সচিবালয়ে কর্মচারীদের আন্দোলনে না যাওয়ার পরামর্শ উপদেষ্টা রিজওয়ানার
সচিবালয়ে আন্দোলকারীদের ‘শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি’ করতে বললেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বড় আন্দোলনে না যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। রোববার সচিবালয়ে পরিবেশ উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি জমা দেয় আইন বাতিল চাওয়া সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে পরিবেশ উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, সরকারি চাকরি আইন সংশোধন অধ্যাদেশ-২০২৫ বাতিলের দাবি নিয়ে কর্মচারীদের উদ্বেগের কথা উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জানানো হবে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে।
এদিকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবিরের কাছে স্মারকলিপি দেন কর্মচারী ইউনিয়ন নেতা নূরুল ইসলাম ও নজরুল ইসলাম। পরে উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন তারা। উপদেষ্টার সামনে দেওয়া বক্তব্যে আইনের বিভিন্ন ‘নিবর্তনমূলক ও দমনমূলক’ দিক তুলে ধরেন কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা।
বৈঠক শেষে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির বলেন, এখানে কিছু প্রভিশন আছে যেগুলো অপপ্রয়োগের সম্ভাবনা আছে। আপনাদের অবস্থান হচ্ছে এটা বাতিল করে দিতে হবে। বাতিল করার দাবি জানিয়ে আপনাদের যে বক্তব্য, সেটা উপদেষ্টা পরিষদে আমি আলাপ করব।
সরকারি চাকরি আইন সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৫ বাতিলের দাবিতে রোববারও বাংলাদেশ সচিবালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এদিন সকাল পৌনে ১২টার দিকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে মিছিল নিয়ে বাদামতলায় সমবেত হন তারা। অবিলম্বে অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা।
দাবি আদায় না হলে আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়ে তারা বলেন, যেহেতু প্রধান উপদেষ্টা সফর শেষে দেশে ফিরেছেন, সেহেতু ইতিবাচক ঘোষণা প্রত্যাশা করছেন তারা।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের আলোকেই চলতি মাসের (৩১ জুলাই) মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা করা হবে। এমন সময়সীমা নির্ধারণ করে রেখেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। জুলাই মাস শেষ হতে আর মাত্র বাকি ৬ দিন। আবার আগামী ৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র আদায় করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।এনসিপির আল্টিমেটাম সময় ধরা হলেও ঐকমত্য কমিশনের হাতে সময় রয়েছে মাত্র দেড় সপ্তাহ। কিন্তু বাংলাদেশে সংস্কার প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত কয়েক মাস ধরে দফায় দফায় আলোচনার পরও মৌলিক অনেক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য দূর করা যায়নি। আবার রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা না হলে সিদ্ধান্ত জানাবে বলে মন্তব্য করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বিষয়টিকে ভিন্নভাবে দেখছেন সংলাপে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলো। ফলে জুলাই সনদ ঘোষণায় সময় ও অনৈক্যের প্রবল চাপ বেড়েছে। রাষ্ট্র সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক ইস্যুগুলো নিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গত ৩ জুন থেকে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কমিশনের ১৮টি বৈঠকে এ পর্যন্ত ১৭টি মৌলিক ইস্যু উত্থাপন করা হয়েছে। তবে বারবার আলোচনার পরও এখনো বহুল আলোচিত আটটি মৌলিক ইস্যুতে ঐকমত্যে আসতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। যে ৭টি ইস্যুতে মতানৈক্য রয়ে গেছে সেগুলো হলো- তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা, রাষ্ট্রের মূলনীতি পুনর্বিন্যাস, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট (উচ্চকক্ষের গঠন, সদস্য নির্বাচনের পদ্ধতি), রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি (ইলেক্টোরাল কলেজ ইত্যাদি), প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল নির্দিষ্টকরণ, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি (যা আগে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল- এনসিসি নামে প্রস্তাবিত) এবং সংসদে নারী আসন (সংখ্যা বৃদ্ধি, নির্বাচন পদ্ধতি ইত্যাদি)।এ বিষয়ে কমিশন সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘প্রস্তাবিত গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক ইস্যুগুলোতে বারবার আলোচনার পরও দলগুলো ঐক্যে আসতে পারেনি। আর সব বিষয়ে যে তারা একমত হবেন না, এটাই বাস্তবতা। তার পরও এ পর্যন্ত ১০টি মৌলিক ইস্যুতে দলগুলো একমত হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের আলোচনায় সব মিলিয়ে যেসব বিষয়ে তাদের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে, সেই ইস্যুগুলো নিয়েই আমরা জুলাই সনদ চূড়ান্ত করতে চাই।’কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, দলগুলোর মধ্যে ঐক্য হওয়া মৌলিক ইস্যুগুলো হলো- সংবিধান সংশোধন, সংবিধানের ৭০ নং অনুচ্ছেদ সংশোধন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কার, নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা সম্পর্কিত বিধান, বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ (সুপ্রিম কোর্টের বিকেন্দ্রীকরণ ও উপজেলা পর্যায়ে অধস্তন আদালত সম্প্রসারণ), প্রধান বিচারপতির নিয়োগ প্রক্রিয়া, প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে না থাকার বিধান ও জরুরি অবস্থা ঘোষণা। এ ছাড়া পূর্বনির্ধারিত আরও দুটি বিষয় (নাগরিকের মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ সম্পর্কিত প্রস্তাব এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব) আলোচনার জন্য উত্থাপন করতে পারেনি কমিশন।অনৈক্যের ইস্যুগুলোতে যত বাধা : ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফা বৈঠকে সবচেয়ে বেশিবার আলোচিত হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনে বাছাই কমিটি নিয়ে দলগুলো একমত হলেও কোন প্রক্রিয়ায় কমিটির সদস্যদের (নির্দলীয় নিরপেক্ষ ব্যক্তি) বাছাই করা হবে তা এখনো অমীমাংসিত।এর আগে ২০ জুলাই ১৫তম বৈঠকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে একটি ‘সমন্বিত প্রস্তাব’ উপস্থাপন করে। এতে একটি সংসদীয় বাছাই কমিটির মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বাছাইয়ের প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাবটি আরও পর্যালোচনা করে দলগুলোকে মতামত দিতে বলা হয়।এ বিষয়ে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘নির্দলীয়, নিরপেক্ষ এই সরকারের জন্য নিরপেক্ষ লোক পাওয়া খুবই কঠিন। এ ক্ষেত্রে সর্বশেষ বিকল্প হিসেবে আলোচনায় আমরা বিগত দিনে পরীক্ষিত ত্রয়োদশ সংশোধনীতে ফিরে যাওয়ার প্রস্তাব করেছি।’ এ ইস্যুতে ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।রাষ্ট্র পরিচালনায় সংবিধানের মূলনীতি কী হবে- এই ইস্যুতে কয়েক দফা আলোচনার পরও ঐক্যে আসতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। ফলে কমিশনের ১৬তম বৈঠকে এ ইস্যুতে নতুন প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। তাতে সাম্য, মানবিক মর্যদা, সামাজিক সুবিচার, গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা- এই পাঁচটি বিষয় যুক্ত করার প্রস্তাব ওঠে। জানানো হয় কেউ কোনো বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করলে, তা জাতীয় সনদে উল্লেখ করা হবে। এমন প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে সিপিবি, গণফোরামসহ বামদলগুলোর নেতারা।সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘সংবিধানে বিদ্যমান রাষ্ট্রের চার মূলনীতি পরিবর্তন কিছুতেই মানা হবে না। তবে কমিশন নতুন করে সংযোজন করতে চাইলে তাদের আপত্তি থাকবে না।’ একই সঙ্গে এই মূলনীতির পরিবর্তন কিংবা প্রতিস্থাপনে নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে নয়, শতভাগ ঐকমত্যের ভিত্তিতেই করতে কমিশনের প্রতি আহ্বান তাদের।দ্বিতীয় পর্যায়ে বৈঠকের ১৪তম দিনে অমীমাংসিত দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট ইস্যুতে ফের আলোচনায় বসে কমিশন। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট প্রতিষ্ঠায় সব দল একমত। তবে এর গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে অনৈক্য রয়ে গেছে। এ বিষয়ে টানা তিন দিনের বেশি আলোচনার পরও ঐক্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। কোনো কোনো দল বলছে, ভোটের সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যদিকে আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতেও উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব আছে। যেহেতু রাজনৈতিক দল এবং জোটগুলো এ বিষয়ে কোনো ঐকমত্যে পৌঁছতে পারছে না, তাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের ভার পরে কমিশনের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়।জাতীয় সনদে ‘নোট অব ডিসেন্ট’- এর সুযোগ রেখে ১৭তম বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে না থাকার বিধান সম্পর্কে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তাতে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন ব্যক্তি একই সঙ্গে দলীয় প্রধানের পদে থাকবেন না মর্মে প্রায় তিন-চতুর্থাংশ রাজনৈতিক দল ও জোট একমত হয়েছে। ফলে প্রধানমন্ত্রী একসঙ্গে দলীয় প্রধান ও সংসদপ্রধানের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। তবে কমিশনের এ সিদ্ধান্তে যেসব দল ও জোটের ভিন্নমত রয়েছে, তা জাতীয় সনদে নোট অব ডিসেন্ট হিসেবে উল্লেখ থাকবে। তবে কমিশনের এমন সিদ্ধান্তে গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।এখনো অমীমাংসিত রয়েছে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি ইস্যু; যা আগে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) নামে প্রস্তাবিত ছিল। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, দুর্নীতি দমন কমিশন ও ন্যায়পাল। এসব বিষয় গত বুধবার কমিশনের ১৮তম দিনের আলোচনার টেবিলে ওঠে। তবে আলোচনা হয় শুধু নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়া ইস্যুতে। পরে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হলেও বাকি চারটি নিয়ে আলোচনাই হয়নি। এসব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যাতে স্বচ্ছতা ও ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত হয়, এমন মত রাজনৈতিক দলগুলোর। এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি (ইলেকটোরাল কলেজ ইত্যাদি), প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল নির্দিষ্টকরণ এবং সংসদে নারী আসন (সংখ্যা বৃদ্ধি, নির্বাচন পদ্ধতি ইত্যাদি) বিষয়েও কয়েক দফা আলোচনার পরও দলগুলোর মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি কমিশন।জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আমরা ঐক্য প্রতিষ্ঠার তাগিদবোধ তৈরির চেষ্টা করছি। কিছু মৌলিক ইস্যুকে বারবার আলোচনার টেবিলে আনা হয়েছে। বেশ কিছু ইস্যুতে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ছাড় দিয়ে একমত হয়েছেন- এ জন্য তাদের সাধুবাদ জানাই। এ পর্যায়ে জুলাই-আগস্টের শহীদদের প্রতি আমাদের যে দায়িত্ববোধ, তার প্রেক্ষিতে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আমরা একটি যৌক্তিক জায়গায় পৌঁছাতে চাই। সব মিলিয়ে যতগুলো বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য পৌঁছানো সম্ভব হবে, সেসব ইস্যুকে সঙ্গী করেই একটি ‘জাতীয় সনদ’ তৈরির সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়াই কমিশনের লক্ষ্য।৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ আদায় করা হবে : এনসিপি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আগামী ৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র আদায় করা হবে। গত শুক্রবার দুপুরে জেলা শহরের আলফাত উদ্দিন স্কয়ারে (ট্রাফিক পয়েন্টে) আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।নাহিদ ইসলাম বলেন, এনসিপি সংস্কার, বিচার ও নতুন সংবিধানের দাবিতে এগিয়ে যাবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিজেদের দলীয় অবস্থান থেকে সরে এসে সংস্কারের পক্ষে কাজ করছে। ফিটনেসবিহীন রাষ্ট্র মেরামতের জন্যই জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এদিকে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক সম্পর্কে ব্যাপক টানাপোড়েন চলছে। বাগযুদ্ধের পাশাপাশি পরস্পরের প্রতি আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে তারা। অনেক ইস্যুতে বিএনপির বিপরীত অবস্থানে রয়েছে এনসিপিসহ ইসলামী দলগুলো। জুলাই সনদ বা জুলাই ঘোষণাপত্রকে সংবিধানের মূলনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে ভেটো দিয়ে বসেছে বিএনপি। কিন্তু সংবিধানের মূলনীতিতে তা অন্তর্ভুক্তিকরণে কঠোর অবস্থানে রয়েছে এনসিপি। আর দেশের গতানুগতিক নির্বাচনপদ্ধতি পরিবর্তন করে জামায়াতের সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির (পিআর) দাবির বিপরীতে অবস্থান বিএনপির।ঐক্য না হলে সিদ্ধান্ত দেবে কমিশন-এমন মন্তব্যে দলগুলোর সমালোচনা : রাষ্ট্র সংস্কারে মৌলিক বিষয়গুলোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা না হলে সিদ্ধান্ত জানাবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বিষয়টিকে ভিন্নভাবে দেখছেন সংলাপে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলো। কোনো কোনো দল এ ধরনের সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করছে। আবার কোনো দল কমিশনের পরবর্তী বৈঠক বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে। তারা বলছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। এ কমিশন জনগণের একক কোনো দলের নয়। কিন্তু কমিশন একটি-দুটি দলের হয়ে কাজ করছে। তাদের দিকে হেলে পড়ছে, সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এভাবে জাতির আশা-আকাক্সক্ষা পূরণ হবে না। কমিশন যদি সিদ্ধান্ত জানিয়ে থাকে তাহলে দিনের পর দিন এ আলোচনার অর্থ কী? তাদের বক্তব্য- যেসব ইস্যুতে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হবে না সেগুলো বাদ যাবে। আর যেগুলোতে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হবে সেগুলোই জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। কমিশন যে ভূমিকা পালন করছে তা অনেকটা রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর তাদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন পাঁচজনের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট। বর্তমানে ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে তাদের।শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দীন।তিনি জানান, “আজ শুক্রবার পরপর দুই দগ্ধ শিক্ষার্থী মারা গেছেন। এখনো ৪০ জন ভর্তি রয়েছেন। তাদের মধ্যে পাঁচজন আইসিইউতে আছেন এবং তারা সংকটাপন্ন অবস্থায় আছেন। এ ছাড়া সিভিয়ার ক্যাটাগরিতে রয়েছেন ১০ জন এবং পোস্ট-অপারেটিভ পর্যায়ের আরও ১০ জনকে রাখা হয়েছে ইন্টারমিডিয়েট ইউনিটে। ইনস্টিটিউটের কেবিনে চিকিৎসা নিচ্ছেন আরও ১৫ জন।”তবে আশার খবরও দিয়েছেন ডা. নাসির উদ্দীন। তিনি বলেন, “লাইফ সাপোর্টে থাকা কয়েকজন রোগীর মধ্যে দুজনের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তাদের ভেন্টিলেটর খুলে দেওয়া হয়েছে এবং তারা এখন নিজে নিজেই শ্বাস নিতে পারছেন। আশা করছি আগামীকাল চার থেকে পাঁচজন রোগীকে ছাড়পত্র দেওয়া যাবে। প্রতিদিনই কিছু রোগীকে ছাড়া সম্ভব হবে।”এদিন সিঙ্গাপুর, চীন ও ভারতের চিকিৎসকদের একটি প্রতিনিধিদল বার্ন ইনস্টিটিউটে আসেন। তারা চিকিৎসক দলের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং রোগীদের অবস্থা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেন বলেও জানান পরিচালক।এছাড়া শুক্রবার মৃত্যু হওয়া দুই শিক্ষার্থীর বিষয়ে তিনি বলেন, “আমি নিজেই উপস্থিত থেকে তাদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। তাদের মধ্যে একজন, তাসনিম আফরোজ আইমান, শরীয়তপুরের বাসিন্দা। জানাজা শেষে তাকে সেখানেই দাফন করা হবে। আরেক শিশু মুসাব্বির মাকিনের বাড়ি গাজীপুরে। দুই জেলার সিভিল সার্জনদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে দাফনের বিষয়ে।”উল্লেখ্য, রাজধানীর দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে বহু শিক্ষার্থীসহ অনেকে দগ্ধ হন।ভোরের আকাশ//হ.র
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছেন, জীবনের শেষ প্রান্তে এসে কোনো ব্যক্তিগত লক্ষ্য বা স্বার্থ নয়, বরং দেশের জন্য একটি ভালো কাজ করে যেতে চাই। আমার লক্ষ্য একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জাতিকে উপহার দেওয়া। এটি শুধু আমার একার পক্ষে সম্ভব নয়- এজন্য আমি দেশবাসীর সার্বিক সহযোগিতা এবং দোয়া কামনা করছি।আজ শুক্রবার যশোর কালেক্টরেট মসজিদে জুমার নামাজের আগে মুসল্লিদের উদ্দেশে এক সংক্ষিপ্ত শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।জানা যায়, খুলনায় যাওয়ার পথে যশোরে সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতির সময় কালেক্টরেট মসজিদে তিনি জুমার নামাজ আদায় করেন।প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমি দীর্ঘ সরকারি চাকরি জীবনে অনেক দায়িত্ব পালন করেছি, অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। কিন্তু এই মুহূর্তে যে গুরুদায়িত্ব আমার কাঁধে এসেছে- তা দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে চাই। এ লক্ষ্য অর্জনে সবার আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।এ সময় তিনি রাজধানীর উত্তরায় ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের জন্য মসজিদে উপস্থিত সবার কাছে দোয়া কামনা করেন। একইসঙ্গে মাইলস্টোন স্কুলের দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীদের স্মরণে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে তিনি অংশগ্রহণ করেন এবং শোক প্রকাশ করেন।এসময় নাসির উদ্দীনের সঙ্গে যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম, স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।ভোরের আকাশ/জাআ
ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে ড্রাইভওয়ে ও ক্যানোপি এলাকায় যাত্রীদের সঙ্গে দুজনের বেশি প্রবেশ করতে পারবে না বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।যা আগামী রোববার (২৭ জুলাই) থেকে এ নির্দেশনা কার্যকর হবে।বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) রাতে এক বার্তায় কর্তৃপক্ষ এ ঘোষণা দিয়েছে।বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র স্কোয়ার্ডন লিডার মো. মাহমুদুল হাসান মাসুম জানান, নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী যাত্রীদের সঙ্গে সর্বোচ্চ দুজন ব্যক্তি ডিপারচার ড্রাইভওয়ে ও এরাইভাল ক্যানোপি এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন।এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক রাখা, বিমানবন্দর এলাকায় যানজট নিয়ন্ত্রণ এবং সর্বোপরি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।তিনি বলেন, সম্মানিত যাত্রীদের বিদায় ও স্বাগত জানাতে আসা ব্যক্তিদের সুশৃঙ্খলভাবে চলাচলের অনুরোধ জানানো হচ্ছে। সকলের সহযোগিতা কাম্য।বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আদেশক্রমে এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে বছরে এক কোটি ২৫ লাখ যাত্রী শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করে থাকেন। প্রতিদিন ১৪০-১৫০টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালিত হয়।ভোরের আকাশ/জাআ