× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ভোট

মাজাহারুল ইসলাম

প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২৫ ১২:১০ এএম

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী বছরের ৫ অথবা ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ ধরেই সব প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য বিশ্লেষণে এমন তথ্য মিলছে। প্রস্তুতির শেষ মুহূর্তে একই দিনে গণভোট যুক্ত হওয়ায় নতুন রোডম্যাপ করতে হচ্ছে ইসিকে। সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তুতি নিতে ইসিকে চিঠি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। 

ঘোষিত সম্ভাব্য সময়ে নির্বাচন করতে হলে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধেই তফসিল ঘোষণা করতে হবে। কমিশনও সেটা চায়। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের রমজানের আগে সম্পন্ন করতে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে ইসিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ১৭ বা ১৮ ফেব্রুয়ারি রমজান শুরু। কাজেই নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই হবে। কাজেই ভোটগ্রহণের ৬০ দিন আগে তফসিল ঘোষণা করার ইঙ্গিত দিয়েছেন কমিশন।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, নতুন করে জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোটের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে পরিবর্তন করতে হবে নির্বাচনি রোডম্যাপ।

এ প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট করা চ্যালেঞ্জ। পূর্ববর্তী নির্বাচন কমিশন কখনও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি।

তিনি বলেন, একই দিনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তুতি নিতে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে। সামনের সপ্তাহে গণভোটের আইন করা হবে। আইনটা হয়ে গেলে গণভোটের প্রস্তুতি শুরু করবে কমিশন।

সিইসি বলেন, আগের নির্বাচন কমিশনকে এতটা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়নি যা বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। কারণ আইন মেনেই সব প্রক্রিয়া হচ্ছে। আমাদের দ্বিতীয় কোনও অপশন নেই।

নির্বাচন ঘিরে জনগণের প্রত্যাশা বিশাল উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে চ্যালেঞ্জই সামনেই আসুক আমাদের মূল লক্ষ্যই জাতিকে স্বচ্ছ নির্বাচন উপহার দেয়া। এই প্রতিশ্রুতি রাজনৈতিক দলগুলোকেও দেওয়া রয়েছে। আমাদের মূল লক্ষ্যই ফ্রি এবং ফেয়ার ইলেকশন। এর বেশিও নয়, কমও নয়। এ ব্যাপারে আমাদের প্রবল আত্মবিশ্বাস রয়েছে বললেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মতামত, তফসিল ঘোষণার ৪৫ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণের রেকর্ড আছে। সুতরাং ৬০ দিন আগে তফসিল ঘোষণা যথেষ্ট সময় বলে দাবি নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের।

তফসিল ঘোষণা প্রসঙ্গে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আব্দুল আলীম বলেন, ‘৬০ দিন হাতে রেখে ভোট করা সম্ভব। তফসিল ঘোষণার ৪৫ দিনে ভোট করার ইতিহাস বাংলাদেশে আছে। প্রেক্ষাপট কিন্তু আলাদা। প্রায় দেড় বছর হয়ে গেছে সংসদ ভেঙে দেওয়ার। সুতরাং ৬০ দিন হাতে রেখে ভোট করা মানে হাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে তফসিল ঘোষণা করা হচ্ছে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

ইসি সূত্রে জানা যায়, মোটাদাগে জাতীয় নির্বাচনের বড় প্রস্তুতির মধ্যে আছে-ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরি, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নিধারণ, ভোটকেন্দ্র স্থাপন, ভোটের জন্য প্রয়োজনীয় কেনাকাটা, নির্বাচনি দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ও দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন দেওয়ার মতো কাজগুলো রয়েছে। এ ধরনের প্রস্তুতিমূলক কাজ প্রায় শেষ। 

ইতোমধ্যে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে ইসি। নতুন তালিকা অনুযায়ী বর্তমানে দেশে মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৮৩ জন।

ইসির তথ্য অনুযায়ী, মোট ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৬ কোটি ৪৮ লাখ ১৪ হাজার ৯০৭ জন, নারী ৬ কোটি ২৮ লাখ ৭৯ হাজার ৪২ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার ১ হাজার ২৩৪ জন।

এ প্রসঙ্গে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যাদের বয়স ১৮ বছর হয়েছে, তাদের সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে আমরা ভোটার তালিকা হালনাগাদ করেছি। তিনি বলেন, পুরুষ ভোটার বৃদ্ধির হার ২ দশমিক ২৯ শতাংশ, আর নারী ভোটার বৃদ্ধির হার ৪ দশমিক ১৬ শতাংশ। ইতোমধ্যে ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে কয়েকটি আসনের সীমানা নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট হয়েছে।

কমিশন আশা করছে, চলতি মাসের মধ্যে এসব নিষ্পত্তি হবে। প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের এবার ভোট দেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে ইসি। তারা ভোট দেবেন পোস্টাল ব্যালটে। এক্ষেত্রে ভোট দেওয়ার জন্য আগে প্রবাসী ভোটারদের ইসির নির্দিষ্ট অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে। ১৮ নভেম্বর এই অ্যাপ উদ্বোধন করে কমিশন। তবে দুটি বিষয় নিয়ে চিন্তিত ইসি। ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্র চূড়ান্ত করেছে ইসি। নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় কেনাকাটার কাজও প্রায় শেষ। নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিতে এখন প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুতির কাজও চলছে। নির্বাচন কর্মকর্তা চূড়ান্ত করা ও তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তফসিল ঘোষণার পর। নির্বাচন আয়োজন করার জন্য যেসব কাজকর্ম জড়িত তার সবকিছুর জন্য একটি সময় বেঁধে দেওয়া হয় তফসিলে।

এ প্রসঙ্গে সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, খুব সহজ ভাষায় এটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখের একটি আইনি ঘোষণা। প্রার্থীরা তাদের প্রার্থিতার মনোনয়নের কাগজ কত তারিখ জমা দেওয়া শুরু করতে পারবেন, মনোনয়নের কাগজ নির্বাচন কমিশন কতদিনের মধ্যে বাছাই করবে, বাছাই প্রক্রিয়ায় যদি সেটি বাতিল হয়ে যায় তাহলে প্রার্থিতাপ্রত্যাশী ব্যক্তি কতদিন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবে তার সময় বেঁধে দেয় কমিশন। যারা প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাবেন তাদের তালিকা কবে নাগাদ ছাপানো হবে, নির্বাচনি প্রচারণা কবে থেকে শুরু করা যাবে, কতদিন পর্যন্ত তা চালানো যাবে- সেটির উল্লেখ থাকে তফসিলে। সাধারণত প্রার্থীর নির্বাচনি প্রতীক ঘোষণার সঙ্গে প্রচারণা শুরুর তারিখ সম্পর্কিত থাকে। 

নির্বাচন কত তারিখ হবে, কোন সময়ে শুরু হবে আর কোন সময় পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে তার বিস্তারিত এবং ভোটের পর ভোট গণনা কীভাবে এবং কোথায় হবে তারও পরিষ্কার উল্লেখ থাকে। এই পুরো বিষয়টির সমষ্টিকেই নির্বাচনের তফসিল বলা হয়। কিছু বিষয় সংবিধানে একদম নিশ্চিত করে বলা আছে। তাই সেগুলো নিয়ে আদৌ কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ারই দরকার হয় না। যেমন, সংবিধানে বলা আছে সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। তবে এবারের ভোটের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

২০২৪ সালের ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার সাংবিধানিক ক্ষমতা বলে সংসদ ভেঙে দেন। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়েছে। সুতরাং, সংসদ ভেঙে দেওয়ার ৯০ দিনে ভোট করার সেই বাধ্যবাধকতা নেই। তাই ৬০ দিন অথবা দুই মাস হাতে রেখে তফসিল ঘোষণা করতে যাচ্ছে কমিশন। কমিশনারদের মধ্যে সেটি নিয়ে এবং নির্বাচনের তফসিলের অন্য সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। তারপর বেশিরভাগ কমিশনার যে সিদ্ধান্ত দেয় সেটি গৃহীত হওয়ার কথা।

বাংলাদেশে এই প্রথম জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি গণভোটের প্রচারণা, সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে ভোটকক্ষ বাড়ানো, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা বাড়ানো, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ আর ভোটার সংখ্যা অনুপাতে ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্সসহ সরঞ্জাম বাড়াতে হবে গণভোটে। প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের বিষয়টিও রয়েছে। সংসদ নির্বাচনে প্রতীক নিয়ে ব্যাপক প্রচার থাকবে প্রার্থীদের। আর গণভোট নিয়ে গ্রাম-গঞ্জে সচেতনতামূলক প্রচার চালানোর বিষয় রয়েছে। 

এছাড়া একই দিনে জাতীয় ও গণভোট হলে ব্যয়ও ২০ শতাংশের বেশি বাড়বে। দেশের প্রায় পৌনে ১৩ কোটি ভোটারের সঙ্গে প্রবাসের লাখ দশেক ভোটার নিয়ে এ নির্বাচন হবে। ফলে একই দিনে দুটি কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে ইসি।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আব্দুল আলীম বলেন, একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট ইসির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের। কারণ ইসি জাতীয় ভোট রোডম্যাপ তৈরি করে এগিয়ে গেছে। মাঝখানে গণভোটের সিদ্ধান্ত। এখন রোডম্যাপে পরিবর্তন আনতে হবে।

গণভোটে বড় চ্যালেঞ্জ ক্যাম্পেইন দাবি করে ড. মো. আব্দুল আলীম বলেন, গণভোটে বড় চ্যালেঞ্জ প্রচার-প্রচারণা। রাজনৈতিক দলগুলোকে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচনের জন্য ক্যাম্পেইন করতে হবে। এটা চ্যালেঞ্জিং, তারপরও সম্ভব। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলকে বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে হবে।

ভোরের আকাশ/এসএইচ

একইদিনে গণভোট করতে ইসিকে চিঠি সরকারের

একইদিনে গণভোট করতে ইসিকে চিঠি সরকারের

একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট করা ইসির জন্য চ্যালেঞ্জ: সিইসি

একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট করা ইসির জন্য চ্যালেঞ্জ: সিইসি

দাঁড়িপাল্লার সমর্থনে বর্ণাঢ্য এবং সুশৃঙ্খল মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা

দাঁড়িপাল্লার সমর্থনে বর্ণাঢ্য এবং সুশৃঙ্খল মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা

কঠিন চ্যালেঞ্জে নির্বাচন কমিশন

কঠিন চ্যালেঞ্জে নির্বাচন কমিশন

কঠিন চ্যালেঞ্জে নির্বাচন কমিশন

কঠিন চ্যালেঞ্জে নির্বাচন কমিশন

 আমন ধান তোলার আনন্দ কৃষকদের ঘরে ঘরে

আমন ধান তোলার আনন্দ কৃষকদের ঘরে ঘরে

 ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ভোট

১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ভোট

 বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা

বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা

 বগুড়ায় নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের নির্বাচনী সমাবেশ

বগুড়ায় নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের নির্বাচনী সমাবেশ

 বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসলে নারীদের উন্নয়ন হয়: শামা ওবায়েদ

বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসলে নারীদের উন্নয়ন হয়: শামা ওবায়েদ

সংশ্লিষ্ট

আমন ধান তোলার আনন্দ কৃষকদের ঘরে ঘরে

আমন ধান তোলার আনন্দ কৃষকদের ঘরে ঘরে

১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ভোট

১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ভোট

বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা

বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ