ভুয়া মামলার আসামিরা প্রাথমিক তদন্তেই রেহাই পাবেন: আসিফ নজরুল
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, নিরপরাধ ব্যক্তিকে ভুয়া ও মামলা বাণিজ্য থেকে পরিত্রাণ দিতে সিআরপিসির বিদ্যমান ১৭৩ এ আইনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে সরকার।রোববার (২৯ জুন) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।আইন উপদেষ্টা বলেন, ভুয়া ও মিথ্যা মামলা করে অনেক ব্যক্তিকে সেই মামলায় আসামি করে মামলা বাণিজ্য করা হয়। সেটা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য আমরা বহুবার চিন্তা করেছি। বাংলাদেশে যারা বড় বড় আইনজীবী আছেন, আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কনসালটেনশন মিটিং করে আমার একটা সিআরপিসি চেঞ্জ এনেছি।আসিফ নজরুল বলেন, একটা হত্যা মামলা যখন হয় তার তদন্তের জন্য দুই বছর, তিন বছর লেগে যায়, এটার মধ্যে শত শত লোককে আসামি করা হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এক ধরনের মামলা বাণিজ্য থাকে। যারা আসামি হন তারা দুই-তিন বছর চিন্তার মধ্যে থাকেন তারা কখন গ্রেপ্তার হবেন। সেটা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য সিআরপিসিতে ১৭৩-এ নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে।তিনি বলেন, নতুন বিধানে বলা হয়েছে পুলিশ কমিশনার, এসপি বা পদমর্যাদার কোনো পুলিশ কর্মকর্তা উনার নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো মামলার বিষয়ে উনার যদি মনে হয় যে এটা করা যৌক্তিক। তাহলে তদন্তকারী যে কর্মকর্তা আছেন, তাকে তিনি বলতে পারেন, একটা প্রাথমিক রিপোর্ট দাও। সেই প্রাথমিক রিপোর্ট ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জমা দেওয়ার জন্য এসপি সাহেব বলবেন। ম্যাজিস্ট্রেট যদি মনে করেন এ মামলার মধ্যে ১০০ জন লোককে আসামি করা হয়েছে, ৯০ জনের ব্যাপারে কোনো অভিযোগ নেই। ৯০ জনের বিষয়ে কোনো সাক্ষী নাই। তাহলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে ওই মামলা থেকে যাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই, তাদেরকে মুক্ত করে দিতে পারবেন।আইন উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশে জাতিসংঘের একটি মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তিন বছরের জন্য এ কার্যালয় চালু থাকবে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় রাষ্ট্রীয় মানবাধিকার কমিশনের পাশাপাশি এ কার্যালয় একটি স্বাধীন ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমরা আশা করছি, আমাদের পুলিশ প্রশাসন ও আদালত প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করবে। যেসব মামলায় গ্রেপ্তার বা মামলা বাণিজ্য হচ্ছে, তাঁদের আদালত প্রিট্রায়াল স্টেজে মামলা থেকে মুক্তি দিতে পারবেন।’এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে অনেক নিরপরাধ মানুষ হয়রানি থেকে বেঁচে যাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন আইন উপদেষ্টা।তিনি বলেন, তখন মামলা-বাণিজ্য থেকে অনেকে রেহাই পাবেন। কিন্তু এর মানে এই নয় যে মামলার তদন্ত থেমে থাকবে। তদন্ত চলতে থাকবে। আবার পুলিশ যদি পরবর্তী সময়ে দেখে, আগে যাদের মামলা থেকে রেহাই দেওয়া হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে পরে প্রকৃত প্রমাণ পাওয়া গেছে, তখন তাদের নাম আবার মামলায় যুক্ত করতে পারবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ