ছবি : সংগৃহীত
ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে এবং তাদের বিমানকে তুরস্কের আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান। গাজার চলমান যুদ্ধের প্রতিবাদে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খবর আল জাজিরার।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) সংসদে গাজা বিষয়ক বিশেষ অধিবেশনে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, ইসরায়েল টানা দুই বছর ধরে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে এবং মানবিক মূল্যবোধ উপেক্ষা করছে। এ কারণেই তুরস্ক বাণিজ্য সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার পাশাপাশি আকাশ ও সমুদ্রপথেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
তুরস্ক গত বছরের মে মাসেই ইসরায়েলের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বাণিজ্য বন্ধ করে দেয় এবং গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও অবিলম্বে মানবিক সহায়তা প্রবেশের দাবি জানায়। ২০২৩ সালে দুই দেশের মধ্যে ৭ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়েছিল।
গাজা যুদ্ধ নিয়ে আঙ্কারা বরাবরই কঠোর অবস্থান নিয়েছে। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান একে গণহত্যা আখ্যা দিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে নাৎসি নেতা অ্যাডলফ হিটলারের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
ফিদান বলেন, আমরা ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করেছি। আমরা তুর্কি জাহাজগুলোকে ইসরায়েলি বন্দরে যেতে দিচ্ছি না। তাদের বিমানকেও আমাদের আকাশসীমায় প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছি না।
ভোরের আকাশ/মো.আ.
সংশ্লিষ্ট
ভারতের বেঙ্গালুরুতে প্রকাশ্যে গলাকেটে এক কলেজছাত্রীকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের নাম যামিনি প্রিয়া (২১)। তিনি স্থানীয় একটি কলেজের বি.ফার্মের ছাত্রী।শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) এনডিটিভির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ৭টার দিকে যামিনি পরীক্ষা দিতে কলেজে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হন। পরীক্ষা শেষে ফেরার পথে শ্রীরামপুরা রেললাইন-সংলগ্ন মন্ত্রীমল এলাকার কাছে তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এক যুবক পেছন থেকে এসে হঠাৎই যামিনির গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে আশপাশের লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে শ্রীরামপুরা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে এবং প্রাথমিক প্রমাণ সংগ্রহ করে।পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে। সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে খুঁজে বের করতে পুলিশের একাধিক টিম গঠন করা হয়েছে। আশপাশের ভবন এবং রেলওয়ে ট্র্যাক এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষাও চলছে। পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, হত্যার রহস্য উদঘাটনে আমরা ব্যক্তিগত শত্রুতা এবং সম্ভাব্য সম্পর্কের বিরোধসহ সকল দিক যাচাই করছি।এদিকে বেঙ্গালুরু শহরের মতো এত ব্যস্ততম এলাকায় এমন নৃশংস ঘটনায় নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। শ্রীরামপুরা এলাকায় এবং এর আশপাশে, বিশেষ করে বিচ্ছিন্ন রেললাইনের ধারে পুলিশকে টহল জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন বাসিন্দারা।ভোরের আকাশ/মো.আ.
নিজ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে শত্রুর ঘাঁটি তছনছ করে দেওয়া নতুন এক ইরানি ড্রোনের নাম আরশ-২। এটি হলো আরশ-১ এর একটি নতুন এবং আরও উন্নত সংস্করণ, যা ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ইরানি সেনাবাহিনীর মহড়ায় প্রথম প্রদর্শিত হয়। এই স্টিলথ ড্রোনটি ইরানের প্রতিরক্ষা শিল্প বিশেষজ্ঞরা ডিজাইন করেছিলেন এবং ব্যাপকভাবে তৈরি করা হয়েছে।মধ্যপ্রাচের এই অঞ্চলে সাম্প্রতিক ঘটনাবলী এবং উত্তেজনা বৃদ্ধির পর ‘শাহেদ ১৩৬’ এর পাশাপাশি একটি নতুন ড্রোনের নামকরণ করে ইরান। আর এটিই হলো আরশ-২।ইরানের প্রতিরক্ষা শিল্পের অন্যতম অস্ত্র উন্নত এই আত্মঘাতী ড্রোনটি তার অনন্য ক্ষমতার কারণে দ্রুত মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।ইরানি সংবাদমধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ড্রোনটির দীর্ঘ পাল্লা, উল্লেখযোগ্য লক্ষ্যবস্তু নির্ভুলতা এবং রাডার সিস্টেমকে বাইপাস করার ক্ষমতার কারণে আক্রমণাত্মক ড্রোনের ক্ষেত্রে এটি ইরানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসাবে পরিচিত। সামরিক কমান্ডাররা ঘোষণা করেছেন, ড্রোনটি সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলা এবং মূল বিষয়গুলোকে লক্ষ্য করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।গোপন এই আত্মঘাতী ড্রোনটি ইরানের প্রতিরক্ষা শিল্প বিশেষজ্ঞদের দ্বারা ডিজাইন এবং ব্যাপকভাবে উৎপাদিত হয়েছিল। ইরানি সেনাবাহিনীর স্থল বাহিনীর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কিওমারস হায়দারি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ঘোষণা করেন যে, আরশ-২ ইসরাইলের সঙ্গে যেকোনো সামরিক সংঘর্ষের ক্ষেত্রে উপকূলীয় শহর তেল আবিব এবং হাইফাকে লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়েছে।আরশ ২-এর ডেল্টা-আকৃতির ডানা রয়েছে যা উচ্চ গতি অর্জনের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এই নকশা ড্রোনটিকে আরও বেশি সহনশীলতা এবং দীর্ঘ দূরত্বের জন্য জ্বালানি সংরক্ষণ করতেও সহায়তা করে। ড্রোনটি ৪.৫ মিটার লম্বা এবং এর ডানার বিস্তার ৪ মিটার। শাহেদ ১৩৬ এর তুলনায়, আরাশ ২ দৃশ্যত কিয়ান-২ ড্রোনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।আরশ-২ ইউএভি ক্ষমতা এবং কর্মক্ষমতাআরশ-২ একটি দূরপাল্লার যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে পরিচিত যা ২০০০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। ড্রোনটি একটি পিস্টন ইঞ্জিন (যেমন MD550 বা MDSO-4-520 টেম্পেস্ট যার ৫০ হর্সপাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে) দ্বারা চালিত যা এটিকে ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে পৌঁছাতে এবং ৩,৬০০ মিটার পর্যন্ত উচ্চতায় উড়তে দেয়।আরশ-২ এর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে একটি হলো এর বহুমুখী ক্ষমতা। ইরানি কমান্ডাররা ড্রোনটিকে নির্ভুল আঘাত এবং শত্রুর বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের জন্য একটি বিশেষায়িত অস্ত্র হিসাবে বর্ণনা করেছেন। আক্রমণাত্মক কামিকাজে মিশনের পাশাপাশি আরশ-২ ইলেকট্রনিক যুদ্ধে ভূমিকা পালন করার জন্যও তৈরি করা হয়েছে। চূড়ান্ত আক্রমণের আগে ড্রোনটি লক্ষ্যবস্তু সম্পর্কে বেশ কয়েকবার তথ্য সংগ্রহ করতে পারে, যা এর নির্ভুলতা এবং প্রাণঘাতীতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।আরশ-২ ট্রাক-মাউন্টেড বক্স লঞ্চ সিস্টেম বা JATO (জেট অ্যাসিস্টেড টেকঅফ) লঞ্চারের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করা হয় যা বিভিন্ন ভূখণ্ডে দ্রুত এবং নমনীয় স্থাপনার সুযোগ করে দেয়।ইরানি সামরিক বাহিনীর মতে, ইরান ও ইসরাইলি শাসক গোষ্ঠীর মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধের সময়, গত ১৪ জুন সকালে বেশ কয়েকটি আরশ-শ্রেণির আত্মঘাতী ড্রোন ইসরাইলের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে এবং ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এ ঘটনাটি পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে দূরপাল্লার আক্রমণে এই ড্রোনের কার্যকারিতা প্রমাণ করে এবং দেখায় যে আরশ-২ বাস্তবে ইসরাইলি ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে এবং তার লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।আরশ-২ সম্পর্কে কৌশলগত গুরুত্ব এবং বিতর্কআরশ-২ এর উত্থান এবং পরিচালনা ড্রোন প্রযুক্তিতে ইরানের উল্লেখযোগ্য এবং দ্রুত অগ্রগতি প্রদর্শন করে এবং দূরপাল্লার ড্রোন প্রযুক্তির বিশ্বব্যাপী পথিকৃৎদের মধ্যে দেশের অবস্থানকে দৃঢ় করে। আরশ-২ এর ২০০০ কিলোমিটার পরিসরের অর্থ হলো এটি পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটি (যেমন- কাতার, বাহরাইন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত) এবং পারস্য উপসাগরীয় নৌবহর সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক এবং বিদেশী সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানতে পারে।এই ক্ষমতা মার্কিন বাহিনী এবং তার মিত্রদের জন্য নতুন হুমকি তৈরির পাশাপাশি আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা হিসাব নিকাশ পরিবর্তন করে দিতে সক্ষম হবে। এছাড়াও আরশ-২ এর মতো দেশীয় ড্রোন প্রযুক্তির অব্যাহত উন্নয়ন অসম এবং ব্যয়-কার্যকর যুদ্ধের মাধ্যমে প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত প্রতিযোগীদের বিরুদ্ধে কৌশলগত স্বাধীনতা এবং ক্ষমতার ভারসাম্য অর্জনের ইরানের প্রচেষ্টাকে তুলে ধরে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
প্রায় দুই বছরের ইসরায়েলি আগ্রাসনে বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকা পুনর্গঠনের জন্য ৬৭ বিলিয়ন ডলারের একটি তিন ধাপের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে ফিলিস্তিনি সরকার। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সময় লাগবে পাঁচ বছর।বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রামাল্লাহতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মুস্তাফা জানান, আরব ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতায় এই পুনর্গঠন পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। শিগগিরই এ নিয়ে একটি বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।সংবাদ সম্মেলনে কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি ও উন্নয়ন সহযোগীরাও উপস্থিত ছিলেন।মুস্তাফা বলেন, পরিকল্পনার প্রথম ধাপে ছয় মাসের মধ্যে জরুরি মানবিক সহায়তা ও অবকাঠামো পুনর্গঠনের কাজ সম্পন্ন করা হবে। এ পর্যায়ে ব্যয় হবে প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন ডলার।দ্বিতীয় ধাপের মেয়াদ তিন বছর, এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ বিলিয়ন ডলার। শেষ ধাপে গাজা পুনর্গঠনের দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।তিনি জানান, পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। যুদ্ধ শেষ হওয়ার এক মাস পর মিসরে বড় আকারের পুনর্গঠন সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে।ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ‘ইসরায়েলকে অবশ্যই গাজা থেকে প্রত্যাহার করতে হবে, সীমান্ত খুলে দিতে হবে এবং মানবিক সহায়তা ও পুনর্গঠনের সামগ্রী প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে।’গাজায় শাসনব্যবস্থা নিয়ে অবস্থানগাজা শাসনব্যবস্থা নিয়ে বাইরের কোনো শর্ত গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করে মোহাম্মদ মুস্তাফা বলেন, ‘গাজার প্রশাসন নিয়ে আমরা কারও কাছ থেকে কোনো নিশ্চয়তা চাইনি।’তিনি জানান, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) বর্তমানে পশ্চিম তীর পরিচালনা করছে এবং পরিস্থিতি অনুকূল হলে গাজায়ও নিজেদের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে। ‘এই বিষয়ে ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরে কোনো বিরোধ থাকবে না,’ যোগ করেন তিনি।অন্যদিকে, ইসরায়েল গাজা যুদ্ধ শেষে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বা হামাস–কারওই শাসন ভূমিকা মেনে নিতে নারাজ।মুস্তাফা পুনরায় বলেন, ‘গাজা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমরা দিনরাত কাজ করছি সেখানে প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে।’এদিকে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে কয়েক দিনের মধ্যেই আলোচনা শুরু হওয়ার কথা। হামাস তাদের অস্ত্র রাখার অধিকার, পূর্ণ ইসরায়েলি প্রত্যাহার এবং যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তি দাবি করছে।গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থাপিত পরিকল্পনার ভিত্তিতে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পন্ন হয়। প্রথম ধাপে বন্দি বিনিময় অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরবর্তী ধাপগুলোতে গাজা পুনর্গঠন ও হামাসবিহীন একটি নতুন প্রশাসনিক কাঠামো গঠনের কথা বলা হয়েছে।জাতিসংঘের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৬৮ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। গাজা উপত্যকার অধিকাংশ এলাকা এখন বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
২০২৬ বিশ্বকাপ ফুটবলের ম্যাচ বোস্টনে আয়োজন নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিরাপত্তা উদ্বেগ এবং মেয়র মিশেল উ’র সমালোচনা করে তিনি জানিয়েছেন, প্রয়োজনে বোস্টনের ম্যাচগুলো অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারেন। ট্রাম্পের এই মন্তব্য ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে মার্কিন রাজনীতি ও ক্রীড়াঙ্গনে।গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মাইলির সঙ্গে যৌথ উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা চাইলে ম্যাচগুলো সরিয়ে নিতে পারি। আমি বোস্টনের মানুষকে ভালোবাসি, জানি ম্যাচগুলো বিক্রি হয়ে গেছে। কিন্তু তোমাদের মেয়র ভালো নয়। সে বুদ্ধিমতী, তবে চরমপন্থী ভাবধারায় বিশ্বাসী, এবং শহরের কিছু অংশ তারা দখল করে নিচ্ছে। ’তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাইলে মুহূর্তেই ম্যাচগুলো ফেরত নিতে পারি। মেয়র শুধু আমাদের ফোন করলেই আমরা এসে সেগুলো নিয়ে যাব, কিন্তু সে রাজনৈতিক কারণে ভয় পাচ্ছে। ’বোস্টন শহর থেকে প্রায় ৩০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত ফক্সবোরোর জিলেট স্টেডিয়ামে ২০২৬ বিশ্বকাপের সাতটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডা যৌথভাবে আয়োজন করবে এবারের বিশ্বকাপ, যেখানে ২০২২ সালে ফিফা ১৬টি আয়োজক শহর এবং ম্যাচ সূচি চূড়ান্ত করে।ট্রাম্প বলেন, প্রয়োজন হলে তিনি ম্যাচগুলো সরানোর বিষয়ে সরাসরি ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। তার ভাষায়, ‘যদি দেখি কেউ দায়িত্বে ব্যর্থ হচ্ছে, বা নিরাপত্তা ঝুঁকি আছে, আমি ফিফা প্রধান জিয়ান্নিকে ফোন করব। আমি বলবো, আমরা অন্য কোথাও নিয়ে যাচ্ছি। আর তারা সঙ্গে সঙ্গে সেটাই করবে। হয়তো পছন্দ করবে না, কিন্তু সহজেই করে নেবে। ’তবে ফিফা আগেই স্পষ্ট জানিয়েছে, আয়োজক শহর ও ম্যাচ ভেন্যু নির্ধারণের পূর্ণ ক্ষমতা তাদের হাতেই। চলতি মাসের শুরুর দিকে ফিফার ভাইস প্রেসিডেন্ট ভিক্টর মন্টাগলিয়ানিও বলেন, ‘এটা ফিফার টুর্নামেন্ট, ফিফার এখতিয়ার। সিদ্ধান্ত নেবে ফিফাই। ’ট্রাম্পের মন্তব্য এসেছে এমন সময়ে, যখন বোস্টনে এক রাতে সংঘটিত সহিংস ঘটনায় একাধিক গ্রেপ্তারের খবর দিয়েছে স্থানীয় পুলিশ। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। মেয়র মিশেল উ’র কার্যালয় ট্রাম্পের মন্তব্যের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে বোস্টনসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ইতিমধ্যে বিপুল অর্থনৈতিক প্রভাবের পূর্বাভাস দিয়েছে আয়োজকরা। টিকিট বিক্রিতে দেখা যাচ্ছে উচ্চ চাহিদা, ফলে এত দেরিতে কোনো ভেন্যু পরিবর্তন হলে তা বড় ধরনের লজিস্টিক ও চুক্তিগত জটিলতা তৈরি করবে। টুর্নামেন্ট শুরু হতে এখনো বাকি প্রায় আট মাস, উদ্বোধনী ম্যাচ হবে আগামী ১১ জুন।বোস্টনের প্রথম ম্যাচ নির্ধারিত আছে আগামী ১৩ জুন, টুর্নামেন্টের তৃতীয় দিনে, গ্রুপ ‘সি’র দুটি দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে।ভোরের আকাশ/মো.আ.