ঘুষ ও অনিয়মের অভিযোগে তত্ত্বাবধায়কসহ ৭ জনের নামে মামলা
সুনামগঞ্জে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে আউটসোর্সিং লোকবল নিয়োগে ঘুষ, অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন অভিযোগে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কসহ ৭ জনের নামে মামলা দায়ের হয়েছে।সোমবার (২৮ জুলাই) সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে এই মামলা দায়ের করেন মো. তৌহিদ মিয়া নামের হাসপাতালে সাবেক এক ওয়ার্ডবয়।মামলার আসামিরা হলেন, সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান স্বপন, সুনামগঞ্জ পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজিদুর রহমান, হাসপাতালের মেডিকেল টেকনিশিয়ান জুবায়ের আহমদ, হেলথ এডুকেটর নয়ন দাস, যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম এবং গাউসিয়া ট্রেডার্স সিকিউরিটি ক্লিনিং এন্ড লজিস্টিক সার্ভিসের এমডি এ কে আজাদ।বাদী পক্ষের আইনজীবী নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের এডিশনাল পিপি অ্যাডভোকেট আমিরুল হক জানান, সাম্প্রতিক সময়ে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় প্রভাবশালী মিলে ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে ৬৪ জন আউটসোর্সিং লোকবল নিয়োগ দেন। এতে বঞ্চিত হন হাসপাতালে দীর্ঘদিনের কর্মরত দক্ষ কর্মচারীরা।এছাড়াও হাসপাতালের কতিপয় কর্মচারির যোগসাজশে মেডিসিন ক্রয়ে অনিয়ম দুর্নীতি, পেশাগত দায়িত্ব পালনে হয়রানিসহ সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আদালতের দৃষ্টিগোচর করে সোমবার স্পেশাল জজ হেমায়েত উদ্দিনের আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী।দীর্ঘ শুনানী শেষে অভিযোগটি আমালে নিয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য রাখেন বিচারক।ভুক্তভোগী তৌহিদ মিয়া বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে আউটসোসিং প্রক্রিয়ায় হাসপাতালে কর্মরত ছিলাম। হাসপাতালে থাকায় তত্ত্বাবধায়কের অনেক দুনীতি অনিয়ম অবলোকন করেছি। সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আউটসোসিং নিয়োগে অনিয়ম দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তিনি জনপ্রতি ৮০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে নিয়োগ দিয়েছেন। আমাদের কাছে প্রমান রয়েছে। যারা তার অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলেছে তিনি তাদের হাসপাতাল থেকে বের করে দিয়েছেন। হাসপাতালের কিছু কর্মচারীর যোগসাজশে তত্ত্বাবধায়ক বিভিন্ন টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অনিয়ম, মেডিসিন ক্রয়ে দুর্নীতি করে সরকারের কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। আমি আমার দায়বদ্ধতা থেকে আদালতে মামলা দায়ের করেছি। আশা করছি ন্যায় বিচার পাবো।বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আমিরুল হক সাংবাদিকদের বলেন, সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের দুর্নীতির ফিরিস্তি সকলের জানা। কিছুদিন পূর্বে দুদক এসে দুর্নীতির অনেক সত্যতা পেয়েছে। এতো কিছুর পরেও তত্ত্বাবধায়ক অনিয়ম দুর্নীতিতে লিপ্ত রয়েছেন। আমিসহ অনেক সিনিয়র আইনজীবী বিষয়টি আদালতের অদৃষ্টিগোচর করেছি। আদালত আমাদের কথা মনোযোগ সহকারে শুনেছেন।ভোরের আকাশ/জাআ
২৯ জুলাই ২০২৫ ০৯:১৫ পিএম
জামালপুরে সালিসিতে টাকা না পেয়ে ৭ পরিবারকে সমাজচ্যুত
জামালপুরে গ্রাম্য সালিসিতে ৫০ হাজার টাকা ‘ঘুষ’ না পেয়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে ও মাইকে ঘোষণা দিয়ে ৭ পরিবারকে সমাজচ্যুত করা হয়েছে। এ ঘটনায় শনিবার (১৪ জুন) জামালপুর সদর থানায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) জানা যায় গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে তাদের সমাজচ্যুত করা হয়।অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার জামালপুর পৌর শহরে দাপুনিয়া এলাকার মো. মন্টু মিয়া (৪২) ও একই এলাকার আহাম্মদ আলীর ছেলে মো. মুনছুর মিয়ার (৪৫) বিদ্যুতের লাইন নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর গত শুক্রবার জুমার নামাজ পর উভয় পক্ষের মধ্যে আবারো হাতাহতির ঘটনা ঘটে। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে দাপুনিয়া পশ্চিমপাড়া বকুলতলা মোড়ে সালিসী বৈঠকের আয়োজন করে। সালিসে বিষয়টি মিমাংসার জন্য স্থানীয় শামিম আহমেদ ও আমিনুল ইসলামসহ কয়েকজন মুনছুর মিয়ার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। ৫০ হাজার টাকা না দিলে মুনছুর মিয়াসহ ৭ পরিবারকে সমাজচ্যুত করা হবে বল জানান শামিম আহমেদ ও আমিনুল ইসলাম। পরে মুনছুর মিয়া দাবীকৃত ৫০হাজার টাকা না দিলে ওই দিন রাত ১১টায় দিকে ঢাকঢোল পিটিয়ে ও মাইকিং করে ৭ পরিবারের নাম উল্লেখ করে তাদেরকে সমাজচ্যুত করা হয়। মাইকে আরও বলা হয় ওই ৭ পরিবারের সঙ্গে যদি সমাজের কোনো মানুষ ওঠা-বসা করে তাহলে তাদেরকেও সমাজচ্যুত করা হবে। মসজিদ, দোকান, স্কুল, বাজার, ও প্রকাশ্যে রাস্তা ঘাটে চলাফেরা করতে দেখলে ওই ৭ পরিবারের মানুষ ও ঘরবাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হয়।ইসমাইল মৌলবীর ছেলে মৌকির হোসেন জানান, মন্টু মিয়ার সঙ্গে মুনছুর মিয়ার ঝামেলা হইছে। আমরা তাদের গোষ্টিগত লোক হওয়ার কারনে অযথা আমাদেরকে সমাজচ্যুত করা হয়েছে। আমরা ভয়ে কোথাও যেতে পারছিনা।ভুক্তভোগী জহুরুল ইসলাম আনন্দ বলেন, মাইকে ঘোষণা দেয়ার পর থেকে দোকানদাররা আমাদের কাছে কোন কিছু বিক্রি করছে না। ছোট বাচ্চারা দোকানে গেলেও তাদের কোন খাবার কিনতে দেয়া হচ্ছে না। এখনো বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়া হচ্ছে।থানায় অভিযোগকারী ইসমাইল মৌলবী বলেন, ‘ঘুষের’ টাকা না দেওয়ায় আমাদের ৭ পরিবারকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে সমাজচ্যুত করেছে। তারা মাইকে বলেছে, ৭ পরিবারের মানুষ মসজিদ, দোকান, স্কুল, বাজার, ও প্রকাশ্যে রাস্তা ঘাটে চলা ফেরা করতে দেখলে মানুষ ও ঘরবাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিবে।এঘটনায় অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের পাওয়া যায়নি।এ বিষয়ে জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত বলেন, অভিযোগ পেয়ে ওই এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। উভয় পক্ষ একই এলাকার। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।ভোরের আকাশ/আজাসা