মাহমুদ সালেহীন খান
প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২৫ ১২:১০ এএম
ছবি- সংগৃহীত
জুলাই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল দেশকে ‘দুর্র্বৃত্তায়ন ও দুর্বৃত্তমুক্তরণ’ এবং ‘ফ্যাসিস্ট-স্বৈরাচারমুক্ত রাষ্ট্র’ গঠন। এজন্য দেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং জাতীয় আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য অবাধ নির্বাচন- যাতে দেশ ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচারমুক্ত এবং গণতান্ত্রিকভাবে সামনের দিকে অগ্রসর হতে পারে। এ অবস্থায় অনেক বিতর্কের পর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার দেশকে গণতান্ত্রিক উত্তরণে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এছাড়া জুলাই আন্দোলনের লক্ষ্যকে সমুন্নত রাখতে ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নের বিষয়টিকেও অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। আর এসব বিষয়কে সামনে রেখে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের একই দিনে ‘জাতীয় সংসদ’ এবং গণভোট আয়োজন এবং সম্পন্নের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। আর এ অবস্থায় কঠিন চ্যলেঞ্জের মুখে রয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আসন্ন ‘নির্বাচন’ ও ‘গণভোট’কে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করা এবং সার্বিকভাবে সুষ্ঠুভাবে নিরপেক্ষ ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন সম্পন্নের বিষয়গুলো নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার মতো বিষয়গুলো নিয়ে ইসি এবং প্রশাসন কাজ করছে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
এছাড়া অপেক্ষাকৃত স্বল্পসময়ে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো, প্রয়োজনীয় ব্যালট প্রস্তুত ও সরবরাহ, লোকবল, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়ও গুরুত্বেও সঙ্গে নিয়েছে সরকার এবং নির্বাচন কমিশন। অবশ্য, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এসব বিষয় বেশ চ্যালেঞ্জের হলেও অসম্ভব নয়।
সচিবালয়ে প্রশাসনের উচ্চপর্যায় এবং নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, বর্তমান দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বাস্তবতার আলোকে ব্যয় কমানোর জন্যই একই দিনে জাতীয় নির্বাচন এবং গণভোট আয়োজন ও সম্পন্নের জন্য প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নির্দেশনা রয়েছে।
জানা গেছে, একইদিনে জাতীয় নির্বাচন এবং গণভোট সম্পন্ন করতে সরকারকে বাড়তি ১০ থেকে ১৫ শতাংশ খরচ লাগবে। মূলত ব্যয় কমানোর জন্যই একই দিনে দুটি নির্বাচনের জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী দেশের মোট ভোটারের সংখ্যা প্রায় পৌনে ১৩ কোটি (১২ কোটি ৭৬ লাখের ওপরে)। আর এর আগে দেশে বড় দুটি নির্বাচন একদিনে কখনো অনুষ্ঠিত হয়নি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একদিকে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা যেমন বাড়াতে হবে, অন্যদিকে ভোটকক্ষেও সংখ্যাও বাড়াতে হবে। আর দুটি নির্বাচনে ভোটারদের ভোট দিতেও বাড়তি সময়ের প্রয়োজন হবে। আর গণনাকারীও অনেক বেশি প্রয়োজন হবে। একদল জাতীয় সংসদের ভোট গণনা করবে, অন্যদল করবে গণভোটের ‘কাস্টিং ভোট’। তবে একই সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দিয়ে নিরাপত্তার কাজসম্পন্ন করা হবে।
সূত্র জানায়, নির্বাচনে খরচের বিষয়ে গণভোট সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারি ও বিধি প্রণয়নের পরই সার্বিকভাবে প্রকৃত ধারণা পাওয়া যাবে। আসন্ন নির্বাচনে সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রায় দুই হাজার ৮শ’ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এজন্য সংসদ ও গণভোট একদিনে একইসঙ্গে করলে ব্যয়ও অনেকাংশে সাশ্রয় হবে।
ইসি সূত্র জানায়, সরকারের লিখিত নির্দেশনার পর ইসি জাতীয় নির্বাচন এবং গণভোট বাস্তবায়নের কাজ শুরু করবে। তবে হাতে সময় থাকায় দ্রুততার সঙ্গে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির কাজসম্পন্ন করতে হবে। ইসির জন্য বিষয়টি বেশ চ্যালেঞ্জের হলেও কঠিন নয়। কারণ দুটি বক্স লাগবে, দুটি ভোটকেন্দ্র লাগবে। গণনার জন্য আলাদা লোক লাগবে। সিল ও ব্যালট পেপার ডাবল লাগবে। বিষয়টি চ্যালেঞ্জিং কিন্তু অসম্ভব না।
জানা গেছে, প্রায় ৩৪ বছর পর দেশে আরেকটি গণভোট হচ্ছে। জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি গণভোটের প্রচারণা, সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে ভোটকক্ষ বাড়ানো, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা বাড়ানো, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ আর ভোটার সংখ্যা অনুপাতে ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্সসহ সরঞ্জাম বাড়াতে হবে গণভোটে। এছাড়া প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের বিষয়টিও রয়েছে। সংসদ নির্বাচনে প্রতীক নিয়েও ব্যাপক প্রচার থাকবে। আর গণভোট নিয়ে গ্রাম-গঞ্জে সচেতনতামূলক প্রচার চালানোর বিষয়ও রয়েছে। এছাড়া একই দিনে জাতীয় ও গণভোট হলে ব্যয়ও ২০ শতাংশের বেশি বাড়বে। দেশের প্রায় পৌনে ১৩ কোটি ভোটারের সঙ্গে প্রবাসের লাখ দশেক ভোটার নিয়ে এ নির্বাচন হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন ভোরের আকাশ’কে বলেন, গণভোটের জন্য চারটি বিষয় রাখা হয়েছে। এতে ভোটাররা যাতে বিভ্রান্ত না হন- সেজন্য প্রচারণা বৃদ্ধি করা জরুরি। এজন্য গণভোটের বিষয়বস্তু সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে হবে। আর সময়স্বল্পতার কারণে এটাও ইসির জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। এছাড়া ফেব্রুয়ারিতে দিন অপেক্ষাকৃত ছোট হওয়ায় ভোটের সময়সীমার বিষয়টি আমলে রাখতে হবে।
‘গণভোটে বড় চ্যালেঞ্জ প্রচার-প্রচারণা’
জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থীরা বিভিন্ন প্রতীকের প্রচারণা চালান। ফলে দেশব্যাপী ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার আবহ তৈরি হয়। তবে গণভোট নিয়ে প্রার্থীদের তেমন কোনো স্বার্থ থাকে না। তাই এ দায়িত্ব সরকারকে নিজের কাঁধে তুলে নিতে হবে। একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট ইসির জন্য চ্যালেঞ্জ, তবে অসম্ভব না জানিয়ে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আব্দুল আলীম ভোরের আকাশ’কে বলেন, একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট ইসির ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ।
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এতদিন ইসি জাতীয় নির্বচন সফলভাবে বাস্তবায়নের বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছে, কিন্ত প্রধান উপদেষ্টার একইদিনে গণভোটের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর এখন নির্বাচনী পরিকল্পনা, কর্মপন্থা এবং পরিধির পরিবর্তন ও বৃদ্ধি করতে হচ্ছে। এছাড়া রাজনৈতিক দলগুলোকে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচনের জন্য আলাদা প্রচারণাও করতে হবে।
তিনি বলেন, গণভোটে বড় চ্যালেঞ্জ প্রচার-প্রচারণার বিষয়টি বড় একটি চ্যলেঞ্জ। আর রাজনৈতিক দলগুলোকে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচনের জন্য ক্যাম্পেইন করতে হবে এবং সরকার দুটি নির্বাচন একসঙ্গে করছে। দলগুলোও মূলত দুইটি নির্বাচনের প্রচারণায় ব্যস্ত থাকবে। তবে রজনৈতিক দলগুলো এ কাজ শুরু করেছে। এক্ষত্রে রাজননৈতিক দলগুলোকে বাড়তি কাজ করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এই নির্বাচন বিশেষজ্ঞ বলেন, এজন্য ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, মসজিদ, মন্দির, গির্জাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে এসব প্রশ্ন নিয়ে আগ্রাসী প্রচার চালাতে হবে। বিশেষ করে নিরক্ষরদের জন্য পড়ে পড়ে বুঝিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। গণভোটে ‘হ্যাঁ’ বললে কী হবে, আর ‘না’ বললে কী হবে- সে সম্পর্কে বোঝাতে হবে।
‘ব্যয় কমানোর জন্যই একই দিনে দুই ভোট’
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য জেসমিন টুলী ভোরের আকাশ’কে বলেন, প্রচারণার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব নিতে হবে। প্রার্থীরা যখন নিজেদের প্রতীকের জন্য ভোট চাইবেন, ডোর টু ডোর যাবেন, তখন ভোটারদের সঙ্গে আলাপ করলে গুরুত্ব পাবে। শুধু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কথা বলে ভোটাররা আগ্রহ হারাবে। সরকার ও দলগুলোকে একসঙ্গে প্রচার করতে হবে।
তিনি বলেন, একইদিন জাতীয় নির্বাচন এবং গণভোট আয়োজন ও সম্পন্নের জন্য ১০ থেকে ১৫ শতাংশ খরচ বাড়তি লাগবে। ব্যয় কমানোর জন্যই একই দিনে দুটি ভোট করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, এর আেেগ দেশে একইদিনে বড় দুটি নির্বাচন হয়নি।
তিনি আরো বলেন, একই দিনে সংসদ ও গণভোট এর জন্য সঠিক ব্যবস্থাপনার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। এছাড়া গণনার ক্ষেত্রেও বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এজন্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা বাড়ানোর পাশাপাশি গণভোট ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভালো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও নির্বাচন কমিশন নিয়েছে। তবে সবকিছু মিলিয়ে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বাড়ানো ও সক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব হলে বড় কোনো ধরনের সমস্যা হবে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, জুলাই আদেশ বাস্তবায়নে ‘জুলাই সনদ’ এর ভিত্তিতে সরকার পরিচালনার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চারটি বিষয়ে অনুষ্ঠিত হবে গণভোট। ভোটের দিন এই চারটি বিষয়ের ওপর একটি মাত্র প্রশ্নে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দিয়ে জনগণ তাদের মতামত জানাবে। তবে ব্যালটে চারটি বিষয় উল্লেখ থাকায় এ বিষয়ে জনগণকে সচেতন করে তোলাও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এজন্য গণভোটের বিষয়গুলো নিয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার পরামর্শ বৃদ্ধি জরুরি। এছাড়া একই দিনে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন সফল করতে রাজনৈতিক দলগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে বলে মনে করেন তারা।
জানা গেছে, ইসি ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রায় পৌনে ১৩ কোটি ভোটার ও প্রায় ১০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটার বিবেচনায় রেখে ব্যালট পেপার মুদ্রণের পরিকল্পনা চলছে। ৪৩ হাজার ভোটকেন্দ্রে প্রায় দুই লাখ ৪৫ হাজার ভোটকক্ষ থাকবে।
এছাড়া এবারের নির্বাচনে ৯ থেকে ১০ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাত থেকে আট লাখ সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। ইসির নির্দেশনায় রিটার্নিং কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে ৩০০ আসনে সার্বিক নির্বাচন পরিচালনা করা হয়। তবে এখন গণভোটের জন্য বাড়তি প্রস্তুতি নিতে হবে ইসিকে।
‘গণভোট' এর ৪ প্রশ্ন
চারটি বিষয়ের ওপর একটি প্রশ্নে হবে গণভোট। গণভোটের দিন এই চারটি বিষয়ের ওপর একটি প্রশ্নে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দিয়ে জনগণ মতামত জানাবেন। গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়ী হলে আগামী সংসদ হবে দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট। সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে (পিআর পদ্ধতি) ১০০ সদস্য নিয়ে উচ্চকক্ষ গঠিত হবে। চারটি বিষয়ে অনুষ্ঠিত হওয়া গণভোটের ব্যালটে কোন ধরনের প্রশ্ন থাকছে- এ নিয়ে প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার বেলা ১১টায় প্রধান উপদেষ্টার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি প্রশ্ন প্রকাশ করা হয়।
‘জুলাই সনদের আলোকে গণভোটের ব্যালটে উপস্থাপনীয় প্রশ্নে’ উল্লেখ করে বলা হয়, আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলোর প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করছেন?
ক. নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন ও অন্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।
খ. আগামী সংসদ হবে দুই কক্ষবিশিষ্ট। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধন করতে হলে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন দরকার হবে।
গ. সংসদে নারীর প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধীদল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে যে ৩০টি প্রস্তাবে জুলাই জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলো বাধ্য থাকবে। ঘ. জুলাই সনদে বর্ণিত অন্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হবে।
সেনাবাহিনীর সহায়তা জরুরি-প্রধান উপদেষ্টা
এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট শান্তিপূর্ণ, উৎসবমুখর ও আনন্দময় পরিবেশে আয়োজন করতে সেনাবাহিনীর সহায়তা অত্যন্ত জরুরি বলে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনীর ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশবাসীর দীর্ঘদিনের কাক্সিক্ষত এই নির্বাচনকে সত্যিকার অর্থে একটি শান্তিপূর্ণ উৎসব এবং আনন্দমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত করতে একান্তভাবে আমাদের সেনাবাহিনীর সহায়তা কামনা করছি। গত বুধবার মিরপুর সেনানিবাসে ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের (ডিএসসিএসসি) কোর্স ২০২৫ এর গ্র্যাজুয়েশন সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ২০২৪ এর জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে সেনাবাহিনী সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এবং এই কারণে আমি তাদের ভূমিকায় ভূয়সী প্রশংসা করি। অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২৪টি দেশের তরুণ সামরিক কর্মকর্তাদের হাতে সনদ তুলে দেন। এ বছর প্রশিক্ষণ কোর্সে চীন, ভারত, পাকিস্তান, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশের মোট ৩১১ জন অফিসার অংশ নেন।
ভোরের আকাশ/এসএইচ