ভোরের আকাশ প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০২৫ ০২:৫৫ এএম
সংগৃহীত ছবি
চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের যত নাগরিক কানাডায় শরণার্থী হিসেবে বসবাসের আবেদন করেছেন তা গত বছরের পুরো সময়জুড়ে হওয়া আবেদনের তুলনায় বেশি।
বৃহস্পতিবার কানাডার অভিবাসন ও শরণার্থী বোর্ডের দেওয়া তথ্যে এ পার্থক্য দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
তাদের হিসাবে, ২০১৯ সাল থেকে শুরু করে ২০২৪ পর্যন্ত প্রতি বছর যত মার্কিনি আবেদন করেছেন, তার চেয়ে ২০২৫ সালের প্রথমভাগেই বেশি আবেদন জমা পড়েছে। সব মিলিয়ে কানাডায় এখন আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা প্রায় ৫৫ হাজার, এর মধ্যে মার্কিন আবেদনকারীর সংখ্যা মাত্র ২৪৫।
প্রতিবেশী এ দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের করা শরণার্থী আবেদন অতীতে খুব একটা গৃহীত হতে দেখা যায়নি। স্থলসীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র পেরিয়ে কানাডায় আশ্রয় চাওয়া অন্য দেশের নাগরিকদের ক্ষেত্রে অটোয়া দ্বিপাক্ষিক এক চুক্তির আওতায় ওই আবেদনকারীদের যুক্তরাষ্ট্রেই ফেরত পাঠায়। এক্ষেত্রে তাদের যুক্তি থাকে, আবেদনকারীর উচিত সেই দেশেই আশ্রয় চাওয়া, প্রথম যে ‘নিরাপদ’ দেশে তিনি নেমেছিলেন।
গত বছর কানাডায় আশ্রয় চেয়ে করা আবেদনে ২০৪ জন যুক্তরাষ্ট্রে নিপীড়িত হওয়ার কথা কিংবা সম্ভাব্য নিপীড়নের আশঙ্কার কথা বলেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদেও কানাডায় আশ্রয়প্রার্থী মার্কিনির সংখ্যা বাড়তে দেখা গিয়েছিল। কেন মার্কিনিরা আশ্রয়ের আবেদন করছে, কানাডার অভিবাসন ও শরণার্থী বোর্ডের তথ্যে তা বলা হয়নি। তবে ৮ আইনজীবী রয়টার্সকে বলেছেন, অনেক ট্রান্স আমেরিকানই এখন দেশ ছাড়তে চাইছেন বলে তারা শুনতে পাচ্ছেন।
আরিজোনার এক ট্রান্স নারীর সঙ্গে রয়টার্সের কথা হয়েছে, যিনি এপ্রিলে কানাডায় শরণার্থী মর্যাদা চেয়ে আবেদন করেছেন; আরেক নারী আবেদন করেছেন তার অল্পবয়সী ট্রান্স মেয়ের হয়ে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি ট্রান্স আমেরিকানদের অধিকার সীমিত করেছে। জেন্ডার সংক্রান্ত চিকিৎসা, সেনাবাহিনীতে নিয়োগ, বাথরুম ব্যবহার, বিভিন্ন খেলায় তাদের অংশগ্রহণে নানান বিধিনিষেধও আরোপ হয়েছে।
শরণার্থী মর্যাদা পেতে হলে, আশ্রয় প্রার্থীকে অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের কোথাও যে তার জন্য নিরাপদ নয়- কানাডার অভিবাসন ও শরণার্থী বোর্ডকে তা বিশ্বাস করাতে হবে।
কানাডার এ বোর্ড সম্প্রতি হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো কিছু মানবাধিকার গোষ্ঠীর নথি বিবেচনায় নিয়েছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে এলজিবিটিকিউ ব্যক্তিদের সঙ্গে আচরণ খতিয়ে দেখা হয়েছে। অভিবাসন ও শরণার্থী বোর্ড এসব নথিকে দেশভিত্তিক পরিস্থিতি সংক্রান্ত জাতীয় নথি প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, যে মার্কিন নাগরিকরা কানাডায় শরণার্থী মর্যাদা চেয়েছে তারা ‘সত্যিকারের আতঙ্ক ও নিপীড়নের মুখে থাকা’ ব্যক্তিদের জন্য জায়গা খালি করবেন।
ভোরের আকাশ/তা.কা