ইরানে বড় হামলার ইঙ্গিত, সামরিক ও বাণিজ্যিক অঞ্চল ছাড়তে বলল ইসরায়েল
মধ্যপ্রাচ্যে যখন উত্তেজনা চরমে, ঠিক সেই সময় ইরানের বিরুদ্ধে বড় ধরনের হামলার সরাসরি ইঙ্গিত দিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র মাস্টার সার্জেন্ট কামাল পিনহাসি ফার্সি ভাষায় প্রকাশিত এক বার্তায় ইরানিদের উদ্দেশে স্পষ্ট সতর্কতা জারি করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই বার্তায় ইরানের সাধারণ মানুষকে সামরিক ঘাঁটি, পরমাণু স্থাপনা ও বাণিজ্যিক এলাকা থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। কামাল পিনহাসি বলেন, “ইরানীয়দের জন্য হুশিয়ারি। সামরিক ঘাঁটি, পরমাণু কেন্দ্র এবং বাণিজ্যিক এলাকা থেকে দ্রুত সরে যান। আপনার জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে এই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব এলাকা ত্যাগ করুন এবং ফিরে যাবেন না। এসব স্থানের কাছাকাছি অবস্থান করাও হতে পারে প্রাণঘাতী।”
ইসরায়েলের এই বার্তা ইতোমধ্যে ইরানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে এবং ফার্সি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের সম্ভাব্য লক্ষ্য হতে পারে ইরানের পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র, বৃহৎ সামরিক ঘাঁটি, অস্ত্র উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এবং কৌশলগত বাণিজ্যিক হাব। এই সরাসরি হুমকিকে যুদ্ধের প্রাক-ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন অনেক আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ও কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞ।
এ ধরনের প্রকাশ্য সতর্কবার্তা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি করেছে এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে কূটনৈতিক উদ্বেগও বাড়িয়ে তুলেছে।
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
ইরানের ছোড়া মিসাইল সরাসরি আঘাত হেনেছে ইসরায়েলের বন্দরনগরী হাইফার একটি আবাসিক ভবনে। এ ঘটনায় অন্তত চারজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি জরুরি সেবা সংস্থা।রবিবার (১৫ জুন) রাতে হাইফা শহরে এই হামলা ঘটে। আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শহরটির আকাশে বিস্ফোরণের দৃশ্য তাদের ক্যামেরায় ধরা পড়ে এবং আকাশ থেকে ঘন ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা যায়।ইসরায়েলি উদ্ধারকারী সংস্থা জাকা জানায়, হামলায় একটি আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং আহতদের উদ্ধার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।ইসরায়েলের ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিস নিশ্চিত করেছে যে, মিসাইলটি সরাসরি ভবনে আঘাত করেছে। তারা জানিয়েছে, জরুরি সেবা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে।এর আগে, ইরান একযোগে ইসরায়েলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে বেশ কয়েক ডজন মিসাইল নিক্ষেপ করে। তবে এই হামলায় হাইফার মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরে সরাসরি আঘাত নতুন মাত্রার উদ্বেগ তৈরি করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।উল্লেখ্য, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার উত্তেজনা সম্প্রতি তীব্র আকার ধারণ করেছে। এরই মধ্যে এই হামলা দুই দেশের মধ্যে সরাসরি সামরিক সংঘর্ষের ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।সূত্র: রয়টার্সভোরের আকাশ//হ.র
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে ইরানের ওপর ইসরায়েলের লাগাতার হামলা ঘিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিক্রিয়া দিন দিন আরও তীব্র হচ্ছে। ‘দ্য রাইজিং লায়ন’ নামে ইসরায়েলের সর্বশেষ সামরিক অভিযানের পর এবার কড়া হুঁশিয়ারি দিল পাকিস্তান, পাশাপাশি স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে চীন ও তুরস্ক।শনিবার (১৪ জুন) পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে দেওয়া এক ভাষণে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, "আমরা ইরানের পাশে আছি এবং তাদের স্বার্থ রক্ষায় প্রতিটি আন্তর্জাতিক মঞ্চে সমর্থন জানাবো। যদি মুসলিম দেশগুলো এখন ঐক্যবদ্ধ না হয়, তাহলে একে একে সবাইকেই একই পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।" তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলের আগ্রাসনের শিকার শুধু ইরান নয়, বরং ফিলিস্তিন ও ইয়েমেনের মতো মুসলিম দেশগুলোও বারবার হামলার লক্ষ্যে পরিণত হচ্ছে।শুক্রবার রাতে ইসরায়েল তেহরানসহ ইরানের আটটি বড় শহরে হামলা চালায়। এই ঘটনার পর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ডাকা হয় জরুরি বৈঠক। সেখানে চীনের রাষ্ট্রদূত ফু কং বলেন, "ইসরায়েল ইরানের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার ওপর সরাসরি আঘাত করেছে। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করছি এবং সংঘাতের সম্ভাব্য পরিণতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।"চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই টেলিফোনে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচির সঙ্গে কথা বলেন এবং ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার নিন্দা জানান। পাশাপাশি তিনি বিষয়টি জাতিসংঘে তোলার আশ্বাসও দিয়েছেন।তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গে ফোনালাপে বলেন, "নেতানিয়াহুর এই আগ্রাসন পুরো অঞ্চলকে অগ্নিগর্ভ করে তুলছে। এটি আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের স্পষ্ট লঙ্ঘন।"ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতার যৌথভাবে বিবৃতি দিয়ে হামলাকে “মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির গভীর ষড়যন্ত্র” বলে আখ্যা দেয়।এদিকে ইরানের পাল্টা প্রতিক্রিয়ার পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ফোনে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সতর্ক বার্তা দেন। একই সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে নতুন করে আলোচনারও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।বিশ্লেষকদের মতে, এ অঞ্চলে যে কোনো মুহূর্তে বড় আকারের সামরিক সংঘর্ষের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে, যা গোটা বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।ভোরের আকাশ//হ.র
মধ্যপ্রাচ্যে যখন উত্তেজনা চরমে, ঠিক সেই সময় ইরানের বিরুদ্ধে বড় ধরনের হামলার সরাসরি ইঙ্গিত দিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র মাস্টার সার্জেন্ট কামাল পিনহাসি ফার্সি ভাষায় প্রকাশিত এক বার্তায় ইরানিদের উদ্দেশে স্পষ্ট সতর্কতা জারি করেছেন।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই বার্তায় ইরানের সাধারণ মানুষকে সামরিক ঘাঁটি, পরমাণু স্থাপনা ও বাণিজ্যিক এলাকা থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। কামাল পিনহাসি বলেন, “ইরানীয়দের জন্য হুশিয়ারি। সামরিক ঘাঁটি, পরমাণু কেন্দ্র এবং বাণিজ্যিক এলাকা থেকে দ্রুত সরে যান। আপনার জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে এই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।”তিনি আরও বলেন, “পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব এলাকা ত্যাগ করুন এবং ফিরে যাবেন না। এসব স্থানের কাছাকাছি অবস্থান করাও হতে পারে প্রাণঘাতী।”ইসরায়েলের এই বার্তা ইতোমধ্যে ইরানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে এবং ফার্সি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের সম্ভাব্য লক্ষ্য হতে পারে ইরানের পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র, বৃহৎ সামরিক ঘাঁটি, অস্ত্র উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এবং কৌশলগত বাণিজ্যিক হাব। এই সরাসরি হুমকিকে যুদ্ধের প্রাক-ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন অনেক আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ও কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞ।এ ধরনের প্রকাশ্য সতর্কবার্তা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি করেছে এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে কূটনৈতিক উদ্বেগও বাড়িয়ে তুলেছে।ভোরের আকাশ//হ.র
ইসরায়েলের হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই জরুরি বৈঠকে বসছে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)। সোমবার (১৬ জুন) অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় সংস্থাটির সদরদপ্তরে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতকে কেন্দ্র করে এই বৈঠক আয়োজিত হচ্ছে। এর আগে, রাশিয়া ও ভেনেজুয়েলা যৌথভাবে আইএইএর কাছে বৈঠক ডাকার অনুরোধ জানিয়েছিল। সংস্থাটির পক্ষ থেকে সেই অনুরোধেই বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে।ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরএনএ জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১২৮ জন নিহত এবং আরও ৯০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছে নারী, শিশু এবং সামরিক বাহিনীর সদস্যরাও।তেহরানের একটি ভবনে চালানো এক হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৬০ জন, যাদের মধ্যে ২০ জন শিশু বলে জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। এছাড়া পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশে ইসরায়েলি হামলায় ৩১ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই সেনা সদস্য। পশ্চিম আজারবাইজানে একটি অ্যাম্বুলেন্সে হামলায় নিহত হয়েছেন রেড ক্রিসেন্টের দুই কর্মী।ইরানের জাতিসংঘ মিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুই দিন আগে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন ৭৮ জন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ৩২০ জন। দেশটির সরকারি মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি জানান, শুধুমাত্র গত তিনদিনেই নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ জন নারী ও শিশু।উল্লেখ্য, চলমান এই সংঘাতকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে, এবং আইএইএর আসন্ন বৈঠককে সংকট নিরসনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।ভোরের আকাশ//হ.র