পাবনায় যুবককে অপহরণ, ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায়
পাবনার মধ্য শহরে দিনদুপুরে এক যুবককে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে শহরের চারতলা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। অপহরণ করে প্রথমে ওই যুবকের কাছে থাকা নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। পরে বিকাশ ও ব্যাংকের এটিএম কার্ডসহ মোট ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ হিসেবে আদায় করে তারা। এ ঘটনার পরই পাবনা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই যুবক।ভুক্তভোগী যুবক পাবনা সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নের চর আশুতোষপুর গ্রামের সালাম মোল্লার ছেলে সোলায়মান হোসেন শুভ। তিনি পেশায় ওয়ার্কশপ ব্যবসায়ী।এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়িক কেনাকাটা সংক্রান্ত কাজে শহরের টাউন হল থেকে পাবনা সেবা হাসপাতাল হয়ে চারতলা মোড়ের হার্ডওয়্যারের দোকানের উদ্দেশে রওনা হন সোলায়মান। পথে চারতলা মোড়ে পৌঁছালে ৩-৪ যুবক তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এরপর ফিরে তাকাতেই রাস্তার পাশ থেকে চাকু ঠেকিয়ে তাকে অপহরণ করে পরিত্যক্ত চারতলা ভবনের একটি কক্ষে নিয়ে যায়। এরপর মারধর করে তার কাছে থাকা মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়।মানিব্যাগে থাকা ৫ হাজার ৬০০ টাকা ও তার বিকাশে থাকা ২১৫ টাকা ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। পরে হাতুড়ি, জিআই পাইপ ও বাঁশের লাঠিসোঁটা দিয়ে মারধর করে বন্ধুর থেকে বিকাশে ৫ হাজার টাকা নিতে বাধ্য করে। এর কিছুক্ষণ পর তাকে আবারও ১০ হাজার টাকা বিকাশে আনতে বললে তা পাঠাতে বিলম্ব হওয়ায় আবারও তাকে ব্যাপক মারধর করে। এসময় এ দলে আরও কয়েকজন যোগ দিয়ে ৫-৭ জন মারধরে যোগ দেয়। এরপর মানিব্যাগে থাকা ব্যাংকের এটিএম কার্ডের পিনকোড বলতে রাজি না হলে সোলায়মানের গলায় চাকু ও মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে পিনকোড বলে বাধ্য করে। কার্ড থেকে চার দফায় দুর্বৃত্তরা ৬০ হাজার টাকা তুলে নেয়। পরে তাকে উলঙ্গ করে ওই এলাকায় অশ্লীল কাজে এসেছিলেন মর্মে একটি স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করে এবং সেটি ভিডিও করে দুর্বৃত্তরা। কোথাও অভিযোগ দিলে তাকে প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে বিকেল পৌনে ৪ টার দিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীর বন্ধু রেজা বলেন, দুপুরে হঠাৎ ফোন দিয়ে টাকা চায় সোলায়মান। দ্রুত টাকা পাঠাতে বাধ্য লাঠিসোঁটা তাকে মারধর ও গালিগালাজ করতে শোনা যায় ফোনে। এসময় দ্রুত ৫ হাজার টাকা পাঠালে আবার আমার কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। এ টাকা দিতে দেরি হওয়ায় তার সাথে বাকি ঘটনা ঘটে। এর মাঝে থানা পুলিশকে জানালে তারা লোকেশন ট্র্যাক করে সোলায়মানকে উদ্ধার চেষ্টা করে। তবে উদ্ধারের আগেই তার থেকে সব নিয়ে ছেড়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। দিনদুপুরে যে ধরনের ঘটনার সাক্ষী হলাম আমরা সেটি বর্ণনা করার মতো নয়। এ রকম পরিস্থিতি হলে আমরা রাস্তাঘাটে চলাচল করব কীভাবে?ভুক্তভোগী সোলায়মান বলেন, দফায় দফায় মারধর ও টাকা নেবার পর আমাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও করে মিথ্যা স্বীকারোক্তি দেওয়ানো হয়েছে। এটি নিয়ে আমি আরও আতঙ্কে আছি। এই ভিডিও-কে ব্যবহার করে তারা আবার আমাকে হয়রানি করতে পারে। তিনি বলেন, রক্ত পানি করে আয় করা টাকা। এই টাকাগুলো ছাড়া আমার তেমন সম্বল নেই। এখন আমি কীভাবে লেবারদের বিল দেব, কীভাবে আমিই চলবো। আমি এর বিচার চাই।চারতলা মোড়ের এক বাসিন্দা জানান, এই এলাকায় এ ধরনের ঘটনা ইদানীং বেড়েছে। কয়েকদিন আগেও আরেকটি ছেলেকে ঘাড়ে ইঞ্জেকশন পুশ করে তুলে নিয়ে গিয়ে তার থেকে মুক্তিপণ আদায় করা হয়েছে। দিনদুপুরে এসব কি হচ্ছে মধ্য শহরে? ঘর থেকে বের হতে গেলে আতঙ্ক কাজ করে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্যই এসব ঘটনা বাড়ছে। প্রশাসনের কঠোর হাতে এগুলো দমন করা উচিত।এ ব্যাপারে পাবনা সদর থানা পুলিশের ওসি আব্দুস সালাম বলেন, ঘটনাটি জেনেছি। ইতোমধ্যে পুলিশ এটি নিয়ে কাজ করছে। দ্রুতই ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
০৭ আগস্ট ২০২৫ ০৮:৫২ এএম
খুলনায় পুলিশ পরিচয়ে খাদ্য পরিদর্শককে অপহরণ, সাড়ে ৫ ঘণ্টা পর উদ্ধার
খুলনায় খাদ্য পরিদর্শক সুশান্ত কুমার মজুমদারকে পুলিশ পরিচয়ে অপহরণের ৫ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে খাদ্য পরিদর্শক সুশান্ত কুমার মজুমদারকে।রোববার (১৩ জুলাই) রাত সাড়ে ১২ টার দিকে তেরখাদা উপজেলার আজগড়া বিআরবি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে হাত, পা এবং চোখ বাঁধা অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। ওই খাদ্য কর্মকর্তাকে খুলনা সদর থানায় রেখে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। অপহৃত সুশান্ত কুমার খাদ্য পরিদর্শক হিসেবে ৪নং ঘাট ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করছিলেন।এর আগে, রোববার সন্ধ্যায় খুলনা মহানগরীর ৪ নম্বর ঘাট এলাকা থেকে খাদ্য কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মজুমদারকে পুলিশ পরিচয়ে অপহরণ করা হয়। পথচারীদের ধারণকৃত মোবাইলের ভিডিও এবং অপহৃত খাদ্য পরিদর্শকের স্ত্রীর দায়েরকৃত অভিযোগ থেকেও এমনটি জানা যায়। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর থানায় এ অভিযোগটি দায়ের হলে পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অভিযানে নামেন।অপহৃত খাদ্য পরিদর্শকের স্ত্রী মাধবী রানী মজুমদার খুলনা থানায় লিখিত অভিযোগে জানান, মো. রেজা ও বাবু মণ্ডল নামের দুই ব্যক্তি এবং সঙ্গে আরও তিনজন তাকে অপহরণ করেছে। অপহরণের পর থেকে সুশান্ত কুমার মজুমদারের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর দুটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলে তার স্ত্রী দাবি করেন। এর আগে বাবু মণ্ডল ওই পরিদর্শকের কাছে কয়েকবার টাকা দাবি করে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়; কিন্তু খাদ্য পরিদর্শক সুশান্ত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান।খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার সানওয়ার হোসাইন মাসুম জানান, অপহরণের খবর পাওয়ার পর থেকে পুলিশের একাধিক ইউনিট অভিযান শুরু করে। পুলিশের তৎপরতায় আতঙ্কিত হয়ে অপহরণকারীরা সুশান্ত কুমারকে তেরখাদা উপজেলার আজপড়া গ্রামের বিআরবি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে ফেলে রেখে যায়। পরে তেরখাদা থানার পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করা হয়। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।কেএমপির উপপুলিশ কমিশনার (সিটিএসবি) আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান জানিয়েছেন, রাত সাড়ে বারোটার দিকে অপহৃত খাদ্য পরিদর্শক সুকান্ত কুমার মজুমদারকে উদ্ধার করেছে খুলনা থানা-পুলিশ।ভোরের আকাশ/এসএইচ
১৪ জুলাই ২০২৫ ১১:০৩ এএম
গোপালগঞ্জে যৌথ বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ, গ্রেপ্তার ২
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় সেনাবাহিনী ও র্যাব অফিসার পরিচয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবিকালে দুই প্রতারককে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী।রোববার বিকালে সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলীয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর শরীফপাড়া গ্রামের তোফেল শরীফের ছেলে হাবিবুর রহমান (৪২) ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলার জোয়ারিয়া গ্রামের সুভাষ ঢালীর ছেলে শ্রীবাস ঢালী (৩২)।গোপীনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আহম্মেদ আলী বিশ্বাস ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে জানান, সুকতাইল ইউনিয়নের চরতালা গ্রামের সোনা মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে সেনাবাহিনী ও র্যাব অফিসার পরিচয়ে দিয়ে একটি ইজিবাইকে করে চন্দ্রদিঘলীয়া গ্রামে নিয়ে যায় হাবিবুর রহমান ও শ্রীবাস ঢালী।পরে সোনা মিয়ার ফোন দিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে। দাবিকৃত টাকা না দিলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে হুমকি দেয়। বিষয়টি স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা ওই প্রতারকদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে।কথাবার্তা অসংলগ্ন হওয়ায় স্থানীয়রা একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে তাদের গণধোলাই প্রদান করে। পরবর্তীতে পুলিশে খবর দিলে গোপীনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির থেকে একটি দল এসে তাদের গ্রেপ্তার করে ফাড়িতে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী সোনামিয়া বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।ভোরের আকাশ/জাআ
১৬ জুন ২০২৫ ০৭:৫২ পিএম
গোপালগঞ্জে যৌথ বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ এবং মুক্তিপণ দাবি; গ্রেফতার ২
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় সেনাবাহিনী ও র্যাব অফিসার পরিচয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবিকালে দুই প্রতারককে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। রোববার (১৫ জুন) বিকালে সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলীয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর শরীফপাড়া গ্রামের তোফেল শরীফের ছেলে হাবিবুর রহমান (৪২) ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলার জোয়ারিয়া গ্রামের সুভাষ ঢালীর ছেলে শ্রীবাস ঢালী (৩২)।গোপীনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আহম্মেদ আলী বিশ্বাস ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে জানান, সুকতাইল ইউনিয়নের চরতালা গ্রামের সোনা মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে সেনাবাহিনী ও র্যাব অফিসার পরিচয়ে দিয়ে একটি ইজিবাইকে করে চন্দ্রদিঘলীয়া গ্রামে নিয়ে যায় হাবিবুর রহমান ও শ্রীবাস ঢালী। পরে সোনা মিয়ার ফোন দিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে। দাবিকৃত টাকা না দিলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে হুমকি দেয়।বিষয়টি স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা ওই প্রতারকদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কথাবার্তা অসংলগ্ন হওয়ায় স্থানীয়রা একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে তাদের গণধোলাই প্রদান করে। পরবর্তীতে পুলিশে খবর দিলে গোপীনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির থেকে একটি দল এসে তাদের গ্রেফতার করে ফাড়িতে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী সোনামিয়া বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
১৬ জুন ২০২৫ ০২:৫৮ পিএম
এনসিপি পরিচয়ে ছাত্রলীগ নেতাকে অপহরণ, ৫ লাখ টাকা আদায়
গাজীপুরের শ্রীপুরে এনসিপির পরিচয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাবেক সহ-সম্পাদক আল রিয়াদ আদনান অন্তরকে অপহরণ করে কতিপয় যুবক। তাকে রাত ভর নির্যাতন করে তারা। পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে দাবি করা হয় ত্রিশ লাখ টাকা। পরে পাঁচ লাখ পঁয়তাল্লিশ হাজার টাকা ও আইফোন সিক্সটিন প্রোমেক্স মোবাইল দিয়ে মেলে মুক্তি। ঘটনা ঘটে উপজেলার মাওনা চৌরাস্তার আ.মালেক মাস্টার কমপেক্সের সামনে। অপহৃত আল রিয়াদ আদনান অন্তর (৩০) টঙ্গী এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে। অন্তর শ্রীপুর পৌর সভার কড়ইতলা গ্রামের ফালানের বাড়িতে ভাড়া থেকে ব্যবসা করতেন। তিনি ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক।এ ঘটনায় ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে বুধবার দুপুরে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তরা হলো উপজেলার উপজেলার কড়ই তলা গ্রামের উজ্জল হোসাইন (২২), মুলাইদ গ্রামের আলিফ মোড়ল (২০), টেপির বাড়ি গ্রামের কাইফাত মোড়ল (২৪), অজ্ঞাত মারুফ খান (২২) ও মিঠুন (২০)সহ আরো ১৩ জন। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ মে রাত ৯টার দিকে উপজেলার মাওনা চৌরাস্তার আ.মালেক মাস্টার কমপেক্সের সামনে থেকে অন্তরকে অভিযুক্তরা অপহরণ করে। তাকে নিয়ে নির্যাতন করে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। তার পরিবারের নিকট ত্রিশ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। তার পরিবারের নিকট থেকে আদায় করে ৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। অন্তরের নিকট থেকে নিয়ে যায় একটি আইফোন সিক্সটিন প্রোমেক্স মোবাইল ফোন। পর দিন ২৯ মে রাত দশটার দিকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় অন্তরকে মাওনা ইউনিয়নের এমসি বাজার মেম্বার বাড়ি সড়কের একটি নির্জন স্থানে ফেলে যায়। একটি মোবাইল ফোন ও ৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকায় মেলে অন্তরের মুক্তি। হুমকির মুখে ভাড়া বাসা ছেড়ে সপরিবারে পালিয়ে যান অন্তর।নির্যাতিত ছাত্রলীগ নেতার স্ত্রী ইসরাত জাহান আঁখি বলেন, অভিযুক্তরা আমার স্বামীকে অপহরণের পর তার মোবাইল থেকে ফোন করে নিজেদেরকে এনসিপি’র নেতাকর্মী পরিচয় দিয়ে আমাদের বলে, ‘পুলিশের কাছে গেলে তোদের মেরে ঝুলিয়ে রাখবো। দেখস নাই কিভাবে পুলিশ-জনগণ মেরে ঝুলিয়ে রেখেছি। কেউ বিচার করতে আসবে না। তোদের পাশে কেউ থাকবে না।তিনি আরো বলেন, অভিযুক্তরা আমাদের নিকট ত্রিশ লাখ টাকা দাবি করে। আমার স্বামীকে নির্যাতন করে তার চিৎকার শুনায়। তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। স্বামীর প্রাণ বাঁচাতে তাৎক্ষণিক দুই লাখ টাকা দেই। তাতে মুক্তি মেলেনি অন্তরের। নির্যতনের এক পর্যায়ে আরো তিন লাখ পঁয়তাল্লিশ হাজার টাকা দেই। আলিফ মোড়ল এসে দু’বার টাকা নিয়ে যায়। অভিযুক্তরা আমার স্বামীর আইফোন সিক্সটিন প্রোমেক্স মোবাইল বক্সসহ নিয়ে যায়। ৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা নিয়ে ২৯ মে রাত দশটার দিকে অপহরণ কারীরা আমার স্বামীকে এমসি বাজার -মেম্বার বাড়ি সড়কের একটি নির্জণ স্থানে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ফেলে যায়।অভিযুক্ত আলিফ মোড়ল তার ফেইসবুক পেস্টে ভুল শিকার করে লিখেন, ‘ছাত্র লীগের এই লোক হাসনাত আবদুল্লাহ ভাইয়ের হামলা কারী এজন্য এই ভাইকে আমরা এমসিবাজার/তেলিহাটিসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে মারধর করি এবং সত্যি বলতে ২ ধাপে আমি নিজে বাইক দিয়ে গিয়ে ওনার বাবার থেকে ৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা এবং আইফোন সিক্সটিন প্রোম্যাক্স এর বক্স নিয়ে যাই। পোস্টের এক পর্যায়ে তিনি লেখেন, ‘আমি ভুল বুঝতে পারছি আমাকে ক্ষমা করবেন আর জীবনে এমন করবো না।’জাতীয় নাগরীক পার্টি (এনসিপি)’র উপজেলার আহ্বায়ক প্রার্থী আবু রায়হান মেজবাহ্ জানান, ‘না না এরা এনসিপির নেতাকর্মী না। পুলিশকে বলা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো। সাংবাদিকদের বলেছি আপনারা নিউজ করতে পারেন। কোনো তথ্য প্রয়োজন হলে আমরা দেবো। এনসিপি কোনো অন্যায় সমর্থন করে না।শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আব্দুল বারিক জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। ভিক্টিমের সাথে কথা বলে বিষয়টি জানতে হবে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
১১ জুন ২০২৫ ০৯:৩৪ পিএম
মানিকগঞ্জে অপহরণের তিনদিনেও খোঁজ মেলেনি আল আমীনের
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গোপালপুর বাধটিয়া গ্রামে আল আমীন (২০) নামের এক তরুণকে অপহরণের তিন দিন পার হলেও এখনো তাঁর কোনো সন্ধান মেলেনি। পরিবারের অভিযোগ, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পরিচিত ও চিহ্নিত হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। উল্টো পুলিশ বলছে, অভিযুক্তরা ‘ভালো লোক’।ভুক্তভোগী আল আমীনের বাবা মো. নায়েব আলী গত ১০ জুন মঙ্গলবার মানিকগঞ্জ সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে বলা হয়, ৯ জুন সোমবার সকাল ১১টার দিকে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি আল আমীনকে চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। অভিযুক্তরা হলেন—মো. রনি মিয়া (২২), মো. হৃদয় (২১), কাশেম আলী (৬৫) এবং রিতু আক্তার (২৫)। তাঁরা সবাই মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার লওখন্ডা গ্রামের বাসিন্দা।পরিবারের দাবি, অপহরণের এক ঘণ্টা পর দুপুর ১২টার দিকে একটি অচেনা নম্বর থেকে আল আমীনের বড় বোন ঝুমা আক্তারের ফোনে কল আসে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে আল আমীন বলেন, “আপু, আমাকে বাঁচাও। আমাকে চোখ বেঁধে কোথায় যেন এনে রেখেছে, আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।” এরপর থেকেই তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, একই দিন সন্দেহভাজন আসামি মো. হৃদয় একটি নম্বর থেকে নায়েব আলীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে তাঁর অবস্থান জানতে চায়। অবস্থান দিতে অস্বীকৃতি জানালে ফোনেই তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়।নায়েব আলীর দাবি, অভিযুক্তদের সঙ্গে তাঁর আগেও পারিবারিক বিরোধ ছিল এবং তারা বেশ কিছুদিন ধরেই তাঁর পরিবারকে হুমকি দিয়ে আসছিল।“আমার ছেলেকে তারা পরিকল্পিতভাবে তুলে নিয়ে গেছে। তিন দিন হয়ে গেল, কোনো খোঁজ নেই। পুলিশ শুধু আশ্বাস দিচ্ছে, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না,” বলেন তিনি।অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ এখনও কোনো অভিযুক্তকে আটক না করে উল্টো বলছে, অভিযুক্তরা ‘ভালো লোক’।এই অভিযোগটির তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর পুলিশ ফাড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রদীপ। অপহৃতকে উদ্ধার ও অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করে উল্টো 'ভালো লোক' বলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।মানিকগঞ্জ সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. সালাউদ্দিন বলেন, বিষয়টি আপনার মাধ্যমেই জানলাম। আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।ভোরের আকাশ/এসএইচ
১১ জুন ২০২৫ ০৪:৫৭ পিএম
উত্তরায় অপহরণ চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার, এক কোটি ৪১ লাখ টাকা উদ্ধার
রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে অপহৃত এক স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করেছে ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। একইসঙ্গে পেশাদার অপহরণকারী চক্রের পাঁচ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. মাসুম পারভেজ (৩৮), মো. সোলাইমান হোসেন (৩৮), শফিকুল ইসলাম সৌরভ (২৭), মোছা. মায়া (২৫) ও মোছা. রুলি খানম (১৯)।শুক্রবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য জানান। এর আগে গত বুধবার বিকেলে উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ১১ নম্বর সেক্টরের ১০/বি রোডের বাসা নম্বর ৩৭-এর দ্বিতীয় তলা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।এ সময় তাদের হেফাজত থেকে বিভিন্ন সময় মুক্তিপণ আদায় করা এক কোটি ৪১ লাখ টাকা, ৬০ পিস ইয়াবা, দুটি সিসি ক্যামেরা এবং তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।উত্তরা পশ্চিম থানার বরাদ দিয়ে মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, গত ২৬ মে বিকেল আনুমানিক ৫টা ৩০ মিনিটে মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসা থেকে বাইরে যাওয়ার কথা বলে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরে ২৮ মে রাত ২টা ৩৬ মিনিটে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ভিকটিমের মায়ের মোবাইল ফোনে কল করে মেয়েকে উদ্ধারের জন্য ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে থানায় জানানো হলে পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিমকে উদ্ধার এবং পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের আরও কয়েকজন সহযোগী দৌড়ে পালিয়ে যান।তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তাররা একটি পেশাদার অপহরণকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরীদের অপহরণ করে একটি নির্দিষ্ট স্থানে আটকে রাখতেন। এরপর ভিকটিমদের নগ্ন ভিডিও ও ছবি ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের হুমকি দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করতেন অপহরণকারীরা।গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে তিনটি পৃথক মামলা রুজু করা হয়েছে। তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ