ছবি- সংগৃহীত
আফগানিস্তানের নাগরিকদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইতোমধ্যে বিশ্বজুড়ে সব মার্কিন দূতাবাস এবং কনস্যুলার দপ্তরে এ বিষয়ক তারবার্তা পাঠিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সেই বার্তায় বলা হয়েছে, কোনো আফগান ব্যক্তিকে যেন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা প্রদান না করা হয় এবং যেসব আফগানের ভিসা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে— তা যেন তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করা হয়।
আরও বলা হয়েছে, এখন থেকে অভিবাসী এবং অ-অভিবাসী ভিসার পাশাপাশি বিশেষ অভিবাসন ভিসা প্রদানও বন্ধ থাকবে আফগানদের জন্য। এমনকি নিয়ে বর্তমানে আফগানিস্তানের যেসব নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন, তাদের ভিসাও বাতিল করা হয়েছে।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মার্কো রুবিও শনিবার (২৯ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন।
এক্সবার্তায় তিনি বলেছেন, “আফগানিস্তানের পাসপোর্টধারী সব ব্যক্তিকে ভিসা দেওয়া বন্ধ করছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যুক্তরাষ্ট্র এবং মার্কিন জনগণের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার গুরুত্ব আমাদের কাছে সর্বোচ্চ। কোনোভাবেই এর সঙ্গে আপোস হবে না।”
গত বুধবার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন আধাসামরিক বাহিনী ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন আফগানিস্তানের নাগরিক রহমানউল্লাহ লাকনওয়াল। এতে গুরুতর আহত হন দুই জন ন্যাশনাল গার্ড সদস্য। তাদের মধ্যে একজন ইতোমধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
তাৎক্ষণিক অনুসন্ধানে জানা যায়, রহমানউল্লাহ লাকনওয়াল আফগানিস্তানে মার্কিন-ন্যাটো বাহিনীর অভিযানের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-এর এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন। ২০২১ সালে তালেবান বাহিনী আফগানিস্তানের ক্ষমতা পুনর্দখল করার পর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের অনুমতিক্রমে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন তিনি।
বুধবার ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের ওপর বন্দুক হামলা ঘটার কয়েক ঘণ্টা পর যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ও অভিবাসন পরিষেবা দপ্তর জানিয়েছিল, যেসব আফগান নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিকত্ব ও স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আবেদন করেছিলেন, তাদের সবার আবেদন বাতিল করা হয়েছে। শনিবারের বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলার দপ্তরে তারবার্তা প্রদানের মাধ্যমে এ পদক্ষেপকে আরও দৃঢ় করল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন।
সূত্র: রয়টার্স, আলজাজিরা
ভোরের আকাশ/মো.আ.
সংশ্লিষ্ট
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের নেতা শরিফ ওসমান হাদি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার মৃত্যুর খবর দেশি সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করেছে।বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা প্রথমদিকেই হাদির মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর বাংলাদেশের ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের অন্যতম নেতা শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়েছিল।সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানায়, চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে তাদের প্রতিবেদনে জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাদির মৃত্যুর ঘোষণা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে বিক্ষোভকারীরা তার হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ডয়চে ভেলে আরও জানায়, হাদি ভারতের একজন স্পষ্টভাষী সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুতকারী যুব আন্দোলনের একজন বিশিষ্ট নেতা হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। একই খবর প্রকাশ করেছে আরেক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।হাদির মৃত্যুর খবর দিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সংস্থাটি জানায়, বৃহস্পতিবার তার মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনও একই খবর প্রকাশ করেছে।এছাড়া সিএনএ, আল আরাবিয়া, দ্য সান মালয়েশিয়া, পাকিস্তানের ডন, জিও নিউজ, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, এবং ভারতের দ্য টেলিগ্রাফ, এনডিটিভিসহ আন্তর্জাতিক আরও অনেক সংবাদমাধ্যম হাদির মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেছে।উল্লেখ্য, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা রিকশায় থাকা শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে। তিনি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন।প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, মোটরসাইকেলে করে আসা দুজন দুর্বৃত্ত খুব কাছ থেকে গুলি করে দ্রুত পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। চিকিৎসকদের মতে, গুলি তার মাথার ডান পাশ দিয়ে ঢুকে বাম পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়, তবে গুলির একটি অংশ তখনও মস্তিষ্কে রয়ে যায়।পরবর্তীতে পরিবারের সিদ্ধান্তে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সর্বশেষ উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সিঙ্গাপুর থেকে দেশে আনা হবে বলে জানানো হয়েছে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের স্টেটসভিল শহরে একটি ছোটো বিমান বিধ্বস্ত হয়ে দেশটির ক্রীড়া তারকা গ্রেগ বিফেলসহ ৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা সবাই বিফেলের পরিবারের সদস্য বলে ধারণা করছে পুলিশ।আন্তর্জাতিক উড়োজাহাজ ট্র্যাাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটঅ্যাওয়ারের বরাতে জানা গেছে, বিমানটি ছিল একটি সেসনা ৫৫০ বিজনেস জেট উড়োজাহাজ। উড়োজাহাজটি গ্রেগ বিফেলের নামে নিবন্ধিত ছিল। অর্থাৎ বিফেল ছিলেন এটির মালিক।বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে দিকে নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের প্রধান শহর নর্থ ক্যারোলাইনার বিমানবন্দর থেকে ফ্লোরিডার উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন বিফেল ও তার পরিবারের সদস্যরা।কিন্তু উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই খারাপ আবাহওয়ার জেরে স্থানীয় সময় বেলা ১০টা ১৫ মিনিটে স্টেটসভিলের বিমান বন্দরের রানওয়েতে আছড়ে পড়ে উড়োজাহাজটি। নর্থ ক্যারোলাইনা হাইওয়ে পেট্রোল পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আছড়ে পড়ার বিমানটির জ্বালানি ট্যাংকে বিস্ফোরণ ঘটে এবং সেটিতে আগুন ধরে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার আগ পর্যন্ত বিমানটিতে উদ্ধার তৎপরতা চালানো সম্ভব হয়নি।পরে পুড়ে যাওয়া বিমানটিতে থেকে গ্রেগ বিফলে সহ ৭ জনের দগ্ধ দেহাবশেষ উদ্ধার করেন পুলিশ সদস্যরা।৫৫ বছর বয়সী গ্রেগ বিফেল ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রথম সারির মোটরগাড়ি রেসার। ২০ বছরের ক্যারিয়ারে জাতীয় ও রাজ্যপর্যায়ে বিভিন্ন গাড়ি রেসিং টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন এবং মোট ১৯ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। ২০২২ সালে অবসর নেন তিনি।যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গাড়ি রেসিং আয়োজোক সংস্থা ন্যাশনাল অ্যাসোসিশন ফর স্টক কার অটো রেসিং (নাসকার) প্রণীত দেশটিরি সর্বকালের সেরা ৭৫ জন রেসারের তালিকায়ও নাম আছে বিফেলের।গতকাল রানওয়েতে বিফেলের বিমান আছড়ে পড়ার পর স্টেটসভিল বিমানবন্দর ঘোষণা করেছিল কর্তৃপক্ষ। মার্কিন সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক নিয়ন্ত্রণক সংস্থা ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড ইতোমধ্যে এ ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। সূত্র : রয়টার্সভোরের আকাশ/মো.আ.
শুল্কের ভয় দেখিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আটটি যুদ্ধ থামানোর দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।বুধবার( ১৭ ডিসেম্বর) হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি আরো বলেন, ‘শুল্ক’ তার সবচেয়ে প্রিয় শব্দ, একটি নীতি যা বৈশ্বিক বাণিজ্য সম্পর্ককে সম্পূর্ণভাবে বদলে দিয়েছে।বক্তব্যে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে একজনও বিদেশি অবৈধভাবে প্রবেশ করতে পারেননি বলে জানান তিনি।ট্রাম্প বলেন, আমি যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি পুনরুদ্ধার করেছি, ১০ মাসে আটটি যুদ্ধ সমাধান করেছি, ইরানের পারমাণবিক হুমকি ধ্বংস করেছি এবং গাজার যুদ্ধে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছি, যার মাধ্যমে ৩০০০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি এসেছে।ট্রাম্প তার প্রশাসনের অনেক সফলতার জন্য শুল্ক নীতিকেই দায়ী করেছেন, যদিও স্পষ্ট যে তার বিঘ্ন সৃষ্টিকারী বাণিজ্যনীতি কিছু পণ্যের দাম বাড়িয়েছে এবং ভোটারদের মধ্যে বেশিরভাগের কাছে অপছন্দের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে ১৮ ট্রিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ নিশ্চিত করেছি। এই সাফল্যের অনেকটাই শুল্কের কারণে অর্জিত হয়েছে। আমার সবচেয়ে প্রিয় শব্দ ‘শুল্ক’ যা বহু দশক ধরে অন্যান্য দেশ আমাদের বিরুদ্ধে সফলভাবে ব্যবহার করেছে।এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। আমদানি শুল্ক এড়াতে বহু কোম্পানি দেশে ফিরে এসেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং অটোমোবাইল খাতেও নজিরবিহীন উন্নতি হয়েছে। এছাড়া, বড় ও সুন্দর বিল আসার পর বকশিশ, অতিরিক্ত সময় কাজের পারিশ্রমিক বা সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধার ওপর কোনো কর চাপানো হয়নি। ফলে বার্ষিক ১১,০০০ থেকে ২০,০০০ ডলার পর্যন্ত সাশ্রয় করতে পারবে পরিবারগুলো।ট্রাম্প দাবি করেন, গত সাত মাসে আমাদের দেশে কোনো অবৈধ অভিবাসী ঢুকতে পারেনি। সবাই বলেছিল এটা অসম্ভব। কিন্তু আমরা দেখিয়েছি সম্ভব।জো বাইডেনের সীমান্ত নীতির সমালোচনা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, সীমান্ত বন্ধ করতে কংগ্রেসের আইন পাস করা প্রয়োজন ছিল না, আমাদের প্রয়োজন ছিল একজন নতুন প্রেসিডেন্টের। উত্তরাধিকার সূত্রে আমরা বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ সীমান্ত পেয়েছিলাম, কিন্তু তা দ্রুত ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী সীমান্তে পরিণত করেছি।ট্রাম্প মার্কিন সেনাদের জন্য এককালীন ১,৭৭৬ ডলার ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দেন। ১৪.৫ লাখেরও বেশি সেনা বড়দিনের আগে এই অর্থ পাবেন। ট্রাম্প দাবি করেন, এই সুবিধাগুলোও শুল্ক নীতির ফল।এর আগে ট্রাম্প বহুবার একাধিক যুদ্ধ থামানোর কৃতিত্ব দাবি করেছেন। গত সেপ্টেম্বরে তিনি জানিয়েছিলেন, ভারত-পাকিস্তান, তাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া, আর্মেনিয়া-আজারবাইজান, কোসোভো-সার্বিয়া, ইসরায়েল-ইরান, মিশর-ইথিওপিয়া এবং রাওয়ান্ডা-কঙ্গো যুদ্ধ তিনি থামিয়েছেন। তবে পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বন্দ্ব স্থগিত করার বিষয়টি ভারত প্রত্যাখ্যান করেছে। নয়াদিল্লি জানিয়েছে, তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ছাড়া যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছিল।ভোরের আকাশ/তা.কা
২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত রুশ বাহিনীর সঙ্গে চলমান যুদ্ধে ইউক্রেন প্রায় পাঁচ লাখ সেনা হারিয়েছে বলে দাবি করেছে রাশিয়া। এই বিপুল ক্ষতি নিকট ভবিষ্যতে পূরণ করা ইউক্রেনের পক্ষে কঠিন হবে বলেও মন্তব্য করেছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বোর্ড সভায় এ তথ্য জানান দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলৌসোভ। রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম রাশিয়ান টেলিভিশন (আরটি) এ তথ্য জানিয়েছে। সভায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও উপস্থিত ছিলেন।বৈঠকে বেলৌসোভ বলেন, ২০২৫ সালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত রুশ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় পাঁচ লাখ ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে। এই ব্যাপক প্রাণহানির কারণে কিয়েভের পক্ষে নিকট ভবিষ্যতে বাহিনী পুনর্গঠন করা কঠিন হয়ে পড়বে। এর প্রভাব পড়ছে বেসামরিক জনগণের মধ্যেও, যারা বাধ্যতামূলক সামরিক যোগদানে আগ্রহ হারাচ্ছে।তিনি আরও দাবি করেন, চলতি বছর ইউক্রেন এক লাখ তিন হাজারের বেশি সমরাস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম হারিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৫ হাজার ৫০০টি ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান রয়েছে, যেগুলো পশ্চিমা দেশগুলোর সহায়তায় ইউক্রেন পেয়েছিল।উল্লেখ্য, ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়া এবং ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য ইউক্রেনের প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিনের টানাপোড়েনের পর ২০২২ সালে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। যুদ্ধ শুরুর পরপরই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী পুরুষদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ডিক্রি জারি করেন।যুদ্ধের শুরুতে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীতে যোগদানের ন্যূনতম বয়স ছিল ২৭ বছর, যা গত বছর কমিয়ে ২৫ বছর করা হয়। তবে বাধ্যতামূলক সামরিক যোগদানে জোর-জবরদস্তির অভিযোগে গত এক বছরে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে সাধারণ জনগণ ও সেনা সমাবেশ কর্মকর্তাদের মধ্যে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে।এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যের বিষয়ে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।ভোরের আকাশ/তা.কা