শফিকুল আলম
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎ চেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক যে চিঠি পাঠিয়েছেন, তা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
মঙ্গলবার (১০ জুন) লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, আমরা একটি চিঠি পেয়েছি। চিঠির বিষয়টি আইনি এবং এটি আইনিভাবে সমাধান করা হবে।
তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপে টিউলিপ সিদ্দিক ছিলেন না।
প্রেস সচিব শফিকুল আলমের কাছে টিউলিপের চিঠির প্রসঙ্গে জানতে চান লন্ডনের এক সাংবাদিক। জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে, সোমবার (৯ জুন) চার দিনের সফরে যুক্তরাজ্যে যান প্রধান উপদেষ্টা। এ সফরেই তার সঙ্গে সাক্ষাতের ইচ্ছা জানিয়ে চিঠি পাঠান টিউলিপ। চিঠিতে তিনি ড. ইউনূসকে হাউস অব কমন্সে মধ্যাহ্নভোজ বা বিকেলে চা পানের আমন্ত্রণ জানান।
টিউলিপের চিঠি পাঠানোর সংবাদ বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে আসে আগেরদিন রোববার (৮ জুন)। প্রধান উপদেষ্টার সফর শুরুর একদিন আগে। সেদিন অবশ্য প্রেস সচিব সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, আমরা এখন পর্যন্ত তার কোনো চিঠি হাতে পাইনি।
ভোরের আকাশ/আজাসা
সংশ্লিষ্ট
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার আলোচনায় বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এই পর্বে সপ্তম দিনের বৈঠক শুরু হয়েছে রোববার। আজ বেলা ১১টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।আজকের সভায় আলোচনার বিষয়গুলো হচ্ছে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি; দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ; উচ্চকক্ষের নির্বাচন পক্রিয়া এবং উচ্চকক্ষের দায়িত্ব ও ভূমিকা। আলোচনায় সংস্কার প্রস্তাবের অমীমাংসিত বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে বলে জানা গেছে। আগের আলোচনায় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহে নিয়োগ প্রসঙ্গে থেকে ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি)’ গঠনের প্রস্তাব থাকলেও, তা থেকে সরে এসেছে ঐকমত্য কমিশন।এর পরিবর্তে ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি’ গঠনের নতুন প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে। তবে এতে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে উল্লেখ করে বিএনপি এ প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে।এদিকে, প্রধানমন্ত্রী পদে একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন, এমন প্রস্তাবনায় কিছু শর্তসাপেক্ষে বিএনপি সম্মতি জানিয়েছে। বিগত বৈঠকে, সংবিধানের মূলনীতি সংক্রান্ত প্রস্তাবে বাম ও কিছু রাজনৈতিক দল ছাড়া অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে।এছাড়া সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রস্তাবও বেশিরভাগ দল ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে। ১০০ আলাদা নারী আসনের বিষয়েও অধিকাংশ দল একমত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়েও আলাপে অনেকটাই এগিয়েছে রাজনৈতিকদলগুলোর মধ্যে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে কাঁচাপাট ও পাটজাত ৯ ধরনের পণ্য আমদানিতে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারত। গত শুক্রবার এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। ফলে বাংলাদেশি পণ্য রফতানি নিয়ে নতুন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ক্ষতির আশঙ্কা করছেন রপ্তানিকারক ও বিশ্লেষকরা। তারা আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসার তাগিদ দিয়েছেন।তারা বলছেন, বাংলাদেশি পাটজাত পণ্যের বড় বাজার ভারত। বাংলাদেশ যত পাটজাতীয় পণ্য রপ্তানি করে, এর অর্ধেকের বেশি যায় ভারতে। বড় এই বাজার যেন হাতছাড়া না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।জানা গেছে, যশোরের বেনাপোল; ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া; সাতক্ষীরার ভোমড়া ও লালমানিরহাটের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করে থাকে বাংলাদেশ। এছাড়া নেপাল ও ভুটানেও এ পণ্য ভারতের ট্রানজিট ব্যবহার করে রপ্তানি করা হয়। মূলত এই দেশগুলোই বাংলাদেশি পাটপণ্যের অন্যতম বাজার।ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অজয় ভাদু স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আমদানি নিষিদ্ধ করা এসব বাংলাদেশি পণ্যের মধ্যে রয়েছে কাঁচাপাট, পাটের রোল, পাটের সুতা ও বিশেষ ধরনের কাপড়। তবে বাংলাদেশ থেকে এসব পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে নভোসেবা বন্দর ব্যবহার করা যাবে। এসব পণ্য পুনরায় রপ্তানি করা যাবে না। বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের মধ্য দিয়ে নেপাল ও ভুটানে এই পণ্য রপ্তানিতে কোনো বিধিনিষেধ নেই।এই নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স এসোসিয়েশনের ডিরেক্টর ও রাজবাড়ী জুট মিলসের চেয়ারম্যান শেখ শামসুল আবেদিন বলেন, ভারতের নতুন সিদ্ধান্তের প্রভাব দেশের পাটশিল্পে কতটা পড়বে সেটি তারা বিশ্লেষণ করছেন।তিনি বলেন, কাঁচাপাট রফতানি বন্ধ হবে হয়তো। তবে স্থলবন্দর না হলে নৌপথে কীভাবে রফতানি চালু রাখা যায় সে আলোচনা এর মধ্যেই শুরু হয়েছে। অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপের কারণেও বাংলাদেশের পাট ও পাটজাত দ্রব্য ভারতের রফতানিতে কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়েছিল; কিন্তু তারপরেও বাংলাদেশের পাট ভালো করছিল। এখন হয়তো কাঁচাপাট রফতানি সংকটে পড়বে। তবে একই সঙ্গে দেশে পাটের ফিনিশড গুড উৎপাদন আরও বাড়ানো সুযোগ আছে। যদিও নৌপথে ভারতের রফতানির সুযোগ এখনো আছে। সেটি কতটা কাজে লাগানো যায় তা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) সাবেক সদস্য ও বাণিজ্য বিশ্লেষক মোস্তফা আবিদ খান বলছেন, ভারতে বাংলাদেশি পণ্যের রফতানি স্থল পথে বন্ধ হলে সেটি নৌপথে রফতানি করে পোষানো খুবই কঠিন বিষয় হবে।তিনি বলেন, ভারতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর পাটও বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। স্থলবন্দর দিয়ে ভারত আমদানি বন্ধ করার কারণে বাংলাদেশের রফতানি অনেকটা কমে যাবে। ফলে প্রভাবটি অনেকটাই সরাসরি পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণেই এসব পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ হচ্ছে; যা বাংলাদেশের জন্যই বেশি ক্ষতিকর হবে। বাংলাদেশ থেকে পোশাকের পর পাট রফতানি ক্ষতিগ্রস্ত হলো। আমার মনে হয় আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ নেয়া উচিত আমাদের স্বার্থেই।প্রসঙ্গত, গত বছর ৫ আগাস্ট বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এরপর বিভিন্ন ইস্যুতে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক মাস ধরে বাকযুদ্ধের পর ভারত ও বাংলাদেশ একে অপরের বিরুদ্ধে বেশ কিছু বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে শুরু করে। ফলে দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন এখন সরাসরি ব্যবসা বাণিজ্যে প্রভাব ফেলেছে।স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি নিষিদ্ধ করা এসব বাংলাদেশি পণ্যে মূলত পাট ও পাটজাত পণ্য বেশি। এর মধ্যে কাঁচা পাট, পাটের রোল, পাটের সুতা, একাধিক ভাঁজের বোনা কাপড়, একক শণ সুতা, পাটের একক সুতা ও বিশেষ ধরনের কাপড় রয়েছে এই তালিকায়।ভারত এ ধরনের যে ৯টি পণ্যের ওপর স্থলবন্দর নিয়ে আমদানি নিষিদ্ধ করেছে, এসব পণ্য থেকে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে বাংলাদেশের রফতানি আয় ছিল প্রায় ১৫ কোটি ডলারের কাছাকাছি। এর প্রায় সবটাই স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পাঠানো হয়েছিল। রাজস্ব বোর্ডের হিসেবে, এই ১৫ কোটি ডলারের রফতানির মধ্যে মাত্র বিশ লাখ ডলারের রফতানি স্থলবন্দর দিয়ে হয়নি।বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাবে, ভারতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১৫৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশে; যা দেশটির মোট রপ্তানি আয়ের ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। অন্যদিকে ভারত থেকে বাংলাদেশ ৯শ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করে। মূলত ভারতীয় ভোগ্যপণ্যের বড় বাজার হলো বাংলাদেশ। ভারতে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হতো পোশাক এবং এরপর পাট ও পাটজাত পণ্যই দেশটিতে বেশি যায় বাংলাদেশ থেকে। এছাড়া প্লাস্টিক পণ্য রফতানিতেও বাংলাদেশ ভালো করছিল। এর ওপরে আগেই বিধিনিষেধ দিয়েছে ভারত। বাংলাদেশে যে প্রভাব পড়বে: শুক্রবার স্থলবন্দর দিয়ে ৯টি পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে তিন মাসে তিন দফায় বিধিনিষেধ দিল ভারত। এর আগে গত ১৭ মে স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব, সুতা ও সুতার উপজাত, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয় প্রভৃতি পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ দিয়েছিল। তারও আগে গত ৯ এপ্রিল ভারতের কলকাতা বিমানবন্দর ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির সুবিধা প্রত্যাহার করেছিল দেশটি।এর আগে আটই এপ্রিল অন্য দেশে পণ্য রফতানির জন্য বাংলাদেশকে দেয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছিল ভারত। এরপর পনেরই এপ্রিল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে সূতা আমদানি বন্ধ করে ঘোষণা করে বাংলাদেশ।অর্থনীতিবিদ মোস্তাফিজুর রহমান বলছেন, ভারত অনেক দিন ধরে বাংলাদেশকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়ার কারণে দেশটিতে বাংলাদেশের রফতানি বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় দুই বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি চলে যায়। কিন্তু এখনকার পাল্টাপাল্টি ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি সংকট তৈরি করছে। এটা কারও জন্যই ভালো নয়। বাংলাদেশ ভারতের ওপর অনেক পণ্যের ক্ষেত্রেই নির্ভরশীল।আবার ভারতীয় পণ্য রফতানির জন্য বাংলাদেশের উপরেও নির্ভরশীলতা আছে। তাই দুই পক্ষই যত দ্রুত সমাধানে পৌঁছাতে ততই দুই দেশের বাণিজ্য ও অর্থনীতি উপকৃত হবে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, তৈরি পোশাকের পরে ভারতে পাট ও পাটজাত পণ্যই বেশি যাচ্ছিল। ২০১৭ সালে দেশটি বাংলাদেশি পাটপণ্যে ‘অ্যান্টি ডাম্পিং’ শুল্ক আরোপ করে; যা ২০২৩ সালে আরও পাঁচ বছর বাড়ানো হয়।পাট অধিদফতরের হিসেবে চলতি বছরের মার্চ মাসে ভারতসহ মোট ১২টি দেশে ৬৯৮ কোটি টাকার কাঁচাপাট রফতানি হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ভারতেই ৪৪৮ কোটি টাকার বেশি মূল্যের কাঁচাপাট রপ্তানি হয়েছে। এর প্রায় পুরোটাই গেছে স্থলবন্দর দিয়েছে। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে এক ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকার বেশি কাচাপাট রফতানি হয়েছে ভারতসহ ১৩টি দেশে।এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৭ লাখ ৯৭ হাজার ৩৩২ বেল পাট গেছে ভারতে; যার মূল্য ১ হাজার ২৯ কোটি টাকার বেশি। এখানেও পুরোটা স্থল বন্দর দিয়েই রফতানি হয়েছে। এমনকি তৃতীয় দেশে রফতানির জন্য বাংলাবান্দা স্থল বন্দর দিয়ে প্রায় আড়াই লাখ বেল পাটা গেছে বাংলাদেশ থেকে।যদিও গত মে মাসে পোশাকসহ কিছু বাংলাদেশি পণ্য স্থলপথে আমদানি ভারত নিষিদ্ধ করার পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন দাবি করেছিলেন- ভারতই বাংলাদেশে বেশি রফতানি করে বলে স্থলবন্দর কেন্দ্রিক বিধিনিষেধে বাংলাদেশের চেয়ে ভারতীয় ব্যবসায়ীরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অবশ্য আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাটির সমাধান করা সম্ভব বলেও তিনি তখন আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মো. শফিকুল আলম খুলনা প্রেস ক্লাবে অবরুদ্ধ ছিলেন—এমন গুঞ্জন ছড়ালেও আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তিনি অবরুদ্ধ ছিলেন না, বরং আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে সংলাপে অংশ নিয়েছেন।শনিবার (২৮ জুন) রাতে আন্দোলনের অন্যতম সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর খুলনা জেলা শাখার সদস্যসচিব সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি গণমাধ্যমকে বলেন, “প্রেস সচিব আমাদের অতিথি। আমরা শুধু খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার মো. জুলফিকার আলীর অপসারণের দাবি জানাতে গিয়েছিলাম। তাকে অবরুদ্ধ করা হয়নি।”তিনি বলেন, “খুলনার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। গত চারদিন ধরে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপির কাছে বারবার জানালেও তারা কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেননি। তাই আমরা প্রেস সচিবের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টাকে একটি বার্তা পৌঁছে দিতে চেয়েছি।”বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা মহানগরের সদস্যসচিব জহুরুল তানভীরও একই বক্তব্য দিয়ে বলেন, “আমরা শুধু চেয়েছি, প্রধান উপদেষ্টা যেন খুলনার বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত থাকেন।”শনিবার সন্ধ্যায় খুলনা প্রেস ক্লাবে বিএনপি, বৈছাআ ও এনসিপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আলোচনায় তিনি আন্দোলনকারীদের বক্তব্য শোনেন এবং কেএমপি কমিশনারের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ ও অপসারণ দাবির বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টাকে জানাবেন বলে আশ্বাস দেন।এর আগে বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায়ও অংশ নেন প্রেস সচিব।খুলনায় চলমান আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে গত মঙ্গলবার, যখন খানজাহান আলী থানা এলাকায় স্থানীয় জনতা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সুকান্ত দাসকে আটকে রেখে মারধর করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। তার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও বিএনপির স্থানীয় এক নেতার বাড়িতে ভাঙচুরসহ দুটি মামলা রয়েছে।তবে পুলিশ তাকে ছেড়ে দিলে জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয় এবং কমিশনারের বিরুদ্ধে এক দফা আন্দোলন শুরু হয়। পরে সুকান্তকে গ্রেপ্তার করা হলেও কেএমপি কমিশনারের পদত্যাগের দাবিতে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে।ভোরের আকাশ//হ.র
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ইতোমধ্যে গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদ্যাপন-সংক্রান্ত প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষ্যে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনসমূহ জুলাই গণ-অভ্যুত্থান উপলক্ষ্যে গ্রাফিতির বই, পোস্টার, চলচ্চিত্র ‘শ্রাবণ বিদ্রোহ’ প্রদর্শন-সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে গৃহীত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, গণ-অভ্যুত্থানের শহিদদের স্মরণে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা। আগামী আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে রাজধানীর তথ্য ভবনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এছাড়া, গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং এর অধীন দপ্তর-সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি আয়োজনেরও পরিকল্পনা রয়েছে।গৃহীত কর্মসূচির আওতায় আগামী ১লা জুলাই থেকে ৫ই আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন পত্রিকায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ওপর বিশেষ ফিচার, নিবন্ধ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে। সেই সঙ্গে, গণ-অভ্যুত্থানের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে আগামী ১লা জুলাই থেকে ৫ই আগস্ট পর্যন্ত দেশব্যাপী বিলবোর্ড স্থাপন, পোস্টার ও ফেস্টুন মুদ্রণ ও বিতরণ করা হবে।তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করা হবে। তথ্য ভবনে এই প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ওপর রচিত গ্রন্থসমূহ এই উৎসবে প্রদর্শিত হবে।গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে থাকছে চলচ্চিত্র ‘শ্রাবণ বিদ্রোহ’-এর প্রিমিয়ার প্রদর্শনী, যা আগামী ৫ই জুলাই বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে। একইসঙ্গে জেলা তথ্য অফিসসমূহের মাধ্যমে সারাদেশে চলচ্চিত্র ‘শ্রাবণ বিদ্রোহ’ প্রদর্শনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এর পাশাপাশি সারাদেশে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্রসমূহ ধারাবাহিকভাবে প্রদর্শন করা হবে। গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশন বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।মন্ত্রণালয়ের গৃহীত কর্মসূচি অনুযায়ী, তথ্য ভবন, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ ও ঢাকাস্থ বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ধারণকৃত আলোকচিত্র ও গ্রাফিতি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে অভ্যুত্থানে শহিদ সাংবাদিক পরিবারকে সম্মাননা, বিশেষ অনুদান ও উপহার প্রদান করা হবে। এছাড়া, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে একটি আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।ভোরের আকাশ/জাআ