ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২৫ ০৫:৩০ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আরো পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির তথ্যানুসন্ধান শুরুর কথা জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই পাঁচজনের তিনজন এনবিআরের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির ‘নেতৃত্বে’ ছিলেন।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুদকের জনসংযোগ দপ্তরের সহকারী পরিচালক তানজির আহমেদ সাংবাদিকদের পাঁচ কর্মকর্তার দুর্নীতির তথ্যানুসন্ধানের তথ্য দেন। এর আগে রোববার ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির তথ্যানুসন্ধান শুরুর কথা বলেছিল সংস্থাটি তাদের মধ্যে পাঁচজনও এনবিআরের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির সামনের সারিতে ছিলেন। নতুন করে তথ্যানুসন্ধানের মুখে পড়া পাঁচ কর্মকর্তা হলেন- এনবিআরের অতিরিক্ত কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সদস্য আব্দুল রশীদ মিয়া , সদস্য লুতফুল আজীম, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, উপ কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ শিহাবুল ইসলাম এবং যুগ্ম কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সদস্য মো. তারেক হাছান।
দুদকের নথি বলছে, এনবিআরের কিছু অসাধু সদস্য ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষের বিনিময়ে করদাতাদের কর ফাঁকির সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও এনবিআরের কর্মকর্তারা নিজেরা লাভবান হতে করের পরিমাণ কমিয়ে দিতেন বলেও অভিযোগ আছে। এক্ষেত্রে প্রতিবছর সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কিছু ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা ঘুষ না পেয়ে কর ফাঁকি দেওয়ার মিথ্যা মামলা করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিককে হয়রানি করেন বলে জানা যায়।
নথিতে বলা হয়, অনেক করদাতা আগাম কর দেন আবার কেউ কেউ বেশি কর দেন নিয়ম হচ্ছে, বাড়তি কর দাতাকে ফেরত দিতে হয় কিন্তু তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ আর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, করের বাড়তি টাকা ফেরত পেতে আরও অন্তত অর্ধেক টাকা ঘুষ বা উপহারে খরচ হয় অভিযোগ রয়েছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর কর্মকর্তারা করের টাকা ফেরত দিতে নিজেরাও কামিয়ে নিচ্ছেন মোটা টাকা।
অনুরূপভাবে বিগত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন স্টেশনে চাকরির সময় বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে শুল্ক, ভ্যাট ও ক্ষেত্র বিশেষে আয়কর ফাঁকির সুযোগ করে দিয়ে ও নিজে লাভবান হয়ে রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মাধ্যমে দুর্নীত, স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন, এমন অভিযোগও রয়েছে।
এনবিআর চেয়ারম্যানের অপরসারণ দাবিতে এক সপ্তাহের কলম বিরতি, অবস্থান কর্মসূচি ও সবশেষ দুই দিনের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ পালনের পর সোমবার থেকে কাজে ফেরেন আন্দোলনকারীরা। এনবিআর কর্মকর্তাদের ‘কমপ্লিট শাটডাউনের’ দ্বিতীয় দিন রোববার কঠোর অবস্থান নেয় সরকার এনবিআরের সেবা ‘অত্যাবশ্যকীয়’ ঘোষণা করে আন্দোলনকারীদের কাজে যোগ দিতে হুঁশিয়ারি আসে। সেদিনই ছয় এনবিআর কর্মকর্তার ‘দুর্নীতির’ তথ্যানুসন্ধান শুরুর তথ্য দেয় দুদক।
একই দিন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল, তাতেও আর বসেননি অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ কমপ্লিট শাটডাউন চালু রাখায় তিনি আলোচনা থেকে সরে দাঁড়ান। এদিন সংকট সমাধানে পাঁচ উপদেষ্টাকে নিয়ে উপদেষ্টা কমিটি গঠন করার কথা জানায় সরকার। দিনভর নানা নাটকীয়তার পর রাতে ব্যবসায়ীদের বেশ কয়েকটি সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন অর্থ উপদেষ্টা সেখানেই মেলে সমাধানের সূত্র। ওই বৈঠকে ‘ইতিবাচক আশ্বাসের’ ভিত্তিতে ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের মধ্যস্থতায় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ শাটডাউন কর্মসূচি তুলে নেয়।
ভোরের আকাশ/এসএইচ