মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গোপালপুর বাধটিয়া গ্রামে আল আমীন (২০) নামের এক তরুণকে অপহরণের তিন দিন পার হলেও এখনো তাঁর কোনো সন্ধান মেলেনি। পরিবারের অভিযোগ, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পরিচিত ও চিহ্নিত হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। উল্টো পুলিশ বলছে, অভিযুক্তরা ‘ভালো লোক’।ভুক্তভোগী আল আমীনের বাবা মো. নায়েব আলী গত ১০ জুন মঙ্গলবার মানিকগঞ্জ সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে বলা হয়, ৯ জুন সোমবার সকাল ১১টার দিকে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি আল আমীনকে চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। অভিযুক্তরা হলেন—মো. রনি মিয়া (২২), মো. হৃদয় (২১), কাশেম আলী (৬৫) এবং রিতু আক্তার (২৫)। তাঁরা সবাই মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার লওখন্ডা গ্রামের বাসিন্দা।পরিবারের দাবি, অপহরণের এক ঘণ্টা পর দুপুর ১২টার দিকে একটি অচেনা নম্বর থেকে আল আমীনের বড় বোন ঝুমা আক্তারের ফোনে কল আসে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে আল আমীন বলেন, “আপু, আমাকে বাঁচাও। আমাকে চোখ বেঁধে কোথায় যেন এনে রেখেছে, আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।” এরপর থেকেই তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, একই দিন সন্দেহভাজন আসামি মো. হৃদয় একটি নম্বর থেকে নায়েব আলীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে তাঁর অবস্থান জানতে চায়। অবস্থান দিতে অস্বীকৃতি জানালে ফোনেই তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়।নায়েব আলীর দাবি, অভিযুক্তদের সঙ্গে তাঁর আগেও পারিবারিক বিরোধ ছিল এবং তারা বেশ কিছুদিন ধরেই তাঁর পরিবারকে হুমকি দিয়ে আসছিল।“আমার ছেলেকে তারা পরিকল্পিতভাবে তুলে নিয়ে গেছে। তিন দিন হয়ে গেল, কোনো খোঁজ নেই। পুলিশ শুধু আশ্বাস দিচ্ছে, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না,” বলেন তিনি।অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ এখনও কোনো অভিযুক্তকে আটক না করে উল্টো বলছে, অভিযুক্তরা ‘ভালো লোক’।এই অভিযোগটির তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর পুলিশ ফাড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রদীপ। অপহৃতকে উদ্ধার ও অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করে উল্টো 'ভালো লোক' বলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।মানিকগঞ্জ সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. সালাউদ্দিন বলেন, বিষয়টি আপনার মাধ্যমেই জানলাম। আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।ভোরের আকাশ/এসএইচ
১১ জুন ২০২৫ ০৪:৫৭ পিএম
উত্তরায় অপহরণ চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার, এক কোটি ৪১ লাখ টাকা উদ্ধার
রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে অপহৃত এক স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করেছে ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। একইসঙ্গে পেশাদার অপহরণকারী চক্রের পাঁচ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. মাসুম পারভেজ (৩৮), মো. সোলাইমান হোসেন (৩৮), শফিকুল ইসলাম সৌরভ (২৭), মোছা. মায়া (২৫) ও মোছা. রুলি খানম (১৯)।শুক্রবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য জানান। এর আগে গত বুধবার বিকেলে উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ১১ নম্বর সেক্টরের ১০/বি রোডের বাসা নম্বর ৩৭-এর দ্বিতীয় তলা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।এ সময় তাদের হেফাজত থেকে বিভিন্ন সময় মুক্তিপণ আদায় করা এক কোটি ৪১ লাখ টাকা, ৬০ পিস ইয়াবা, দুটি সিসি ক্যামেরা এবং তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।উত্তরা পশ্চিম থানার বরাদ দিয়ে মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, গত ২৬ মে বিকেল আনুমানিক ৫টা ৩০ মিনিটে মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসা থেকে বাইরে যাওয়ার কথা বলে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরে ২৮ মে রাত ২টা ৩৬ মিনিটে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ভিকটিমের মায়ের মোবাইল ফোনে কল করে মেয়েকে উদ্ধারের জন্য ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে থানায় জানানো হলে পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিমকে উদ্ধার এবং পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের আরও কয়েকজন সহযোগী দৌড়ে পালিয়ে যান।তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তাররা একটি পেশাদার অপহরণকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরীদের অপহরণ করে একটি নির্দিষ্ট স্থানে আটকে রাখতেন। এরপর ভিকটিমদের নগ্ন ভিডিও ও ছবি ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের হুমকি দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করতেন অপহরণকারীরা।গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে তিনটি পৃথক মামলা রুজু করা হয়েছে। তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ