নদী-নালা ও পুকুরের ধারে সহজেই জন্ম নেওয়া একটি উদ্ভিদ ঢোলকলমি। নাম শুনলেই হয়তো অনেকেই হেসে উঠেন কিন্তু এই উদ্ভিদটি আমাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ঔষধি গুণে ভরপুর এই লতা সামান্য আর্দ্রতা থাকলেই খুব দ্রুত জন্মায়। এখন অনেকটা বিলুপ্তির পথে থাকা এই উদ্ভিদটির পুষ্টিগুণও কম নয়।পুষ্টিগুণ ও ঔষধি গুণাবলিঢোলকলমি যেকোনো ঋতুতে শুকায় না, বরং শীত, গ্রীষ্ম বা বর্ষা যেকোনো সময়ই তরতরিয়ে বেড়ে ওঠে। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য থাকে। শরীরে ক্ষত হলে এর পাতার পেস্ট লাগালে দ্রুত সেরে যায়। শরীরের ব্যথা কমাতে গরম করে এই পাতার মোড়ক বেঁধে দিলে আরাম দেয়। ফোলা কোথাও থাকলে পাতার পেস্ট লাগালে ফোলা উপশম হয়।দাঁতের ব্যথায় ঢোলকলমির ব্যবহারদাঁতে পোকা বা পায়োরিয়া থাকলে ঢোলকলমির পাতা দিয়ে ব্রাশ করলে আরাম মেলে। এছাড়া বিছে কামড়ালে পাতার রস কাটা জায়গায় লাগালে রক্তপাত বন্ধ হয় এবং বিষের প্রভাব ধীরে ধীরে কমে যায়। ঢোলকলমি যেমন ঔষধি গুণে ভরপুর, তেমনই এর বিষাক্ততার দিকটিও জানা জরুরি। তাই ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। ভোরের আকাশ/তা.কা
১ দিন আগে
গ্রিন টি কেবল তার স্বাদেই অনন্য নয়, বরং এর অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়।হৃদ্রোগ প্রতিরোধ থেকে ওজন নিয়ন্ত্রণ পর্যন্ত—গ্রিন টি হয়ে উঠেছে স্বাস্থ্যকর জীবনের নির্ভরযোগ্য অংশ। চলুন জেনে নিই এর ১০টি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত স্বাস্থ্য উপকারিতা।১. অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উৎস: গ্রিন টি পলিফেনল–সমৃদ্ধ, বিশেষ করে EGCG (Epigallocatechin Gallate)। এটি শরীরের কোষকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে, প্রদাহ কমায় এবং বার্ধক্য বিলম্বিত করে।২. হৃদ্রোগ প্রতিরোধে সহায়ক: গ্রিন টি-তে থাকা ক্যাটেচিন এলডিএল কোলেস্টেরল কমায় এবং রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি কমিয়ে হৃদ্রোগের আশঙ্কা হ্রাস করে।৩. ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: গ্রিন টি-তে থাকা ক্যাফেইন ও ক্যাটেচিন মেটাবলিজম বাড়িয়ে চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে। এটি অতিরিক্ত চর্বি ঝরাতে সহায়ক।৪. ক্যানসার প্রতিরোধে সম্ভাব্য উপকারী: গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রিন টি–তে থাকা EGCG কিছু নির্দিষ্ট ধরনের ক্যানসারের কোষ বৃদ্ধির হার কমাতে পারে। তবে মানুষের ক্ষেত্রে আরও গবেষণা প্রয়োজন।৫. মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়: গ্রিন টি-র ক্যাফেইন ও এল-থিয়ানিন মিলে মনোযোগ, স্মৃতি ও মানসিক স্বচ্ছতা বাড়ায়। এল-থিয়ানিন মানসিক চাপও কমায়।৬. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: গ্রিন টি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, যা টাইপ-২ ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায় সহায়ক।৭. ত্বকের জন্য ভালো: গ্রিন টি-তে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে দূষণ ও রোদ থেকে রক্ষা করে, বার্ধক্য প্রতিরোধ করে এবং ব্রণ কমাতে সাহায্য করে।৮. প্রদাহ রোধ করে: গ্রিন টি শরীরের দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। এটি আর্থ্রাইটিস বা হৃদ্রোগজনিত প্রদাহ হ্রাসে কার্যকর।৯. মুখ ও দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষা করে: গ্রিন টি–তে থাকা ক্যাটেচিন মুখের ব্যাকটেরিয়া দমন করে, দাঁতের ক্ষয় ও মুখের দুর্গন্ধ প্রতিরোধ করে।১০. মানসিক চাপ কমায়: গ্রিন টি-র এল-থিয়ানিন মস্তিষ্কে প্রশান্তি সৃষ্টি করে, চাপ কমায় এবং ঘুমে সহায়তা করে—ক্যাফেইনের উদ্দীপক প্রভাবকে ভারসাম্য দেয়।ভোরের আকাশ/তাকা
৪ দিন আগে
ইট–সিমেন্টের যান্ত্রিক শহরে শিশু-কিশোরদের জন্য ভিন্নধর্মী রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা দিচ্ছে বেজক্যাম্প। ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ও বেজক্যাম্প অ্যাডভেঞ্চারস লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে গড়ে ওঠা এই অ্যাডভেঞ্চার ক্যাম্পটি এখন পরিবারের ভ্রমণের নতুন গন্তব্য হয়ে উঠছে।বেজক্যাম্পে গিয়ে দেখা গেল, ছোট্ট মাহিরা হোসেন নির্ভীকভাবে জিপ লাইন চড়ছে, আর তার ভাই সারাফ কিছুটা ভীত হয়ে নেমে আসছে। প্রশিক্ষকের সহায়তায় তারা প্রস্তুত হচ্ছিল হেলমেট ও হারনেস পরে নতুন এক অভিজ্ঞতার জন্য। মাহিরার বাবা হেসে বললেন, “আমি তো ভেবেছিলাম মেয়ে ভয় পাবে, হলো তো ঠিক উল্টো!”শুধু অ্যাডভেঞ্চারই নয়, এখানে রয়েছে শিশু-কিশোরদের জন্য বিশেষ ‘লাইফ স্কিল ডেভেলপমেন্ট’ কর্মশালা। ট্রাফিক সিগন্যাল বোঝা, প্রাথমিক চিকিৎসা, গাছ লাগানো, রান্না, তাঁবু খাটানো, কাঠের কাজসহ নানা বাস্তব জীবনের শিক্ষা দেওয়া হয় হাতে-কলমে। দুই সপ্তাহ পরপর আয়োজিত এই কর্মশালায় অংশ নিতে হয় আগেভাগে নিবন্ধনের মাধ্যমে।ক্যাম্পের সিনিয়র অপারেশন ম্যানেজার ইসরাত জাহান জানান, "একদিনেই সব শেখানো সম্ভব না, তাই আমরা মৌলিক ও কার্যকর বিষয়গুলো বেছে নিই। শিশুদের আগ্রহ সৃষ্টি করাটাই আমাদের মূল লক্ষ্য।"ভিন্নধর্মী প্যাকেজ ও খরচবেজক্যাম্পে প্রবেশের পর প্রথমেই অংশগ্রহণকারীদের দেওয়া হয় নির্দেশনা, এরপর শুরু হয় মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম। প্যাকেজভেদে খরচ ৯৫০ থেকে ৫,৫০০ টাকা পর্যন্ত। রয়েছে সকাল, দুপুর, বিকেল ও সন্ধ্যার প্যাকেজ। শিক্ষার্থীরা আইডি কার্ড দেখিয়ে উপভোগ করতে পারেন ‘ফ্রেন্ডস হ্যাংআউট’ প্যাকেজ।‘ফ্যামিলি এসকেপ’ প্যাকেজটি শুধু শিশু ও তার অভিভাবকদের জন্য। এছাড়া বড় দল হলে আয়োজন সাজিয়ে নেওয়ারও সুযোগ রয়েছে। জন্মদিন, করপোরেট প্রোগ্রাম বা বিয়ের অনুষ্ঠানেও ভাড়া নেওয়া যায় ভেন্যুটি।নিরাপত্তা ও অন্যান্য সুবিধাপ্রত্যেক কার্যক্রমে সঙ্গে থাকেন প্রশিক্ষক, যিনি দেন প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা। আছে ক্লাইম্বিং ওয়াল, ট্রি টপ অ্যাকটিভিটি, আর্চারি, ফুটবল খেলার সুযোগও। প্রতিটি অভিজ্ঞতা শারীরিক ও মানসিক দক্ষতার পরীক্ষা নেয়। তাই আরামদায়ক পোশাক পরার পরামর্শ দেন আয়োজকরা।সহজ যাতায়াতবেজক্যাম্পে যেতে সবচেয়ে সুবিধাজনক মাধ্যম মেট্রোরেল। আগারগাঁও মেট্রোরেল স্টেশন থেকে মাত্র এক মিনিটের হাঁটার পথ। আইডিবি ভবনের উল্টো পাশে, বিমানবাহিনী জাদুঘরের পাশেই এর অবস্থান।বেজক্যাম্প সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে যোগাযোগ করা যেতে পারে—মোবাইল: ০১৯৪২৭৭৭৯৯৯ওয়েবসাইট: airforcebasecamp.comভোরের আকাশ//হ.র
৬ দিন আগে
গ্রামবাংলার পরিচিত ফল দেশি খেজুর। গ্রামের ছেলেমেয়েদের বেড়ে ওঠা যেসব গ্রামীণ ফল খেয়ে; তার মধ্যে খেজুর অন্যতম। সাধারণত খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করার পর গাছে ফুল ধরে। সবুজ রঙের ফল হয়। পরে হালকা হলুদাভ রং থেকে পরিপক্ব হওয়ার সময়ে গাঢ় কমলা রং ধারণ করে। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে এ ফল পাকা শুরু করে। তখন গাছের তলায় ঝরে পড়ে। লোকজন গাছের তলা থেকে প্রথমদিকে খেজুর সংগ্রহ করে। এছাড়া পাখির আনাগোনা শুরু হয়। পাখিতে প্রচুর পরিমাণে খেজুর খেয়ে থাকে।একটি খেজুর গাছে ৫-৭টি ছড়া বা তার বেশিও ছড়া হয়ে থাকে। কখনো কখনো এর কমও হতে পারে। কিছু খেজুর আষাঢ় মাসের দিকে পাকা শুরু করে। শ্রাবণ মাস পর্যন্তও এ খেজুর পাওয়া যায়। গাছের তলা থেকে সংগ্রহ করা ছাড়াও মানুষজন ছড়া কেটে কলা পাতায় পেঁচিয়ে পানিতে বা পুকুরে একদিন ডুবিয়ে রাখে। যাকে আঞ্চলিক ভাষায় ‘জাগ দেওয়া’ বলে।গাছ থেকে ছড়া কেটে ঘরে রেখে দিলেও ২-৩ দিনের মধ্যে পেকে যায়। পাকলে এ ফল অত্যন্ত মিষ্টি হয়। মেরুণ রং ধারণ করে। ফলের ওপরে পলিথিনের মতো পাতলা আবরণ এবং ভেতরে নরম বেলে বেলে শ্বাস হয়। ফলের বীজ বেশ লম্বা হয়। বরিশাল অঞ্চলে খেজুরের সাথে মুড়ি দিয়ে মোয়াও তৈরি করা হয় ঘরোয়াভাবে। যখন এ ফল কাঁচা সবুজ রঙের থাকে; তখন গ্রামের ছেলেমেয়েরা ফলের বীজ দিয়ে গুটি নামক খেলা খেলে মাটিতে ঘর কেটে। এছাড়া কাঁচা ফলও কেউ কেউ মুখে রেখে চিবায়। যার স্বাদ কষযুক্ত। বীজগুলো তখন নরম হয়। চিবালে কটকট করে।বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, খেজুরে ভিটামিন এ, সি, কে, আয়রন, বিটা-ক্যারোটিন, ক্যালসিয়ামসহ বিভিন্ন উপাদান থাকে। হৃদরোগের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং মানবদেহে রক্ত তৈরি করতে সাহায্য করে। এছাড়া খেজুর হজমবর্ধক। পাকস্থলি ও যকৃতের শক্তি বাড়াতে সহায়ক। শরীরের রোগ প্রতিরোধের জন্য খেজুর বেশ কার্যকর।এ গাছের মাতি বা মাথি অত্যন্ত সুস্বাদু। শহরাঞ্চলে এ গাছ দেখা যায় না। উপকূলীয় অঞ্চলে মাটি ক্ষয়রোধের জন্য এ গাছরোপণ করা হয়। তবে অধিকাংশ গাছরোপণ ছাড়াই হয় পাখির মাধ্যমে। দুঃখের বিষয়, এখন এ গাছ খুব একটা দেখা যায় না। গাছের রোপণ কমে গেছে। প্রকৃতিতে পাখি কমে যাওয়ার কারণেও বিলুপ্ত প্রায় খেজুর গাছ।দেশীয় খেজুর গাছ থেকে প্রচুর রস আহরণ করা হয়। পরে তা দিয়ে গুঁড় তৈরি হয়। মৌসুমে খেজুর তো আছেই। খেজুর, রস ও গুঁড়ের ঘাটতি হচ্ছে এ গাছ কমার কারণে। গ্রামের ছেলেমেয়েরা এ ফল সম্পর্কে এখন ধারণা রাখে না বললেই চলে। জাতীয় এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে খেজুর গাছরোপণ বাড়ানো উচিত। তাতে আমরা ফিরে পাবো আমাদের দেশীয় ফল এবং গ্রামীণ স্মৃতি। সেইসাথে দেশের অর্থনীতিও চাঙা হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
২ সপ্তাহ আগে