সংগৃহীত ছবি
বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত।বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহকে তলব করে এ বিষয়ে উদ্বেগের কথা জানানো হয়।পরে এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশে কিছু উগ্রবাদী গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ড নিয়ে তাদের বিশেষ উদ্বেগ রয়েছে। এসব গোষ্ঠী ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় মিশনকে ঘিরে নিরাপত্তা পরিস্থিতি তৈরি করার পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছে—এ বিষয়টি হাইকমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
এ সময় ভারত স্পষ্টভাবে জানায়, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক কিছু ঘটনাকে কেন্দ্র করে উগ্রবাদী মহল যে ‘ভুল বয়ান’ বা বিভ্রান্তিকর বক্তব্য ছড়ানোর চেষ্টা করছে, ভারত তা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করে।
একই সঙ্গে ভারতীয় পক্ষ দুঃখ প্রকাশ করে জানায়, অন্তর্বর্তী সরকার এখনো এসব ঘটনার বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত সম্পন্ন করেনি এবং ভারতের সঙ্গে কোনো অর্থবহ প্রমাণও ভাগাভাগি করেনি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও উল্লেখ করে, বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুত্বপূর্ণ— যার ভিত্তি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। পরবর্তী সময়ে উন্নয়ন সহযোগিতা ও জনগণ-থেকে-জনগণের যোগাযোগের মাধ্যমে এ সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে। ভারত বাংলাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে এবং বরাবরই একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে মুক্ত, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে আসছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, কূটনৈতিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী বাংলাদেশে অবস্থিত সব বিদেশি মিশন ও পোস্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট সরকারের। এ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে—এমন প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেছে ভারত।
ভোরের আকাশ/তা.কা
সংশ্লিষ্ট
জুলাই যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান হাদিকে হত্যার ঘটনায় উত্তেজিত জনতা হস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর)রাতে দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা চালানোর ঘটনায় পত্রিকা দুটির সম্পাদকদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের প্রতিষ্ঠান ও সংবাদকর্মীদের ওপর এই অনাকাঙ্ক্ষিত ও ন্যাক্কারজনক হামলা আমাকে গভীরভাবে ব্যথিত করেছে। আপনাদের এই দুঃসময়ে সরকার আপনাদের পাশে আছে।’প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের ওপর এই হামলা স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর হামলার শামিল। এই ঘটনা দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে এক বিরাট বাধা সৃষ্টি করেছে।টেলিফোনে আলাপকালে সম্পাদকদের ও সংবাদমাধ্যমগুলোর পূর্ণ নিরাপত্তা এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য সহযোগিতার আশ্বাস দেন প্রধান উপদেষ্টা।খুব শিগগিরই এই সম্পাদকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা।গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকার কালভার্ট রোডে রিকশাযোগে আসার সময় একটি মোটরসাইকেলে এসে দুজন যুবক ওসমান হাদিকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে তাকে সঙ্গীরা উদ্ধার করে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়। সেখান থেকে তাকে নেওয়া হয় এভারকেয়ার হাসপাতালে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় সিঙ্গাপুরে। কিন্তু তাকে আর ফেরানো যায়নি। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে দেশবাসীকে কাঁদিয়ে হাদি না ফেরার দেশে চলে যান। তার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর উত্তেজিত জনতা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এ সময় একটি পক্ষ ভারতের দালালির অভিযোগ তুলে কারওয়ানবাজারে দৈনিক প্রথম আলোর অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে তারা একই গ্রুপের ডেইলি স্টার কার্যালয়েও ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে পত্রিকা দুটি প্রকাশনা সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের নেতা শরিফ ওসমান হাদি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার মৃত্যুর খবর দেশি সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করেছে।বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা প্রথমদিকেই হাদির মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর বাংলাদেশের ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের অন্যতম নেতা শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়েছিল।সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানায়, চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে তাদের প্রতিবেদনে জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাদির মৃত্যুর ঘোষণা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে বিক্ষোভকারীরা তার হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ডয়চে ভেলে আরও জানায়, হাদি ভারতের একজন স্পষ্টভাষী সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুতকারী যুব আন্দোলনের একজন বিশিষ্ট নেতা হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। একই খবর প্রকাশ করেছে আরেক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।হাদির মৃত্যুর খবর দিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সংস্থাটি জানায়, বৃহস্পতিবার তার মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনও একই খবর প্রকাশ করেছে।এছাড়া সিএনএ, আল আরাবিয়া, দ্য সান মালয়েশিয়া, পাকিস্তানের ডন, জিও নিউজ, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, এবং ভারতের দ্য টেলিগ্রাফ, এনডিটিভিসহ আন্তর্জাতিক আরও অনেক সংবাদমাধ্যম হাদির মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেছে।উল্লেখ্য, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা রিকশায় থাকা শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে। তিনি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন।প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, মোটরসাইকেলে করে আসা দুজন দুর্বৃত্ত খুব কাছ থেকে গুলি করে দ্রুত পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। চিকিৎসকদের মতে, গুলি তার মাথার ডান পাশ দিয়ে ঢুকে বাম পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়, তবে গুলির একটি অংশ তখনও মস্তিষ্কে রয়ে যায়।পরবর্তীতে পরিবারের সিদ্ধান্তে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সর্বশেষ উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সিঙ্গাপুর থেকে দেশে আনা হবে বলে জানানো হয়েছে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস।শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) এক শোক বার্তায় মার্কিন দূতাবাস বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে একাত্ম হয়ে তরুণ নেতা শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছে এবং তার পরিবার, বন্ধু ও সমর্থকদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছে।গুলিবিদ্ধ হয়ে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টা দিকে তিনি মারা যান।ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে তিনি মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। ঢাকা-৮ আসনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন ওসমান হাদি।ভোরের আকাশ/মো.আ.
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভের পর আজ সকালেও শাহবাগে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। মিছিল স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছে শাহবাগ।শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে ছাত্র-জনতা শাহবাগে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদী মিছিল করছেন।কেউ মিছিল সহকারে আসছেন, আবার কেউ নিজ উদ্যোগেই শাহবাগে এসে জড়ো হচ্ছেন। তাদের হাতে পতাকা, মুখে স্লোগান।‘ফ্যাসিবাদের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা এই বাংলায় হবে না’, ‘হাদি ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না,’ ‘আমরা সবাই হাদি হবো, যুগে যুগে লড়ে যাবো’ ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছেন বিক্ষুদ্ধরা।শনিরআখড়া থেকে এসে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আশফাকুর রহমান। তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, আমরা একজন সাচ্চা দেশপ্রেমিককে হারিয়েছি। রাতে ঘুমাতে পারিনি। প্রতিবাদ জানাতে সকালেই এখানে চলে এসেছি। ওসমান হাদির মতো দেশপ্রেমিক সাহসী মানুষকে হারিয়ে আমরা শোকাহত।রামপুরা থেকে শাহবাগে এসেছেন ইমরুল কায়েস। তিনি বলেন, ওসমান হাদির মৃত্যু পুরো বাংলাদেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা শোককে শক্তিতে পরিণত করে এই হত্যার প্রতিশোধ নেব। হাদি ভাইয়ের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাব না।ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর পৌঁছানোর পর উত্তাল হয়ে ওঠে রাজধানী ঢাকা। দেশের বিভিন্ন জেলাতেও শুরু হয় বিক্ষোভ। এই বিক্ষোভ থেকে আগুন দেওয়া হয় দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার ভবনে। হামলার কারণে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শুক্রবার প্রকাশ হয়নি প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা।এদিকে ওসমান হাদির মৃত্যুতে শনিবার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোকও ঘোষণা করেছে অন্তর্বতী সরকার।গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে নির্বাচনী প্রচারণা শেষে ফেরার সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হন ঢাকা-৮ আসনের স্বত্রন্ত্র প্রার্থী এবং রাজনৈতিক আন্দোলন ‘ইনকিলাব মঞ্চে’র মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখান থেকে পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ১৫ ডিসেম্বর ওসমান হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুর জেনারেল হসপিটালে (এসজিএইচ) নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মারা যান তিনি।ভোরের আকাশ/মো.আ.