রিফাতুন্নবী রিফাত, গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২৫ ০৩:৪৬ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
গাইবান্ধায় পানির অভাবে সোনালী আঁশ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। বেশ কিছুদিন পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় নদ-নদী, খাল-বিলে, পুকুর ও ডোবা কিছুতেই পানি নেই। ফলে এবার পাটের ভালো ফলন হলেও জাঁক দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। ক্ষেতেই পাট ফেলে রেখেছেন তারা। অনাবৃষ্টির কারণে চাষের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চাষীদের চরম ভোগান্তি ও কষ্ট পোহাতে হচ্ছে।
সরজেমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত সপ্তাহদুয়েক ধরে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পনেরটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ওপর দিয়ে হালকা বৃষ্টিপাত হলেও তা কোন কাজে আসছে না। এতে করে এলাকায় আমন চাষাবাদ অনেকটা পিছেয়ে যাচ্ছে। এছাড়া যেসব কৃষকের বীজতলায় চারার বয়স হয়ে গেছে, তারা সেচের মাধ্যেমে আমনচারা রোপন শুরু করেছেন। এতে করে চাষাবাদ খরচ অনেক বেড়ে যাচ্ছে। সেই সাথে নিচু জলাশয় সমুহে পানি না থাকায় তোষা পাটচাষীরা পাট জাঁক দিতে পারছে না। পাশাপাশি সঠিকভাবে পাট পঁচাতে না পারলে আঁশের মানও এবার নিম্নমুখীর শঙ্কায় কৃষকরা।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার পনেরটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৪ হাজার ৫৪৫ হেক্টরজমিতে তোষাপাট চাষাবাদ হয়েছে। সেই সাথে আমন ধানচাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ হাজার ৮৫ হেক্টর। বৈরী আবহাওয়া এ অবস্থায় চলতে থাকলে চাষাবাদ ব্যাহত হতে পারে।
কৃষকরা জানান, বাড়ির আশপাশ নিচু জলাশয়, পুকুর, ডোবা, নালায় নেই পানি। সে কারণে তোষাপাট পঁচানোর জন্য জাঁক দেয়া সম্ভাব হচ্ছে না। গত ১০ দিন ধরে খেতে পড়ে আছে তোষাপাট। রোদে পুড়ে যাচ্ছে তোষাপাটের আটিগুলো। এ অবস্থা চলতে থাকলে সোনালী আঁশ, যেন গলার ফাঁস হয়ে যাবে। সেচমটার বা শ্যালোমেশিন দিয়ে জলাশয়ে পানিভরাট করে তোষাপাট জাঁক দিয়ে কোন লাভ হচ্ছে না, যদি ভারী বৃষ্টি না হয়।
উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের হারুন মিয়া, কাশেম আলী, চৌমাথা এলাকার সিদ্দিক আহমেদ নাহিদুল মোস্তাফিজুর রহমান। তারা বলেন, কম পানিতে তোষাপাট জাঁক দিলে পাটের রং ভাল হবে না। বাজার দর অনেক কম হবে। এসব কারণে পাট চাষীদের লোকসান গুনতে হবে।
একই কথা উপজেলার বজড়াকঞ্চিবাড়ি এলাকার পাটচাষী আব্দুল মতিন মিয়ার। তিনি চলতি মৌসুমে দুই বিঘা জমিতে তোষাপাট চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে এক বিঘা জমির তোষাপাট কেটে ফেলেছেন। কিন্তু পানির অভাবে জাাঁক দিতে পারছেন না।
এ ব্যাপারে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার রাশিদুল কবির বলেন, এটি প্রাকৃতিক দূর্যোগ। এখানে আসলে মানুষের কোন হাত নেই। তবে অনেকে সেচের মাধ্যমে পুকুর, ডোবা, নালা এবং নিচু জলাশয়ে পানি ভরাট করে তোষাপাট জাঁক দিচ্ছে। সেই সাথে অনেক কৃষক সেচের মাধ্যমে আমনচারা রোপন শুরু করেছে। কম পানিতে তোষাপাটের রং একটু খারাপ হতে পারে। এতে কোন প্রভাব পড়বে না। আমন ধান চাষাবাদের সময় এখনো পার হয়নি। আরও ১০ হতে ১৫ দিন পরে চারা রোপন করলে কোন ক্ষতি হবে না।
ভোরের আকাশ/জাআ