রাজীব দাস
প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:০৯ এএম
ছবি: সংগৃহীত
এশিয়া কাপের সুপার ফোরে শুভ সূচনা করেছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে লিটন দাসের নেতৃত্বাধীন টাইগার বাহিনী। এই জয় এখন দলের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা জোগাচ্ছে। আজ বুধবার লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা নামবে সূর্যকুমার যাদবের নেতৃত্বাধীন ভারতের বিপক্ষে। এটি হবে বাংলাদেশের জন্য সুপার ফোরের দ্বিতীয় ম্যাচ এবং ফাইনালের পথে বড় ধাপ।
গত সোমবার অনুশীলনের ফাঁকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন টাইগার অলরাউন্ডার শেখ মেহেদী হাসান। আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন না থাকলেও বাংলাদেশের সাংবাদিকদের অনুরোধে তিনি কিছু সময় দেন। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচকে আলাদা করে দেখছেন না মেহেদী। মেহেদী বলেন, একটা ম্যাচ জেতার পর আলাদা কিছু ভাবছি না। ভারতের সঙ্গেই হোক বা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে, আমাদের কাছে ম্যাচ মানে শুধু ক্রিকেট খেলা।
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি রেকর্ড হতাশাজনক। দুই দেশের ১৭ ম্যাচে মাত্র একটিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। বহুজাতিক আসরে ভারতকে হারানোর রেকর্ড নেই। তবু ইতিহাসকে পাত্তা দিচ্ছেন না মেহেদী, সবকিছু ম্যাচ সিচুয়েশনের ওপর নির্ভর করে।
তিনি আরও বলেন, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে উইকেটশূন্য থাকার পর আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলিনি। তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আবার সুযোগ পেয়ে দুটি উইকেট পেয়েছি। ভালোর তো কখনো শেষ থাকে না। যখন খেলছি, পারফর্ম করছি এটাই দলের জন্য ভালো দিক। মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ম্যাচকে ঘিরে উত্তেজনার ঝড় থাকলেও, মেহেদী সেটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না। আমরা এসব নিয়ে ভাবি না। এগুলো মিডিয়া বা সমর্থকের তৈরি। প্রতিটি আন্তর্জাতিক ম্যাচের মতোই ভারতের বিপক্ষে আমরা স্বাভাবিকভাবে খেলবো।
বাংলাদেশ দলের হেড কোচ ফিল সিমন্স ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, ভারতকে হারানো সম্ভব। প্রত্যেকটা দলেরই ভারতকে হারানোর সামর্থ্য আছে। পুরোটা আসলে ওই দিনের খেলার ওপর নির্ভর করে। ভারত আগে কী করেছে সেটা বড় বিষয় নয়। বুধবার (আজ) তারা কী করে, সেটাই দেখার বিষয়। ম্যাচের ওই সাড়ে তিন ঘণ্টার ওপর সবকিছু নির্ভর করে। যতটা সম্ভব চেষ্টা করব নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে। পাশাপাশি আশা করি ভারতকে ভুল করতে বাধ্য করব। এভাবেই আপনি ম্যাচ জিততে পারেন।
সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে ভারত এগিয়ে থাকলেও, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসকে আরও শক্ত করেছে। সিমন্সের কথায়, দেখুন, বিশ্বাস তো রাখতেই হবে। আমরা বসে এসব নিয়ে কথা বলেছি। আমাদের মধ্যে বিশ্বাস আছে যে সুযোগ আছে। যদি ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পাই, সেটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে হবে। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ জেতার সুযোগ আমাদের আছে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় শুধু আত্মবিশ্বাস নয়, এটি বাংলাদেশ দলের ফাইনালে উঠার স্বপ্নের বড় ধাপ। আজ যদি টাইগাররা ভারতকে হারাতে পারে, তবে ফাইনালে যাওয়ার দিকেই এগোবে দল। ম্যাচ কেবল ক্রীড়াঙ্গন নয়, দেশের কোটি ক্রিকেটপ্রেমীর জন্যও এটি হবে একটি উত্তেজনাপূর্ণ সন্ধ্যা।
বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা জানে, ইতিহাস যেমন বিরল, তেমনি এই সুযোগও একেবারে সোনালী। মাঠে আত্মবিশ্বাস, পরিকল্পনা এবং সুযোগ কাজে লাগানো অর্থাৎ সমন্বয় থাকলে, ফাইনালে পৌঁছানো অসম্ভব কিছু নয়।
ফাইনালের হাতছানি কেবল ক্রিকেটারদের জন্য নয়, কোটি কোটি টাইগার ভক্তের জন্যও উন্মুক্ত। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে, তবে আসল পরীক্ষা এখনও বাকি, ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ করা। মাঠে প্রতিটি বল, প্রতিটি উইকেট এবং প্রতিটি সিদ্ধান্তে লড়াই হবে লাল-সবুজের হৃদয়ের এক নতুন পরিচয়। আজকের ম্যাচ শুধুই একটি লড়াই নয়; এটি হবে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা। বিজয়ই হবে তাদের পুরস্কার, আর প্রত্যেক সমর্থকের হৃদয়ে চিরস্থায়ী আনন্দের।
ভোরের আকাশ/এসএইচ