সংগৃহীত ছবি
রাশিয়ার ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে এক লাখেরও বেশি বাড়ি-ঘর বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি।
টেলিগ্রামে দেওয়া এক বার্তায় তিনি জানান, পলতাভা, সুমি ও চেরনিহিভ অঞ্চলে এই হামলার প্রভাব পড়েছে। বুধবার (২৭ আগস্ট) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ইউক্রেনের জ্বালানি মন্ত্রণালয় বলেছে, মস্কোর এই পদক্ষেপ মূলত শীতের আগে বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংসের ধারাবাহিক নীতি। গত বছর ইউক্রেন অভিযোগ করেছিল, রাশিয়া তাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার অর্ধেক ধ্বংস করেছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনও পাল্টা আক্রমণে রুশ তেল শোধনাগার ও জ্বালানি ডিপোতে হামলা চালিয়েছে।
বুধবারের পোস্টে জেলেনস্কি জানান, রাশিয়া এক রাতেই প্রায় ১০০টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে। লক্ষ্যবস্তু ছিল বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ জ্বালানি স্থাপনা, তবে খারকিভ অঞ্চলের একটি স্কুল এবং খেরসনে একটি উঁচু ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, “রাশিয়াকে থামাতে এবং প্রকৃত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন ধরনের চাপ প্রয়োজন। আমরা সেই চাপ সৃষ্টিতে অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছি।”
রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরুর সাড়ে তিন বছর পরও ময়দানে লড়াই থামার কোনো লক্ষণ নেই। মঙ্গলবার ইউক্রেনের এক সামরিক কর্মকর্তা স্বীকার করেন, রুশ সেনারা প্রথমবারের মতো দিনিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলে প্রবেশ করেছিল। তবে ওই অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
মস্কো এখনও দিনিপ্রোপেত্রোভস্ককে নিজেদের বলে দাবি করেনি, যদিও দোনেৎস্কসহ ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের চারটি অঞ্চলকে নিজেদের বলে ঘোষণা করেছে। বুধবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তাদের বাহিনী দোনেৎস্কের একটি গ্রাম দখল করেছে। প্রচুর হতাহতের মুখে পড়লেও ওই অঞ্চলে রাশিয়া সাম্প্রতিক সময়ে কিছু অগ্রগতি অর্জন করেছে।
এদিকে যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চলতি মাসের মাঝামাঝিতে তিনি আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এবং পরে ওয়াশিংটনে জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই পুতিন-জেলেনস্কি বৈঠকের জন্য চাপ দিচ্ছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এ উদ্যোগ সমর্থন করলেও তিনি পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে এমন নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চাইছেন, যাতে শান্তিচুক্তির পর ভবিষ্যতে রাশিয়া আর নতুন করে হামলা চালাতে না পারে।
মঙ্গলবার জেলেনস্কি কিয়েভে ব্রিটেনের সেনাপ্রধান অ্যাডমিরাল স্যার টনি রাডাকিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, যুদ্ধ শেষে তারা সেখানে সেনা পাঠাতে প্রস্তুত। এছাড়া মঙ্গলবারই জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জ বলেন, ইউক্রেনকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়ার মূল লক্ষ্য হলো দীর্ঘমেয়াদে দেশটির সেনাবাহিনীকে নিজেদের রক্ষায় সক্ষম করে তোলা।
ভোরের আকাশ/তা.কা
সংশ্লিষ্ট
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ইসরায়েলের কাছ থেকে ইউক্রেন প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পেয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, খুব শিগগিরই নতুন দুটি প্যাট্রিয়ট সিস্টেমও ইউক্রেনে পৌঁছাবে।এর আগে এই বিষয়ে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত জুনে জানিয়েছিল, ইউক্রেনে কোনো প্যাট্রিয়ট সিস্টেম পাঠানো হয়নি। তবে জেলেনস্কির দাবির ভিত্তিতে বলা হচ্ছে, এই ব্যবস্থা ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হবে, বিশেষ করে আকাশ থেকে আক্রমণ প্রতিরোধে।ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।সূত্র: জেরুজালেম পোস্টভোরের আকাশ // হ.র
সৌদি সংবাদমাধ্যম আল-আরাবিয়ার সূত্রে জানা গেছে, গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধশীল সংগঠন হামাস আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে তাদের অস্ত্র মিসরীয় ও ফিলিস্তিনি প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করতে সম্মত হয়েছে। যদিও এই খবর এখনও অন্য কোনো স্বাধীন সূত্র দ্বারা নিশ্চিত হয়নি। (রবিবার, ৫ অক্টোবর)সূত্রটি বলছে, হামাস যোদ্ধারা ইতোমধ্যে গাজার বিভিন্ন স্থানে থাকা ইসরায়েলি বন্দিদের মরদেহ সংগ্রহ শুরু করেছে এবং মরদেহ হস্তান্তরের কাজ সম্পন্ন করার জন্য তারা ইসরায়েলের বিমান হামলা বন্ধের দাবি তুলেছে। এ প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা চুক্তির উল্লেখও করা হয়েছে।আল-আরাবিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র হামাসকে আশ্বাস দিয়েছে যে ইসরায়েল পুনরায় হামলা শুরু করবে না এবং তাদের বাহিনী গাজা ত্যাগ করবে — ফলে মরদেহ হস্তান্তরে সময় লাগলেও তা সম্ভব হবে।এর আগের প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, হামাসের সামরিক শাখার এক শীর্ষ নেতা ইজ আল-দিন আল-হাদাদ রকেটসহ আক্রমণাত্মক ধরনের অস্ত্র হস্তান্তরে রাজি, কিন্তু রক্ষাত্মক রাইফেলগুলো নিজেদের কাছে রাখতে চান। তাদের যুক্তি — ইসরায়েলের দখলের মুখে রক্ষণাত্মক অস্ত্র রাখা তাদের অধিকার।হামাসের শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি, যেখানে ইতিমধ্যে ইসরায়েলি সেনারা January-র পূর্বের অবস্থানে ফিরে যাবে — অর্থাৎ গাজার জনবহুল এলাকা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সরে যেতে হবে। আলোচনার সময় ইসরায়েলের বিমান ও গোয়েন্দা ড্রোন প্রতিদিন অন্তত ১০ ঘণ্টা বন্ধ রাখতে হবে; আর বন্দিদের মুক্তির দিনগুলোতে এই সময়সীমা বাড়িয়ে ১২ ঘণ্টা রাখতে হবে। হামাস বলেছে, আলোচনা চলাকালীন এসব শর্ত মেনে চলতেই হবে এবং এই আলোচনাগুলো কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহও চলতে পারে।মধ্যস্থতাকারী পক্ষদের সঙ্গে আলোচনার সময় হামাস আরও দাবি জানিয়েছে, ইসরায়েলকে বন্দিদের লোকেশন চিহ্নিত করার জন্য তাদের বিমান ও গোয়েন্দি কার্যক্রম স্থগিত রাখতে হবে এবং গাজা সিটি থেকে সরে যেতে হবে। ইসরায়েল যদি আকাশে আক্রমণ ও গোয়েন্দি কার্যক্রম বন্ধ করে, তখনই হামাসও পাল্টা আক্রমণ স্থগিত রাখবে — এমনটাই হামাসের অবস্থান বলে জানানো হয়েছে।অন্যদিকে সাম্প্রতিক সময়ের যুদ্ধবিরতিতে ইসরায়েল বেশ কয়েকজন ফাতাহ ও হামাসের শীর্ষ নেতাকে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাবে অনীহা দেখিয়েছে; তালিকায় আছেন মারোয়ান বারঘোতি, আহমেদ সাদাত, ইব্রাহিম হামেদ, হাসান সালেমেহ ও আব্বাস সায়েদ। হামাস দাবি করেছে, এবারের যুদ্ধবিরতিই এসব নেতাদের মুক্তির শেষ সুযোগ।ভোরের আকাশ// হর
ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব জাভার সিদোয়ারজো শহরে মাদ্রাসা ভবন ধসের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ জনে। এ ঘটনায় এখনো ২৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তবে যত সময় যাচ্ছে তাদের জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে। খবর রয়টার্সের।এর আগে গত সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) আসরের নামাজ চলাকালীন হঠাৎ ভবনটির একটি অংশ ধসে পড়ে।দেশটির জাতীয় অনুসন্ধান ও উদ্ধার সংস্থার অপারেশন ডিরেক্টর যুধি ব্রামান্তিও এক বিবৃতিতে বলেন, রোববার সকাল পর্যন্ত ১৪১ জনকে উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে ১০৪ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় এবং ৩৬ জন মারা গেছেন।তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় এখনো ২৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। প্রাথমিকভাবে নিম্নমানের নির্মাণের ভবনটি ধসে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন তদন্তকারীরা। নিখোঁজদের জীবিত উদ্ধারের সর্বোত্তম সময় ৭২ ঘণ্টা পার হওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার উদ্ধারকাজে ভারি যন্ত্রপাতি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন নিখোঁজদের পরিবার।এর আগে গত সোমবার ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপের ওই মাদ্রাসা ভবন ধসে পড়ে। স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনার সময় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা আসরের নামাজের জন্য জমায়েত হচ্ছিলেন।ভোরের আকাশ/মো.আ.
মানবিক ত্রাণবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র নেতৃত্ব দেওয়া গ্রেটা থুনবার্গের সঙ্গে ইসরাইলি বাহিনী ‘দুর্ব্যবহার ও নির্যাতন’ করেছে— এমনটাই অভিযোগ তুলেছে বহরটির অন্যান্য আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবারা।শনিবার (৪ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।এদিন ইসরাইলের হাতে আটক হওয়া কর্মীদের মধ্যে ১৩৭ জনকে তুরস্কে পাঠানো হয়েছে, যার মধ্যে ৩৬ জন তুর্কি নাগরিকও রয়েছেন।তুর্কি কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।তুর্কি সাংবাদিক এবং গাজা সুমুদ ফ্লোটিলার অংশগ্রহণকারী এরসিন সেলিক স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, তিনি গ্রেটা থুনবার্গকে নির্যাতন করতে দেখেছেন। তিনি জানিয়েছেন, কীভাবে তাকে (থুনবার্গ) মাটিতে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং ইসরাইলি পতাকা চুম্বন করতে বাধ্য করা হয়েছিল, তা তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন।মালয়েশিয়ার কর্মী হাজওয়ানি হেলমি এবং আমেরিকান অংশগ্রহণকারী উইন্ডফিল্ড বিভার ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে একই রকম বর্ণনা দিয়েছেন। তারা অভিযোগ করেছেন, থুনবার্গকে ধাক্কা দিয়ে ইসরাইলি পতাকা দিয়ে প্যারেড করানো হয়। হেলমি বলেন, ‘পর্যাপ্ত পরিষ্কার পানি এবং ওষুধও দেয়নি ইসরাইলি বাহিনী।’বিভার বলেন, ‘থুনবার্গের সঙ্গে “ভয়ঙ্কর আচরণ” করা হয় এবং তা প্রচারের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল।’ তিনি আরও জানান, কীভাবে অতি-ডানপন্থি জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির থুনবার্গকে ধাক্কা দিয়ে একটি ঘরে প্রবেশ করান।নৌবহরে থাকা ইতালীয় সাংবাদিক লরেঞ্জো আগোস্তিনোও থুনবার্গের সঙ্গে বাজে আচরণের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি আনাদোলুকে বলেন, ‘গ্রেটা থুনবার্গ একজন সাহসী নারী, যার বয়স মাত্র ২২ বছর। তাকে অপমানিত করা হয় এবং ইসরাইলি পতাকায় মুড়িয়ে ট্রফির মতো প্রদর্শন করা হয়।’অন্যরাও গুরুতর দুর্ব্যবহারের বর্ণনা দিয়েছেন। তুর্কি টিভি উপস্থাপক ইকবাল গুরপিনার বলেন, ‘তারা আমাদের সঙ্গে কুকুরের মতো আচরণ করে। তারা আমাদের তিন দিন ধরে ক্ষুধার্তও রেখেছিল। তারা আমাদের পানি দেয়নি। টয়লেট থেকে আমাদের পানি পান করতে হয়েছে। এটি ছিল একটি ভয়াবহ গরম দিন এবং আমরা সবাই পুড়ে যাচ্ছিলাম তিনি জানান, এই অগ্নিপরীক্ষা তাকে গাজা সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা দিয়েছে।এর আগে গাজায় ত্রাণ সরবরাহের উদ্দেশে ফ্লোটিলা অভিযানের জন্য যাওয়া ৪০টি নৌযান এবং ৪৫০ জনেরও বেশি বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত আন্তর্জাতিক কর্মীকে আটক করে ইসরাইল। এরপরই বিশ্বজুড়ে নিন্দার মুখে পড়ে তারা। তেল আবিব ঘোষণা করেছে, আটক বাকিদের শিগগিরই ইউরোপে পাঠানো হবে।ভোরের আকাশ/মো.আ.