× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

আমে ঠকছেন চাষিরা

বাঁধন শাহ

প্রকাশ : ১৭ মে ২০২৫ ০৭:১৫ এএম

আমে ঠকছেন চাষিরা

আমে ঠকছেন চাষিরা

গ্রীষ্মের অন্যতম আকর্ষণ আম বাজারে এসেছে। রাজশাহীতে গত বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে আম নামানো। ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ অনুযায়ী প্রথম দিন গুটি জাতের আম বাজারে আনার কথা ছিল। কিন্তু আমের বাজার প্রথম দিনই দখলে নিয়েছে গোপালভোগ। গাছে আম পেকে যাওয়ায় চাষিরা বাজারে নিয়ে এসেছেন বলে জানা গেছে। তবে এবারও চাষিরা আড়ৎদারদের প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। চাষিদের কাছ থেকে তারা ৪৮ কেজিতে এক মণ হিসেবে আম কিনছেন। কোথাও কোথাও ৫২ কেজিতে মণ ধরা হচ্ছে। অথচ আড়ৎদাররা বিক্রি করছেন ৪০ কেজিতে মণ। প্রথম দিনেই বানেশ্বর আমবাজারের দখল ছিল গোপালভোগ আমের। অথচ ঘোষিত ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ২২ মে থেকে গোপালভোগ আম বাজারে আসার কথা।

এ ব্যাপারে কথা হয় ‘দেশজপণ্য’ নামের অনলাইন পোর্টালের মালিক ব্যবসায়ী মনিরুল বেলালের সঙ্গে। তিনি বলেন, বড় গাছগুলোতে আগেই আম পেকে যায়। গত বুধবার তিনি গোদাগাড়ীর কাঁকনহাটের একটি বড় গাছ থেকে আম ভেঙেছেন। সব আম পেকে গেছে।

তিনি বলেন, ‘ঠান্ডা ঘরে বসে গরমের আমের ক্যালেন্ডার করলে এ রকমই হবে। ২২ মে গোপালভোগ আম নামানোর দিন ধার্য করা হয়েছে। অথচ ওই সময় আসতে আসতে গোপালভোগ আম শেষ হয়ে যাবে।’

সরকারি নির্দেশনা মানছেন না ব্যবসায়ীরা: জানা গেছে, ১০ মে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় একটি নির্দেশনা জারি করে। এতে বলা হয়েছে, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁ জেলায় কেজি দরে আম কেনাবেচা করতে হবে। সাধারণত আমচাষিরা তাদের উৎপাদিত আম মোকামে গিয়ে আড়ৎদার বা কোনো ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন। 

কিন্তু ব্যবসায়ীরা ৪০ কেজিতে মণ হিসেবে আম না কিনে অঞ্চলভেদে ৪৫ থেকে ৫২ কেজি পর্যন্ত প্রতি মণ ধরেন। এই ব্যবসায়ীরাই আবার বিক্রির সময় প্রতি মণ ৪০ কেজি দরে বিক্রি করেন। এতে আমচাষিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। রাজশাহীর বড় আমের সবচেয়ে বাজার বসে পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে। এই বাজারে গিয়ে দেখা যায়, কোনো ব্যবসায়ীই কেজি দরে আম কেনাবেচা করছেন না। তারা ৪৮ কেজিতে মণ হিসাব করে আম কিনছেন।

ব্যবসায়ী মানিক লাল বলেন, আম পাকার পর মণে তিন কেজি ওজন কমে যায়। আর পচা-ফাটা বাদ যাবে আরও চার কেজি আর এক কেজি আম আড়ৎদার নেবে। তাতে ঘাটতি হয়, সে জন্যই তারা ৪৮ কেজি মণ হিসাবেই আম কিনছেন।

ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বললেন, ‘বানেশ্বর বাজারের আড়ৎদার বা বণিক সমিতির এটা নিয়ম। আমরা কিনছি ওইভাবে। দিচ্ছিও ওইভাবেই।’

আমি চাষি সাইফুল ইসলাম বলেন, আড়ৎদাররা দেখে-শুনেই দাম ধরেন। এরপর ফাটা-পচার অজুহাতে প্রতিমণে বেশি নেন ৮ কেজি। চাষিরা পচা-ফাটা আম বাজারে আনেন না। তারা অতি যত্নের সাথে আম পাড়েন। তারপর বাছাই করেই সেগুলো বাজারে আনেন। এরপরও মণপ্রতি ৮ কেজি বাড়তি দিতে হচ্ছে। এক কেজি আমের দাম ৭০ টাকা ধরলে প্রতি মণে বেশি দিতে হচ্ছে ৫৬০ টাকার আম। এ যেন ব্যবসার নামে গলাকাটা। তিনি প্রশাসনকে বাজারে অভিযান চালানোর অনুরোধ করেন।

জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কেজিতে ৮-১০ কেজি বেশি নেওয়া একটা নিয়মে পরিণত হয়েছে। এই অনিয়মকে তারা নিয়ম মনে করছেন। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই নিয়ম ভাঙতে হবে। প্রশাসন কঠোর অবস্থানে আছে। আম কেজি হিসেবে কিনতে হবে এবং কেজি হিসেবেই বিক্রি করতে হবে। অন্যায় সহ্য করা হবে না।

অভিযান চালানোর ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, এই অন্যায় বন্ধ করতে চাষিদের সহযোগিতার প্রয়োজন। তাদের অভিযোগ করতে হবে। তারা অভিযোগ করলে কারা বেশি নিচ্ছেন, তা জানা সহজ হবে।

এ বিষয়ে এক চাষি বলেন, সব আড়ৎদার বেশি নিচ্ছেন। এটা সমিতির সিদ্ধান্ত। এটা তো গোপন কিছু না। সুতরাং প্রশাসনের সদিচ্ছা প্রয়োজন। তারা যেকোনও সময় এলেই প্রমাণ পাবেন। শুধু নির্দেশনা জারি করলেই অনিয়ম বন্ধ হবে না। কার্যকর পদক্ষেপ দরকার।   

কুরিয়ারের ব্যয় বেড়ে দ্বিগুণ: যতগুলো কুরিয়ারের পার্সেল সার্ভিস আছে, সব কটিই বানেশ্বর বাজারে। তাদের কাছে আম যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দর দ্বিগুণ হয়ে যায়। এবার প্রতি কেজি আম পাঠানোর খরচ পড়ছে ১২ থেকে ২০ টাকা। ঢাকায় ১২ টাকা, ঢাকার বাইরে দূরত্ব অনুযায়ী ২০ টাকা পর্যন্ত। কুরিয়ার ভেদে এই খরচ কমবেশি রয়েছে। একজন ব্যবসায়ী জানান, তিনি সারা বছর কুরিয়ারের মাধ্যমে তেল পাঠিয়ে থাকেন। ঢাকায় ছয় টাকা কেজি হিসাবে খরচ পড়ে। কিন্তু তাদের দাঁড়িপাল্লায় আম ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ৬ টাকা হয়ে যায় ১২ টাকা।

এ ব্যাপারে বাজারের জননী কুরিয়ার সার্ভিসের বানেশ্বর শাখার ব্যবস্থাপক ইয়াসিন আরাফাত বলেন, আম কাঁচামাল। এক দিন রেখে দেওয়া যায় না। গাড়ি না ভরলেও পাঠাতে হয়। তখন খরচ বেশি পড়ে যায়। আবার অনেক সময় আম নষ্ট হয়ে গেলে জরিমানাও দেওয়া লাগে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে এক ব্যবসায়ী বলেন, সবাই একটা সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। আর দুপয়সা কামিয়ে নেওয়ার সেই সময় ও সুযোগ হলো আম। সারা বছর কুরিয়ারে ঢাকায় জিনিসপত্র পাঠাই ছয় টাকা কেজি হিসেবে। আম শুনলেই খরচ লাগে ১২টাকা। এ থেকে পরিত্রাণের কোনও সুযোগ নেই।

ভোরের আকাশ/এসএইচ

  • শেয়ার করুন-
 জীবন-মরণের লড়াইয়ে কুদরত উল্লাহ, সহায়তা চান বিত্তবানদের কাছে

জীবন-মরণের লড়াইয়ে কুদরত উল্লাহ, সহায়তা চান বিত্তবানদের কাছে

 এইচএসসির ফল সবাইকে বিস্মিত করেছে : শিক্ষা উপদেষ্টা

এইচএসসির ফল সবাইকে বিস্মিত করেছে : শিক্ষা উপদেষ্টা

 ‎পিরোজপুরে চলছে টাইফয়েডের টিকা কার্যক্রম

‎পিরোজপুরে চলছে টাইফয়েডের টিকা কার্যক্রম

 আগাম আলু চাষে সার ও কীটনাশকের দাম বৃদ্ধির অভিযোগ কৃষকের

আগাম আলু চাষে সার ও কীটনাশকের দাম বৃদ্ধির অভিযোগ কৃষকের

 হাসপাতালে অব্যবস্থাপনায় আতঙ্কে রোগীরা

হাসপাতালে অব্যবস্থাপনায় আতঙ্কে রোগীরা

 বিশ্ব খাদ্য দিবস আজ

বিশ্ব খাদ্য দিবস আজ

 বরিশালে পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত

বরিশালে পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত

 কালীগঞ্জে ইয়াবাসহ দুই যুবক আটক

কালীগঞ্জে ইয়াবাসহ দুই যুবক আটক

 মধ্যনগরে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেফতার

মধ্যনগরে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেফতার

 একটু শুকানোর সময় দেন, কালি উঠবে না: উপাচার্য

একটু শুকানোর সময় দেন, কালি উঠবে না: উপাচার্য

 নতুন বিতর্কে ট্রাম্প, এবার বিশ্বকাপের ম্যাচ সরানোর হুমকি

নতুন বিতর্কে ট্রাম্প, এবার বিশ্বকাপের ম্যাচ সরানোর হুমকি

 আইনি ভিত্তি নিশ্চিত না করলে সনদে স্বাক্ষর করবে না এনসিপি: নাহিদ ইসলাম

আইনি ভিত্তি নিশ্চিত না করলে সনদে স্বাক্ষর করবে না এনসিপি: নাহিদ ইসলাম

 এইচএসসিতে ফেল ৫ লাখেরও বেশি পরীক্ষার্থী

এইচএসসিতে ফেল ৫ লাখেরও বেশি পরীক্ষার্থী

 এইচএসসি ফল: কোন বোর্ডে কতজন পেলেন জিপিএ-৫?

এইচএসসি ফল: কোন বোর্ডে কতজন পেলেন জিপিএ-৫?

 এলএসটিডি'র উদ্যোগে ব্রি ধান (১০৩) এর ফসল কর্তন ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত

এলএসটিডি'র উদ্যোগে ব্রি ধান (১০৩) এর ফসল কর্তন ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত

 পানিতে ডুবে ছেলের মৃত্যু, ফল জিপিএ-৫ দেখে কাঁদলেন বাবা

পানিতে ডুবে ছেলের মৃত্যু, ফল জিপিএ-৫ দেখে কাঁদলেন বাবা

 কুমিল্লা বোর্ডে পাসের হার ৪৮.৮৬ শতাংশ

কুমিল্লা বোর্ডে পাসের হার ৪৮.৮৬ শতাংশ

সংশ্লিষ্ট

গদখালীর ফুলের রাজ্য যেন এক স্বর্গ উদ্যান

গদখালীর ফুলের রাজ্য যেন এক স্বর্গ উদ্যান

ইতিহাসের হারানো শহর: রহস্যে ঘেরা সভ্যতার নিঃশব্দ সাক্ষী

ইতিহাসের হারানো শহর: রহস্যে ঘেরা সভ্যতার নিঃশব্দ সাক্ষী

গবাদিপশুর রোগ অ্যানথ্রাক্স যখন মানবদেহে, করণীয় কী?

গবাদিপশুর রোগ অ্যানথ্রাক্স যখন মানবদেহে, করণীয় কী?

বরিশালের সাতলা গ্রাম: ফুটে থাকা শাপলার রঙিন সমারোহ

বরিশালের সাতলা গ্রাম: ফুটে থাকা শাপলার রঙিন সমারোহ