স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়া
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বুধবার (২৩ জুলাই) দিবাগত রাত ১টা ১৮ মিনিটে তিনি গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার অংশ হিসেবে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের পক্ষ থেকেও জানানো হয়, দেশনেত্রীর চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন হবে।
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
ঢাকার গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভবনের সামনে ‘আন্তর্জাতিক ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট’ নামে ব্যানার টাঙানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেলে ভবনটির সামনে এই ব্যানার দুটি টাঙিয়ে ভবনের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু করা হয়।প্রায় এক বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ভবনটি গতকাল বুধবার থেকে ধাপে ধাপে পরিষ্কার করা হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তৃতীয় তলায় জমে থাকা ইটের খোয়া ও আবর্জনার স্তূপ অপসারণ করা হচ্ছে। দোতলার আবর্জনা ইতিমধ্যে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এর আগে বুধবার সকাল থেকে নিচতলা পরিষ্কার করা হয়। প্রায় ১০ থেকে ১২ জন ব্যক্তি ভবনের প্রতিটি তলা পরিষ্কার করার কাজ করছেন।পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কয়েকজন জানিয়েছেন, পুরো ভবনটি পরিষ্কার করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্তদের কাছে ভবনটি হস্তান্তর করা হবে। এ ভবনে গত বছরের অভ্যুত্থানে আহতদের জন্য অফিস ও শহীদ পরিবারের স্মৃতি অফিস স্থাপন করা হবে বলেও তারা দাবি করেন।তবে ভবন ও ব্যানার সংক্রান্ত বিষয়ে নাম-পরিচয় প্রকাশে কেউ আগ্রহ দেখাননি। কেউ কেউ বলেন, ভবনের কোন তলায় কী কার্যক্রম চলবে, তা নির্ধারণ করবে সাধারণ ছাত্র-জনতা।এদিকে ‘আন্তর্জাতিক ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট’ নামের এই প্রতিষ্ঠান কারা প্রতিষ্ঠা করেছে, কী উদ্দেশ্যে ব্যানার টাঙানো হয়েছে—এসব প্রশ্নে অবস্থানরত ব্যক্তিরা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।গুলিস্তানের এই ১০ তলাবিশিষ্ট ভবনটি ২০১৮ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেছিলেন। প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবনটি আধুনিক স্থাপত্যশৈলীতে গড়া হয়।তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় ভবনটিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এরপর এক মাসব্যাপী চলে লুটপাট। সেই সময় থেকে ভবনটি কার্যত অচল ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল।স্থানীয় দোকানদারদের ভাষ্য অনুযায়ী, ভবনের নিচতলা এতদিন শৌচাগার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। মলমূত্রের দুর্গন্ধ এলাকায় বিরক্তিকর পরিবেশ তৈরি করেছিল। আজ বিকেলেও নিচতলায় এখনও কিছুটা দুর্গন্ধ টের পাওয়া গেছে, যদিও তা আগের তুলনায় কম।ভবনের সামনে ছবি তুলতে আসা এক পথচারী, আবদুস ছাত্তার বলেন, “একটি রাজনৈতিক দল স্বৈরাচারী হয়ে উঠলে তার পরিণতি কী হতে পারে, এই ভবনটিই তার জ্বলন্ত উদাহরণ। দেশের অন্যতম প্রাচীন দল আওয়ামী লীগের এমন করুণ পরিণতি থেকে অন্যদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।”ভোরের আকাশ//হ.র
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বিতরণ লাইন নির্মাণকাজের কারণে শুক্রবার (২৫ জুলাই) ১১ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফতুল্লার এনায়েত নগরে অবস্থিত মেসার্স ফেয়ার এপারেলস লিমিটেড এবং মেসার্স এম এস ডায়িং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং লিমিটেডের ৮ ইঞ্চি ব্যাসের ৬৩২ মিটার দীর্ঘ গ্যাস বিতরণ লাইন নির্মাণ করা হবে। এই কাজের জন্য শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পঞ্চবটি, মুক্তারপুর, কাশিপুর, মুন্সীগঞ্জ ও আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে।এই সময়ের মধ্যে সকল শ্রেণির (আবাসিক, বাণিজ্যিক ও শিল্প) গ্রাহকদের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে বলে জানায় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।ভোরের আকাশ//হ.র
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, এনজিও ও কর্পোরেট পলিসি দিয়ে সরকার চলে না। তিনি সতর্ক করে বলেন, এনজিও ও কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের মতো দেশ চালালে বিপর্যয় হতে পারে। কেননা এনজিও চালানো আর দেশ চালানো সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়।বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাজধানীর বনানীতে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে মাসিক ম্যাক্রোইকোনমিক ইনসাইটস (এমএমআই) প্রকাশন উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পিআরআই চেয়ারম্যান ড. জাইদী ছাত্তারের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাইদী ছাত্তার ও পিআরআই- এর মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান।ড. মঈন খান বলেন, এনবিআর কর্মকর্তারা ঘুষ নিয়ে কর মাফ করে দেয়, তাই রাজস্ব আদায় অনেক কম। এছাড়া অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য মানুষকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে।জুলাই অভ্যুত্থানের ২ বছর আগেই বিএনপি সংস্কার প্রস্তাব দেয় জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি সংস্কার চায় না এমন অপবাদ দেওয়া অযৌক্তিক।বিএনপি এই নেতা আরও বলেন, বাজারভিত্তিক ঘোষণা দিয়েও বাংলাদেশ ব্যাংক কেন ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণ করছে। এটা ঠিক নয়। সম্প্রতি দেশে প্রথমবারের মতো ডলারের বিপরীতে টাকার মান বাড়তে দেখলাম। তখন বাংলাদেশ ব্যাংক হস্তক্ষেপ করে দাম বাড়াল ডলারের। একটা আমদানিনির্ভর দেশে কেন এমন পদক্ষেপ নেওয়া হলো বোধগম্য নয়।যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যথাযথ শুল্ক নীতির ওপর বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য বহুলাংশে নির্ভর করছে উল্লেখ করে মঈন খান বলেন, শুল্ক চুক্তির বিষয়ে প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ খুব জটিল সামাজিক কাঠামোতে আছে। মানুষের ধৈর্য কম, তাদের আবেগ বেশি। সরকারের মধ্যে আস্থা তৈরি করতে হবে। তাছাড়া স্থিতিশীলতা আনা সম্ভব না।ভোরের আকাশ/এসএইচ
রাজনীতিতে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিকদলসহ সরকারের দায়িত্বশীলরা। গত দু-একদিনের বক্তব্য বিবৃতি থেকে এমন আভাস স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান আছড়ে পড়ে মর্মান্তিক ঘটনার বেদনা বহন করছে যখন সারা জাতি, ঠিক সেই সময়ে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের বিষয়ে জুলাই আন্দোলনের পক্ষে থাকা সকল রাজনৈতিক শক্তির ঐক্য ধরে রাখার সুস্পষ্ট তাগিদ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস। এ বিষয়ে জরুরিভাবে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বৈঠকও করেছেন। রাজনৈতিক নেতাদের কণ্ঠেও উচ্চারিত হচ্ছে- একই রকম সূর।সূত্র বলছে, ফ্যাসিবাদ চক্রের উত্থান রোধে সরকারের পাশাপাশি ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ, ইসলামী আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) দেশের গণতন্ত্রকামী সব রাজনৈতিক দল।রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে আবারো আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন ও পুনরুত্থানের চক্রান্ত চলছে। নেতাকর্মীরা বলছেন, এ পরিস্থিতি দেশকে গভীর অস্থিরতার দিকে ঠেলে দেবে। একই সঙ্গে ফ্যাসিবাদ চক্র যাত মাথাচড়া দিয়ে না উঠতে পারে সেজন্য সতর্ক ও সজাগ থাকছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রশাসনসহ দলগুলোর নেতাকর্মী। যেখানেই ফ্যাসিবাদ, সেখানেই মোকাবিলা করার প্রস্ততি রাখার কথা বলছে নেতাকর্মীরা। মতপার্থক্য, প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যকে আরও দৃশ্যমান করা দরকার বলে বলে মত দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টা।এদিকে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও গণঐক্য অটুট রাখার বিষয়ে ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে প্রধান উপদেষ্টাকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান দলগুলোর নেতারা। পাশাপাশি সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন প্রক্রিয়ায় পূর্ণসমর্থন জানিয়ে নির্বাচনকে সামনে রেখে ও ফ্যাসিবাদ প্রতিহত করার জোর দাবি জোরদার হয়েছে।সূত্র মতে, জুলাই-আগস্ট ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের বিস্ফোরণের মুখে ৫ আগস্ট গণতন্ত্র ও স্বৈরাচার শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ দেশ ছেড়ে পালালেও তাদের দোসরা এখনও দেশকে অস্থিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। হাসিনামুক্ত বাংলাদেশ হলেও তাদের দোসরা এখন দেশের প্রতিটি সেক্টরে রয়েছে। গণতন্ত্রকে নস্যাৎকারীরা আবারও সংগঠিত হয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে উসকে দিয়ে মবক্রেসি মাধ্যমে সহিংসতা তৈরির করছে। মিটফোর্ট হাসপাতালের সামনে সোহাগ হত্যাকাণ্ড ও গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ও মাইলস্টোন কলেজে বিমান দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন নন-ইস্যুকে ইস্যু বানিয়ে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশে মাফিয়া চক্রের মাধ্যমে অর্থনীতিকে ধ্বংস, ব্যাংকগুলো লুটপাট, লাখো-কোটি টাকা বিদেশে পাচার, প্রশাসনকে আওয়ামী দলীয়করণ বিচার বিভাগকে হুকুমের গোলাম ও দলীয় অস্ত্র, একদলীয় স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত, বিরোধী মতকে দমন-পীড়ন, গুম, খুন, হামলা-মামলা, আয়নাঘর ও টর্চারসেল তৈরিসহ নানাভাবে নির্যাতন করেছিল। গোটা দেশ একটি কসাইখানায় রূপান্তরিত করছিল শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ। গণতন্ত্রবিরোধী ফ্যাসিবাদ চক্র জোটবদ্ধ হয়ে নানা চক্রান্ত করছে বলে মনে করছেন দেশের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদরা।তারা মনে করেন, গণতন্ত্রবিরোধী ফ্যাসিবাদ চক্র উত্থান রোধে দেশের সকল রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন ও পুনরুত্থানের চক্রান্ত চলছে, যা দেশকে গভীর অস্থিরতার দিকে ঠেলে দেবে। রাজনীতিবিদের অভিমত, যতদিন যাচ্ছে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় বিশ্বাস করে না- তারা আবার সক্রিয় হচ্ছে। ফ্যাসিস্ট শক্তি আবারও জোটবদ্ধ হচ্ছে। গণতন্ত্রকে নস্যাৎকারীরা আবারও সংগঠিত হচ্ছে। তারা ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার চক্রান্ত করছে। ছিনতাই-মবক্রেসি ভয়ংকর রূপে বাড়ছে।রাজনীতিবিদরা মনে করছেন, দেশের অগণতান্ত্রিক সংকট নিরসনে একমাত্র পন্থাই হচ্ছে নির্বাচন। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেবে। যত দ্রুত সম্ভব সংস্কারগুলো করে নির্বাচনের দিকে যেতে হবে। নির্বাচন ছাড়া বিকল্প কোনো রাস্তা নেই। সংস্কারগুলো এরই মধ্যে চলমান থাকবে। এজন্য জাতীয় ঐক্য একটা বড় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিভক্ত না হয়ে আমরা যেন প্রধান লক্ষ্যগুলোকে সামনে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকি এবং গণতন্ত্রের উত্তরণের বিষয়টি নিশ্চিত করি। বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের কাঠামো সম্পূর্ণরূপে ভেঙে দিতে হলে, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, প্রয়োগ এবং চর্চার কোনো বিকল্প নেই বলেও উল্লেখ করেন রাজনৈতিক দলের নেতারা।গতকাল বুধবার বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এক কর্মশালায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা রুখতে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের কাঠামো সম্পূর্ণরূপে ভেঙে দিতে হলে, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, প্রয়োগ এবং চর্চার কোনো বিকল্প নেই বলেও উল্লেখ করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।তিনি আরও বলেন, মানবাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ।যতদিন যাচ্ছে পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে : এ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যতদিন যাচ্ছে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় বিশ্বাস করে না-তারা আবার সক্রিয় হচ্ছে। ফ্যাসিস্ট শক্তি আবারও জোটবদ্ধ হচ্ছে। গণতন্ত্রকে নস্যাৎকারীরা আবারও সংগঠিত হচ্ছে। তারা ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার চক্রান্ত করছে। ছিনতাই-মবক্রেসি ভয়ংকর রূপে বাড়ছে।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাচ্ছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, জুলাই-আগস্টে আবার ফ্যাসিস্ট শক্তি উত্থানের শঙ্কা দেখা গেছে, সেজন্য মতবিনিময় করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিএনপি পুনরায় সরকারকে সহযোগিতার করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে। ফ্যাসিস্ট রোধে বিএনপি ও তার অঙ্গ সংসগঠন সব সময় সজাগ ও সতর্ক রয়েছে বলেও জানান দলটির মহাসচিব।তিনি বলেন, অযথা বিলম্ব না করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা চিহ্নিত করে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অনতিবিলম্বে নির্বাচন দিয়ে পরিস্থিতি ঠিক করার আহ্বান জানাই। এই দায়িত্ব এখন অন্তর্বর্তী সরকারের, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের।তিনি আরও বলেন, সুযোগ আমাদের সামনে এসেছে। হারিয়ে ফেললে অনেক বছর পিছিয়ে যাবে দেশ। প্রতিবার ছেলেরা প্রাণ দেবে, আন্দোলন হবে, তাই সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না। রাজনৈতিক দলগুলো প্রমাণ করেছে সবাই দেশকে ভালোবাসে। তাই তারা ফ্যাসিবাদমুক্ত করেছে ত্যাগ স্বীকার করে। সবাই যেনো একটি বিষয়ে একমত হই, যেনো কেউ ফ্যাসিবাদের কাছে দেশকে ছেড়ে না দেই।ফ্যাসিবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চলবে : বাংলাদেশ জামায়াতের ইসলামী আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চলবে। এ লড়াইয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জুলাই যুদ্ধ করে যারা জীবন দিয়েছে, তাদের স্মরণ করে ফ্যাসিবাদ ও দুর্নীতির মূলোৎপাটন করার জন্য যা দরকার, আমরা তারুণ্য এবং যৌবনের শক্তিকে একত্রিত করে সেই লড়াইয়েও জিতব ইনশাল্লাহ। জামায়াতের আমির বলেন, যাদের ত্যাগ এবং কুরবানির বিনিময়ে, স্বৈরাচারের কঠিন অন্ধকার যুগের যাঁতাতলে পিষ্ট হয়ে যারা তিলে তিলে দুনিয়া থেকে নির্যাতিত হয়ে বিদায় নিয়েছেন, অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিদায় নিয়েছেন, যারা লড়াই করে আহত হয়েছেন, পঙ্গুত্ববরণ করেছেন; আমরা তাদের সবার কাছে গভীরভাবে ঋণী। জামায়াতে ইসলামীর অস্তিত্ব যতদিন থাকবে, ততদিন ফ্যাসিবাদ উত্থান রোধে ঐক্যবদ্ধ থাকবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।এ বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, দেশে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন ও পুনরুত্থানের চক্রান্ত চলছে, যা দেশকে গভীর অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।তিনি বলেন, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে শিক্ষার্থীদের উসকে দিয়ে সহিংসতা তৈরির যে অপচেষ্টা চলছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। জাতি যখন সামরিক বিমান দুর্ঘটনায় শোকাচ্ছন্ন, তখন নন-ইস্যুকে ইস্যু বানিয়ে অরাজকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সরকারের আন্তরিকতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ থাকার কথা ব্যক্ত করেন তিনি।জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের কোনো স্থান থাকবে না, পুরনো ফ্যাসিবাদ নির্মূল হয়েছে এবং নতুন ফ্যাসিবাদ গজাতে দেওয়া যাবে না।ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য অটুট থাকবে এবং দেশের প্রতিটি স্থানে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ