নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২৫ ১১:৪৭ পিএম
“সংস্কারের দাবি উপেক্ষা করা আগামী সরকারের পক্ষে সহজ হবে না”: আসিফ নজরুল
দেশে চলমান গণ-অভ্যুত্থান ও জনতার বিপুল ত্যাগের পর যেকোনো পরবর্তী সরকারের জন্য রাষ্ট্র সংস্কারের দাবিকে উপেক্ষা করা সহজ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত ‘সরকারি অ্যাটর্নি সার্ভিস অধ্যাদেশ-২০২৫’-এর খসড়া বিষয়ক এক মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. নজরুল বলেন, “হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ দিয়েছে, বহু মানুষ স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনো জনগণ রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য এত বড় ত্যাগ দেয়নি। এই বাস্তবতা উপেক্ষা করে নতুন সরকার পরিচালনা করা কঠিন হবে।”
তিনি আরও বলেন, “সংস্কার না করা গেলে আগামী দুই দশকেও আর তা করা সম্ভব হবে না। এ সুযোগ হারালে জাতি দীর্ঘদিন পিছিয়ে পড়বে।”
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং আইনের ধারাবাহিকতা রক্ষার প্রসঙ্গে ড. আসিফ নজরুল বলেন, “রাজনৈতিক সরকারের প্রভাব বিচার ব্যবস্থায় কিছুটা থাকতেই পারে। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় তখনই, যখন কোনো নিরপেক্ষ সরকার কর্তৃক প্রণীত আইন রাজনৈতিক স্বার্থে বাতিল করে দেওয়া হয়। যেমনটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাঠামোর ক্ষেত্রেও ঘটেছে।”
তিনি বলেন, “এই অনিয়ম বন্ধ করতে হলে আইনের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা জরুরি। সে লক্ষ্যে নতুন আইনের খসড়া চূড়ান্ত করার আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।”
নিম্ন আদালতে সরকারি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশ ও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগও উল্লেখ করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “সরকারি উকিল হয়েও কেউ যদি অর্থের বিনিময়ে প্রতিপক্ষের স্বার্থ রক্ষা করে, তা হলে সাধারণ মানুষের বিচার ব্যবস্থার ওপর বিশ্বাসে আঘাত লাগে।”
এই সমস্যা সমাধানে এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রস্তাবিত ‘সরকারি অ্যাটর্নি সার্ভিস অধ্যাদেশ-২০২৫’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের এবং অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফসহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
এই খসড়া অধ্যাদেশের মাধ্যমে সরকারি আইনজীবীদের জন্য পেশাগত মানদণ্ড ও জবাবদিহির নতুন কাঠামো প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।
ভোরের আকাশ//হ.র