ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ জুন ২০২৫ ০৯:৩৪ পিএম
ফাইল ছবি
দেশে প্রায় ৩৫ লাখ শিশু শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, এই ৩৫ লাখ শিশুর মধ্যে অন্তত ১০ লাখ শিশু জড়িত রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ পেশায়।
বুধবার (১৮ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে বিশ্ব শিশুশ্রম দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান শ্রম উপদেষ্টা।
শিশুশ্রম বন্ধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যে শিশু শ্রমের সংজ্ঞা বিদ্যমান, তা সংশোধনের কাজ চলছে। নতুন সংজ্ঞায় শিশু শ্রমিকদের জন্য নির্দিষ্ট বয়সের সীমা নির্ধারণ করা হবে।’
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শ্রম আইন সংশোধনের কাজ চলছে এবং আগামী নভেম্বরের মধ্যে সংশোধিত শ্রম আইন চূড়ান্ত করা হবে।’
শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের সর্বত্রই শিশুশ্রমের করুণ চিত্র। হাজার হাজার শিশুর স্বপ্ন অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয় শিশুশ্রমে। শিশুকালে তাদের রঙিন স্বপ্ন বোনার কথা। স্বপ্নে আকাশে উড়ে বেড়ানো পাইলট হওয়ার কথা, সেই শিশুর স্বপ্নগুলো ধ্বংস হয় ইটভাটার আগুনে, রেস্টুরেন্টে আসা লোকজনের অমানবিক আচরণ ও অকথ্য বকুনিতে। একমুঠো ভাতের জন্য দিনের পর দিন সকাল-সন্ধ্যা শিশুরা অসহানীয় যন্ত্রণা সহ্য করে থাকে। একবেলা খেতে পারবে সেই আশায়। কখনোবা তাদের শিকার হতে হয় কারখানার মালিকদের অমানবিক নির্যাতনের। দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহরগুলোতে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা কম নয়। রাজধানী ঢাকায় শিশুশ্রমের করুণ অবস্থা সবারই জানা। দেশের অন্যান্য স্থানেও আশঙ্কাজনক হারে এ চিত্র বাড়ছে।
বাংলাদেশের আইন অনুসারে ১৪ বছরের নিচে কোনো শিশুকে কাজ করতে দেওয়া যাবে না। কিন্তু আইন থাকলেও আইনের প্রয়োগ নেই। বাসাবাড়িতে কাজ করে নিজেকে বাঁচানোর জন্য দুমুঠো ভাতের জন্য গৃহকর্তা-গৃহকত্রীর পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয় মা-পিতৃহারা শিশুরা। মূল্যবান জীবন ইটপোড়া কারখানা থেকে শুরু করে পাথরভাঙা, বাসাবাড়িতে কাজ করা, বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ গাড়ির গ্যারেজ, দোকানে কাজ করে শিশুরা।
বাংলাদেশের সংবিধানের ২৮ ধারায় শিশুদের সুবিধাপ্রাপ্তি বিশেষসংক্রান্ত আইন রয়েছে, যা শ্রম আইন ২০০৬ নামে পরিচিত। এতে কাজে যোগদানের কমপক্ষে বয়স ১৪ বছর আর ঝুঁকিপূর্ণ কাজের ক্ষেত্রে ১৮ বছর; কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ১৪ বছর হওয়ার আগেই শিশুদের বিভিন্ন কাজে যুক্ত থাকার চিত্র অহরহ। শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ শ্রম সংশোধন ২০১৮-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, কেউ যদি শিশুশ্রমিক নিয়োগ দেয় তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। কিন্তু বাস্তবে ভিন্ন চিত্র।
ভোরের আকাশ/এসএইচ