযোগ্য।”ভোরের আকাশ//হ.র