‘১৯৭১ সালের প্রতিশোধ নিয়েছে পাকিস্তান’: প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ দাবি করেছেন, ভারতের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক পাল্টা হামলার মাধ্যমে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের প্রতিশোধ নিয়েছে পাকিস্তান।
বুধবার (১৪ মে) শিয়ালকোটের পাসরুর সেনানিবাসে ‘অপারেশন বুনইয়ান-উন-মারসুস’-এ অংশগ্রহণকারী সেনাদের সঙ্গে সাক্ষাতে এই মন্তব্য করেন তিনি।
শাহবাজ বলেন, "পাকিস্তানের সেনারা ভারতের অপ্ররোচিত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কঠোর ও দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আমাদের রক্ষীরা শত্রুপক্ষকে প্রতিহত করেছে। এটি পাকিস্তানের জন্য একটি গৌরবজনক ও ঐতিহাসিক মুহূর্ত।"
তিনি আরও বলেন, "১৯৭১ সালে আমরা যে যন্ত্রণা সয়েছি, এবার সেই অতীতের প্রতিশোধ নেওয়া হয়েছে। ভারত যেন ভুলে না যায়, ইতিহাস থেকে আমাদের কিছুই শেখার বাকি নেই।"
শাহবাজ শরীফের সফরে তার সঙ্গে ছিলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, সেনাপ্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, ও বিমানবাহিনীর প্রধানসহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ করে শাহবাজ বলেন, "১৯৭১ সালে বিশ্বের সবাই জানে কারা মুক্তিবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এখন তারাই বেলুচ লিবারেশন আর্মি ও তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানকে মদত দিচ্ছে। এই সহায়তা ভারতের দিক থেকেই আসছে।"
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে আরও বলেন, "মোদি সাহেব, আপনার আগ্রাসী বক্তব্য আপনার কাছেই রাখুন। পাকিস্তান শান্তি চায়, তবে আমাদের এই শান্তির আকাঙ্ক্ষাকে দুর্বলতা ভাবার ভুল করবেন না।"
পানি প্রবাহ ইস্যুতে ভারতকে কড়া বার্তা দিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, "যদি ভারত পাকিস্তানে পানি প্রবাহ বন্ধের চেষ্টা করে, তবে মনে রাখুন—পানি ও রক্ত একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না। এটি আমাদের সীমারেখা, যেখানে কোনো রকম ছাড় দেওয়া হবে না।"
শেষে আবারও ভারতের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, "আপনারা যদি আবারও আগ্রাসনের পথে হাঁটেন, তাহলে এমন পরিণতি ভোগ করবেন যা আপনাদের কল্পনারও বাইরে।"
সূত্র: জিও টিভি
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়া দুই দেশ তাদের সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ও পারস্পরিক বন্ধুত্ব আরও গভীর করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে। শনিবার (২৮ জুন) পিয়ংইয়ংয়ে উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন এবং রাশিয়ার সংস্কৃতিমন্ত্রী ওলগা লিউবিমোভা এক বৈঠকে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন।কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির খবরে জানা গেছে, রাশিয়ার সংস্কৃতিমন্ত্রী লিউবিমোভা কাজের জন্য উত্তর কোরিয়ায় অবস্থান করছেন। বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় উত্তর কোরিয়ার শাসক দল ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদর দপ্তরে, যেখানে উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে দুই দেশের প্রতিনিধি পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করেন।কিম জং উন বলেন, ‘উভয় দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে আরও গভীরভাবে জানার জন্য শিল্প ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি।’ তিনি রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে বন্ধুত্ব, সহযোগিতা এবং বোঝাপড়াকে আরও দৃঢ় করার জন্য সাংস্কৃতিক বিনিময়ের গুরুত্ব তুলে ধরেন।বৈঠকের পর কিম জং উন ও লিউবিমোভা এক সাংস্কৃতিক কনসার্টে অংশ নেন, যেখানে দুই দেশের ঐতিহ্যবাহী লোকসংগীত ও নৃত্য পরিবেশনা হয়। কিম জং উন রুশ শিল্পীদের ফুলের ঝুড়ি দিয়ে অভিনন্দন জানান।বিদায় অনুষ্ঠানে কিম জং উন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং রাশিয়ার জনগণের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা জানানোর জন্য মন্ত্রী লিউবিমোভাকে অনুরোধ করেন।এই সাক্ষাৎ এমন সময় ঘটলো যখন রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সামরিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে, বিশেষ করে পুতিনের সাম্প্রতিক পিয়ংইয়ং সফরের পর থেকে।ভোরের আকাশ//হ.র
কলকাতার দক্ষিণ কলকাতা আইন কলেজে এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিজেপি। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি তারা দাবি করছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। বিজেপি অভিযোগ করেছে, ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) অভিযুক্তদের রক্ষা করার চেষ্টা করছে এবং নারীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।বিজেপির মুখপাত্র গৌরব বল্লভ বলেছেন, “একজন নারী মুখ্যমন্ত্রী থাকার পরও পশ্চিমবঙ্গ নারীদের প্রতি শোষণ ও অত্যাচারের ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে। টিএমসি সর্বদা অভিযুক্তদের বাঁচানোর চেষ্টা করে এবং নির্যাতিতার পরিবারকে সাহায্য করে না। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অবিলম্বে পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছি, তারপরই নির্যাতিতার পরিবার ন্যায়বিচার পাবে।”এএনআই সংবাদ সংস্থাকে গৌরব বল্লভ আরও বলেন, “টিএমসি বিধায়করাও এমন বক্তব্য দিচ্ছেন, যা পুরো পরিস্থিতি হালকা করার চেষ্টা। তাদের উচিত ভাবা যে, যদি তাদের পরিবারের কোনো নারীর সঙ্গে এমন কিছু ঘটে, তাদের কেমন লাগত।”এদিকে, এই ঘটনাটি তদন্তের জন্য সোমবার বিজেপির চার সদস্যের তথ্য অনুসন্ধানকারী দল কলকাতায় পৌঁছেছে। দলটি পশ্চিমবঙ্গের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে।পুলিশ জানায়, ২৫ জুন কলেজ ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া এই ঘটনার জন্য চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যার মধ্যে তিনজন মূল অভিযুক্ত এবং একজন কলেজের প্রহরী। তদন্ত চলাকালীন জানা গেছে, প্রধান অভিযুক্ত মনোজিত মিশ্রকে ভুক্তভোগী প্রত্যাখ্যান করেন। তবে বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পরই তাকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ আরও কয়েকজনের জড়িত থাকার কথা বলেছে।এদিকে, এই ঘটনায় টিএমসি বিধায়ক মদন মিত্রকে ‘অবাঞ্ছিত ও অপ্রয়োজনীয়’ মন্তব্যের জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছে দলটি।ভোরের আকাশ//হ.র
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের মাসভিত্তিক সভাপতির দায়িত্ব গ্রহন করেছে পাকিস্তান। মঙ্গলবার (১ জুলাই) থেকে শুরু হওয়া এই দায়িত্ব পাকিস্তানের জন্য কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়ের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলতি বছর জানুয়ারি থেকে ২০২৬ সালের শেষ পর্যন্ত অস্থায়ী সদস্য হিসেবে নিরাপত্তা পরিষদে থাকা পাকিস্তান এবারে প্রথমবারের মতো ২০১৩ সালের পর সভাপতিত্ব গ্রহণ করল।পাকিস্তানের জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধি আসিম ইফতিখার আহমদ বলেন, “বর্তমান বিশ্ব অস্থিতিশীলতার মধ্যে রয়েছে, যেখানে যুদ্ধ, জটিল ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি বাড়ছে। এই সময়ে নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতিত্ব নেওয়া পাকিস্তানের জন্য একটি বড় দায়িত্ব।”যদিও নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতিত্ব নির্বাহী ক্ষমতা প্রদান করে না, তবে সভাপতি দেশ আলোচনার সূচি ও অগ্রাধিকার নির্ধারণে প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, গাজা ও ইউক্রেন সংকটসহ নানাবিধ বৈশ্বিক ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদ কার্যত অচল অবস্থায় রয়েছে। তাই পাকিস্তানের নেতৃত্বের প্রতি আন্তর্জাতিক নজর বাড়বে।আসিম ইফতিখার আহমদ আরও জানান, “পাকিস্তান সবসময় শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তি ও কূটনীতির পক্ষে। আমরা সংলাপের মাধ্যমে সকল সদস্যের সঙ্গে সমন্বয় এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কাজ করবো।”জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মোট ১৫ সদস্য রয়েছেন, যার মধ্যে ৫ স্থায়ী এবং ১০ অস্থায়ী। প্রত্যেক সদস্য মাসিক ভিত্তিতে সভাপতির দায়িত্ব পালন করে থাকেন। পাকিস্তানের এই দায়িত্ব নেওয়া বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন দৃষ্টিভঙ্গির প্রত্যাশা জাগিয়েছে।ভোরের আকাশ//হ.র
মেক্সিকোর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সিনালোয়া প্রদেশে একটি মহাসড়কের পাশে থেকে ২০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যেখানে সবার শরীরে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। সোমবার প্রাদেশিক প্রসিকিউটর দপ্তর জানায়, উদ্ধারকৃত মরদেহগুলোর মধ্যে চারটি রাস্তার ধারে পড়ে ছিল, বাকি ১৬টি একটি পরিত্যক্ত গাড়ির ভেতরে পাওয়া গেছে।স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে টিআরটি ওয়ার্ল্ড জানিয়েছে, সিনালোয়া অঞ্চলে গত এক বছরে সহিংসতা ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে। এটি প্রধানত সিনালোয়া কার্টেলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইসমায়েল “এল মায়ো” জামবাদার সম্ভাব্য গ্রেপ্তার বা অপহরণের কারণে উস্কানি পেয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।জামবাদা দাবি করেছেন, তিনি জেলবন্দি মাদক সম্রাট জোয়াকিন “এল চাপো” গুজমানের ছেলের হাতে অপহৃত হয়েছিলেন এবং জোরপূর্বক যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া হয়েছিল। এর পর থেকেই সিনালোয়া কার্টেলের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রবল হয়েছে, যেখানে এল চাপোর অনুসারী ও তার ছেলেরা এক পক্ষ, আর জামবাদার ঘনিষ্ঠরা অন্য পক্ষ হিসেবে অবস্থান নিয়েছে।সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এই সংঘর্ষে অন্তত ১২০০ জন নিহত হয়েছেন শুধু ওই এলাকায়। সিনালোয়া কার্টেলকে যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে। মেক্সিকোর মোট ছয়টি বড় মাদক চক্র রয়েছে যাদের ওপর এই বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে।২০০৬ সাল থেকে মাদক-সংক্রান্ত সহিংসতায় মেক্সিকোতে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৪ লাখ ৮০ হাজার মানুষ এবং ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত।ভোরের আকাশ//হ.র