আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৫ ০১:৩১ এএম
তিন বছরে ৫ লাখ কর্মী নেবে ইতালি, বাংলাদেশিদের জন্যও বড় সুযোগ
ইতালি আগামী তিন বছরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলো থেকে কমপক্ষে পাঁচ লাখ বিদেশি কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। শ্রমবাজারে শ্রমিক সংকট মোকাবিলায় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির মন্ত্রিসভা।
সোমবার (১ জুলাই) ইতালির মন্ত্রিসভার এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানানো হয়, ২০২৬ থেকে ২০২৮ সাল পর্যন্ত ধাপে ধাপে এই কর্মী নিয়োগ করা হবে। এর মধ্যে ২০২৬ সালেই প্রায় এক লাখ ৬৪ হাজার ৮৫০ জন কর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে। ২০২৮ সালের মধ্যে এই সংখ্যা বাড়িয়ে চার লাখ ৯৭ হাজার ৫৫০ জনে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া ও জন্মহার কমে যাওয়ায় ইতালির শ্রমবাজারে ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। চলতি বছরই দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা জন্মের তুলনায় দুই লাখ ৮১ হাজার বেশি। ফলে জনসংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৮০ লাখে।
দেশটির থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ‘রিও কন্তি পাবব্লিসি’র মতে, চলমান সংকট মোকাবিলা ও জনসংখ্যার ভারসাম্য রক্ষা করতে ২০৫০ সালের মধ্যে অন্তত ১ কোটি অভিবাসী প্রয়োজন হবে ইতালির।
ইতালির এই কর্মী নিয়োগ উদ্যোগে বাংলাদেশিদেরও বড় সুযোগ তৈরি হচ্ছে। কারণ ইতোমধ্যে নিয়মিত অভিবাসন ও অনিয়মিত অভিবাসন প্রতিরোধে বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) সই হয়েছে।
চলতি বছরের মে মাসে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি ঢাকায় এসে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এই চুক্তি করেন। এতে দুই দেশের মধ্যে অভিবাসন বিষয়ে যৌথ কার্যক্রম ও নিয়মিত ভিসার সুযোগ বাড়ানোর বিষয়ে ঐক্যমত্য হয়।
বাংলাদেশের পক্ষে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি জানান, “ইতালি সিজনাল ও নন-সিজনাল—দুই ধরনের কর্মী নেবে। আমাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে ইতালীয় ভাষা শেখানো এবং দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।”
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদারে আগামী ৩০ আগস্ট ঢাকায় আসার কথা রয়েছে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির। সফরটি সংক্ষিপ্ত হলেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ১ সেপ্টেম্বর সকালে তিনি ঢাকা ছাড়বেন বলে জানা গেছে।
এর আগে ঢাকায় সফরকালে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, “ইতালিতে বাংলাদেশি কমিউনিটি খুবই সফল। তারা তরুণ, পরিশ্রমী এবং ইতালির সমাজে ভালোভাবে মিশে গেছে। আমাদের আরও বাংলাদেশি প্রয়োজন। তবে আমরা চাই, তারা নিয়মিত পথে আসুক।”
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানান, অনিয়মিত অভিবাসন ও মানবপাচার প্রতিরোধে বাংলাদেশ ইতালির সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। ইতালির নতুন কর্মসূচি এবং দ্বিপাক্ষিক সমঝোতার ফলে আগামীতে বাংলাদেশিদের জন্য নিরাপদ, বৈধ এবং সম্মানজনক কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ভোরের আকাশ//হ.র