ক্রীড়া প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৫ ১২:২৪ পিএম
তিতের বিদায় ভাবনা তেতো হয়ে উঠেছে ফুটবলের স্বাদ
তিতে এখন অনির্দিষ্টকালের জন্য কোচিং পেশা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন-একটা সময় যিনি ব্রাজিল জাতীয় দলের ‘মুখ’ হয়ে উঠেছিলেন, সেই কোচের এমন সিদ্ধান্তে অনেকেই বিস্মিত হলেও এর পেছনে জমে থাকা ক্লান্তি, শারীরিক অস্বস্তি ও মানসিক চাপের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা তাঁর আজও অটুট, কিন্তু তাতে যে স্বাদ তিনি পেতেন, তা হয়তো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তেতো হয়ে উঠেছে।
পেশাগত দায়িত্ব অনেক সময়ই একঘেয়ে লাগে, বিশেষ করে যখন নিজের সেরাটা দেওয়ার পরও বারবার হতাশ হতে হয়। তিতের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে বলে অনুমান করা যায়।
রাশিয়া ও কাতার বিশ্বকাপে ব্রাজিলের ডাগআউটে দাঁড়ানো এই অভিজ্ঞ কোচ গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছেন, এখন সময় এসেছে নিজেকে কিছুটা সময় দেওয়ার, নিজের শরীর ও মনের যত্ন নেওয়ার। ছেলে মাথেউস বাচির ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।
৬৩ বছর বয়সী তিতে বলেন, ‘আমি যে কাজ (কোচিং) করি, সেটার প্রতি এখনো আমার টান আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। কিন্তু আমার শরীর যে সংকেত দিচ্ছে, তা পর্যবেক্ষণ করার পর পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি-এখন ক্যারিয়ার থেকে বিরতি নেওয়া এবং যতটা সম্ভব নিজের যত্ন নেওয়াই আমার জন্য সবচেয়ে ভালো।
তাঁর কথায় স্পষ্ট, এই বিরতি কেবল বিশ্রামের জন্য নয়, বরং নিজের মানবিক দিকটাকে গুরুত্ব দেওয়ার একটি প্রয়াস।
তিতে বলেন, আমি অনুধাবন করতে পারছি যে এই মুহূর্তে একজন মানুষ হিসেবে আমি দুর্বল হতে পারি। তবে এটি (অনির্দিষ্টকালের বিরতি) অবশ্যই আমাকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে।
যদিও তিনি শারীরিক স্বাস্থ্যের কারণ দেখিয়েছেন, কিন্তু ফুটবলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যে সময়ের সঙ্গে কিছুটা অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছে, সেটাও অস্বীকার করা যাচ্ছে না।
কাতার বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে হোঁচট খাওয়ার পর জাতীয় দলের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া, এরপর ফ্লামেঙ্গোর কোচ হয়ে কিছুটা সাফল্য এনে দেওয়া হলেও পরে সমর্থকদের তীব্র বিরোধিতা, ক্লাবের দেয়ালে তাঁর ব্যঙ্গচিত্র আঁকা, মাঠে দুয়ো এসব ঘটনায় স্পষ্ট, কোচ হিসেবে তিনি আর আগের মতো প্রশংসিত হচ্ছেন না।
তারও আগে, ফ্লামেঙ্গোতে বরখাস্ত হওয়ার ঠিক আগমুহূর্তে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন, যা তাঁর শারীরিক ও মানসিক স্থিতি নিয়ে বড় প্রশ্ন তোলে। এমন অবস্থায় গুঞ্জন উঠেছিল, তিনি হয়তো আবারও করিন্থিয়ান্সে ফিরবেন, ক্লাবটিও জানিয়েছিল যে তিতের সঙ্গে চুক্তির খুব কাছাকাছি তারা। কিন্তু দায়িত্ব নেওয়ার প্রাক্কালে হঠাৎ করেই তিনি নিজেকে সরিয়ে নিলেন ফুটবল থেকে, যেন ফুটবল থেকে কিছুটা দূরত্বই এখন তার সবচেয়ে বড় আরাম। সেই বিবৃতিতেই তিতে জানান, দুই পক্ষের সম্মতিতে করিন্থিয়ান্সের সঙ্গে চুক্তি স্থগিত করা হয়েছে, আর ক্লাবও এক মানবিক বিবৃতিতে তার আরোগ্য কামনা করেছে। সব মিলিয়ে ফুটবলের জগৎ, যেটা একসময় তার জীবনের প্রাণ ছিল, এখন হয়তো ক্লান্তির প্রতীক হয়ে উঠেছে। তিতের এই বিরতি তাই শুধুই পেশাগত নয়, এক অর্থে তাঁর নিজস্ব অস্তিত্ব ও সুস্থতা ফিরে পাওয়ার লড়াইও বটে।
ভোরের আকাশ/এসআই
ক্রীড়া প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১ দিন আগে
আপডেট : ১ দিন আগে
তিতের বিদায় ভাবনা তেতো হয়ে উঠেছে ফুটবলের স্বাদ
তিতে এখন অনির্দিষ্টকালের জন্য কোচিং পেশা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন-একটা সময় যিনি ব্রাজিল জাতীয় দলের ‘মুখ’ হয়ে উঠেছিলেন, সেই কোচের এমন সিদ্ধান্তে অনেকেই বিস্মিত হলেও এর পেছনে জমে থাকা ক্লান্তি, শারীরিক অস্বস্তি ও মানসিক চাপের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা তাঁর আজও অটুট, কিন্তু তাতে যে স্বাদ তিনি পেতেন, তা হয়তো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তেতো হয়ে উঠেছে।
পেশাগত দায়িত্ব অনেক সময়ই একঘেয়ে লাগে, বিশেষ করে যখন নিজের সেরাটা দেওয়ার পরও বারবার হতাশ হতে হয়। তিতের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে বলে অনুমান করা যায়।
রাশিয়া ও কাতার বিশ্বকাপে ব্রাজিলের ডাগআউটে দাঁড়ানো এই অভিজ্ঞ কোচ গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছেন, এখন সময় এসেছে নিজেকে কিছুটা সময় দেওয়ার, নিজের শরীর ও মনের যত্ন নেওয়ার। ছেলে মাথেউস বাচির ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।
৬৩ বছর বয়সী তিতে বলেন, ‘আমি যে কাজ (কোচিং) করি, সেটার প্রতি এখনো আমার টান আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। কিন্তু আমার শরীর যে সংকেত দিচ্ছে, তা পর্যবেক্ষণ করার পর পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি-এখন ক্যারিয়ার থেকে বিরতি নেওয়া এবং যতটা সম্ভব নিজের যত্ন নেওয়াই আমার জন্য সবচেয়ে ভালো।
তাঁর কথায় স্পষ্ট, এই বিরতি কেবল বিশ্রামের জন্য নয়, বরং নিজের মানবিক দিকটাকে গুরুত্ব দেওয়ার একটি প্রয়াস।
তিতে বলেন, আমি অনুধাবন করতে পারছি যে এই মুহূর্তে একজন মানুষ হিসেবে আমি দুর্বল হতে পারি। তবে এটি (অনির্দিষ্টকালের বিরতি) অবশ্যই আমাকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে।
যদিও তিনি শারীরিক স্বাস্থ্যের কারণ দেখিয়েছেন, কিন্তু ফুটবলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যে সময়ের সঙ্গে কিছুটা অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছে, সেটাও অস্বীকার করা যাচ্ছে না।
কাতার বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে হোঁচট খাওয়ার পর জাতীয় দলের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া, এরপর ফ্লামেঙ্গোর কোচ হয়ে কিছুটা সাফল্য এনে দেওয়া হলেও পরে সমর্থকদের তীব্র বিরোধিতা, ক্লাবের দেয়ালে তাঁর ব্যঙ্গচিত্র আঁকা, মাঠে দুয়ো এসব ঘটনায় স্পষ্ট, কোচ হিসেবে তিনি আর আগের মতো প্রশংসিত হচ্ছেন না।
তারও আগে, ফ্লামেঙ্গোতে বরখাস্ত হওয়ার ঠিক আগমুহূর্তে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন, যা তাঁর শারীরিক ও মানসিক স্থিতি নিয়ে বড় প্রশ্ন তোলে। এমন অবস্থায় গুঞ্জন উঠেছিল, তিনি হয়তো আবারও করিন্থিয়ান্সে ফিরবেন, ক্লাবটিও জানিয়েছিল যে তিতের সঙ্গে চুক্তির খুব কাছাকাছি তারা। কিন্তু দায়িত্ব নেওয়ার প্রাক্কালে হঠাৎ করেই তিনি নিজেকে সরিয়ে নিলেন ফুটবল থেকে, যেন ফুটবল থেকে কিছুটা দূরত্বই এখন তার সবচেয়ে বড় আরাম। সেই বিবৃতিতেই তিতে জানান, দুই পক্ষের সম্মতিতে করিন্থিয়ান্সের সঙ্গে চুক্তি স্থগিত করা হয়েছে, আর ক্লাবও এক মানবিক বিবৃতিতে তার আরোগ্য কামনা করেছে। সব মিলিয়ে ফুটবলের জগৎ, যেটা একসময় তার জীবনের প্রাণ ছিল, এখন হয়তো ক্লান্তির প্রতীক হয়ে উঠেছে। তিতের এই বিরতি তাই শুধুই পেশাগত নয়, এক অর্থে তাঁর নিজস্ব অস্তিত্ব ও সুস্থতা ফিরে পাওয়ার লড়াইও বটে।
ভোরের আকাশ/এসআই