ছবি- সংগৃহীত
একইদিনে গণভোটের প্রস্তুতি নিতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) চিঠি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একইদিনে গণভোট করতে হবে।
শনিবার (২২ নভেম্বর) এই তথ্য জানান ইসি সচিব আখতার আহমেদ।
তিনি বলেন, সরকার চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, গণভোট করা ইসির দায়িত্ব। এক্ষেত্রে একইদিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট করার জন্য বলা হয়েছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন সম্প্রতি বলেছেন, সরকার থেকে আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা পেলে গণভোট নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, আগামী ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল দিয়ে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোট করতে চায় ইসি।
ভোরের আকাশ/তা.কা
সংশ্লিষ্ট
দেশের গ্রামাঞ্চলে নতুন আমন ধান তোলার আনন্দে রয়েছেন কৃষকরা। ইতোমধ্যে সারা দেশে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। গ্রামাঞ্চলের কৃষকদের উঠানে এখন আমন ধানের গন্ধে ম-ম করছে। ধান কাটা ও মাড়াইয়ে রীতিমতো ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। আর এবছর আগের বছরের তুলনায় বেশি জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে এবং উৎপাদনও বেড়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া দেশের গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারগুলো এখন নতুন ধানে ভরে গেছে। নতুন ধানের দামও সন্তোষজনক থাকায় কৃষকদের মধ্যে উদ্দিপনাও বেড়েছে। গত কয়েক বছর ধরে দেশে আমনের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।দেশের বিভিন্ন জেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতিবছর অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে দেশের কিছু কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতার ফলে জমির ধানে ক্ষতি হলেও শেষাবধি ফলন ভালো হওয়ায় তা সামগ্রিকভাবে আমন উৎপাদনের ওপর খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না। তবে উৎপাদনের সঠিক তথ্য পাওয়ার জন্য ধান কাটা শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কৃষকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে হাট-বাজারগুলোতে ধানের যে দাম পাচ্ছেন, তাতে তারা খুশি।কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার ২০২৫-২০২৬ মৌসুমে সারা দেশে ৫৭ লাখ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৭৮ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আমন চাষ হয়েছে। বিশেষ করে নরসিংদি, দিনাজপুর, ফরিদপুর, সুনামগঞ্জ, চট্টগ্রাম, সিরাজগঞ্জ নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহে আমনের উৎপাদন ভালো হয়েছে।বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক বছর ধরে দেশে ধারাবাহিকভাবে হেক্টর প্রতি আমনের গড় উৎপাদন বাড়ছে। গত ২০২৪-২৫ মৌসুমে হেক্টর প্রতি আমনের গড় ফলন হয়েছে ২.৯৫ টন, যা আগের বছরের ২০২৩-২৪-এর গড় ২.৮১ টন থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া, ২০২২-২৩ অর্থবছরে হেক্টর প্রতি ২.৬৯ টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে ২.৬১ টন, ২০২০-২১ অর্থবছরে ২.৫৫ টন উৎপাদন হয়েছে।জানা গেছে, দেশের বেশিরভাগ জেলায় ইতোমধ্যে স্বল্প ও মধ্যম মেয়াদি আমন জাতের ধান কাটতে শুরু করেছেন কৃষকরা। নরসিংদী জেলার শস্যভাণ্ডার খ্যাত রায়পুরা, মনোহরদী, বেলাব ও শিবপুর উপজেলার জমি থেকে কৃষকরা পাকা ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত। ধান কাটা, মাড়াই ও ঘরে তোলার সময় গ্রাম জুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচোলক (শস্য) কেবিডি. সালাহ উদ্দিন টিপু ও অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) কৃষিবিদ সুব্রত কান্তি দত্ত জানান, এবছর সময়মতো বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে ধানের ফলন খুবই ভালো হয়েছে।নরসিংদির পলাশ উপজেলার পারুলিয়া গ্রামের কৃষক আবদুল খালেক মিয়া জানান, তিনি প্রায় দুই একর জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন। ধান খুবই ভালো হয়েছে। সময়মতো ধান ঘরে তোলা সম্ভব হলে লাভবান হবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।শিবপুর উপজেলার কৃষক আব্দুর রহমান জানান, তার প্রায় সাত একর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমন ধান চাষ হয়েছে। প্রতি একর জমিতে ৪০ থেকে ৫২ মণ ফলনের আশা করছেন তিনি।রায়পুরা উপজেলার রহিমাবাদ গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম ও কৃষক আদুল হক বলেন, আমন ধান লাগানোর পর সময়মতো বৃষ্টি হওয়ার কারণে ফলন ভালো হয়েছে। পানি সেচের জন্যও এবছর বাড়তি টাকা খরচ হয়নি। তার এক একর জমিতে সার, বীজ, কীটনাশকসহ ধান ঘরে তোলা পর্যন্ত খরচ হয়েছে ১৮ হাজার টাকা। যার বাজার মূল্য ২৩ হাজার টাকা।সিরাজগঞ্জে খবর নিয়ে জানা গেছে, রায়গঞ্জে রোপা আমন ধান ঘরে তোলার ধুম পড়ে গেছে। ধান কাটা মাড়াই ও গোলাজাত করতে কৃষাণ কৃষাণিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। ইতোমধ্যে উপজেলার প্রায় ৬৫ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়ে গেছে। অবশিষ্ট জমির ধান দুই সপ্তাহের মধ্যে কাটা মাড়াইসম্পন্ন হতে পারে বলে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে।উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়নের প্রান্তিক কৃষক সিমলা গ্রামের ফরহাদ মোল্লা জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে ব্রি-ধান ১০৩ আবাদ করেছিলেন। কাটা মাড়াই করে ধান পেয়েছেন ৩২ মণ।খরচের বিষয়ে তিনি বলেন, বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে প্রায় ৮ হাজার টাকা।ধামাইনগর ইউনিয়নের বিনোদনবাড়ি গ্রামের কৃষক মনিন্দ্র দত্ত জানান, তিনি তিন বিঘা জমিতে কাটারিভোগ ধানের আবাদ করেছিলেন। কারেন্ট পোকার আক্রমণের কারণে ফলন কম হয়েছে। মোট ধান পেয়েছেন ৩৮ মণ। তার খরচ হয়েছে বিঘাপ্রতি প্রায় সাড়ে ৭ হাজার টাকা। বাজারে এবার এ ধান বিক্রি করেছেন ১৮৪০/- টাকা মণ দরে। গত বছরের তুলনায় মণে প্রায় ১০০ টাকা দাম বেশি পেয়েছেন বলে জানান তিনি।একই ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক আজহার আলি বলেন, তিনি ২৮ বিঘা জমিতে স্বর্ণা ৫ ও ব্রিধান ৫১-এর আবাদ করেছেন। মাজরা পোকা ও কারেন্ট পোকার (বাদামী গাছ ফড়িং) আক্রমণে কীটনাশক তিন বার দিতে হয়েছে। এতে ফলন কিছুটা কম হয়েছে। গড়ে বিঘাপ্রতি ধান পেয়েছেন ১৪-১৫ মণ হারে। খরচ হয়েছে প্রতি বিঘায় প্রায় ৯ হাজার টাকা। বাজারে এসব ধান বিক্রি হচ্ছে ১২৫০ টাকা থেকে ১৩০০ টাকা। গত বছরেও এধরনের দামই ছিল বলে জানান।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা মাঠে নিজেরা কাজ করতে পারে তাদের খরচ কম হয়, তাদের মোটামুটি লাভ থাকে।উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মোমিনুল ইসলাম ভোরের আকাশ’কে জানান, এবার আগাম আমন ধানের চেয়ে নাবি ধানের ফলন ভালো হয়েছে। শুরুতে অতিবৃষ্টিতে কিছু কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় প্রায় ১০৪ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়নি।তিনি বলেন, ভারতের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঝটিকা বাতাস ও বৃষ্টির কারণে গড়ে প্রায় ১২১ হেক্টর জমির ধান আংশিক ক্ষতি হয়েছে। তবে নতুন নতুন জাত যেমন ব্রিধান ১০৩, ১০৮ ও ১১০ সহ উফশী ধানের চাষ ও সঠিক সময়ে বালাই ব্যবস্থাপনা করার কারণে এবার ফলন ভালো হয়েছে।বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে এবং আমদানি নির্ভরতা কমাতে কৃষি উৎপাদন বিশেষ করে ধান ও খাদ্যশষ্য উৎপাদনের ওপর বাড়তি জোর দিতে হবে। আর এজন্য কৃষকদের উৎপাদন খরচ কমানোর ওপর জোর দিতে হবে। পাশাপাশি সহজশর্তে কৃষকদের ঋণপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা এবং উৎপাদিত ফসলের যথাযথ দাম প্রাপ্তির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী বছরের ৫ অথবা ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ ধরেই সব প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য বিশ্লেষণে এমন তথ্য মিলছে। প্রস্তুতির শেষ মুহূর্তে একই দিনে গণভোট যুক্ত হওয়ায় নতুন রোডম্যাপ করতে হচ্ছে ইসিকে। সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তুতি নিতে ইসিকে চিঠি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ঘোষিত সম্ভাব্য সময়ে নির্বাচন করতে হলে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধেই তফসিল ঘোষণা করতে হবে। কমিশনও সেটা চায়। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের রমজানের আগে সম্পন্ন করতে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে ইসিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ১৭ বা ১৮ ফেব্রুয়ারি রমজান শুরু। কাজেই নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই হবে। কাজেই ভোটগ্রহণের ৬০ দিন আগে তফসিল ঘোষণা করার ইঙ্গিত দিয়েছেন কমিশন।ইসি সূত্রে জানা গেছে, নতুন করে জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোটের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে পরিবর্তন করতে হবে নির্বাচনি রোডম্যাপ।এ প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট করা চ্যালেঞ্জ। পূর্ববর্তী নির্বাচন কমিশন কখনও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি।তিনি বলেন, একই দিনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তুতি নিতে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে। সামনের সপ্তাহে গণভোটের আইন করা হবে। আইনটা হয়ে গেলে গণভোটের প্রস্তুতি শুরু করবে কমিশন।সিইসি বলেন, আগের নির্বাচন কমিশনকে এতটা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়নি যা বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। কারণ আইন মেনেই সব প্রক্রিয়া হচ্ছে। আমাদের দ্বিতীয় কোনও অপশন নেই।নির্বাচন ঘিরে জনগণের প্রত্যাশা বিশাল উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে চ্যালেঞ্জই সামনেই আসুক আমাদের মূল লক্ষ্যই জাতিকে স্বচ্ছ নির্বাচন উপহার দেয়া। এই প্রতিশ্রুতি রাজনৈতিক দলগুলোকেও দেওয়া রয়েছে। আমাদের মূল লক্ষ্যই ফ্রি এবং ফেয়ার ইলেকশন। এর বেশিও নয়, কমও নয়। এ ব্যাপারে আমাদের প্রবল আত্মবিশ্বাস রয়েছে বললেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মতামত, তফসিল ঘোষণার ৪৫ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণের রেকর্ড আছে। সুতরাং ৬০ দিন আগে তফসিল ঘোষণা যথেষ্ট সময় বলে দাবি নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের।তফসিল ঘোষণা প্রসঙ্গে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আব্দুল আলীম বলেন, ‘৬০ দিন হাতে রেখে ভোট করা সম্ভব। তফসিল ঘোষণার ৪৫ দিনে ভোট করার ইতিহাস বাংলাদেশে আছে। প্রেক্ষাপট কিন্তু আলাদা। প্রায় দেড় বছর হয়ে গেছে সংসদ ভেঙে দেওয়ার। সুতরাং ৬০ দিন হাতে রেখে ভোট করা মানে হাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে তফসিল ঘোষণা করা হচ্ছে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।ইসি সূত্রে জানা যায়, মোটাদাগে জাতীয় নির্বাচনের বড় প্রস্তুতির মধ্যে আছে-ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরি, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নিধারণ, ভোটকেন্দ্র স্থাপন, ভোটের জন্য প্রয়োজনীয় কেনাকাটা, নির্বাচনি দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ও দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন দেওয়ার মতো কাজগুলো রয়েছে। এ ধরনের প্রস্তুতিমূলক কাজ প্রায় শেষ। ইতোমধ্যে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে ইসি। নতুন তালিকা অনুযায়ী বর্তমানে দেশে মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৮৩ জন।ইসির তথ্য অনুযায়ী, মোট ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৬ কোটি ৪৮ লাখ ১৪ হাজার ৯০৭ জন, নারী ৬ কোটি ২৮ লাখ ৭৯ হাজার ৪২ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার ১ হাজার ২৩৪ জন।এ প্রসঙ্গে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যাদের বয়স ১৮ বছর হয়েছে, তাদের সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে আমরা ভোটার তালিকা হালনাগাদ করেছি। তিনি বলেন, পুরুষ ভোটার বৃদ্ধির হার ২ দশমিক ২৯ শতাংশ, আর নারী ভোটার বৃদ্ধির হার ৪ দশমিক ১৬ শতাংশ। ইতোমধ্যে ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে কয়েকটি আসনের সীমানা নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট হয়েছে।কমিশন আশা করছে, চলতি মাসের মধ্যে এসব নিষ্পত্তি হবে। প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের এবার ভোট দেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে ইসি। তারা ভোট দেবেন পোস্টাল ব্যালটে। এক্ষেত্রে ভোট দেওয়ার জন্য আগে প্রবাসী ভোটারদের ইসির নির্দিষ্ট অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে। ১৮ নভেম্বর এই অ্যাপ উদ্বোধন করে কমিশন। তবে দুটি বিষয় নিয়ে চিন্তিত ইসি। ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্র চূড়ান্ত করেছে ইসি। নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় কেনাকাটার কাজও প্রায় শেষ। নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিতে এখন প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুতির কাজও চলছে। নির্বাচন কর্মকর্তা চূড়ান্ত করা ও তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তফসিল ঘোষণার পর। নির্বাচন আয়োজন করার জন্য যেসব কাজকর্ম জড়িত তার সবকিছুর জন্য একটি সময় বেঁধে দেওয়া হয় তফসিলে।এ প্রসঙ্গে সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, খুব সহজ ভাষায় এটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখের একটি আইনি ঘোষণা। প্রার্থীরা তাদের প্রার্থিতার মনোনয়নের কাগজ কত তারিখ জমা দেওয়া শুরু করতে পারবেন, মনোনয়নের কাগজ নির্বাচন কমিশন কতদিনের মধ্যে বাছাই করবে, বাছাই প্রক্রিয়ায় যদি সেটি বাতিল হয়ে যায় তাহলে প্রার্থিতাপ্রত্যাশী ব্যক্তি কতদিন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবে তার সময় বেঁধে দেয় কমিশন। যারা প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাবেন তাদের তালিকা কবে নাগাদ ছাপানো হবে, নির্বাচনি প্রচারণা কবে থেকে শুরু করা যাবে, কতদিন পর্যন্ত তা চালানো যাবে- সেটির উল্লেখ থাকে তফসিলে। সাধারণত প্রার্থীর নির্বাচনি প্রতীক ঘোষণার সঙ্গে প্রচারণা শুরুর তারিখ সম্পর্কিত থাকে। নির্বাচন কত তারিখ হবে, কোন সময়ে শুরু হবে আর কোন সময় পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে তার বিস্তারিত এবং ভোটের পর ভোট গণনা কীভাবে এবং কোথায় হবে তারও পরিষ্কার উল্লেখ থাকে। এই পুরো বিষয়টির সমষ্টিকেই নির্বাচনের তফসিল বলা হয়। কিছু বিষয় সংবিধানে একদম নিশ্চিত করে বলা আছে। তাই সেগুলো নিয়ে আদৌ কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ারই দরকার হয় না। যেমন, সংবিধানে বলা আছে সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। তবে এবারের ভোটের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে।২০২৪ সালের ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার সাংবিধানিক ক্ষমতা বলে সংসদ ভেঙে দেন। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়েছে। সুতরাং, সংসদ ভেঙে দেওয়ার ৯০ দিনে ভোট করার সেই বাধ্যবাধকতা নেই। তাই ৬০ দিন অথবা দুই মাস হাতে রেখে তফসিল ঘোষণা করতে যাচ্ছে কমিশন। কমিশনারদের মধ্যে সেটি নিয়ে এবং নির্বাচনের তফসিলের অন্য সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। তারপর বেশিরভাগ কমিশনার যে সিদ্ধান্ত দেয় সেটি গৃহীত হওয়ার কথা।বাংলাদেশে এই প্রথম জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি গণভোটের প্রচারণা, সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে ভোটকক্ষ বাড়ানো, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা বাড়ানো, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ আর ভোটার সংখ্যা অনুপাতে ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্সসহ সরঞ্জাম বাড়াতে হবে গণভোটে। প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের বিষয়টিও রয়েছে। সংসদ নির্বাচনে প্রতীক নিয়ে ব্যাপক প্রচার থাকবে প্রার্থীদের। আর গণভোট নিয়ে গ্রাম-গঞ্জে সচেতনতামূলক প্রচার চালানোর বিষয় রয়েছে। এছাড়া একই দিনে জাতীয় ও গণভোট হলে ব্যয়ও ২০ শতাংশের বেশি বাড়বে। দেশের প্রায় পৌনে ১৩ কোটি ভোটারের সঙ্গে প্রবাসের লাখ দশেক ভোটার নিয়ে এ নির্বাচন হবে। ফলে একই দিনে দুটি কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে ইসি।নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আব্দুল আলীম বলেন, একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট ইসির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের। কারণ ইসি জাতীয় ভোট রোডম্যাপ তৈরি করে এগিয়ে গেছে। মাঝখানে গণভোটের সিদ্ধান্ত। এখন রোডম্যাপে পরিবর্তন আনতে হবে।গণভোটে বড় চ্যালেঞ্জ ক্যাম্পেইন দাবি করে ড. মো. আব্দুল আলীম বলেন, গণভোটে বড় চ্যালেঞ্জ প্রচার-প্রচারণা। রাজনৈতিক দলগুলোকে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচনের জন্য ক্যাম্পেইন করতে হবে। এটা চ্যালেঞ্জিং, তারপরও সম্ভব। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলকে বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
আরও বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা রয়েছে। ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় দুই দিনের ব্যবধানে চারবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদী ও একটি ঢাকায় ছিল। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে একটি এবং শনিবার (২২ নভেম্বর) দিনের বিভিন্ন সময়ে তিনটি ভূমিকম্প হয়, যার ফলে জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে।শনিবার যে তিনটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, সেগুলোকে আফটারশক হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে তারা জানিয়েছেন, এগুলো ভবিষ্যতে আরও বড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাসও হতে পারে, যা ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে।আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুবাইয়াত কবির বলেন, সাধারণত বড় ভূমিকম্পের পর এক–দুই সপ্তাহ ধরে আফটারশক হতে পারে। আজ তিনটি ছোট ও মৃদু আকারের কম্পন অনুভূত হয়েছে এসবই আফটারশক।তিনি আরও বলেন, গতকাল যে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল, সেটি ফোরশকও হতে পারে। কারণ সামনে যদি আরও বড় ভূমিকম্প হয়, তাহলে ৫.৭ কে ছোট বলেই ধরা হবে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ হুমায়ুন আখতার বলেন, একদিনে তিনটি ভূমিকম্প হওয়া অস্বাভাবিক নয় এগুলো আফটারশক। মাটির নিচে যে শক্তি আটকে ছিল, তা মুক্ত হচ্ছে। কিন্তু এ পরিস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে সামনে আরও বড় ধরনের ভূমিকম্পের সম্ভাবনা আছে। আমাদের প্রস্তুত হতে হবে।সকাল ১০:৩৬:১২ মিনিট-মাত্রা ৩.৩, উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর পলাশ (ঢাকা পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে ২৯ কিলোমিটার উত্তর–পূর্বে)। সন্ধ্যা ৬:০৬:০৪ মিনিট -মাত্রা ৩.৭, উৎপত্তিস্থল ঢাকার বাড্ডা।সন্ধ্যা ৬:০৬:০৫ মিনিট-মাত্রা ৪.৩, উৎপত্তিস্থল নরসিংদী।শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০:৩৮ মিনিটে ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় তীব্র কম্পন অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থলও ছিল নরসিংদী। এতে এখন পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু এবং কয়েকশ মানুষ আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভূমিকম্পগুলো সামগ্রিকভাবে দেশে ভূমিকম্প ঝুঁকির মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা যেমন ঘনবসতিপূর্ণ এবং দুর্বল অবকাঠামোর শহর এ পরিস্থিতি আরও সতর্ক থাকার দাবি জানাচ্ছে।ভোরের আকাশ/জাআ
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ঢাকা সফররত ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগের একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২২ নভেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এসে পৌঁছান ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। এসময় শেরিং টোবগেকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান প্রধান উপদেষ্টা।এসময় কিছুক্ষণ কথা বলেন দুই নেতা। পরে দুই দেশের প্রতিনিধি পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে, দুপুরে পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী।উল্লেখ্য, তিন দিনের সফর শেষে আগামী ২৪ নভেম্বর ঢাকা ত্যাগ করবেন শেরিং টোবগে।ভোরের আকাশ/তা.কা