বিশ্বম্ভরপুরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে হামলা
সুনামগঞ্জের বিশম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মফিজুর রহমানের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে ও অপসারণের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়াসহ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
রোববার (৪ মে) সকালে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা চত্বর ও কারেন্টের বাজারে বিশ্বম্ভরপুর এলাকাবাসীর ব্যানারে পৃথক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এসময় মানববন্ধন আয়োজকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মফিজুর রহমান বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে সীমান্তের চোরাচালানসহ হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাট করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। পটপরিবর্তনের পরে একই ধরণের কাজ করে যাচ্ছেন। তার ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে বিপুল অর্থ রয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে অযৌক্তিক প্রকল্প গ্রহণসহ স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ রয়েছে।
বিক্ষুব্ধ জনতা বলেন, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মফিজুর রমানের অপসারণ দাবিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন চলাকালে একদল লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মানববন্ধন আয়োজকদের ওপর হামলা চালায়। এতে অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, মো. শফিকুল ইসলাম জনি, নুরুল আলম, আব্দুর রবসহ অনেকে।
ইউএনও মো. মফিজুর রহমান তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সময় আমি জেলা সদরে ছিলাম। শুনেছি আমার বিরুদ্ধে কিছু মানুষ মানববন্ধন করেছেন। আবার কিছু লোক তাদের উপর হামলা করেছে।
এদিকে, মানববন্ধনে হামলার সাথে জড়িতদের বিচারের পাশাপাশি আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অপসারণের দাবি জানিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। দ্রুততম সময়ের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অপসারণ করতে জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তাঁরা।
ভোরের আকাশ/আমর
সংশ্লিষ্ট
তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও তিস্তা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে কুড়িগ্রামের তিস্তা তীরে মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’-এর উদ্যোগে রাজারহাট উপজেলার বুড়ীরহাট ও উলিপুর উপজেলার থেতরাই এলাকায় এ কর্মসূচি পালিত হয়।মশাল মিছিলে বিপুল সংখ্যক স্থানীয় মানুষ অংশ নেন। কর্মসূচিতে বক্তৃতা দেন তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের কুড়িগ্রাম জেলা সমন্বয়ক মোস্তাফাজুর রহমান, যুগ্ম-সমন্বয়ক সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ, সদস্য অধ্যাপক হাসিবুর রহমান হাসিব ও আনিসুর রহমানসহ অন্য নেতৃবৃন্দ।বক্তারা বলেন, ভারত ২০১৪ সালে গজলডোবা বাঁধের সব জলকপাট বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশ অংশে তিস্তা নদীর প্রায় ১১৫ কিলোমিটার এলাকায় পানি শূন্য হয়ে পড়ে। এর ফলে তিস্তা পাড়ের লাখো মানুষ জীবিকা হারিয়ে মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। তারা অবিলম্বে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করা ও তিস্তা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানান।তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ডাকে রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলা—কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী ও গাইবান্ধায় মোট ১২টি স্থানে একই দাবিতে অভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়।এর আগে চলতি বছরের ১৬ ও ১৭ ফেব্রুয়ারিতে একই দাবিতে রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলায় তিস্তা তীরে ১২ স্পটে দুই দিনের কর্মসূচি পালিত হয়েছিল, যেখানে ব্যাপক জনসমাগম ঘটে।ভোরের আকাশ//হ.র
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে একদিনব্যাপী “ওয়ান্টেড ফুটবল টুর্নামেন্ট”। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাজারামপুর হাই স্কুল মাঠে রাজারামপুর ফুটবল একাডেমির আয়োজনে ৮টি দলের অংশগ্রহণে এই টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়।সকাল ১০টায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও দিনাজপুর-৫ আসনের এমপি প্রার্থী নিউরোসার্জন ডা. মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফুলবাড়ী উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী মো. ইমরান চৌধুরী নিশাদ।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন থাউজেন্ড ডেইজ হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ন্যাশনাল ডিরেক্টর অফ ডেভেলপমেন্ট মোহাম্মদ রনি চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইসাহাক আলী, ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ এ কে এম খন্দকার মহিবুল ইসলাম, এনসিপি দলের সদস্যবৃন্দসহ স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।দিনব্যাপী টানটান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি ও পুরস্কার প্রদান করেন প্রধান অতিথি ডা. আহাদ। এছাড়া ফুটবলভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ১০ জন বিজয়ীকে ৩০০ টাকা করে নগদ পুরস্কার এবং মহিলা দর্শকদের মধ্যে ৩টি শাড়ি বিতরণ করা হয়।খেলা শেষে ডা. আহাদ বলেন, “খেলাধুলা তরুণ সমাজকে মাদক ও অপরাধ থেকে দূরে রাখে। এমন উদ্যোগ তরুণদের মাঝে শৃঙ্খলা ও দলীয় চেতনা জাগিয়ে তোলে।”দিনভর মাঠজুড়ে খেলোয়াড়, দর্শক ও স্থানীয়দের প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে রাজারামপুর হাই স্কুল মাঠ পরিণত হয়েছিল এক উৎসবমুখর মিলনমেলায়।ভোরের আকাশ//হ.র
চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল (সিইপিজেড) এলাকায় অবস্থিত আটতলা একটি কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে আগুন লাগার পর থেকে থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। সাত ঘণ্টার চেষ্টার পরও আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।ফায়ার সার্ভিস জানায়, আগুনে পুরো ভবনটি জ্বলছে এবং তাপমাত্রা এতটাই বেশি যে উদ্ধারকর্মীরা ভবনের ১০০ মিটার পর্যন্তও যেতে পারছেন না। ফলে তারা দূর থেকে পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তীব্র তাপে ভবনের ছাদ ধসে পড়ছে এবং আগুনের ফুলকি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। আশপাশের ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় ফায়ার সার্ভিস আশপাশের স্থাপনায় পানি ছিটিয়ে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে।এদিকে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিরাপত্তা ও উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন। আশপাশের এলাকা থেকে সাধারণ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।সিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক আবদুস সুবহান জানান, “আগুনের ঘটনায় আশপাশের কারখানাগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। আগুন যাতে অন্য কোনো ভবনে না ছড়ায়, সে বিষয়ে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, “ভেতরে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে চরম বেগ পেতে হচ্ছে। আগুনের তীব্রতায় কাছে যাওয়া যাচ্ছে না, তাই দূর থেকে পানি ছিটিয়ে আগুন নেভানোর কাজ চলছে।”এ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। সিইপিজেড কর্তৃপক্ষ ও কারখানা মালিকপক্ষ জানিয়েছে, ভেতরে কোনো শ্রমিক আটকে নেই—সবাইকে সময়মতো নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।কারখানাটির গুদাম অংশ, যেখানে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, সেটি ছিল ভবনের সপ্তম তলায়। তবে আগুনের উৎস কীভাবে তৈরি হলো, তা এখনো জানা যায়নি।ভোরের আকাশ // হ.র
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত ২০২৫ সালের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় কুড়িগ্রাম জেলায় ৯টি কলেজের কেউই পাস করতে পারেনি। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে প্রকাশিত ফলাফলে এমন চিত্র উঠে এসেছে।এবার দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে মোট পাসের হার ৫৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ হলেও কুড়িগ্রামের ৯টি কলেজ শতভাগ ফেল করেছে। গত বছর (২০২৪) এ জেলায় শতভাগ ফেল করা কলেজের সংখ্যা ছিল ২টি।শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবারের পরীক্ষায় দিনাজপুর বোর্ডের ৬৬৬টি কলেজ থেকে শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। এর মধ্যে ৪৩টি কলেজ থেকে কেউ পাস করতে পারেনি। শূণ্য পাস করা এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কুড়িগ্রামের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি—৯টি।কুড়িগ্রামের শতভাগ ফেল করা কলেজগুলো হলো—১. সিংগার ডাবড়ী হাট বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ২. চর শৌলমারী আদর্শ মহিলা কলেজ৩. বাগুয়া অনন্তপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ৪. দাশিয়ার ছড়া মহাবিদ্যালয় (পূর্ব নাম: রাশেদ খান মেনন মহাবিদ্যালয়)৫. টাপুরচর স্কুল অ্যান্ড কলেজ৬. নাগেশ্বরী মহিলা ডিগ্রি কলেজ (পূর্ব নাম: সোশ্যাল কল্যাণ মহিলা কলেজ,নাগেশ্বরী, কুড়িগ্রাম)৭. চিলাখানা মডেল কলেজ৮. কুটি পয়ড়াডাঙ্গা স্কুল এন্ড কলেজ৯. ধলডাঙ্গা বি.এল. উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ।ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, কুড়িগ্রামের পাশের হার গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। শিক্ষা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে কুড়িগ্রামের দুইটি কলেজ শতভাগ ফেল করেছিল—রৌমারীর শৈলমারী এম এল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং নাগেশ্বরীর গোপালপুর এম আর হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ।স্থানীয় শিক্ষাবিদদের মতে, বছরের পর বছর ধরে শিক্ষক সংকট,পাঠদানে অনিয়ম এবং শিক্ষার্থীদের ক্লাসে অনুপস্থিতি এই ফলাফলের জন্য দায়ী। দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মীর সাজ্জাদ আলী জানান, আমরা ইতোমধ্যে ফলাফল বিশ্লেষণ শুরু করেছি। যেসব কলেজের ফলাফল শূন্য, সেগুলোর বিষয়ে বিশেষ প্রতিবেদন তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এদিকে, শিক্ষার মানোন্নয়নে কুড়িগ্রামের অভিভাবক ও সচেতন মহল সরকারি উদ্যোগ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।ভোরের আকাশ/জাআ