ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৫ ০২:১০ এএম
আশুরায় ২দিন রোজার গুরুত্ব—ঐতিহ্য ও সুন্নতের অনুসরণ
মুসলমানদের কাছে পবিত্র মুহাররম মাসের ১০ তারিখ, অর্থাৎ আশুরা, বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ একটি দিন। এই দিনে রোজা রাখা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নত। শুধু ১০ তারিখ নয়, রাসুল (সা.) আশুরার রোজার সঙ্গে আরও একটি দিন—৯ অথবা ১১ মুহাররম—রোজা রাখার ব্যাপারে উৎসাহ দিয়েছেন।
দুটি দিন রোজার পেছনে কারণ কী?
হাদিসের বর্ণনায় উঠে এসেছে, ইহুদি ও খ্রিস্টানরাও আশুরার দিনটিকে মর্যাদার সঙ্গে পালন করত। তাই তাদের সঙ্গে সাদৃশ্য এড়াতে রাসুল (সা.) ৯ ও ১০ মুহাররম একসঙ্গে রোজা রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। যদিও তিনি পরবর্তী বছর এ সুযোগ পাননি, কারণ তার আগেই ইন্তেকাল করেন।
সহীহ মুসলিমে বর্ণিত আছে—
‘আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আশুরার দিন রোজা রাখেন এবং সাহাবাদেরও রোজা রাখতে বলেন। তখন লোকেরা বলেন, “হে আল্লাহর রাসুল! এই দিনটি তো ইহুদি ও খ্রিস্টানদের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ।” উত্তরে তিনি বলেন, “আগামী বছর, ইনশাআল্লাহ, আমরা ৯ তারিখেও রোজা রাখব।” কিন্তু তার আগেই রাসুল (সা.) ইন্তেকাল করেন।’
রোজা রাখার পদ্ধতি কী হবে?
আলেমদের মতে, আশুরার রোজা পালন করতে কয়েকটি পন্থা অনুসরণ করা যায়:
শুধু ১০ মুহাররম রোজা রাখা—ন্যূনতম সুন্নত পালন।
৯ ও ১০ মুহাররম একসঙ্গে রোজা রাখা—এটি সর্বোত্তম ও রাসুল (সা.)-এর অনুসৃত পন্থা।
১০ ও ১১ মুহাররম রোজা রাখা—যাদের পক্ষে ৯ তারিখে রোজা রাখা সম্ভব নয়, তারা এই পন্থাও অবলম্বন করতে পারেন।
ইমাম শাফেয়ী, ইমাম আহমাদ ও অন্যান্য প্রখ্যাত আলেমগণ উভয় দিন রোজাকে মুস্তাহাব (উত্তম) বলে গণ্য করেছেন।
মুহাররম মাসে রোজার ফজিলত
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘রমজানের পর আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম রোজা হলো মুহাররম মাসে রোজা।’ (সহীহ মুসলিম)
এই হাদিস থেকে স্পষ্ট, মুহাররমের যেকোনো দিন রোজা রাখা সাওয়াবের কাজ। তবে আশুরার দিনে রোজার রয়েছে বিশেষ ফজিলত ও গুরুত্ব।
উপসংহার:
আশুরার রোজা শুধু একটি আধ্যাত্মিক অনুশীলন নয়, বরং এটি ইতিহাস, ঐতিহ্য ও রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। তাই মুসলমানদের উচিত এ দিনটির যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে ৯ ও ১০ অথবা ১০ ও ১১ মুহাররম রোজা রেখে এই ফজিলতপূর্ণ আমল পালন করা।
ভোরের আকাশ//হ.র