ভোরের আকাশ ডেস্ক
প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০১:১৭ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার বাজারে প্রতিদিনই বাড়ছে মাছ-মুরগির দাম। বৃষ্টি ও সরবারহ ঘাটতির অজুহাতে গত কয়েকমাস ধরেই অস্থির সবজির বাজার। মাঝে কিছুটা ওঠানামা করলেও চলতি সপ্তাহে ফের বেড়েছে দাম।
এছাড়া খুচরা বাজারে ভোজ্যতেলের দামও বেড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এই খাদ্যপণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন মধ্যবিত্ত ক্রেতারা।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর মালিবাগ, মুগাদ, রামপুরা-বনশ্রী এলাকার বাজার ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, একমাসে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা বাড়ার পর ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি দরে। সোনালি মুরগিও ২৬০ টাকা থেকে বেড়ে ২৮০ টাকায় উঠেছে। গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৬০-৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে জনপ্রিয় মাছ যেমন রুই, কাতলা, তেলাপিয়া ও চিংড়ির দামও বেড়েছে কয়েক ধাপ।
বাজার করতে আসা ক্রেতারা বলছেন, সংসারে অর্থের যোগান না বাড়লেও সব দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সংসার চালানো এখন দায়। বাজারে গেলে মনে হয় সব পণ্য হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। মাছ-মাংস যেন বিলাসী খাবার হয়ে গেছে।
সম্প্রতি বাদামি ডিমের দাম ডজনপ্রতি ১৫০ টাকায় উঠলেও এখন কমে ১৪০ টাকায় নেমেছে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, বাড়তি দাম দ্রুত কার্যকর হয়, কিন্তু কমতে সময় নেয়।
এদিকে, গত সপ্তাহে সয়াবিন তেলে দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়াতে ব্যবসায়ীদের প্রস্তাব সরকার মেনে নেয়নি। সে কারণে এখন বাজারে তৈরি হয়েছে এই অস্থিরতা।
পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, তেলের দাম নতুন করে বাড়েনি, তবে কমিশন কমিয়ে দিয়েছে সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো। এতে বাজারে বেড়েছে খোলা সয়াবিন ও সুপার পাম অয়েলের দাম। গত তিন-চার দিনের ব্যবধানে এই দুই ধরনের তেলের দাম বেড়েছে লিটারে পাঁচ টাকার মতো। এখন খুচরা পর্যায়ে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৭২ টাকা। আর সুপার পাম অয়েলের লিটার বিক্রি হয়েছে ১৫৫ টাকা ১৬০ টাকা দরে। চার দিন আগেও প্রতি লিটার খোলা সয়াবিনের দাম ১৬৯ এবং পাম অয়েলের দাম ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
এছাড়া গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বাজারে সবজির সরবারহ কমেছে। এতে কেজিতে ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
বাজারঘুরে দেখা যায়, মানভেদে প্রতি কেজি ধুন্দল ৪০-৫০ টাকা, শসা ৫০-৮০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, ঝিঙে ৬০-৮০ টাকা, কহি ৫০-৬০ টাকা, আলু ২০-২৫ টাকা, আমড়া ৬০ টাকা ও কচুর মুখি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি করলা ৮০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৭০-৮০ টাকা, টমেটো ১২০-১৪০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, মূলা ৮০ টাকা, পটোল ৭০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা, বেগুন ৮০-১০০ টাকা ও কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা।
আর প্রতি পিস লাউ ৬০-৭০ টাকা ও চালকুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে।
এদিকে কেজিতে ১০০ টাকা কমেছে ইলিশের দাম। বর্তমানে ১ কেজি ওজনের ইলিশ ২১০০ টাকা, ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৭৫০-১৮৫০ টাকা, ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৫০০ টাকা ও দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ৩০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যান্য মাছের দাম রয়েছে আগের মতোই চড়া। প্রতিকেজি বোয়াল ৭৫০-৯০০, কোরাল ৮০০-৮৫০, আইড় ৭০০-৮০০, পাবদা ও শিং ৪০০-৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া চাষের ট্যাংরা ৭৫০-৮০০, কাঁচকি ৬৫০-৭০০ এবং মলা ৫০০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রুই কেজিপ্রতি ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, পাঙাশ ২২০-২৫০ টাকা, বাইলা ৮৫০ টাকা, টেংরা ৮০০ টাকা ও চিংড়ি কেজিপ্রতি ১,০০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ানবাজারের চাল ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘নতুন করে দাম বাড়েনি। তবে কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। প্রতিকেজি মিনিকেট চাল ৮০-৮৫ টাকা, নাজিরশাইল ৮৫-৯২ টাকা ও মোটা চাল ৫৬-৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’
ভোরের আকাশ/মো.আ.