নিখিল মানখিন
প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০২৫ ১২:৫৯ এএম
ছবি: সংগৃহীত
হঠাৎ করেই আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশের শিক্ষাঙ্গন। সারাদেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে বন্ধ রয়েছে ২৬ হাজারের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বার্ষিক পরীক্ষার আর মাত্র এক মাস বাকি। এমন সময়ে ক্লাস, পরীক্ষাসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকায় চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে লাখ লাখ শিক্ষার্থীর বার্ষিক পরীক্ষার প্রস্তুতি। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় অভিভাবকেরা। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জামায়াত, খেলাফত মজলিস, ইনকিলাব মঞ্চসহ দেশের বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের একাত্ম প্রকাশে নতুন মাত্রা পেয়েছে শিক্ষকদের আন্দোলন।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। এই ভাতা ১ হাজার টাকা থেকে ১৫০০ টাকা করে আদেশ জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগের উপসচিব মোছা. শরীফুন্নেসা সাংবাদিকদের বলেন, ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ভাতা ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করে আদেশ জারি করে তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগে পাঠানো হয়েছে।’
গত ৩০ সেপ্টেম্বর তারিখে জারি করা ওই আদেশে অর্থ বিভাগ বলছে, প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের আদেশ জারির মাধ্যমে এ ভাতা কার্যকর হবে। এ ভাতা শিক্ষকদের পরিশোধে যাবতীয় আর্থিক বিধি-বিধান অনুসরণ করতে হবে জানিয়ে আদেশে আরও বলা হয়েছে, ভাতা সংক্রান্ত ব্যয়ে ভবিষ্যতে কোনো অনিয়ম দেখা দিলে বিল পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষ তার জন্য দায়ী থাকবেন। গত ৭ আগস্ট শিক্ষা উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ভাতা বাড়িয়ে আদেশটি জারি করেছে অর্থ বিভাগ।
শিক্ষকদের প্রত্যাখান ও আন্দোলন
মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়াসহ তিন দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর পুলিশের হামলা, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে গতকাল সোমবার থেকে সারাদেশে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছেন এমপিওভুক্ত প্রায় চার লাখ শিক্ষক-কর্মচারী। এতে স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’- এর ব্যানারে গতকাল সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীরা। গতকাল সোমবার সকাল থেকে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন। আন্দোলনকারীদের তিন দফার মধ্যে রয়েছে- মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া ভাতা প্রদান করতে হবে। শিক্ষক ও কর্মচারীদের জন্য মাসিক ১,৫০০ টাকা হারে চিকিৎসা ভাতা দিতে হবে। আর কর্মচারীদের জন্য উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশে উন্নীত করতে হবে।
এর আগে গত রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কর্মসূচি পালনকালে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা ও জলকামান ব্যবহার করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে আন্দোলনকারীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেন এবং রাত সেখানেই কাটান। গতকাল সোমবার সকাল থেকে আবার অবস্থান শুরু করেন তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলছেন, আন্দোলনের কারণে শিক্ষার্থীদের যে পাঠদান বিঘ্নিত হচ্ছে, তা পূরণে তারা পরে শুক্র ও শনিবার অতিরিক্ত ক্লাস নেবেন। তবে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মস্থলে ফিরবেন না।
জোটের সদস্য সচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, আমরা এখনো সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক আশ্বাস পাইনি। তবে দাবি পূরণে বিলম্ব হলে আমরা সচিবালয় অভিমুখে রওনা হবো। প্রয়োজনে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচিতে যাবো।
ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ এমপিওভুক্ত অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের
রাজধানীতে আন্দোলরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে দেশের ২৬ হাজারের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। শিক্ষকদের আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন ওই সব প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরাও। বর্তমানে দেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ।
দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দৈনিক ভোরের আকাশের নিজস্ব প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতকাল সোমবার দেশের এমপিওভুক্ত বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সকল শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ক্লাসে গিয়ে ফেরত গেছেন লাখ লাখ শিক্ষার্থী। ছেলে-মেয়েদের বার্ষিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকেরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার টি আলী কলেজের প্রভাষক শান্ত আলী বলেন, ‘আমাদের কলেজে কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে। উপজেলার বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস বন্ধ আছে। তবে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্লাস চালাচ্ছে।’
ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বাগুটিয়া গোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক কর্মচারীদের কর্মবিরতি চলছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক মো. ইমরান হোসেন। কিশোরগঞ্জের ভৈরবের বাঁশগাড়ী ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসায় কর্মবিরতি চলছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নোমান বিন ইসহাক।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল্লাহ জানান, সারাদেশের ন্যায় সাতক্ষীরায়ও এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। এর আগে রোববার রাতে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী সব এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।সারাদেশের মতো গাজীপুরে সকল বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু হয়েছে।
চান্দনা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ রুহুল আমিন বলেন, ন্যায্য দাবি আদায়ে সোমবার থেকে এ স্কুলসহ অন্যান্য স্কুলে শিক্ষকতা কর্মবিরতি পালন শুরু হয়েছে। যদি দ্রুততম সময়ে দাবি মানা না হয় তবে এ আন্দোলন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়বে। এজন্য সরকার ও প্রশাসনকে এর দায় নিতে হবে।
চট্টগ্রামের রাউজানের গহিরা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক মো. মাসুম জানান, ‘শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদ এবং তিন দফা দাবি আদায়ে চট্টগ্রামের এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।’
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার মিজমিজি পশ্চিমপাড়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শিক্ষক মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘সারা বাংলাদেশের শিক্ষকদের স্বার্থে সকল শিক্ষকরা ক্লাস বর্জন করে কর্মবিরতি পালন করে আসছেন।’
মেহেরপুরের গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু জানান, ‘আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর পুলিশের বলপ্রয়োগের প্রতিবাদে সারাদেশের সব বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।’
তবে ঢাকার বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে ক্লাস চালু থাকার খবর মিলছে। ঢাকার মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাসাবো শাখার শিক্ষক মেজবাহুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস চলছে। এখানে শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন না।’
রাজধানীর বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গতকাল সোমবার ক্লাস হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
শিক্ষক আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ
গতকাল এনসিপি, জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত মজলিস ও ইনকিলাব মঞ্চের নেতারা শহীদ মিনারে উপস্থিত হয়ে শিক্ষকদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা জানান। সংহতি জানিয়ে জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘অল্প বেতনে শিক্ষকরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। প্রধান উপদেষ্টার একমাত্র কাজ হবে শিক্ষকদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করা। সময় থাকতে দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। সামনের নির্বাচনে শিক্ষকদের অনেক কাজ রয়েছে। অতএব, নির্বাচনের আগে তাদের দাবি নিয়ে সরকারের কাজ করা উচিত।’
শিক্ষকদের আন্দোলন পুলিশ দিয়ে দমানোর চেষ্টারও প্রতিবাদ জানান তিনি। বলেন, ‘শিক্ষকদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ কাম্য নয়।’
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবির প্রতি এনসিপির সমর্থন জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, শিক্ষকেরা যাতে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শহীদ মিনার ছেড়ে না যান। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেন শিক্ষকদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন এবং দাবি আদায়ে সার্বিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
শিক্ষকদের অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে মন্তব্য করে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, ‘একটি পক্ষ উদ্দেশ্যমূলকভাবে সব সময় শিক্ষকের মধ্যবিত্ত রাখতে চায়। শিক্ষকদের বাড়িভাড়া দেওয়া লাগবে। অভ্যুত্থানের পর এটাও সরকারের কাছে চাইতে হবে, এমনটি আমরা আশা করিনি।’
শিক্ষকদের আন্দোলনকে যৌক্তিক উল্লেখ করে খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির সাখাওয়াত হোসাইন রাজী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘শিক্ষকদের দাবির সঙ্গে আমরা একমত প্রকাশ করছি। সরকারের উচিত তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দাবি মেনে নেওয়া। শিক্ষকদের লাঠিপেটা করা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদি, ‘দেশে সবচেয়ে বেশি মানবেতর জীবনযাপন করেন শিক্ষকরা। প্রতিটি পদে পদে তাদের হয়রানির শিকার হতে হয়। খালি মুখে মুখে শিক্ষকদের সম্মান দেওয়া হয়। বাস্তবে তার উল্টো। ইনকিলাব মঞ্চ শিক্ষকদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি।’
শিক্ষকদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হল সংসদের ভিপি আজিজুল হক। তিনি বলেন, ‘আমার বাবাসহ শিক্ষকরা রাস্তায় বসে আছেন ভাতা বাড়ানোর জন্যে, এটা সামগ্রিকভাবে জাতি হিসেবে আমাদের জন্যে লজ্জার। আজকে বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজের পাশে তাদের সন্তানরা, তাদের ছাত্ররা এসে দাঁড়িয়েছে। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দাঁড়িয়েছি। আমরা এই বৈষম্যের শেষ না দেখে ছাড়বো না।’
সংহতি জানিয়ে জাতীয় ছাত্র সমাজের (পার্থ) আহ্বায়ক সাইফুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশই মনে হয় একমাত্র রাষ্ট্র, যেখানে সবসময় নায্য দাবির জন্যে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নামতে হয়। রাজপথে নেমে মার না খাওয়া পর্যন্ত, জেলে না যাওয়া পর্যন্ত দাবি আদায় হয় না। পৃথিবীর ইতিহাসে এটি বিরল। আমরা অবিলম্বে আমাদের শিক্ষকদের দাবি মেনে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
শিক্ষক ও কর্মচারীদের উদ্দেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।
বিশিষ্টজনদের ভাষ্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এসএম হাফিজুর রহমান বলেন, দেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিষ্ঠার জন্য নীতিমালা থাকলেও বাস্তবে সেগুলো যথাযথভাবে প্রয়োগ হচ্ছে না। অনেক প্রতিষ্ঠান কাগুজে অস্তিত্ব থাকলেও সেখানে শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ নেই। পাশাপাশি দক্ষ শিক্ষক সংকটও রয়েছে। এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা এমনিতেই অনেক কত বেতন পান। আর নন-এমপিও শিক্ষকদের বেতনই নেই। ফলে বেসরকারিতে মান সম্মত শিক্ষক পাওয়া যাচ্ছে না। যা সরাসরি শিক্ষার মানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
তিনি আরও বলেন, বেসরকারি শিক্ষার মান বাড়াতে হলে সরকারকে অবশ্যই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে হবে। একইসঙ্গে যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ এবং সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। তবে এখানে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে, যেসব বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত কিংবা জাতীয়করণ করা হবে তাদের শিক্ষকতার যোগ্যতা যাচাই। এজন্য সরকারকে ধাপে ধাপে এ প্রক্রিয়া চালু করতে হবে। শিক্ষকদের যথাযথ বেতন নিশ্চিত করতে না পারলে শিক্ষার উন্নয়ন সম্ভব নয়।
বাড়িভাড়া বৃদ্ধিসহ তিন দাবিতে আন্দোলনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ওপর পুলিশি দমন-পীড়নের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, শিক্ষকদের ওপর পুলিশের হামলা ন্যাক্কারজনক। এটা সবাইকে স্তম্ভিত করেছে। দেশে এত এত বাজেট, কিন্তু শিক্ষকদের সঙ্গে এমন আচরণ কেন? দ্রুততম সময়ে শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের কথা বলেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক বি. এম. আব্দুল হান্নান সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির মতো সিদ্ধান্ত সরকারের উচ্চপর্যায় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নেওয়া হয়। তবে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করার সুযোগ নেই। কেননা এমপিও নীতিমালা না মেনেই হাজার হাজার প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান, শিক্ষার্থী সংখ্যা সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে এমপিওভুক্ত করা হয়। নীতিমালার বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।’
ভোরের আকাশ/এসএইচ