কানাডার সঙ্গে বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
বাংলাদেশে কানাডার বিনিয়োগ ও দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার (৬ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কানাডার ইন্দো-প্যাসিফিক বাণিজ্য প্রতিনিধি পল থপিলের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এই আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বার্তায় জানানো হয়, কানাডার শীর্ষস্থানীয় কোম্পানির সিনিয়র নির্বাহীদের নিয়ে গঠিত একটি উচ্চপর্যায়ের ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পল থপিল। এ দলে বেল হেলিকপ্টার, ব্ল্যাকবেরি, গিলডান অ্যাকটিভওয়্যার, জেসিএম পাওয়ার এবং অ্যাডভানটেক ওয়্যারলেস কমিউনিকেশনস-এর প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।
বৈঠকে পল থপিল বলেন, “আমরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনায় বিশ্বাস করি। বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতেই আমি এই প্রতিনিধি দল নিয়ে এসেছি।” তিনি ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গৃহীত সংস্কারমূলক পদক্ষেপের প্রশংসা করে বলেন, “আপনি সাহসী ও জরুরি কিছু সংস্কার করেছেন। আপনার গঠিত উপদেষ্টা দল ও সরকারের উদ্যোগে আমরা ইতোমধ্যে অগ্রগতির স্পষ্ট ইঙ্গিত দেখতে পাচ্ছি। এসব পদক্ষেপ টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ভিত্তি তৈরি করছে।”
উত্তরে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, “আমরা এক ধরনের দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি থেকে পুনর্গঠনের চেষ্টা করছি। গত ১৫ বছর যেন একটানা ভূমিকম্প চলেছে। সেই কঠিন বাস্তবতা থেকে সংস্কারের মধ্য দিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু আমাদের এ যাত্রায় কানাডার মতো বন্ধুদের পাশে দরকার।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ এখন শিল্প সম্প্রসারণের জন্য প্রস্তুত এবং আঞ্চলিক রপ্তানি কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠার বিশাল সম্ভাবনা রাখে। বিনিয়োগকারীদের আমরা আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। এখানে উৎপাদন করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বাজারে পুনঃরপ্তানির সুযোগ রয়েছে। আমাদের জনগণকে প্রশিক্ষণ দিতে আমরা প্রস্তুত এবং কানাডার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অংশীদার হতে আগ্রহী।”
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি সমন্বয়কারী ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ।
কানাডীয় প্রতিনিধি দলে ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং, সিনিয়র ট্রেড কমিশনার ডেবরা বয়েস, বেল হেলিকপ্টারের উইলিয়াম ডিকি, ব্ল্যাকবেরির ব্র্যাড কোলওয়েল, এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট কানাডার লাডিসলাউয়া পাপারা, গিলডান অ্যাকটিভওয়্যারের জুয়ান কন্ট্রেরাস, জেসিএম পাওয়ারের মো. আলী এবং অ্যাডভানটেক ওয়্যারলেস কমিউনিকেশনস-এর টনি র্যাডফোর্ড।
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
গত এক বছরে সরকারি সেবা গ্রহণ করেছেন, এমন নাগরিকদের মধ্যে প্রায় ৩২ শতাংশ ঘুষ-দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। এর অর্থ হচ্ছে, তাদের ঘুষ দিয়ে বা দুর্নীতির মাধ্যমে এসব সরকারি সেবা নিতে হয়েছে। প্রতি তিনজনের মধ্যে গড়ে একজনকে ঘুষ দিতে হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় পরিসংখ্যান প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত জনমত জরিপে (সিপিএস) এ চিত্র উঠে এসেছে। এ উপলক্ষে আগারগাঁও পরিসংখ্যান ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে বিবিএস।চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ৪৫ হাজার ৮৮৮টি খানার ৮৪ হাজার ৮০৭ নারী ও পুরুষ এই জরিপে অংশ নেন। বিবিএসের এই জরিপ অনুসারে, সবচেয়ে বেশি ঘুষ-দুর্নীতি হয় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে।জরিপে অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছেন, গত এক বছরে বিআরটিএতে সেবা নিতে যাওয়া নাগরিকদের ৬৩ দশমিক ২৯ শতাংশ ঘুষ-দুর্নীতির শিকার হন। এই হার আইনপ্রয়োগকারীর সংস্থায় ৬২ দশমিক ৯৪ শতাংশ, পাসপোর্ট অফিসে ৫৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ ও ভূমি নিবন্ধন অফিসে ৫৪ দশমিক ৯২ শতাংশ। নিরাপত্তার বিষয়টিও এই জরিপে উঠে আসে।জরিপ অনুসারে, ৮৪ দশমিক ৮১ শতাংশ নাগরিক সন্ধ্যার পর নিজ এলাকার আশপাশে একা চলাফেরা করতে নিরাপদ বোধ করেন। পুরুষদের তুলনায় নারীরা কম নিরাপদ বোধ করেন। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মতো অনুসারে, ৮০ শতাংশ নারী নিজ এলাকার আশপাশে একা চলাফেরা করতে নিরাপদ বোধ করেন। এর মানে, প্রতি পাঁচজন নারীর একজন সন্ধ্যায় একা চলাফেরা করতে নিরাপদ বোধ করেন না। এ ছাড়া ৮৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ পুরুষ একা চলাফেরায় নিরাপদ বোধ করেন।রাজনৈতিক প্রভাব বিষয়ের ক্ষেত্রে ২৭ দশমিক ২৪ শতাংশ নাগরিক মনে করেন যে, তারা দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সরকারের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে মতামত প্রকাশ করতে পারেন। এক্ষেত্রে শহর (২৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ) ও গ্রাম (২৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ) এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য না থাকলেও, লিঙ্গভিত্তিক পার্থক্য রয়েছে যা পুরুষের ক্ষেত্রে ৩১ দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং নারীর ক্ষেত্রে ২৩ দশমিক ০২ শতাংশ।অনুরূপভাবে ২১ দশমিক ১৯ শতাংশ নাগরিক মনে করেন যে, তারা দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতে পারেন মর্মে মতপ্রকাশ করেন। এই হার নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে যথাক্রমে ১৭ দশমিক ৮১ শতাংশ ও ২৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এ ছাড়া গত এক বছরে দেশের ১৯ দশমিক ৩১ শতাংশ জনগণ কোনো না কোনো ধরনের বৈষম্য বা হয়রানির শিকার হয়েছেন, এমনটি জরিপে উঠে এসেছে। পুরুষদের তুলনায় নারীরা বেশি বৈষম্য বা হয়রানির শিকার হন।সরকারি স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, ৪৭ দশমিক ১২ শতাংশ নাগরিক গত ১ বছরের মধ্যে অন্তত ১ বার সরকারি স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা গ্রহণ করেছেন। সেবা গ্রহণকারীদের মধ্যে ৮২ দশমিক ৭২ শতাংশ নাগরিকের মতে উক্ত স্বাস্থ্যসেবা সহজে প্রাপ্তিযোগ্য এবং স্বাস্থ্যসেবার খরচ সামর্থ্যের মধ্যে ছিল মর্মে ৮৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ নাগরিক মত প্রকাশ করেন।এক্ষেত্রে, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের মান, সেবাগ্রহীতার সাথে আচরণ এবং ডাক্তার/স্বাস্থ্যকর্মীদের সময় দেওয়ার বিষয়ে সেবা গ্রহণকারীদের সন্তুষ্টির হার যথাক্রমে ৬৫ দশমিক ০৭ শতাংশ, ৬৩ দশমিক ১০ শতাংশ এবং ৬৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। শিক্ষা ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, ৪০ দশমিক ৯৩ শতাংশ নাগরিকের কমপক্ষে একটি শিশু সরকারি প্রাথমিক/মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেন।এরমধ্যে, ৯৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ নাগরিক প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহজে প্রবেশযোগ্য (যে কোনো ধরনের যানবাহনে বা পায়ে হেঁটে ৩০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছানো যায়) ও ৯২ দশমিক ৬৬ শতাংশ নাগরিক রিপোর্ট করেন যে শিক্ষাব্যয় সামর্থ্যের মধ্যে ছিল, যেখানে মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এ হার যথাক্রমে ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ ও ৮০ দশমিক ৮৬ শতাংশ। অপরদিকে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান মানসম্মত ছিল মর্মে যথাক্রমে ৬৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ ও ৭১ দশমিক ৮৬ শতাংশ নাগরিক মত প্রকাশ করেন।অন্যান্য সরকারি সেবার (পরিচয়পত্র/নাগরিক নিবন্ধন) ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, সেবা গ্রহণকারীদের মধ্যে ৭৮ দশমিক ১২ শতাংশ সেবার প্রাপ্যতা ও ৮৬ দশমিক ২৮ শতাংশ সেবাপ্রাপ্তি ব্যয় সামর্থ্যের মধ্যে ছিল মর্মে উল্লেখ করেন। অপরদিকে, কার্যকর সেবাদান প্রক্রিয়া, সম-আচরণ, সময়মতো সেবাদানে সন্তুষ্টির হার যথাক্রমে ৬২ দশমিক ৬০ শতাংশ, ৫৬ দশমিক ২৬ শতাংশ ও ৫১ দশমিক ২৮ শতাংশ।গত দুই বছরে ১৬ দশমিক ১৬ শতাংশ নাগরিক কোনো না কোনো বিবাদ বা বিরোধের মুখোমুখি হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৮৩ দশমিক ৬০ শতাংশ নাগরিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আনুষ্ঠানিক অথবা অনানুষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থায় প্রবেশাধিকার পেয়েছেন।এর মধ্যে ৪১ দশমিক ৩৪ শতাংশ আনুষ্ঠানিক (যেমন : আদালত, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ইত্যাদি) প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এবং ৬৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ অনানুষ্ঠানিক (যেমন : কমিউনিটি নেতা, আইনজীবী ইত্যাদি) প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সেবা পেয়েছেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
গত এক বছরে যেসব নাগরিক সরকারি সেবা নিয়েছেন তাদের মধ্যে ৩১ দশমিক ৬৭ শতাংশ নাগরিকই ঘুস-দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ৩ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং নারী ২২ দশমিক ৭১ শতাংশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সিটিজেন পারসেপশন সার্ভে করে এমন তথ্য প্রকাশ করেছে।ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সময়ে দেশব্যাপী ‘সিটিজেন পারসেপশন সার্ভে (সিপিএস)’ পরিচালনা করে। ৬৪ জেলার ১ হাজার ৯২০টি প্রাইমারি স্যাম্পলিং ইউনিট থেকে ৪৫ হাহার ৮৮৮টি থানার ১৮ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী মোট ৮৪ হাজার ৮০৭ জন নারী-পুরুষ উত্তরদাতার সাক্ষাৎকার নিয়ে তথ্যসংগ্রহ করা হয়। জরিপে নাগরিকদের দৃষ্টিভঙ্গি ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নিরাপত্তা, সুশাসন, সরকারি সেবার মান, দুর্নীতি, ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার এবং বৈষম্যবিষয়ক এসডিজি ১৬ এর ছয়টি সূচকের অগ্রগতি মূল্যায়ন করা হয়েছে। জরিপের প্রশ্নপত্র জাতিসংঘ কর্তৃক নির্ধারিত আন্তর্জাতিক মান ও পদ্ধতি অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে।বিবিএস জানায়, সরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে নাগরিকদের সর্বাধিক ঘুস-দুর্নীতির শিকার হওয়া প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ শীর্ষে রয়েছে বিআরটিএ। সেখানে সেবা নিতে গিয়ে ৬৩ দশমিক ২৯ শতাংশ মানুষ দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। এছাড়া আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় ৬১ দশমি ৯৪ শতাংশ, পাসপোর্ট অফিসে ৫৭ দশমিল ৪৫ শতাংশ ও ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসে ৫৪ দশমিক ৯২ শতাংশ মানুষ সেবা নিতে গিয়ে ঘুস ও দুর্নীতির শিকার হয়েছেন।গত দুই বছরে ১৬ দশমিক ১৬ শতাংশ নাগরিক কোনো না কোনো বিবাদ বা বিরোধের মুখোমুখি হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ নাগরিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আনুষ্ঠানিক অথবা অনানুষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থায় প্রবেশাধিকার পেয়েছেন।এর মধ্যে ৪১ দশমিক ৩৪ শতাংশ আনুষ্ঠানিক (আদালত, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এবং ৬৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ অনানুষ্ঠানিক (কমিউনিটি নেতা, আইনজীবী ইত্যাদি) প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সেবা পেয়েছেন।জরিপে প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, গত ১ বছরে দেশের ১৯ দশমিক ৩১ শতাংশ জনগণ কোনো না কোনো ধরনের বৈষম্য বা হয়রানির শিকার হয়েছেন। নারীদের মধ্যে এই হার কিছুটা বেশি, যা ১৯ দশমিক ৬২ শতাংশ, যেখানে পুরুষদের মধ্যে তা ১৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ। শহরাঞ্চলে বৈষম্যের হার ২২ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ, গ্রামাঞ্চলের (১৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ) তুলনায় বেশি।এক্ষেত্রে আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং লিঙ্গভেদে বৈষম্য/হয়রানির হার সর্বাধিক। নিজের পরিবারের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ, গণপরিবহন/উন্মুক্ত স্থানে ৩১ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং কর্মস্থলে ২৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ বৈষম্য/হয়রানির ঘটনা সবচেয়ে বেশি। এরমধ্যে মাত্র ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ ভুক্তভোগী এসব ঘটনার বিষয়ে রিপোর্ট করেছেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টি বেড়েছে। এছাড়া মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। এর প্রভাবে গত ১৬ জুন থেকে দেশজুড়ে বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টিপাত আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। গতকাল বৃহস্পতিবার আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা বলেন, এখন উপকূলে বেশি বৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া দেশের সব জেলায় হালকা থেকে অতিভারী বৃষ্টি হচ্ছে। তাপমাত্রাও এখন অনেক কম।তিনি বলেন, দেশজুড়ে বৃষ্টিপাত ২৫ তারিখ (জুন) পর্যন্ত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর কিছু কিছু বিভাগে কমে আসতে পারে। তবে বর্ষাকালে বৃষ্টিপাত পুরোপুরি বন্ধ হবে না।গতকাল বৃহস্পতিবার আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম জানিয়েছেন, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে উত্তরপূর্ব ঝাড়খন্দ এবং তৎসংলগ্ন গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এলাকায় অবস্থান করছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ বিহার, সুস্পষ্ট লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় ও উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।আজ শুক্রবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।আগামীকাল শনিবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।আগামী রোববার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।পরদিন সোমবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। বর্ধিত পাঁচদিনের আবহাওয়ায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করে আসা আসাদ আলম সিয়ামকে নতুন পররাষ্ট্র সচিব করেছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার তাকে এই পদে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত তিনি পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। আজ শুক্রবার থেকে এ আদেশ কার্যকর হওয়ার কথা বলা হয়েছে এতে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পরিবর্তনের হাওয়ায় এক মাসের মাথায় পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্বে আসেন জসীম উদ্দিন। বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের ত্রয়োদশ ব্যাচের এই কর্মকর্তা পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে যোগ দেন ৮ সেপ্টেম্বর। ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে তার অবসোরত্তর ছুটিতে যাওয়ার কথা।এরইমধ্যে গত মে মাসে মাত্র আট মাসের মাথায় জসীম উদ্দিনকে পররাষ্ট্র সচিব পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এরপর ২২ মে থেকে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী। পঞ্চদশ বিসিএসের পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তা আসাদ আলম সিয়ামকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ওয়াশিংটনে রাষ্ট্রদূত করে পাঠিয়েছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।এর আগে ফিলিপিন্স ও অস্ট্রিয়ায় বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। বিদেশে থাকা মিশনগুলোর দেখভালের ‘ইন্সপেক্টর জেনারেল অব মিশনস’ পদেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। আসাদ আলম সিয়াম পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিফ অব প্রটোকল ও ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর পদেও ছিলেন। সদরদপ্তরে ইউরোপ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন অণুবিভাগের মহাপরিচালক এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র সচিবের দপ্তরে পরিচালকের দায়িত্বও সামলেছেন তিনি।ভোরের আকাশ/এসএইচ