ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৫ ০২:৫৮ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে আদিবাসিদের ঐতিহ্যবাহী মিলন মেলায় যোগ দিতে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী, রাজশাহী ও নওগাঁ সহ দেশের বিভিন্ন জেলার কয়েক হাজার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সকল বয়সের নারী-পুরুষের সমাগম ঘটে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সকাল থেকেই নারী-পুরুষসহ সর্বস্তরের মানুষ আসতে শুরু করে মেলায়।
শারদীয় দূর্গা পুজার একদিন পরে উপজেলার গোলাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মিলন মেলায় উৎসবে মেতে উঠে সকল বয়সের আদিবাসী জনগোষ্ঠীরা।
মেলায় বিভিন্ন ধর্ম ও বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণ ছিল চোখে জুড়ানো বর্ণাঢ্য আয়োজনে সকল ধরনের দোকানপাট, খেলনা সামগ্রী, দোলনা সহ উপভোগ করার মতো জনসাধারণের উপচে পড়া ভিড় জমায়।
বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় উৎসব মুখর পরিবেশে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয় এই মিলন মেলা। যুগ যুগ ধরে ঐতিহ্যবাহী এই মেলাটি অনেকের কাছে বাসিয়া হাটি নামে পরিচিত।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও নিজপাড়া, মোহনপুর ও মরিচা ইউনিয়নের আয়োজনে এবং গোলাপগঞ্জ দূর্গাপুজা উদযাপন কমিটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে মেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও বীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ মনজুরুল ইসলাম।
আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির আহবায়ক যোশেফ হেমরম এর সভাপতিত্বে,
বীরগঞ্জ থানা আদিবাসী সমাজ কল্যাণ সমিতির সেক্রেটারি কমলাকান্ত ও সহ সেক্রেটারি বিশ্বনাথ মরমু এর সঞ্চালনায় মিলন মেলায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোহনপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাহীনুর রহমান চৌধুরী (শাহীন), নিজপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান আনিস, দিনাজপুর কালিতাসের আঞ্চলিক পরিচালক রবি মাডি, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের আহ্বায়ক মনোজ কুমার রায়সহ আরো অনেকে।
এই মেলাকে কেন্দ্র করে কয়েক বছর ধরে একটি গুজব দেখা যায়। এখানে নাকি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ছেলে-মেয়েরা পছন্দের জীবনসঙ্গী খুঁজে নিতে পারেন। এখানে কোনো পাত্র বা পাত্রী পছন্দ হলে ধুমধামে বিয়ে দেওয়া হয়। কিন্ত বাস্তবে এর সত্যতা খুজে পাওয়া যায়নি।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে বীরগঞ্জ উপজেলা আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি শীতল মার্ডি বলেন, পূর্ব পুরুষেরা এই মেলা শুরু করে। আমরা শুধু ধারাবাহিকতা রক্ষা করে যাচ্ছি। তবে কবে থেকে এ মেলার প্রচলন শুরু হয়েছে সেটি সঠিকভাবে বলা যাবে না। আনুমানিক কয়েক শত বছর পূর্ব থেকে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে, এই মেলাটি আমাদের পূর্বপুরুষ বাপ-দাদার কাছ থেকে শুনেছি। তবে বিয়ের বিষয়টি আমি এই মেলায় হতে দেখিনি। কেউ মেলায় কাউকে পছন্দ করে পরে পারিবারিক ভাবে বিয়ে করতেই পারে।
এই দিনটি ঘিরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সব বয়সী নারী-পুরুষেরা নানা রুপে ভিন্ন ভিন্ন সাজে মেলায় আসেন ঐতিহ্যবাহী এই মেলা উপভোগ করত।
ভোরের আকাশ/এসএইচ