ছবি: সংগৃহীত
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলায় একটি আবাসিক মাদরাসায় দুই ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) রাতে রাধানগর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ডুবার মোড় শেফালী বেগম মহিলা নুরানী হাফিজিয়া আবাসিক মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে।
মৃতরা হলো- একই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের লেবুডাঙ্গা গ্রামের মো. তরিকুলের মেয়ে মোসা. তানিয়া (১২) ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বেগপুর গ্রামের সবুর আলীর মেয়ে মোসা. জামিলা (১০)।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ, মাদরাসা ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার রাতে একত্রে খাবার পর মাদরাসার ছাত্রীরা ঘুমিয়ে পড়ে।
মাদরাসার একতলা পাকা ভবনের আবাসিক হলকক্ষে একত্রে ১৩ ছাত্রী ঘুমায়। রাত দেড়টার দিকে হঠাৎ তানিয়া ও জামিলা অসুস্থ বোধ করে ও বমি করতে থাকে। বিষয়টি টের পেয়ে মাদরাসায় অবস্থানরত একমাত্র শিক্ষিকা সাহিদা বেগম স্থানীয়দের ও অসুস্থ শিশুদের পরিবারে খবর পাঠান।
শনিবার (১৬ আগস্ট) ভোররাত ৩টার দিকে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আলিম উদ্দিন প্রথমে জামিলাকে মৃত ঘোষণা করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে তানিয়াও মারা যায়। তাকে ঠিকমতো চিকিৎসার সুযোগই পাওয়া যায়নি বলে জানান চিকিৎসক।
মেডিক্যাল অফিসার আলিম বলেন, তানিয়ার নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তার বাম পায়ের গোড়ালিতে ক্ষতচিহ্নও পাওয়া গেছে। অপরদিকে জামিলার দেহে বাহ্যিকভাবে তেমন কোনো চিহ্ন মেলেনি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সাপের কামড় বা কোনোরকম বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদেহের পরিবর্তনের লক্ষণও সেইরকম। যেহেতু মাদরাসার অন্য শিক্ষার্থীরা আক্রান্ত হয়নি, তাই ঘটনাটি খাদ্যে বিষক্রিয়াজনিত নাও হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন ডা. আলিম।
গোমস্তাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওয়াদুদ আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর বলেন, শিশু দুজনের মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত নয়। তবে সাপের কামড়ে তাদের মৃত্যু হতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।
সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান শিশুদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও পুলিশের সঙ্গে ঘর তল্লাশির পর বলেন, শিশুদের মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাচ্ছে না। তবে সাপের কামড় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট ইউপি ওয়ার্ড সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, ভবনটির চারদিকে ঝোপ-জঙ্গল রয়েছে। সাপের কামড়ে শিশুদের মৃত্যু হয়েছে বলে শোনা গেছে। ওই এলাকায় বিষাক্ত সাপের উপদ্রব রয়েছে।
মাদরাসার কেয়ারটেকার ওবাইদুল ইসলাম বলেন, বিষাক্ত সাপের কামড়ে শিশুদের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভোরের আকাশ/মো.আ.
সংশ্লিষ্ট
মাত্র ২২ বছর বয়স, জীবনের শুরুটা তখনই গতিময় হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একটি সড়ক দুর্ঘটনা পুরোপুরি পাল্টে দিয়েছে কুদরত উল্লাহর জীবন। এখন তিনি দুই পা ভাঙা অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন, বিছানার সঙ্গে আটকে আছেন গত এক বছর ধরে।ঘটনাটি নাজিরপুর উপজেলার দীঘিরজান এলাকায়,কুদরত উল্লাহ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হন। দুর্ঘটনায় তার দুই পায়ে মারাত্মক আঘাত লেগে পা দুটি চার টি ভাঙ্গা দিয়েছে। শুরুতে তাকে খুলনার গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার আশায় নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে। কিন্তু দীর্ঘ এক বছর পার হলেও এখনো সুস্থ হওয়ার কোনো নিশ্চয়তা মেলেনি।চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সম্পূর্ণভাবে হাঁটতে ফিরতে পারার জন্য কুদরত উল্লাহর উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন যার ব্যয় কয়েক লক্ষ টাকা। কিন্তু সেই টাকা জোগাড় করা তো দূরের কথা, তিন বেলার খাবার জোগাড় করতেই হিমশিম খাচ্ছেন তার পরিবার।কুদরত উল্লাহ উপজেলার দেউলবাড়ী দোবড়া ইউনিয়নের দেউলবাড়ী গ্রামের আঃ হক গাজীর ছেলে।কুদরত উল্লাহর বাবা, আব্দুল হক গাজী, একজন দরিদ্র কৃষক। চোখে পানি এনে, গলা কাঁপিয়ে তিনি বলেন,আমি গরিব মানুষ। ছেলের কষ্ট আর সহ্য হয় না। যদি কেউ সাহায্য করতো, ছেলেটা হয়তো আবার হাঁটতে পারতো।একজন পিতা তার সন্তানকে হুইলচেয়ারে আবদ্ধ হয়ে কষ্ট পেতে দেখছেন, অথচ তার পক্ষে কিছুই করার নেই এ যে এক নিঃশব্দ আর্তনাদ।সমাজের বিত্তবান ও হৃদয়বান ব্যক্তিদের প্রতি এই অসহায় বাবার একটাই আবেদন কোনো সহানুভূতির হাত যদি বাড়ানো যায়, তবে হয়তো কুদরত উল্লাহর জীবন আবার নতুন করে শুরু হতে পারে।কুদরত উল্লাহ এখনো জীবনের প্রতি আশাবাদী। বিছানায় শুয়ে, পায়ে ব্যান্ডেজ পেঁচানো অবস্থায়ও বলেন,আমি মরতে চাই না। আমি আবার হাঁটতে চাই। আমি বাবা-মার মুখে হাসি ফেরাতে চাই।এই বক্তব্য শুধু তার নয়, বরং হাজারো দরিদ্র তরুণের মুখ থেকে উঠে আসা এক প্রতিধ্বনি যারা শুধু কুদরত উল্লাহ এর মত সহানুভূতির অপেক্ষায়।সহযোগিতার জন্য যোগাযোগ: নম্বর/বিকাশ পার্সোনাল নম্বর (০১৯৫৪০১৩১৭২)ভোরের আকাশ/মো.আ.
পিরোজপুর জেলায় শুরু হয়েছে টাইফয়েড প্রতিরোধী টিকাদান কার্যক্রম। জেলার সব উপজেলায় একযোগে ৩ লাখ ২৯ হাজার শিশুকে টাইফয়েডের টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন।জেলার বিভিন্ন স্কুলভিত্তিক ক্যাম্পগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, উৎসবমুখর পরিবেশে জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে টিকাদান কার্যক্রম চলছে। শিশুরা উৎসবমুখর পরিবেশে টিকাদান কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে। অনেক জায়গায় অভিভাবকরাও উপস্থিত থেকে শিশুদের উৎসাহ দিচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, অভিভাবক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সহযোগিতায় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও ভবিষ্যৎ ঝুঁকি কমাতে এই টিকাদান কর্মসূচিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। টাইফয়েডের প্রকোপ রোধে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।১২ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই মাসব্যাপী কার্যক্রমের আওতায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী এবং ৯ মাস বয়স থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সব শিশুকে একটি করে ডোজ দেওয়া হচ্ছে। পিরোজপুরে ১২ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্কুল পর্যায়ে টিকা দেওয়া হবে। আগামী ১ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত টিকা দেওয়া হবে কমিউনিটি পর্যায়ে। ১২ থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত ৪৭ হাজার ৮২ জনকে ঠিকা দেওয়া হয়েছে।এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মতিউর রহমান বলেন, শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য টাইফয়েডের টিকা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। ১২ অক্টোবর থেকে টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে শিশুদেরও বেশ সাড়া পাওয়া গেছে।জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের আশা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই লক্ষ্যমাত্রার সব শিশুদের মধ্যে টিকা প্রদান সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। জনসচেতনতা ও সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় দিনাজপুরে শুরু হয়েছে আগাম আলু চাষ। কৃষকেরা হালচাষ, বীজ বপন ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, জেলায় প্রায় ১১ হাজার হেক্টর জমিতে এবার আগাম জাতের আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধারণা করা হচ্ছে।তবে চাষের শুরুতেই সার সিন্ডিকেটের খপ্পরে পড়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। আলু বীজের দাম অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ায় কৃষকের সাময়িক সুবিধা হলেও, সার ও কীটনাশক সরকার-নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।জানা যায়, কৃষকেরা এবার বিনা-৭, সানসাইন ও স্টারিজের মতো আগাম জাতের আলুর বীজ বপন করছেন। বিগত বছরগুলোতে যে আলুবীজ জাতভেদে ৫৭ টাকা থেকে ৬৬ টাকা পর্যন্ত সরকার মূল্য নির্ধারণ করলেও কৃষককে কিনতে হতো ৮০ টাকা থেকে ১১০ টাকা কেজিতে, সেই বীজ এবার বাজারে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৫ থেকে ১৬ টাকা কেজি দরে।চাষিরা জানিয়েছেন, সামনে এই দাম আরও কমতে পারে। বীজের এই অবিশ্বাস্য কম দাম আলু চাষের খরচ কিছুটা কমালেও, সারের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ উল্টো।কৃষকদের অভিযোগ, ডিলাররা সরকার-নির্ধারিত মূল্যের তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমতো দামে সার বিক্রি করছেন। সারের মূল্যে অতিরিক্ত মুনাফার স্পষ্ট চিত্র তুলে ধরেছেন কৃষকরা: টিএসপি: সরকারি মূল্য ১২৫০ টাকা, বিক্রি হচ্ছে ১৩৫০ টাকায়। ডিএপি: সরকারি মূল্য ৯৫০ টাকা, বিক্রি হচ্ছে ১০৫০ টাকায়। এমওপি: সরকারি মূল্য ৯০০ টাকা, বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকায়। ইউরিয়া: সরকারি মূল্য ১২৫০ টাকা, বিক্রি হচ্ছে ১৩৫০ টাকায়। এ ছাড়াও, বিদেশি সার যেমন তিউনেশিয়ার টিএসপি ২০০০ টাকা, দেশি টিএসপি ২৪০০ টাকা; মরক্কোর ডিএপি ১৭০০-১৮০০ টাকা, দেশি ডিএপি ২০০০ টাকা; কানাডার এমওপি ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।আরও মারাত্মক অভিযোগ হলো, কৃষকেরা সরকারি মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সার কিনলেও ডিলাররা কোনো ভাউচার দিচ্ছেন না। সদর উপজেলার ঘুঘুডাঙ্গা গ্রামের কৃষক জুয়েল ইসলাম ক্ষোভের সঙ্গে জানান, ডিলাররা সরকারি মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দামে সার বিক্রি করছেন। আবার রশিদ চাইলে সার নেই বলে ফেরত দেন। তাই বাধ্য হয়ে রশিদ ছাড়াই বেশি দামে সার কিনছি। এর ফলে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে সার কিনেও কৃষকদের কাছে কোনো আইনি প্রমাণ থাকছে না।তবে আশার কথা, মজুরের দাম গত বছরের মতোই রয়েছে। কৃষকেরা আশা করছেন, ৫০-৫৫ দিনের মধ্যে তাদের ফলন ঘরে উঠবে এবং একরপ্রতি ১৪০-১৫০ মণ আলু উৎপাদন হতে পারে। অগ্রহায়ণ মাসের মূল মৌসুমের আগেই আশ্বিন মাসে আগাম চাষের মূল কারণ প্রথম দিকের ফসলের ভালো দাম পাওয়া।এ ব্যাপারে ডিলারদের কেউ প্রকাশ্যে কথা বলতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএডিসি বীজ ও সার ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক এক নেতা স্বীকার করেন, আলু বীজের দাম এবার বাজারে অনেক কম। তবে একটি সিন্ডিকেট আছে, যে কারণে সার বেশি দামে বিক্রি হয়। ইচ্ছে করলেও কেউ একা কিছু করতে পারে না।এদিকে, সার বরাদ্দ ও বেশি দামে বিক্রির বিষয়ে যুগ্ম পরিচালক (সার) মো. জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আফজাল হোসেন জানিয়েছেন, যদি বেশি দামে সার বিক্রি হয়ে থাকে, তাহলে খবর নিয়ে তদন্ত করে ডিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মাঠে আমাদের তদারকি টিম কাজ করছে।কৃষকদের প্রশ্ন, সরকার নির্ধারিত মূল্যে সার কেনা গেলে যেখানে আলু উৎপাদনের খরচ আরও কমত, সেখানে সার সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে কেন তারা লোকসানের ঝুঁকিতে পড়বেন? সরকারের উচিত দ্রুত এই সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে কৃষকের স্বার্থ রক্ষা করা।ভোরের আকাশ/মো.আ.
বাগেরহাটে ডেঙ্গু পরিস্থিতি দিন দিন জটিল আকার ধারণ করছে। জেলার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চাপ আগের তুলনায় দ্বিগুণ বেড়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১৩ জন ডেঙ্গু রোগী।হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের সঙ্গে একই ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীদের রাখায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে অন্যান্য রোগী ও তাদের স্বজনদের মাঝে। ডেঙ্গু আক্রান্তরা মশারি ব্যবহার না করায় সংক্রমণের আশঙ্কা আরও বাড়ছে বলে জানিয়েছেন তারা।এদিকে বাগেরহাট পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় ড্রেন, খোলা জায়গা ও বর্জ্য ফেলার স্থানে জমে থাকা পানিতে মশার প্রজনন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে ডেঙ্গুর ঝুঁকি বাড়ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।মো. ইউনুস বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের আলাদা না রেখে আমাদের সঙ্গে একই ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। তারা মশারি ব্যবহার করছেন না। এর ফলে আমরা সবাই আতঙ্কে রয়েছি। আমাদের স্বাভাবিকভাবে চিকিৎসা নেওয়া এবং নিরাপদে থাকা পর্যন্ত উদ্বিগ্ন থাকতে হচ্ছে। আশা করছি কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে যেন আমাদের এই ভয় ও ঝুঁকি কমে।মো. আল আমিন, বর্তমানে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি বলেন, আমি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। শুরুতে অবস্থা খুব খারাপ ছিল, শরীর ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়েছিল। তবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে নিয়মিত চিকিৎসা ও সেবার কারণে এখন অনেকটা সুস্থ বোধ করছি। ডাক্তার ও নার্সরা খুব মনোযোগ দিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন। আগের তুলনায় অনেক ভালো আছি, আশা করি শিগগিরই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারব।পৌরসভার বাসিন্দা মো. জাহিদ হাসান পলাশ অভিযোগ করে বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষ নিয়মিত মশা নিধন ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না নেওয়ায় পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা পানি ও অপরিকল্পিত বর্জ্য মশার প্রজনন বাড়াচ্ছে, যার ফলে ডেঙ্গু সংক্রমণের ঝুঁকি ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে। আমরা দাবি করছি, জরুরি ভিত্তিতে মশা নিধন কার্যক্রম জোরদার করা হোক এবং হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীদের সাধারণ রোগীদের থেকে আলাদা রাখা হোক, যাতে সাধারণ মানুষ নিরাপদে চিকিৎসা নিতে পারে।২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার সমদ্দার বলেন, বর্তমানে হাসপাতালে ১৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। গত দুই-তিন দিনের মধ্যে রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। আমরা পরিস্থিতি মনিটরিং করছি এবং সতর্কতার সঙ্গে রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। হাসপাতালের মেডিকেল টিম সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত রয়েছে যেন রোগীরা সময়মতো সেবা পেতে পারেন এবং সুস্থ হয়ে ফিরে যেতে পারেন।চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন, ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকতে হবে। মশার প্রজননস্থল ধ্বংস ও বাসাবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার মাধ্যমে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব।ভোরের আকাশ/তা.কা